নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাগলে কিনা বলে !!!

পাগলের চিকিৎসা হয় না , পাগলামির ওষুধ নাই ।

মহাজাগতিক পাগল

আমি ছোট লোকের মাঝে আরও ছোট লোক , আমি পশ্চাদপদদের মাঝে আরও পশ্চাদপদ।

মহাজাগতিক পাগল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুভি রিভিউঃ স্ট্রেইনজার দ্যান ফিকশন (২০০৬)

২৪ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:০৩




আজ আমার ২৫ তম জন্মদিন। আমার জন্মদিন কারো মনে থাকে না তাই একা একাই কাটাই সারাটা দিন। আমি মাত্র কিবোর্ড হাতে নিয়ে বসেছি কিছু লিখব বলে। যে মুহূর্তে কি বোর্ডের বাটনে আংগুল ছোয়ালাম তখন ই কানের ভেতর এক মধ্য বয়সী মহিলার স্পষ্ট গলার আওয়াজ ভেসে এলঃ "লিখব লিখব করে কিবোর্ড নিয়ে কিছুক্ষন বসে থাকার পর সুনাম কি বোর্ডে আংগুল বসাল... " আমি তৎক্ষণাৎ এদিক ওদিক তাকালাম দেখার জন্য । কোন মানুষ পেলাম না। কাউকে অবশ্য দেখার কথা নয় কারণ আমার রুমে আমি একাই থাকি। মনের ভ্রান্তি ভেবে আমি আবার লেখায় মনোযোগ দিলাম। এক লাইন লিখেও ফেললাম। তবে লাইন টা পছন্দ না হওয়ায় ব্যাকস্পেস চেপে লাইনটা মুছে দিলাম। লাইনখানা মোছা মাত্রই আবার সেই আওয়াজ কানে এলঃ "কিছুদূর লিখে পছন্দ না হওয়াও পুরো লাইনটা ব্যাকস্পেস চেপে মুছে দিল সুনাম।" কে জানত এই ব্যাকস্পেস এর সাথে সাথেই পরিবর্তিত হতে যাচ্ছে সুনামের ২৫ বছরের জীবন। "

এবার আমি সত্যি সত্যি ঘাবড়ে গেলাম। আমার প্রতিটা কাজ অদৃশ্য কেই একজন বর্ণনা করে যাচ্ছেন। আবার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মন্তব্য ও করছেন। এটা ঘাবড়ানর মতই বিষয়। আমি এবার ভয়ে বসে রইলাম। আওয়াজ টা আবার শুরু করলঃ "সুনাম একদৃষ্টে বসেই রইল.... "

এবার আসি আসল রিভিউতে। আমার লম্বা ভূমিকার জন্য দুঃখিত। একটু নাটকিয়তা আনার জন্যই নিজের সৃষ্ট সাসপেন্স তৈরি করলাম । কারণ যে সিনেমা নিয়ে আজ লিখতে যাচ্ছি তার ভেতরেও রয়েছে এমন অনেক নাটকিয়তা। সিনেমার নাম " স্ট্রেইনজার দ্যান ফিকশন "। বাংলা করলে দাঁড়ায় "গল্পের চেয়ে অদ্ভুতুড়ে" । এমন নামকরনের কারণ গল্পের নায়ক হ্যারল্ড এর জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো কল্পিত কোন গল্পের চেয়েও অদ্ভুতুড়ে ছিল।

IRS এর ইনকাম ট্যাক্স এজেন্ট হ্যারল্ড ক্রিক ১২ বছর যাবত এক ই রুটিন মাফিক চলতেন। ঠিক সাতটায় ঘুম থেকে ওঠা, গুনে গুনে ঠিক ৩২ বার ডানে বামে এবং ঠিক ৩২ বার উপরে নিচে ব্রাশ করা, ৮ টার বাস আসার ঠিক তিন মিনিট আগেই বাস স্টপেজে অপেক্ষা করা, প্রতিদিন গড়ে ২.৪৭ টা ফাইল অডিট করা, ঠিক ৩৭ মিনিটের লাঞ্চ টাইম এবং ৩ মিনিটের কফি ব্রেক, ছয়টায় বাসায় ফেরা, রাত আট টায় একা একা ডিনার করা, এবং রাত ১১ টা ১৩ মিনিটে বিছানায় ঘুমাতে যাওয়া ছিল তার নিয়ম মাফিক রুটিনের অংশ।

কিন্তু এক বুধবার সকালে হ্যারল্ড ক্রিকের লাইফ পালটে গেলো। ঠিক একটু আগে ভূমিকায় আমি যে একটা মধ্যবয়সি গলার স্বর এর কথা বললাম তেমন ই একটা স্বর হ্যারল্ড কে ঠিক এক ই ভাবে অনুসরণ করা শুরু করল। হ্যারল্ড যা করে তার সব কিছু সেই কন্ঠস্বর তাকে বর্ণনা করে যেতে থাকল। যেন হ্যারল্ড নিজেই কোন বইয়ের পাতা আর মধ্য বয়েসী কোন মহিলা পাঠক সেই বই অন্যদের পাঠ করে শোনাচ্ছেন।

