নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আসসালামু আলাইকুম\nআমি আপনাদের সান ড্যান্স aka স্যাম রহমান :)

সানড্যান্স

এই যে ব্যাস্ততা বাড়ছে, এই যে নিকোটিন!জ্বালিয়ে দেয়া সিগারেটে ধোয়াচ্ছন্ন বেডরুমপ্রতিদিন ভাল্লাগেনার ছাই জমে এস্ট্রেতেব্যাস্ততার কালচে লাইটার, এই যে অলস ঘুম!এক কপি স্বপ্ন আসে সৌজন্য কপি হয়েসারারাত ঘুমিয়ে থাকি প্রচ্ছদে হাত বুলিয়ে।কাশাফাদৌজা নোমান

সানড্যান্স › বিস্তারিত পোস্টঃ

আষাঢ়ে ভূতের গল্প!

১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:১৭

এরকম আষাঢ় মাসের দিন। বিকাল থেকে টিপ টিপ বৃষ্টি। আমি, জুনায়েদ ভাই আর আশিক ভাই শহরের ব্যস্ততম ইমার্জেন্সীতে বসা। জুনায়েদ ভাই ছিলেন আসরের মধ্যমনি। রহ্তালের দিন ছিল সম্ভবত। জুনায়েদ ভাই কে ঠিক বিশ্বাস ও করতাম না, আবার উনাকে অবিশ্বাস করাও টাফ। এরি মাঝে সিস্টার থিওডোরা কোন কোম্পানীকে সিস্টেম দিয়ে একগাদা মুড়ি চানাচুর আর চায়ের ব্যবস্থা করেছেন, আমি হাভাতের মত মুড়ি চাবাচ্ছি আর চিন্তা করছি রোগি কম, তাই কি করা যায়। এদিকে জুনায়েদ ভাই ভূত বিশেষজ্ঞ হিসেবে অলরেডী স্যারদের কাছে নিজের সুনাম পাকা করে ফেলছেন। তো আমি আর আশিক ভাই বললাম জুনায়েদ ভাই, এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করলে হয় না?

জুনায়েদ ভাই দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বললেন, তোরে তো বলতে ইচ্ছা হয় না, তুই খচ্চরের মত হাসিস শুধু, এটুকু বলতেই বললাম কথা দিচ্ছি, আজ হাসব না! জুনায়েদ ভাই চায়ে সুরুক সুরুক টান দিয়ে গল্প বলা শুরু করলেন।

আমি তখন মাত্র ইন্টার্ণী করতেসি, সিলেট শহরের এক প্রান্তে আমার বাসা। বছর খানেক হয় বিয়ে করসি, নতুন সংসার, একটা মাত্র পিচ্চি। খ্যাপ আর জব এই দুটো মিলিয়ে ভালই ইনকাম। যে বাসায় থাকতাম, সেই বাসায় আমি তোর ভাবী আর পিচ্চি, এই তিনজনের সংসার। প্রথম কিছু খেয়াল করিনি। তোর ভাবীর বাসা হল আবার মৌলভীবাজার। দুই ঈদে শশুর বাড়ি গেলাম, প্রথম ঈদের পর বাসায় এসে দেখি দরজা জানালা সব হা করে খোলা, এমন কী মেইন দরজায় ছিটকিনি নাই। ব্যাপারটা অস্বাভাবিক, তবুও ইগ্নোর করলাম। পরের ঈদে যাওয়ার আগে নিজ হাতে ছিটকিনি দিলাম, আবারো এসে দেখি সব হাট করে খোলা। অথচ আগের বারের মত সব খোলা!

জুনায়েদ ভাই চোখ সরু করে আমার দিকে তাকালেন, আমি দাতে দাত চেপে রাখছি, ফিচলামি করাটা ঠিক হবে না। আবার দম নিয়ে শুরু করলেন জুনায়েদ ভাই। আশিক ভাই এরি মাঝে টেবিলের নীচ দিয়ে আমার পায়ে লাত্থি মারছেন। আমরা তন্ময় হয়ে শুনছি, রোগী দেখছি।

এরপর একদিন রাতের বেলা, আমি টিভিতে খবর দেখতেছি, তখন রাত ১১টা হবে। তোর ভাবী আর পিচ্চি ঘরে শোয়া, হঠাত শুনি বিকট হো হো হা হা শব্দ, আমি দৌড়ে গেলাম তোর ভাবীর রুমে, কি অদ্ভুত, তোর ভাবী আর বাচ্চা দেখি সাউন্ড স্লীপে, বাসায় আর কেউ নাই! কে হাসল? সবাইকে জাগালাম, সবাই অস্বীকার করতেছে! হাও ফানি?

এবার আশিক ভাই পিন মারল, জুনায়েদ ভাই আপনার হ্যালুসিনেশন হয় নি তো? আমি অন্যদিকে তাকালাম, জুনায়েদ ভাই আমার গলা নকল করে বলল-আমি ভাল মন্দ খেয়ে তোর ভাবীর সামনে যাই না, খুব বেশী হলে ছিগ্রেট!

