নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুমন নিনাদ

বাংলা ও বাংলাদেশ- আমার ভাগফল, আমার ভাগশেষ

সুমন নিনাদ

সুমন নিনাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

No woman, No cry: না প্রেমিক না বিপ্লবী

২৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ৩:১৩

তখন আমার আঠার। ঐ যে সুকান্ত লিখেছিলেন “আঠারো বছর বয়স কী দুঃসহ/ স্পর্ধায় নেয় মাথা তোলবার ঝুঁকি/ আঠারো বছর বয়সেই অহরহ/ বিরাট দুঃসাহসেরা দেয় যে উঁকি”, এটা পড়বার পর থেকেই সুকান্ত ভট্টাচার্য আমার মাথায় জেঁকে বসলেন। সহজ বাংলায় সুকান্ত আমার মাথা খেল। ততদিনে জীবনানন্দ, সুনীল, হেলাল হাফিজ, রুদ্র, শামসুর রাহমান, নির্মলেন্দু আর মহাদেব সাহা গোগ্রাসে গিলে গিলে প্রায় মুখস্ত বমি করতে পারতাম। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে আমি সুকান্তে মজলাম।

বলতে সংকোচ নাই, সুকান্তের হাত ধরে আমি ধীরে ধীরে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কাছে পৌছুলাম। শীর্ষেন্দু, সমরেশের পাশাপাশি নিকোলাই মায়াকোভস্কি পড়লাম, ম্যাক্সিম গোর্কি পড়লাম। প্রগতির সেই উইপোকার গন্ধমাখা পুরনো বইগুলা মন্ত্রমুগ্ধের মত পড়তাম। বুর্জোয়া, পুঁজিবাদী, কমরেড, লাল সালাম প্রভৃতি অচেনা শব্দের সাথে পরিচিত হলাম। একসময় পরিচয় হল লেলিনের সাথে। “লেনিন ভুমিষ্ঠ রক্তে, ক্লীবতার কাছে নেই ঋণ, বিপ্লব স্পন্দিত বুকে, মনে হয় আমিই লেনিন” সুকান্তের এই লাইন দুটো বারবার আউরাতাম। চেষ্টা করতাম নিজেকে লেলিন ভাবতে। কিন্তু বেশিদিন ভেবে থাকতে পারলাম না। মুলতঃ হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। একদিন এ্যাশট্রে তে সিগারেটের ছাই ভাঙতে গিয়ে পুরা সিগারেটটাই এ্যাশট্রে তে পড়ে গেল। একই সাথে আমার বিপ্লবী হবার স্বপ্নও এ্যাশট্রে তে চলে গেল। আমি চীন-রাশিয়া থেকে নিজেকে উদ্ধার করে দুখিনী বাংলায় ফিরে এলাম।

অতঃপর আমি প্রেমে পড়লাম। আমি আবার নিজের ঘাড় থেকে সুকান্তের ভূত নামিয়ে জীবনানন্দ ধরলাম। কী থেকে কী হল জানিনা, আমার ডান–বাম, প্রেম- বিপ্লব, কমরেড-প্রিয়তমা, লাল সালাম-মিস ইউ সব একাকার হয়ে গেল।

সে ভুতও একদিন নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে গেল। আমি না প্রেমিক হলাম, না হলাম বিপ্লবী। এরপর থেকে বৃষ্টি নামলে দেয়ালে টাঙ্গানো বব মারলে-র পোস্টারের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে গাইতাম “No woman, No cry”

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.