নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুমন নিনাদ

বাংলা ও বাংলাদেশ- আমার ভাগফল, আমার ভাগশেষ

সুমন নিনাদ

সুমন নিনাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একাত্তরে উপহার পেয়েছি স্বাধীনতা,পঁচাত্তরে শূন্যতা

১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:০২


আমি ব্যক্তিগতভাবে বর্তমান বাংলাদেশের সিংহভাগ রাজনীতিক ও তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শকে সমর্থন কিংবা শ্রদ্ধা করতে পারিনা। কারণ মুখে অনেকেই বড় বড় কথা বলেন, দেশপ্রেমের তুবড়ি ছোটান কিন্তু আড়ালে দেখি তাদের সবারই জিহবা দিয়ে ক্ষমতা আর চেয়ারের লোভে লালা ঝরে। মঞ্চ কাঁপানো প্রতিশ্রুতি, নিজেদের স্তুতি আর অন্যদের বিষেদাগার শুনে শুনে কান ঝালাফালা হয়ে গেছে। আবার অনেকেই আছেন জনসম্মুখে নিজেদেরকে প্রবল দেশপ্রেমিক ফলান, কিন্তু গোপনে গোপনে আবার তাদের সাথে এক ঘাটেই জল খান। ইংরেজীতে এদের হিপোক্রেট বলা হয়, আরবীতে খুব সম্ভবত মুনাফেক কিন্তু বাংলা ভাষায় এদের সঠিক বিশেষণ আমি আজও খুঁজে পাইনি।

আজ আমি তাদের কথা বলব না, আজ বলব বঙ্গবন্ধুর কথা। হয়ত আমি রাজনীতিকদের মত গুছিয়ে বলতে পারবোনা। হয়ত অন্নদাশঙ্কর রায় কিংবা নির্মলেন্দু গুণের মত সাজিয়ে দুই লাইন কবিতাও লিখতেও পারবোনা। “শোন একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের কন্ঠস্বরের ধ্বনি-প্রতিধ্বনি আকাশে বাতাসে ওঠে রণী” গেয়ে হয়ত আপনাদের রোমকূপে শিহরণও আনতে পারবোনা। আমার এই অপারগতাকে আপনারা ক্ষমা করবেন।

শুধু একটা কথা-
You need not to be a Muslim to stand for Palestine; you just need to be a human being.
You need not to be Awamileaguer to love Bangabandhu; you need to be a Bangladeshi.


তাঁকে আমি চোখে দেখিনি। আমার জন্মের এগার বছর আগেই তাঁকে সমূলে পৃথিবী থেকে নৃশংসভাবে উৎপাটন করা হয়। আমার বাবা চাচাদের কাছে তাঁর গল্প শুনেছি। আমি তাঁকে বইয়ে পড়েছি। আমি তাঁর সম্মোহনী ভাষণ শুনেছি। তাঁর নাম আমার সামনে উচ্চারিত হলে আমার শরীরের প্রতিটি ধমনী ও শিরায় এক অভূতপূর্ব আলোড়ন বয়ে যায়। তাঁর সম্মোহনী ভাষণ শুনলে আমার প্রতিটি রোমকূপ যেন শায়িত অবস্থান থেকে হঠাৎ উঠে দাঁড়িয়ে “জয় বাংলা” বলে শ্লোগান দেয়। ১৫ আগস্ট এলে টেলিভিশনে যখন নির্মমভাবে সেই রাতের ধারাবর্ণনা প্রচার করে, আমি অনেক সংগ্রাম করেও আমার অশ্রুনদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধ করতে পারিনা।

এই হল আমার কাছে বঙ্গবন্ধু। বাঁকি অনেকের মত বলবনা উনি আমার আত্মীয়, আমার বাড়ি গোপালগঞ্জেও না, আমার চৌদ্দ পুরুষে কেউ কোনদিন রাজনীতি করেছেন বলেও শুনিনি। তাহলে আমার কেন এমন হয়?

