নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুক্তিকন্যা

আমি সুমাইয়া বরকতউল্লাহ। ছাত্রী। লেখালেখি করা আমার ভীষণ পছন্দ। আমি ছড়া, গল্প লিখি। পত্রিকায় নিয়মিত লিখি। লেখালেখি করে বেশ কয়েকটা পুরস্কারও পেয়েছি। শিশু অধিকার রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ (প্রিণ্ট মিডিয়া) পর পর ৩ বার জাতিসংঘ-ইউন

সুমাইয়া বরকতউল্লাহ

আমি সুমাইয়া বরকতউল্লাহ্। ছাত্রী। লেখালেখি করা আমার ভীষণ পছন্দ। আমি ছড়া, গল্প লিখি। পত্রিকায় নিয়মিত লিখি। ব্লগ আমার কাছে একটা বিশাল লাইব্রেরির মতো। অনেক কিছুই শেখা যায় এখান থেকে। ব্লগ পড়তে আমার খুব ভাল লাগে। আমি পড়ালেখার ফাঁকে ব্লগ পড়ি আর মাঝেমধ্যে লিখি। আমি আশা করি যারা ব্লগে লিখেন তাঁদের কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখতে পারবো। আমার প্রকাশিত বইঃ ৩টি। নামঃ ১) ছোট আপুর বিয়ে। সাহিত্যকাল প্রকাশনী থেকে ২০১২ সালে প্রকাশিত। ২) দুই বন্ধু ও মেকাও পাখির গল্প এবং ৩) ভূতের পেটে টুনির বাসা। এ দুটি প্রকাশিত হয়েছে ২০১৩ সালে সাহস পাবলিকশান্স থেকে। \n\nশিশু অধিকার রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ (প্রিণ্ট মিডিয়া) ৪ বার জাতিসংঘ-ইউনিসেফ-এর মীনা মিডিয়া এ্যাওয়ার্ডসহ আরো কিছু পুরষ্কার পেয়েছি। প্রাপ্ত পুরস্কার ১. জাতিসংঘ শিশুতহবিল (ইউনিসেফ)-এর ‘মীনা মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড’ ২০১৩ (১ম পুরস্কার) ২. জাতিসংঘ শিশুতহবিল (ইউনিসেফ)-এর ‘মীনা মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড’ লাভ ২০০৮, ২০০৯ ও ২০১০ (২য় পুরস্কার) ৩. ’ডানো ভাইটা-কিডস’ মাসিক সাতরং’-ব্র্যাকগল্পলেখা প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার (২০০৯) ৪. ঐতিহ্য গোল্লাছুট প্রথম আলো গল্প লেখা প্রতিযোগিতা ২০০৭-এ অন্যতম সেরা গল্পকার পুরস্কার। ৫. প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত লেখা প্রতিযোগিতায় (২০০৭) অন্যতম সেরা লেখক পুরস্কার ৬. প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত লেখা প্রতিযোগিতায় (২০০৮) অন্যতম সেরা লেখক পুরস্কার ৭. ’চিলড্রেন্স ফিল্ম সোসাইটি-বগুড়া’ এর গল্পলেখা প্রতিযোগিতায় ২য় পুরস্কার (২০০৯) ৮. প্রথম আলোর ‘বদলের বয়ান’-এ লেখা প্রতিযোগিতায় (২০০৯) ২য় পুরস্কার ১১. আন্তর্জাতিক শিশু-কিশোর চলচ্চিত্র উৎসব ২০১০-এ গল্পলেখা পর্বে ‘অন্যতম সেরা গল্পকার’ পুরস্কার। ১০. কথাসাহিত্য কেন্দ্র পুরস্কার ২০১১ ঢাকা। ২য় পুরস্কার। ১১. ঐতিহ্য গোল্লাছুট গল্পলেখা প্রতিযোগিতা-২০১২ অন্যতম সেরা গল্পকার পুরষ্কার ১২. হরলিকস প্রথম আলো স্বপএর গল্পলেখা প্রতিযোগিতা ২০১৪ বিশেষ পুরষ্কার।

সুমাইয়া বরকতউল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমায় নাকি ভূতে ধরেছে

০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:১০

পরীাক্ষার রেজাল্ট দিবে। সাজুগুজু করে স্কুলে গেলাম। রেজাল্ট পাওয়ার আনন্দে টগবগ করছি আমরা। রেজাল্টশিটটা হাতে পেয়ে এক নজর দেখেই পাকখেয়ে পড়ে গেলাম মাটিতে।



