নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ছোট লোকের মাঝে আরও ছোট লোক , আমি পশ্চাদপদদের মাঝে আরও পশ্চাদপদ।
অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হয় । অন্যায় তাতে কমুক বা না কমুক তবুও প্রতিবাদ করতে হয় । এটাই জেনে এসেছি । এবং যিনি বিবেকবান , তার কাছে ছোট হোক বড় হোক - অন্যায় , অন্যায় ই থাকবে ।
জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে বিশ্ব রেকর্ড করতে গিয়ে জাতীয় পতাকা পদদলিত হয়ে , জাতীয় পতাকার যে অবমাননা হল তা অন্যায় । বিশ্ব রেকর্ডের সাফাই গাইতে গিয়ে , পতাকার অবমাননা কে যদি সমর্থন করেন কিংবা চুপ থেকে মৌন সম্মতিজ্ঞাপন করেন আবার এক ই সাথে নিজেকে চেতনাধারী বা বিবেকবান বলে জারিজুরি করেন , সেটাও অন্যায় ।
কেউ কেউ বলছেন , কত টাকাই তো জলে যায় , দুর্নীতি , লুটপাটে হারিয়ে যায় । ৫০ কোটি টাকায় না হয় করলাম একটা বিশ্ব রেকর্ড । এতে দোষের কি ?
শুধু বিশ্ব রেকর্ডের দোহাই দিয়ে পতাকার অবমাননা কে পাত্তা ই দিচ্ছেন না । অনেকে অনেক যুক্তি নিয়ে আসছেন অবমাননার সপক্ষে ।
আপনারা তো খুব বিবেকবান , আপনারাই বলুন , ছোট্ট অন্যায় বা অসঙ্গতি কে কি গোনায় ধরা বাদ দিয়ে দেব ? তাহলে আমাকে কথা দিতে হবে ৫০ কোটি টাকার নিচের ছোট কোন সমস্যা ছাড়া আপনারা আর কথা বলবেন না ।
কোটি কোটি টাকা খরচ করে যে রেকর্ড আজ গড়া হল , তা যদি শহীদ মিনার কিংবা স্মৃতি সৌধের মত চিরস্থায়ী হত , তাহলেও মানা যেত (যদিও তাতেও আমার নৈতিক সমর্থন নেই) ।
পাকিস্তান ঘোষণা দিয়েছে তারা অচিরেই ৫ লাখ মানুষ নিয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার বিশ্ব রেকর্ড করবে । আমাদের রেকর্ড আর কেউ মনে রাখবে না । যে রেকর্ড দুই মাস ও টেকে না সে রেকর্ডের পিছনে এত টাকা খরচের মানে কি ?
রেকর্ড না গড়ে যদি শুধু জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার জন্য ও ডাকা হত তাহলে কি আমাদের দেশপ্রেম খুব কমে যেত ? বিশ্ব রেকর্ড ছাড়া জাতীয় সঙ্গীত গাইলে কি দেশ প্রেম থাকে না ?
পতাকা এমন ই সম্মানিত জিনিশ যে তা ছিড়ে গেলে মাটিতে পুতে ফেলতে হয় । পোড়া কিংবা ফেলে দেওয়ার ও নিয়ম নেই । পতাকার অবমাননা করলে দেশদ্রোহী ও হয়ে যেতে পারেন । জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন হতে পারে কিন্তু পতাকার কখনও পরিবর্তন হয় না । অবশ্যই পতাকা জাতীয় সঙ্গীত থেকেও বৃহত্তর । সেই পতাকার বিন্দুমাত্র অবমাননা সহ্য করা যায় না ।
বিভিন্ন ছবিতে দেখা যাচ্ছে মানুষ বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা পদদলিত করে চলে যাচ্ছেন । কেউ একজন ছবি তুলে সেই অসঙ্গতি দেখিয়ে দিলেন , এখন সেটা দোষের হয়ে গেল । এবং আসল কথায় না এসে আমরা বিভিন্ন ভাবে ত্যানা প্যাচানো শুরু করে দিলাম । একটা অন্যায় যে হয়েছে , সেটার জন্য দুঃখ প্রকাশ না করে আমরা যিনি ছবি তুলেছেন তার পিছনে লেগে গেলাম ।
অসঙ্গতি কে অঙ্গুলিনির্দেশ করলেও এখন দোষ । ছবি তুলে ওই লোক এখন ঘৃণার সম্মুখীন হচ্ছেন । এভাবে চিন্তা করলে অসঙ্গতি তুলে ধরার কিন্তু আর কোন দরকার নাই । অসঙ্গতি দেখানো মানেই সেই অসঙ্গতির সমাধা করে ফেলা নয় । অসঙ্গতি তুলে ধরার মানে সবাইকে সচেতন করা । সবাই মিলে সমাধান করা । পতাকার অবমাননা খুব ই কষ্টের । সেই অবমাননার পক্ষে গুনগান করা টা আরও কষ্টের ।
এই মুহূর্তে হয়তো অনেকেই প্রস্তুত হচ্ছেন আমাকে গালি বা ট্যাগ দেওয়ার জন্য । আমিও প্রস্তুত । পতাকার অবমাননা দেখে দুঃখ পাওয়ায় , এবং প্রতিবাদ করায় আমাকে যদি কোন ট্যাগ নিতে হয় , আমি প্রস্তুত ।
এবার একটু অন্য কথায় আসি ।
অনেকেই বলছেন ৫০ কোটি টাকা আর এমন কি ! কত নামে বেনামে খরচ হয় । ৫০ কোটি টাকায় কত টুকুই করা সম্ভব ?