আমি এবার চেতে গেলাম, ভাই আমারে নকল কর ক্যান? জুনায়েদ ভাই বলল, এই হস্পিটালের ইতিহাসে তুই ছাড়া আর কেউ প্রফেসর সালেহ কে ওটি নোট লিখতে বলে নাই! (উল্লেখ্য ওটি নোট লিখে অলয়েজ জুনিয়র ডাক্তার, আমাদের হাস্পাতালের সবচাইতে বদরাগী প্রফেসর সালেহ কে একদিন ওটির মাঝে আমি বলছিলাম, স্যার আপনি ওটি নোট লেখেন, আমি টয়লেটে যাব, আমার পাইখানা ধরসে, ইউ নো হাগার বাঘার ডর নাই :p সালেহ স্যার সকালের ক্লাসে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে ২৫০-তিনশ ডাক্তারের সামনে সে কথা বলছেন!)

তারপর শুন, আমি পাক কোরানের আয়াত লিখে সব দরজা জানালায় দিলাম, চিন্তা করলাম যত যাই হোক,এবার সুরক্ষা। কিন্তু কি হল বুঝলাম না। সেবার খুব শীত পড়ল, কুয়াশায় সব ভিজে নষ্ট হয়ে গেল। অনেকদিন অস্বাভাবিক কিছু না ঘটায় সব ভুলতে বসেছিলাম, কিন্তু ওরে না রে! আমার বাচ্চা কে কিছুতেই একা ঘুম পাড়ায়ে রেখে যেতে পারি নাই। যতবার ই আমি কিংবা তোর ভাবী ঘুম পাড়ায়ে যাই, ততবার ই বাচ্চা ঘুম থেকে উঠে যায়, আর তলপেটে হাত দিয়ে বলে ব্যথা, ব্যথা!

এবার আমি বললাম-হয়ত ভাই বাচ্চার পেট খারাপ করছিল? জুনায়েদ ভাই বাকাঁ হাসি দিল! শুন, আমার বাচ্চার পেটে রেড-ইনফ্লামড পাচ আঙ্গুল সহ হাতের ছাপ, টানা পাচ দিন এযিথ খাওয়াইলাম, দেন গেল সেই দাগ!

আশিক ভাই আবার পিন মারে, ভাই জীনে থাপ্পর দিলে কি এযিথ (এযিথ্রোমাইসিন-এন্টিবায়োটিক) ট্রিটমেন্ট?

আশিক, শুন, সব কিছু হাল্কা ভাবে নিতে নাই, যেইটা বুঝবা না, সেইটা নিয়ে তর্ক করবা না। আমি এবার লাত্থি মারলাম আশিক ভাইরে। রোগী-কমে গেছে, গল্পের উত্তেজনা বাড়ছে, জুনায়েদ ভাই কাচাঁ মরিচ বা হাতে নিয়ে কামড়াচ্ছেন।


সেবার শীতের পর গরম ও পড়ল দারুণ! জুনায়েদ ভাই ভাব গাম্ভীর্যে বলতেসেন। আমরা গল্পে তন্ময়! আমি লুঙ্গি পড়ে খালি গায়ে ফ্লোরে শুয়ে আছি, সারারাত ওটি করে আসছি, প্রচন্ড টায়ার্ড, তার উপর ভাল্গার গরম, আজকের মত! হঠাত ঘুম ভেঙ্গে দেখি আমার শরীরের অর্ধেক বারান্দায়, অর্ধেক রুমে, লুঙ্গি বারান্দায় মেলা! বাইরে প্রচন্ড ঝড়!!! আমি লাফায়ে উঠলাম, একি আমি পুরো ন্যাংটা!!!!

কখন থিওডোরা দিদি পিছে এসে দাড়াইছেন টের পাইনি! দিদি ছি ছি করে উঠলেন, যিশু, এই বুড়ো ছেলে ন্যাংটা হয়ে ঘুমাইসে!!! আমি মুখ চাপা দিলাম, আশিক ভাই মুখ ফিরালেন অন্য দিকে।

জুনায়েদ ভাই তীব্র আক্রোশে বলে উঠলেন, দিদি, নক করবেন তো, নাকি? ভিতরে আসলে আওয়াজ দিবেন, প্লীজ!

যাইহোক দিদি চলে যেতেই আমি বললাম, ঘুমের ঘোরে হয়ত স্লীপ ওয়াকিং...

জুনায়েদ ভাই বিষ দৃষ্টি হানলেন আমার দিকে, আমি একজন এম এস সেকেন্ড পার্ট, এম বি বি এস...এটুকু বলতেই আমি বললাম, ওস্তাদ, ভুল হৈছে, প্লীজ কন্টিন্যু...