সহপাঠীরা চিল্লাচিল্লি, হৈ-চৈ আর ছুটোছুটি করতে লাগল। কেউ পানি ঢালছে, কেউ বাতাস করছে। কেউ কান্না কান্না করে বলছে, সুমাইয়া জীবনেও গণিতে এত কম নাম্বার পায় না; সে ৩৯ পায় কিভাবে? এই নাম্বার দেখেই সে পাক খেয়ে পড়ে গেছে।



স্কুলের বৃদ্ধ দপ্তরি চাচা এসে চুপি দিয়ে জ্ঞানীর মত করে বলছে, আরে কিয়ের নাম্বারের কতা কও তোমরা, আমার তো মনে অইতাছে এই মাইয়ারে ভূতে ধরেছে, ভূতে ধরলে মানুষ এম্বায় ঠাডা মরার মতো ঝিম মাইরা পইরা থাহে, মাইয়ার লক্ষণ তো ভাল ঠেকতাছে না গো! যাই, ধর্ম স্যারকে নিয়া আসি।



ধর্ম স্যার এলেন। দেহি সরো তোমরা। কী অইছে দেকতাছি। স্যার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখলেন। তারপর বিড়বিড় করে মুখটা উপরে তুললেন। লম্বা একটা শ্বাস টেনে গাল ফুলিয়ে আমার মুখ বরাবর মারলেন জোরে ফু। এভাবে তিনবার ফু দিলেন। তার ওপর পরা পানির ছিটা। স্যারের ফু-এর সাথে পান-জর্দার ভয়ংকর গন্ধে আমার নাড়িভূড়ি ওলট-পালট হয়ে যাচ্ছে। হাঁচি-কাশিতে আমি ধণুকের মতো বাঁকা হয়ে গেলাম।



কয়েকজন বলছে, হায়! আয়! স্যার, দেখেন, দেখেন সে কেমন বাঁকা হয়ে গেছে, দেখছেন স্যার, দেখছেন?

স্যার একটা ধমক দিয়ে বললেন, আরে ধ্যাত, তরা চুপ কর। না বুইজ্জা আন্দাজে দেকছেন, দেকছেন করিছ না। ফু-এর এ্যাকশান তো হবায় শুরু অইছে, দেহছ না ছেরি এহন কী করে! বাঁইক্কা-বুইক্কা, মুছরাইয়া-কুছরাইয়া ঠিক অয় কেমনে, চাইয়া খালি দেক। ভূত-পেত্নী আছর করলে এহন বাপ ডাইক্কা পালাইবে। ধুনপুন মনে করিছ না, শক্ত ফু দিছি।



কতক্ষণ পরপর পানির ছিটা, নানান কথা আর জর্দার গন্ধে আমি বেহুঁশ হয়ে গেলাম। যা করবে আল্লায়, ডান বাও তাকিয়ে একটা মোচড় দিয়ে উঠে তাওড়াতে তাওড়াতে সোজা বাসায় চলে এলাম।



গভীর রাত। চিন্তায় আমার ঘুম আসছে না। গণিতে ৩৯? ছিঃ। খালি ছটফট করছি। হঠাৎ দরজা-জানালা নড়ে উঠল। একটা ভূত এসে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে! আমি তো ডরে লাফিয়ে উঠলাম। ভূতটা হাসি হাসি মুখে বলে, ভয় পেয়ো না, আমি তোমার কোনো ক্ষতি করব না, এদিক দিয়ে যাচিছলাম তো, চুপি দিয়ে তোমার কষ্ট কষ্ট মুখটা দেখে খুব মায়া হলো আমার। তাই সোজা চলে এলাম। এতো করে কী ভাবছো তুমি? কোনো সমস্যা থাকলে বলো। দেখি, আমি তোমার কোনো উপকার নি করতে পারি।



আমি বললাম, ভূতেরা কি মানুষের উপকার করতে পারে? তোমরা তো খালি ক্ষতি করতে পার। এহ্ তুমি করবে আমার উপকার? যাও এখান থেকে।



ভূতটা হেসে হেসে বলে, তোমরা আমাদের এত খারাপ ভেবো না। আসলে তোমরা আমাদের যত খারাপ মনে কর আমরা তত খারাপ না। আমরা মেলা উপকার করতে পারি। বলেই দেখো না।



আমি বললাম, আমার যে সমস্যা তুমি এর আগা মাথা কিছুই বুঝবে না। এটা লেখাপড়ার ব্যাপার। লেখাপড়া না জানলে কী উপকার করবে তুমি, হেহ্?

