নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুজায়েত শামীম

শামীম সুজায়েত

ছাত্রজীবনে সাংবাদিকতার হাতেখড়ি।শুরু করা শখের বসে। একসময় তা নেশা থেকে পেশা।ব্যবস্থাপনায় অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে পছন্দের এ পেশায় কেটে গেলো অনেকটা সময়। অভিজ্ঞতার ঝুলিতে জমা পড়েছে পেশাগত জীবনে চলার পথে পাওয়া নানা অসঙ্গতির চিত্র।এখন লেখালেখি করি নিজের আনন্দে, ক্লান্তিহীন ভাবে যা ভালো লাগে।আমার জন্ম ১৯৭৭ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি যশোর উপশহর আবাসিক এলাকায়। আমার শৈশব ও কলেজ জীবন কেটেছে এখানেই।জীবন জীবিকার তাগিদে এখন গঙ্গাবুড়ির আলোঝলমল শহরে্ কাটছে সারাবেলা। যোগাযোগ:ই মেইল : [email protected]হটলাইন : +ফেসবুক : https://www.facebook.com/sumon.sujayet জন্মদিন : 02.02.1977

শামীম সুজায়েত › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিনতি লতা ( পর্ব - ০১ )

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২২





(ধারাবাহিক: সপ্তাহে দুটি করে পর্ব)



জীবনে বোধ হয় আজ প্রথম, পা রাখলাম থানার বারান্দায়। এর আগে থানা পুলিশ সর্ম্পকে প্রত্যক্ষ কোন ধারণা লাভের সুযোগ হয়নি আমার। না গিয়ে উপায়ও ছিলনা। বিষয়টি সিরিয়াস। এটি নিয়ে গত দু'দিন ধরে রয়েছি চরম অস্থিরতায়। দারুণ শঙ্কিত।



থানায় ঢুকে দেখলাম ডিউটি অফিসার হিসাবে রয়েছেন একজন নারী। পরনে তার গাঢ় নীল রঙের ইউনিফর্ম । ছোট্ট একটি টিপও আছে কপালে। তার বয়স হয়তো ত্রিশের ভেতরে। তাকে দেখে বেশ অবাকই হতে হলো। প্রত্যন্ত অঞ্চলের কোন থানায় এসে যে মহিলা পুলিশ দেখতে পাবো, ভাবিনি কখনও। কিন্তু এই ভর দুপুরে থানায় কারেন্ট নেই। মাথার উপরের সিলিং ফ্যান রয়েছে বন্ধ। তার মুখ ও গলা বেয়ে টপটপ করে ঝরছে ঘাম । খবরের কাগজ দিয়ে হাত নেড়ে নেড়ে তিনি বাতাস খেয়ে চলেছেন অবিরত। নমস্কার বলে তার সামনে বসলাম।



এরপর জানালাম আমার অভিযোগের কথা। লিখিত অভিযোগের কপিটি মেলে ধরলাম সামনে। আমি যে স্থানীয় ডিগ্রি কলেজের একজন প্রভাষক, সে পরিচয়ও দিলাম। তিনি বাতাস খেতে খেতে অভিযোগটির ওপর চোখ বোলাতে থাকলেন। এরপর সেটি একপাশে রেখে হাত উচু করে জোরে জোরে নিজের শরীরে বাতাস করতে লাগলেন। বুঝতে পারছি, প্রচন্ড গরমে তিনি কাহিল। নিজেকে ঠান্ডা করতে বাতাস করছেন আর সেই তালে দুলেদুলে উঠছে তার স্ফিত বুক।



আমি উসফিস করতে থাকি। বিচলিত হয়ে বলি, ইয়েস, নো, কিছু একটা বলুন। আপনিতো ওটা পড়ে রেখে দিলেন।

মহিলা কেবল আমার দিকে তাকালেন। কোন উত্তর না দিয়ে আরও জোরে জোরে বাতাস করাতে থাকলেন। সেই বাতাস আমার চুল ছুয়ে গেলো।



এবার একটু সুন্দর করে বললাম, ম্যাডাম, যদি আমার অভিযোগ লেখায় কোন ভুল থাকে, প্লিজ গাইড লাইন দেন, আমি নতুন করে লিখে দেই। তিনি এবারও কিছু না বলে অহেতুক জিডি এন্ট্রির বইয়ের এককোণা ধরে টানাটানি করতে থাকলেন। আর পা দুটো এত জোরে দুলাতে থাকলেন যে সেই কম্পন টেবিল ছুয়ে আমার শরীরও নাড়িয়ে দিচ্ছিল। তিনি বেশ বুঝতে পারছেন, আমি চরম ভাবে বিরক্ত হচ্ছি। কিন্তু কোন ভ্রুক্ষেপ নেই তার।



নিজেকে সামলে নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন করি,

এটি জিডি হিসাবে এন্ট্রি হতে সমস্যা ?