“জয় বাংলা” নামক একটি অলৌকিক শ্লোগান দিয়ে তিনি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে নিষ্পেষিত একটি জাতিকে এক কাতারে দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছিলেন বলে? কৃষকের লাঙ্গলের হাল, মাঝির লগি-বৈঠা আর লাঠিয়ালের লাঠি খেলার লাঠি দিয়ে ট্যাঙ্ক আর মেশিনগানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেও যে স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব- এটা সত্য হয়েছিল বলে? এই দেশের মানুষকে সত্যিকারের স্বাধীনতার স্বপ্ন তিনিই প্রথম দেখিয়েছিলেন বলে? তাঁর আগে কেউ কি এতটা চিৎকার করে বলেছিলেন “আমি বাংলার মানুষের অধিকার চাই”? একজন মানুষ এতটা দৃঢ়চিত্ত, এতটা ত্যাগী, এতটা আবেগী, এতটা সরল, এতটা মহান, এতটা ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এর আগে জন্মেছিলেন কি এই দেশে?

বড্ড বেশী অসময়ে হায়েনারা তাঁকে বিদায় করে দিয়েছে। একাত্তরে তিনি জাতিকে উপহার দিয়েছেন স্বাধীনতা, আর পঁচাত্তরে উপহার দিয়েছেন শূন্যতা।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:০১

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: মুজিবের মত নেতা বার বার জন্মায় না। সমস্যা হচ্ছে, এই দেশে মানুষ নেতাদের খুব দ্রুত দেবতা বানায়। আর মানবসৃষ্ট সকল দেবতা এক সময় অপদেবতায় পরিনত হয়। মহান এই নেতা যা অর্জন করার তার জীবিত কালেই অর্জন করেছেন, যা খোয়াবার তা তার জীবিত কালেই খুইয়েছেন।

আমাদের দেশও জাতির সমৃদ্ধি এবং কল্যানের জন্য সকল রাষ্ট্র নেতার অবদান আমরা যতদিন না স্বীকার করব, ততদিন আমাদের অবস্থার কোন উন্নতি হবে না।

বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধা। আশা করি ইতিহাস থেকে আমরা সবাই শিক্ষা নিব। ইতিহাস অনেক সময় অনুপ্রেরণার এবং অনেক সময় ভীষন নির্মম ও বটে।

২| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৩৪

সুমন নিনাদ বলেছেন: অনলাইন নিউজের কমেন্টগুলা দেখেছেন? সেখানে বেশিরভাগ মন্তব্য বঙ্গবন্ধুকে অপমান করে, ন্যাক্কারজনকভাবে আক্রমণ করে। ওরা সবাই বাংলাদেশ'এ বঙ্গবন্ধুর অবদান জানে, কিন্তু অস্বীকার করে। এই বিরূপ জনগোষ্ঠীকে আপনি কিসের শিক্ষা নিতে বলছেন ভাই?

৩| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:১৯

রাজজাকুর বলেছেন: আমি বঙ্গবন্ধুকে নেতা মানি, আমার মুজিব কোর্ট লাগে না।

যেই মানুষটার হাতের ইশারায় বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। তাঁর নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদা তোলা তেমন কঠিন কিছু নয়! তাইতো চাঁদা তোলাকে বৈধতা দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুর নাম ও ছবি ব্যবহার করা হয়। খুব হাস্যকর লাগে যাদের নাকি চাকুরী প্রয়োজন তারাও একটু ইশারায় লোকেদের দেখানোর জন্য ওয়ালে কিংবা প্রফাইলে বঙ্গবন্ধুর ছবি ইউজ করছেন। যারা নাকি নির্বাচনে দ্বাড়াবেন তারা কাজ দিয়ে নয় বঙ্গবন্ধুর ছবি ও নাম দিয়ে পরিচিত হওয়ার চেষ্টায় ব্রত। ইদানিং বঙ্গবন্ধু মসজিদের নাম করেও তোলা হয় চাঁদা। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এধরনের বাজে চর্চা বন্ধ করতে হবে। বলি, চাকুরী প্রয়োজন তাহলে পড়েন, নেতা হতে চান, নির্বাচনে জয়ী হতে চান কাজ করেন, ত্যাগ স্বীকার করেন, অহেতুক চাঁদা চাইতে আসবেন নানা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মেনে চলুন। শুনুন মুজিব কোর্ট পড়ে হাঁটাচলা করা মানেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে চলা নয়। কোন বিশেষ রাজনৈতিক দলের অপকর্মকে বৈধতা দেয়ার পরশপাথর বঙ্গবন্ধু নয়। বঙ্গবন্ধু শুধু একটি রাজনৈতিক দলের নন, বঙ্গবন্ধু সবার।