ভূতটা বলে, একবার হুকুম করে দেখেন, আমি কি করি।



আমি বললাম, গণিতে সবসময় আমি নাইনটি আপ নাম্বার পেয়ে থাকি। আর এবার ফাইনাল পরীক্ষায় পেলাম থার্টি নাইন। আমার রোল নম্বর কত নিচে নেমে গেছে। আমি মুখ দেখাবো ক্যামনে? তুমি কি পারবে আমার এ সমস্যার কোনো সমাধান দিতে? খালি প্যারাপ্যারি।



নো চিন্তা। আগামীকালই এর সমাধান পেয়ে যাবে তুমি। হাঃ হাঃ হাঃ করে ভূতটা লাটিমের মতো ঘুরতে ঘুরতে মিশে হয়ে গেল।



পরেরদিন স্কুলে গেলাম। সহপাঠীরা দৌড়ে এসে বলল, সুমাইয়া ধর্ম স্যারে ফু না দিলে কালকে তোমার খবর আছিল। অভিভাবক কক্ষ হতে কয়েকজন আন্টি ছুটে এসে চোখ বড় করে বলছে, তোমারে নাকি ভূতে ধরেছিল? ভূতে তোমারে নাকি খাড়াত্তে অক্করে মাটিত ফালাইয়া দিছে? আল্লারে আল্লা, কী বিপদ! ধর্ম স্যার ফু-মন্তর না করলে তো মরেই গেছিলা, লক্ষ টেকার ফু।



চারদিকে খালি ধর্ম স্যারের ফু-এর প্রসংশা। দেখি, দুই মহিলা আর এক পুরুষ লোটা, বদনা আর গ্লাস ভর্তি পানি নিয়ে ’ফু’-এর জন্যে ধর্ম স্যারের পেছনে ছুটছে। ধর্ম স্যার বিরাট ব্যস্ত।



গণিত স্যার থাপ মেরে আমার হাত ধরে বললেন, সুমাইয়া, এসো, এসো। তোমার ব্যাপারটা নিয়ে ভীষণ টেনশানে ছিলাম। বিশ্বাস করো, রাতে আমার একটুও ঘুম হয়নি। আমার বিরাট বড় ভুল হয়ে গেছে। তুমি গণিতে পেয়েছ ৯৩ আর রেজাল্টশীটে উঠেছে উল্টোটা মানে ৩৯। কিযে বিতিকিচ্ছিরি কারবার বল তো! এখন নম্বরপত্র সব ঠিকঠাক করে দিয়েছি। আমার একটু ভূলের জন্য তুমি অনেক বড় কষ্ট পেয়েছ। আই এ্যাম ভেরি সরি সুমাইয়া। দারুন রেজাল্ট করেছ তুমি। কংগ্রেটস।



আমি স্যারের দেয়া অভিনন্দন যত্ন করে তুলে রেখেছি। একটুও ঊনিশ বিশ করিনি। এ অভিনন্দন আমি ভূতকে দেব না ধর্ম স্যারকে দেব-এ নিয়ে মহা সমস্যায় আছি।







































































মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:১৪

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
৯৩!

এত মার্কস কেন?

:)

২| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৫১

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ও ৭ কম! ভবিষ্যৎ অন্ধকার ;)

৩| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:০৯

শুঁটকি মাছ বলেছেন: বাফ্রে বাফ!!!!!!! ৯৩!!!! ম্যালা নম্বর! :-B :-B :-B

৪| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৬

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
আমি তো ডাবল জিরোর কাছাকাছি মার্কস পেতাম! তাও কোনদিন মাথা ঘুরে নাই!

আপনাকে ভূতেই ধরছিল! :D

৫| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭

দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: বেশ মজার গল্প । খুব ভাল লাগল ।

৬| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:০৫

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: নানান কথা আর জর্দার গন্ধে আমি বেহুঁশ হয়ে গেলাম। যা করবে আল্লায়, ডান বাও তাকিয়ে একটা মোচড় দিয়ে উঠে তাওড়াতে তাওড়াতে সোজা বাসায় চলে এলাম

বেহুশ হইয়া বাসায় চলে আসলেন? আপনাকে আসলেই ভুতে ধরেছিল।

৭| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:১৯

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:

B-)) B-)) B-))
ভূত আইতাছে.....

৮| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৫৮

সুমন কর বলেছেন: ভালো লাগেনি।

৯| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:১২

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

ওরেরে ভুই পাইচি ভূত পালা পালা ভূত B-)) B-)) B-))

১০| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:৫৯

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: চারদিকে খালি ধর্ম স্যারের ফু-এর প্রসংশ- আমাদের "অন্ধ সমাজে" এর চেয়ে ভাল কিছু প্রত্যাশা না করাই ভাল।। ধন্যবাদ।।

১১| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:৩৪

পিন্টু রহমান (গল্পকার) বলেছেন: ধন্যবাদ।
ভূত হতে ১০০ হাত দুরে থাকুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.