কিছুদিন এভাবে যাওয়ার পর হ্যারল্ড দু একজন বন্ধু বান্ধব কে নিজের সমস্যার কথা বোঝানর চেস্টা করেন। এত অদ্ভুত সমস্যার কথা কারোর ই জানবার কথা নয়। সবাই হ্যারল্ড কে মনঃ বিজ্ঞানী দেখানোর কথা বলে। তবে ঘটনাক্রমে মনঃ বিজ্ঞানীর পরিবর্তে হ্যারল্ডের দেখা হয় ইংলিশ লিটারেচার এর এক প্রফেসর এর সাথে।

একটি বেকারী শপ এর বকেয়া ট্যাক্স এর অডিট করতে গিয়ে হ্যারল্ড এর পরিচয় হয় দোকানের মালকিন মিস প্যাসকেল এর সাথে। তিক্ততা দিয়ে পরিচয়ের শুরু হলেও ধীরে ধীরে সেই পরিচয় মিস্টি মধুর প্রেমের সম্পর্কে পরিণতি পায়।

মধ্যবয়সী সেই মহিলার কণ্ঠস্বর কিন্তু হ্যারল্ডের পিছু ছাড়ে নি। অনবরত সব কিছু বর্ণনা করেই যাচ্ছে। নিজের ধারণা আর লিটারেচার এর প্রফেসর এর সহায়তায় হ্যারল্ড বুঝতে পারল যে হয় কোন এক ঔপন্যাসিক যা লিখছেন তা ই হ্যারল্ডের জীবনে ঘটছে নয়ত হ্যারল্ডের জীবনে যা ঘটছে তা ই সেই ঔপন্যাসিক লিখছেন।

প্রথম ধারণ সঠিক হলে হ্যারল্ড শুধুই ঔপন্যাসিক এর হাতের পুতুল ছাড়া আর কিছুই নয়। এদিকে মহিলার ক্রমাগত বর্ণনায় হ্যারল্ডের ধারণা পরিষ্কার হয়ে গেল যে ঔপন্যাসিক ই হ্যারল্ডের হর্তাকর্তা এবং হ্যারল্ড তার কোন উপন্যাস এর নায়ক যার কি না মৃত্যু মত ট্র‍্যাজেডি নিশ্চিত ভাগ্য হতে যাচ্ছে।

মিস প্যাসকেল এর সাথে মাত্রই সম্পর্কে জড়িয়েছেন , সবে মাত্র ভাল কিছু একটা তার জীবনে ঘটতে চলেছে আর এখনই তার মাথার উপর ঘুড়ছে মৃত্যুর হাতছানী।

কি করবে এখন হ্যারল্ড? চুপচাপ বসে থাকবে নাকি খুজে বের করবে কে সেই ঔপন্যাসিক কে? শেষ পর্যন্ত কি হ্যারল্ড আসলেই বেচে থাকতে পারবে না কি তাকে বরণ করতে হবে উপন্যাসের ক্লাসিক মৃত্যু?

এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে দেখতে হবে অসাধারণ সাসপেন্সে ভরা ফ্যান্টাসি রোমান্টিক ড্রামাঃ স্ট্রেইঞ্জার দ্যান ফিকশন।

সিনেমার অসাধারণ গল্প বলার ধরণ আর উইল ফেরেলের ছকের বাইরে এসে করা অভিনয় দেখে এক মুহুর্তের জন্য আনমনা হবার সু্যোগ নেই। অভিনয়ে আরো আছেন ডাস্টিন হফম্যান , ম্যাগি গিলেনহল (সুইডিশ উচ্চারন হুলেনহুলা ) , এমা থম্পসন , কুইন লতিফা সহ আরো অনেকে । আইএমডিবি রেটিং লেখার শেষে সংযোজিত হল ।

সিনেমা শেষে অসাধারণ একটা আবেগ আপনাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেধে ফেলবে যেখান থেকে আপনার নিজের ই আর বের হতে ইচ্ছে করবে না। সবাইকে দেখার আমন্ত্রণ রইল।

[ IMDB Rating: 7.6
IMDB Link: http://www.imdb.com/title/tt0420223/ ]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১০:৪১

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: দারুন লিখেছেন, আমার এখনই মুভিটা দেখে ফেলতে ইচ্ছে করছে। দেখি আজকেই দেখার ব্যবস্থা করব নে।

এবার একটা ভিন্ন প্রসঙ্গ। সাম্প্রতিক সময়ে কপিরাইট জনিত কিছু বাধ্যবাধকতার কারনে পোস্টে পাইরেটেড বা টরেন্ট ডাউনলোড লিংক সংযুক্ত করা কে অনুমোদন করা হচ্ছে না। তাই অনুগ্রহ করে লিংকটি সরিয়ে নিন।

২৭ শে জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫২

মহাজাগতিক পাগল বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ । আমার আসলে নিয়ম টা জানা ছিল না । আমি লিঙ্ক সরিয়ে নিয়েছি ।

২| ২৫ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৪

সুমন কর বলেছেন: বেশ কিছুদিন আগে দেখেছিলাম, চমৎকার মুভি।

রিভিউ ভালো হয়েছে।

২৭ শে জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫২

মহাজাগতিক পাগল বলেছেন: ধন্যবাদ । মুভিটা দেখার পর পর ই আমার পছন্দের তালিকায় শুরুতে চলে এসেছে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.