এবার তিনি একটু বিরক্ত ভাব করে তাকালেন। কিছু একটা বলতে গিয়ে হঠাৎ থেমেও গেলেন। ভগবানের কৃপা, তখনই কারেন্ট চলে আসাতে মুহূর্তের মধ্যে তার মুড ভাল হয়ে গেলো। থেমেও গেলো তার পা দোলানো। আমার তখন মনে হলো তার গরম লাগার সাথে পা নাড়ানোর কোন যোগসুত্র আছে। তা না হলে কারেন্ট আসার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে কেনো থেমে যাবে ব্যাপারটা ? সে যাই হোক। আমি ডিউটি অফিসারের চোখের দিকে তাকালাম। তিনিও আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন কয়েক সেকেন্ড। এরপর বললেন, আপনার মত এমন ঘটনা অনেক দেখেছি। সবই মান অভিমান। দেখবেন কিছুদিন পর চলে আসবে।



দেখুন ব্যাপারটা তেমন নয়। আমার সাথে তার মান অভিমানের কিছু হয়নি। বিয়ের আড়াই বছরেও মনে পড়েনা লতার সাথে মানে আমার স্ত্রীর সাথে কোন ঝগড়া ঝাটি হয়েছে। আমার প্রতি তার কোন অভিযোগ নেই। আমরা অনেক সুখি।



কথা শেষ হতেই ডিউটি অফিসার বললেন, আপনি শিক্ষক মানুষ। সবকিছু সাদা চোখে দেখলে হয়না।



সাদা চোখে বলতে।



তার কথার সুত্র ধরে পাল্টা প্রশ্নের কোন উত্তর পেলামনা। তিনি বললেন, চা খাবেন।



নো থ্যাংস।



আচ্ছা, আপনি কি বাসায় প্রাইভেট পড়ান।



হ্যা পড়াই।



কতজন পড়ে।



এইতো পনেরো জন মত।



ক'জন ছেলে, ক'জন মেয়ে।



অধিকাংশ জনই আমার কলেজের ছাত্র। মহিলা কলেজের মেয়ে পড়ে দু'জন।



আপনি কি বাসাতেই পড়ান।



হ্যা, কিন্তু কেনো বলুনতো।



আপনি অপেক্ষা করুন। স্যার আসলে আপনার অভিযোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। ও, ভাল কথা অভিযোগের মধ্যে আপনার স্ত্রীর বয়স উল্লেখ করেছেন।



হ্যা, জন্ম তারিখ লেখা আছে। সে অনুপাতে বর্তমানে তার বয়স ২৪ বছর, সেটিও উল্লেখ আছে।



ওকে, ফাইন। আপনার স্ত্রীর ফটোটা দিন। অভিযোগের সাথে স্ট্যাপলার করে রাখি।



আমি বললাম, ওটার সাথেই থাক। স্ট্যাপলার করার কি দরকার?



কেনো, স্ট্যাপলার করলে কি সমস্যা?



না, কোন সমস্যা নেই। তবে স্ট্যাপলার করলে লতার ছবি নষ্ট হয়ে যাবে যে!



পুলিশ অফিসার মহিলা বিস্ময়সূচক ভাব করে তাকালেন। এরপর দরখস্তর উপরে ছবিটা নিয়ে এক কোণায় স্ট্যাপলার করতে করতে বললেন, ভাইজান, বউকে যদি নিজের জীবনের সাথে এমন ভাবে স্ট্যাপলার করে না রাখতে পারেন, হারিয়েতো যাবেই।



আমি আপনার কথা ঠিকমত বুঝলাম না মেডাম।



আপনার বুঝে কাজ নেই। স্যার আসলে ফের কথা হবে।



(চলবে ....)

[আগামী ১০ সেপ্টম্বর'১৩ মঙ্গলবার ২য় পর্ব]

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৭

ঘাসফুল বলেছেন: ধারাবাহিক গল্প একটানে পড়লাম, পোষ্টে প্লাস...