হ্যা , আমি জানি । ৫০ কোটি টাকায় কত টুকু ই বা করা সম্ভব । হয়তো একটা ব্রিজ এর কাজ ও ঠিক মত হয় না , রাস্তা ঘাট করতেও হয়তো এর বেশী টাকা লাগে । ৫০ কোটি টাকা হয়তো বড় রকমের কোন অবকাঠামো তৈরি করার জন্য ও যথেষ্ট না ।
কিন্তু একবার একটু অন্য ভাবে ভাবি । দেশে যুদ্ধাহত , বৃদ্ধ , অক্ষম অনেক মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন । তাদের পরিবারের অবস্থা খুব ই করুণ । সরকারের ভাতায় সংসার চলে না ।
৫০০০০০ (পাঁচ লাখ ) টাকার সঞ্চয় পত্র কিনলে প্রতি মাসে ৬০০০ টাকা পাওয়া যায় । আর টাকা টাও টাকার জায়গায় সঞ্চিত থাকে । এই যে পঞ্চাশ কোটি টাকা খরচ করা হল ক্ষণস্থায়ী এক রেকর্ডের পিছনে সেই টাকা দিয়ে এক হাজার (১০০০) মুক্তিযোদ্ধার পরিবার কে সচ্ছল করা যেত ।
তাদের ছেলে মেয়েকে চা বেচতে হত না , ভিক্ষা করতে হত না । যে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত চেতনার কথা বলেন , অন্তত কিছু টা হলেও ঋণ শোধ হত । মানবতা শান্তি পেত ।
আমি হয়তো ভুলেই গিয়েছিলাম আপনারা লাখে বা কোটির নীচে হিসেব করেন না । হাজারের মুল্য আপনাদের কাছে নেই । কিন্তু এক হাজার মুক্তিযোদ্ধার পরিবার আমার কাছে অনেক কিছু । এক হাজার মুক্তিযোদ্ধার পরিবার সুখে শান্তিতে দু মুঠো খেতে পারছে , এটা আমার কাছে বেশী আবেগের ।
তার মানে , আমরা কি দেশের জন্য এমন কোন কিছুই করবো না ? অবশ্যই করবো , কেন করবো না ? এই যে বিশ্ব কাপ হচ্ছে আমার দেশে , এটা কি খুব বড় কিছু নয় ?
এখনও আমাদের বিদেশী সাহায্যে চলতে হয় , ৫০ কোটি টাকা খরচ করে ক্ষণস্থায়ী বিশ্ব রেকর্ড গড়ার মত বিলাসী অবস্থানে আমরা এখনও পৌছাই নি । বিরিয়ানি আর ডাল-ভাতের পার্থক্য টা বুঝতে শিখতে হবে । একটা বিলাসিতা , আরেকটা প্রয়োজন । চেতনার জারুজুরিটা না হয় দেশ কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরের সময়ের জন্যই রাখি !
২৭ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:২১
মহাজাগতিক পাগল বলেছেন: ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়ার জন্য । আমাদের অবস্থা হচ্ছে - নাই কাজ তো খই ভাজ ।
২| ২৭ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:২৯
অণুষ বলেছেন: আপনার এই মহান ভাবনা তাদের মাথায় ধুকবেনা। আমরা শুধু বলে আর শুনে যেতে পারবো, বাস্তব প্রয়গ বোধ করি হবে না।
এই লেখটা পরার অনূরোধ রইল।
৩| ২৭ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৩২
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: টিক বলেছেন...আমাদের কাছে দেশপ্রেম কেবল একটি পন্য মাত্র!
৪| ২৭ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:২২
দাদা- বলেছেন: এমন টা হবে জানাই ছিল । যত্তসব পাগল ছাগলের কৃত্তি ।
৫| ২৭ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:২১
আমিনুর রহমান বলেছেন:
সত্যি বলতে কি আমার, আপনার এবং আমাদের পতাকা পাড়ালে অবমাননা হতে পারে সেই সচেতনা নাই কিংবা একটা লাল-সবুজ পতাকার প্রতি ভালোবাসার বোধই তৈরি হয়নি। যেমন তৈরি হয়নি বিশেষ দিন ছাড়া জুতা সহ শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধে উঠা শহীদের অবমাননা করা। এই থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি। আশে পাশের মানুষকে সচেতন করতে পারি। বলতে পারি পতাকার গুরুত্ব আমাদের জীবনে কতখানি।
পোষ্টে +++
৬| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৫:১৬
ডিমলু বলেছেন: টাকা দিয়ে লোক সমাগম করা যায়, বড়জোর গিনেস বুকে নাম লেখানো যায়, কিন্তু দেশপ্রেম কেনা যায় না।
৭| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১১
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বিশ্ব রেকর্ডের সাফাই গাইতে গিয়ে , পতাকার অবমাননা কে যদি সমর্থন করেন কিংবা চুপ থেকে মৌন সম্মতিজ্ঞাপন করেন আবার এক ই সাথে নিজেকে চেতনাধারী বা বিবেকবান বলে জারিজুরি করেন , সেটাও অন্যায় ।
ধিক্কার নিজেরে! চেতনারে!!! রাষ্ট্রকে!!!! বীর শ্রেষ্ঠ আব্দুর রউফের শাহাদাৎ বার্ষিকীতে ছিলনা কোন রাষ্ট্রীয় কর্মসূচী!!!!!!!!!!!!!!
চেতনাবাজরা এ ব্যাপারে স্পিকটি নট!!!
এখানে যে ধান্ধা নেইরে ভাই!!!! মন্ত্রীর ফার্ম বিনা লাভে বীর ম্রেষ্ঠদের এই ইভেন্ট করতে যাবে কেনু বলেন!!!!
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:০৮
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: সহমত আপনার সাথে।