এরপরে যা ঘটল, আমি আর অবিশ্বাস করতে পারলাম না, বুঝলি। আসলেই বুঝতে পারলাম তিনারা আছেন!আবার একদিন কি হইল শুন! আমি বাসায় একা, হঠাত শুনি প্রচন্ড ঝনঝন শব্দ, কাচঁ ভাংতেসে, টিনের প্লেট গুলোতে কেউ যেন স্টীলের চামচ দিয়ে পেটাচ্ছে, দৌড়ে গেলাম কিচেনে, যেয়ে দেখি সব গুলো গ্লাস প্লেট নাচতেছে!

এর ব্যাখ্যা না দিতে পেরে আমি আর আশিক ভাই হা করে আছি, দরজায় দাঁড়ানো পিওন বাশার বলল, স্যার চাপা!
জুনায়েদ ভাই বাশার কে বের করে দিল। ব্যাপারটা খারাপ লাগল বাশারের, স্যার দুপুরে সিংগাড়া কেনার বাকি টাকা আনতে যাচ্ছি বলে চলে গেল, উল্লেখ্য আমরা বাশারকে একশ টাকার উপরে নোট দিই না, প্রায়শই তার টাকা হারায়, সে দোকানে ভুলে রেখে আসে!

এরপর আমি একদিন স্বপ্নে দেখলাম, আমি তোর ভাইস্তাকে গলা টিপে মেরে ফেলতেসি, খারাপ স্বপ্ন তাই কাউরে বললাম না, কিন্তু পরেরদিন ই তোর ভাবী কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল, সেও নাকী দেখছে এরকম! আমি চিন্তায় পরে গেলাম, হুজুর ডেকে এশতেখারা করাইলাম। রেজাল্ট ভয়াবহ! আমার বাড়িতে নাকি জ্বীনের আসর!! জ্বীন দের আসা যাওয়ার পথে নাকি এই বাড়ি পড়ছে!

আশিক ভাই, টিপ্পনী দিল, জ্বীন দের কি বাস সার্ভিস আছে? হানিফ-শ্যামলী ঢাকা টু সিলেট? চেতে গেলেন জুনায়েদ ভাই, দেখ আশিক, সব কিছু নিয়ে ফান করা ঠিক না! সেই বাসা আমি পড়ে ছেড়ে আসি, সেই হুজুর পাক কালাম দিয়ে সেই জ্বীন কে বোতলে ভরে সুরমা নদীতে ফেলে আসছেন বলে অল্প রক্ষা হইছে!

আমি বললাম অল্প কেন? পুরোটা হয়নি?

নারেহ, সেই ভূতের ১১৩ নম্বর স্ত্রী আমাকে এখনো জ্বালিয়ে যাচ্ছে। আশিক ভাই বলে , সে কী? একশ তেরোটা স্ত্রী? এত বিয়ের সুযোগ থাকলে মানুষের বদলে জ্বীন হলেই ভাল হত না ভাই?

শুন আশিক, তুমি একটা বেয়াদ্দপ, স্যাম কে দেখ, কি সুন্দর শুনতেছে! আমি বলে ঊঠলাম, তাক ভাই, উনি একটু ফান করছে, সিনিয়র মানূষ, ছেড়ে দেন।

জুয়ানায়েদ ভাই বলতেসেন, গতকাল রাতে হোশটেলে কি হৈছে শুন, ভোরের দিকে হঠাত ঘুমের মাঝে স্বপ্নে দেখলাম নন্দিনী কে, নন্দিনী আজ থেকে বারো বছর আগে মারা যায় রোড এক্সিডেন্ট এ, সিলেটে আমাদের পাশের বাসায় থাকত। তারপর হঠাত করেরি ফিল করলাম...আমার লুঙ্গীর মাঝে ঠান্ডা একটা হাত ঢুকে যাচ্ছে...

আবার সিস্টার থিওডোরার গলা, বিয়াইত্যা পোলা, বউ ছাড়া হোশটেলে একা থাকলে লুঙ্গীর মাঝে কত কিছু ঢুইকে যায়...

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:২১

ইমরান আশফাক বলেছেন: হুমম্! /:)

২| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:৫৮

সোহানী বলেছেন: হাহাহাহাহাহাহা.............

৩| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:১২

কবি আলমগীর গৌরিপুরী বলেছেন: আজ কাল দিনের বেলায় রাস্তায় ভূত পাওয়া যায়

৪| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:৩৫

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আমি কিন্তু হাসি চাপা দিয়ে পড়তে পারি নাই ভাইজান। জুনায়েদ ভাইরে মাইন্ড করতে না কইরেন, আপ্নের পিলিচ লাগে...

বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা, ভালো কাটুক আগত দিনগুলো।

৫| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:৪১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আপনিতো ভুতের গপ্পরে ফানি বানাই ছাড়লেন তাও ১৮ + :P =p~ =p~ =p~ =p~ =p~

৬| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:৪৯

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আপনিতো ভুতের গপ্পরে ফানি বানাই ছাড়লেন তাও ১৮ + :P =p~ =p~ =p~ =p~ =p~

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.