২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৪

শামীম সুজায়েত বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ঘাসফুল।

গল্প একটানে পড়লেন, এটি জেনে ভাল লাগলো। কোথাও কোন অসঙ্গতি মনে হলে জানাবেন।

আপনার ছোট ছানা কেমন আছে?
তার বয়স এখন বোধ হয় ৫ বছর। তাকে নিয়ে আপনার একটি ছবিপোস্ট দেখেলাম । দোয়া করি। ভাল থাকবেন।

৩| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১১

নীল-দর্পণ বলেছেন: বাহ! অনেক ভাল লাগল। পরের পর্বের অপেক্ষায়.....

৪| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:২৭

শামীম সুজায়েত বলেছেন: নীল দর্পণ,
খুব বেশি সময় নষ্ট করাবো না ভেবেই ছোট পরিসরে দিচ্ছি। আশা করছি মঙ্গলবার সকালে দিতে পারবো দ্বিতীয় পর্ব।

প্রত্যাশা রইলো কষ্ট করে হলেও পড়বেন। লেখায় থাকা অসঙ্গতি গুলো দূর করে দিতে সহায়তা করবেন।
শুভ কামনা রইলো।

৫| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৫০

ইকরাম বাপ্পী বলেছেন: ভালো লাগলো...+ লেখায় থাকা অসংগতি না তবে আপনার মন্তব্যে কিছুটা পরামর্শ ... ... কেউ মন্তব্য দিলে আপনি সেটা মন্তব্যের জবাব আকারে লিখেন... আর একটা মন্তব্য না লিখে মনে হয় জবাব আকারে লিখলে ভালো হয়।

আপনার বেশ কয়েকটা পোস্টে দেখলাম আপনি জবাব আকারে না লখে মন্তব্য আকারে লিখেছেন, আবার এমনও দেখলাম জবাব আকারেও আছে। মনে হয় জবাব হিসেবে লেখলে ভালো হয়। গল্পের প্রথম পাতা পড়ে ভালো লাগলো.........

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১১

শামীম সুজায়েত বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই ইকরাম বাপ্পী। বিষয়টি বুঝতে পেরেছি। সেক্ষেত্রে মন্তব্যকারী সম্ভাবত নোটিফিকেশন পান। আসলে এটাই করা উচিৎ। এবার থেকে ঠিকঠাক অনুসরণ করবো।

৬| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫০

ডরোথী সুমী বলেছেন: ভাল লেগেছে। শুভ কামনা।

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৪

শামীম সুজায়েত বলেছেন: ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগলো ডরোথী সুমী।
প্রত্যাশা করছি পরের পর্বটি পড়বেন।
১০ সেপ্টম্বর সকালে আপলোড করা যাবে বলে মনে করছি।
ভাল থাকবেন।শুভ কামনা রইলো।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:১৬

শামীম সুজায়েত বলেছেন:
বাকি পর্বগুলির লিঙ্ক দিলাম :
পর্ব - ০২
Click This Link
পর্ব - ০৩
Click This Link
পর্ব - ০৪
Click This Link

৭| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪২

মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌ বলেছেন: ভাল লাগলো! পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়!

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০০

শামীম সুজায়েত বলেছেন: ভাই, আগামী কাল সকাল ৯ টায় ২য় পর্ব ছাড়তে পারবো বলে আশা করছি। ভাল থাকবেন।

৮| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: মিনতি লতা নামটা সুন্দর হয়েছে শামীম ভাই।

প্রভাষক সাহেবের পর্যবেক্ষণ শক্তির একটা ছোট বর্ণনা পেলাম ডিউটি অফিসারকে ঘিরে, কারেন্ট না থাকা, উনার পা নাচানো ইত্যাদি। ভালো লেগেছে।

প্রথম প্যারাতেই সিরিয়াস, শঙ্কিত বানান দুইটা ঠিক করে নিয়েন। এটা কী বই আকারে আসবে সামনে ? প্রচ্ছদও ভালো লাগলো।

পরবর্তী পর্ব গুলো সময় করে পড়ে নেবো।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:০৪

শামীম সুজায়েত বলেছেন: কিছুক্ষণ আগে নুহা'র সাথে ছিলাম। তখন পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিলো, আচ্ছা, অপর্ণা কি "মিনতি লতা" পড়ছেনা।

ভাল লাগলো আপনি পড়েছেন বলে। হ্যা, বানানের ক্ষেত্রে আমার দূর্বলতা বেশ ছোটবেলা থেকে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

ভাল থাকবেন। নুহা - ১১ পড়া হয়নি এখনও। আগের পর্বগুলো পড়া হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.