যদি কেউ প্রশ্ন করে বসেন, এই ছেলে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ কী? এর জবাব কি হবে? প্রশ্ন ভীষণ জটিলতর! বলছি আদর্শের কথা কিন্তু নিজের কাছে স্পষ্ট নয়। হয়তো একটু সামলে উঠার জন্য বিভিন্ন ঘটনার অবতারণা করে আবোলতাবোল বকে বলার চেষ্টা করব, বাংলাকে ভালবাসা বাংলার মানুষকে ভালাবাসা, আপসহীন রাজনীতি... ব্লা...ব্লা। কিন্তু উত্তর কতটা সঠিক? কেন আমি আজো মোটাদাগে স্পষ্ট করে বলতে পারি না, এইটা এইটা ওইটা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তো কম রিসার্চ হয় নাই কিংবা হচ্ছে না, তাহলে...? হ্যাঁ বিভিন্ন বইপত্রে এসব বিষয়ে কথাবার্তা আছে, কিন্তু এও সত্য যে একজন লেখক যখন লিখেন তখন শতভাগ নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে লিখতে পারেন না, নিজের মতামতের প্রভাব তার লিখায় প্রকটতর হবার সম্ভাবনা থাকে বৈ কি। এজন্যই তো আমাদের ইতিহাস খানিকটা খন্ডিত বিভক্তিত ও বিকৃত বলে, অনেকে দাবি করেন। যেহুতু রাষ্ট্র এই শব্দগুলো (যেমন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ইত্যাদি) অহরহ ব্যবহার করছে তাই তথ্য মন্ত্রনালয় বা অন্য যে কোন প্রতিষ্ঠান এই শব্দগুলোর স্পষ্ট ব্যখ্যা দিয়ে তরুণ প্রজন্মের জানার তৃষ্ণা মেটানো হোক, এই দাবি করি।

আমি দেখতে গিয়েছিলাম ধানমন্ডির ৩২ নাম্বার বাড়িতে। এখনো মনে হলে ফিনকি দিয়ে চলে আসে চোখে পানি। সমস্ত শিরা উপশিরায় জমা হয় তীব্র ঘৃণা আর রক্ত যেন বারুদেরমত জ্বলে উঠে, ক্রোধে। চোয়াল ভীষণ শক্ত হয়ে উঠে মনেহয় হত্যাকারীরা যদি এই চোয়ালের মাঝে পড়ত তবে গুড়া হয়ে যেত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি আপনার কষ্ট বুঝি। আপনাকে সান্ত্বনা দিচ্ছি না, শুধু আশ্বস্ত করছি নিশ্চয় এর উত্তম বদলা সৃষ্টিকর্তা আপনাকে দিয়েছেন ও দিবেন।


কাঁদো বাঙ্গালী কাঁদো! কাঁদলে মন হালকা হয় তাই? কে বলেছে, হত্যাকান্ডের বিচার করলেই কলঙ্কমুক্ত হওয়া যায়? কলঙ্কের দাগ যা একবার পড়ে যায় তা কখনই মুছা যায় না, চোখের পানি দিয়েও এদাগ তোলা যায় না। যে জাতী তার পিতাহত্যা করতে পারে, হত্যার পর প্রতিবাদ করে না, সে জাতী অপরাধী, মারাত্মক অপরাধী। অপরাধীর কান্না সোভা পায় না। এর শাস্তি একটাই, তুমি তোমার পিতাকে স্মরণ করতে পারবা, কিন্তু কাঁদতে পারবা না। কাঁদতে না পারার কষ্টই তোমার শাস্তি। কোন অপরাধী যেন কেঁদে মন হালকা করতে না পারে। অপরাধবোধ নিয়ে আমাদের বাঁচতে হবে। একান্ত চোখে বেয়ে পানি চলে আসলে চোয়াল শক্ত করে থাক, খবরদার টু শব্দ করবে না। খবরদার, শব্দ করবে না। এটা থিয়েটার নয়, কেউ তোমার অভিনয় দেখতে আসে নাই। কাঁদতে না পারার কষ্টই পারে তোমাকে শুদ্ধ করতে।

বঙ্গবন্ধু তোমার মৃত্যু আমাকে অপরাধী করে দেয়। আমার চোখ বেয়ে নামে ঝর্ণাধারা, আমি টু শব্দও করি না।

আল্লাহ এই মানুষটাকে বেহেস্ত দিয়া দাও।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.