নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আসসালামু আলাইকুম\nআমি আপনাদের সান ড্যান্স aka স্যাম রহমান :)

সানড্যান্স

এই যে ব্যাস্ততা বাড়ছে, এই যে নিকোটিন!জ্বালিয়ে দেয়া সিগারেটে ধোয়াচ্ছন্ন বেডরুমপ্রতিদিন ভাল্লাগেনার ছাই জমে এস্ট্রেতেব্যাস্ততার কালচে লাইটার, এই যে অলস ঘুম!এক কপি স্বপ্ন আসে সৌজন্য কপি হয়েসারারাত ঘুমিয়ে থাকি প্রচ্ছদে হাত বুলিয়ে।কাশাফাদৌজা নোমান

সানড্যান্স › বিস্তারিত পোস্টঃ

নানা রঙের স্মৃতির পালক, যখন আমি ছোট্ট বালক-০৪!

০৯ ই জুলাই, ২০১৫ ভোর ৪:২১

ঢাকা শহরের বৃষ্টি নিয়ে আমার খুব আদিখ্যেতা আছে। আমি বৃষ্টি খুব ভালোবাসি, এমন কি আমার এক সাবেক প্রেমিকার নাম ছিল বর্ষা! যত বৃষ্টিই হোকনা কেন, তা আমার মন খারাপ করাতে পারে না! আমি চাই আরো বড় হয়ে ঝড়ুক! ধুয়ে মুছে পরিষ্কার হোক এ শহর! গত দুদিন ধরে রাতে রিমঝিম বৃষ্টি হচ্ছে, আর আমি রাত জাগা পাখি হচ্ছি নষ্টালজিক! কতশত স্মৃতি এই ঢাকার বৃষ্টিকে ঘিরে! এমন কোন বছর নাই যে বছরের আষাঢ়ের প্রথম দিন আমি ভিজিনি!


খুব ছোটবেলায় এরকম বাদলার দিনে আমরা বোম্বাস্টিং খেলতাম। লাল রঙের স্কচটেপ মারা টেনিস বল আকাশে ছুড়ে দেয়া হত, এর পর যে বল হাতে পাবে, হাতের নাগালে তার কাছে যে থাকবে তার গায়ে যত জোরে পারা যায় মারতে হবে! উরেব্বাস, বৃষ্টিতে ঠান্ডা হওয়া শরীরে কামানের গোলার আঘাত হানত সেই বল! মাঝে মাঝে লক্ষভ্রষ্ট হয়ে চলে যেত রাস্তার পাশে ড্রেনে! সে ব্যাপারটা আরো রোমান্টিক! বন্ধুত্বের রেষারেষিতে যে থাকবে বল ইচ্ছে করে ছোট ছোট করে গড়িয়ে নিয়ে হলেও তার গায়ে মারতে যে কি আনন্দ! তখন সার্ফ এক্সেল না থাকায় ড্রেনের কাদা পানি ওয়ালা জামা থেকে আমরা তেমন কিছু শিখতে পারিনি!


আরেকটু বড় হওয়ার পরে বুঝলাম পায়ে ফুটবলের জোর আসছে, রোনাল্ডো না হতে পারতাম, চেষ্টা চালিয়ে গেলে আলফাজ নিশ্চিত হতে পারতাম! সেই আলফাজ হওয়ার পূর্ণ উদ্যোম চলে আসত বাদলা দিনে! ছোটরা হাফ পেন্টুল আর বড়রা লুঙ্গি কাছা মেরেই ড্রেন উপচানো বৃষ্টির পানিতে হত সেই শ্বাসরুদ্ধকর খেলা! গোল পোষ্টে দাঁড়িয়ে থাকতে আর কাঁহাতক ভাল লাগে এক জনের? ভাগে ভাগে গোল কিপার চেঞ্জ হত! অনেক সময় একি গোলপোষ্টে খেলা হত! ক্রিকেটারের রানের মত হিসেব করা হত কে কয় গোল দিল! সেই গোল পোষ্টের আবার কত প্রকারভেদ! হাতের গোল পোষ্ট! পায়ের গোল পোষ্ট!


মাঝে মাঝে ছেলেরা সবাই মিলে চলে যেতাম বাসার ছাদে, এক কাতারে দাঁড়িয়ে করতাম হিসু! ঐদিকে নীচে রাস্তায় আপুরা বৃষ্টিবিলাস করছেন! আহা! সে কী আনন্দ! সে কী বীরত্ব! কেইবা আলাদা করবে কোনটা হিসু আর কোনটা বৃষ্টির পানি!


আমার জন্ম পরবর্তীকালে ৯৬, ৯৮, ২০০৮ এ আমি ব্যাপক বৃস্টিপাত দেখেছি! আমরা তখন মুহাম্মদপুর বাবর রোডে থাকি! খুব সম্ভব ৯৮ সালের কথা! এমন বৃষ্টি শুরু হল ঢাকায়, যে গ্যারেজ ওয়েতে ছোট্ট এই বাবু ডাক্তারের কোমর ডুবে যায়! এখন খাবার পানি পাব কই? পিতাজী তাও সেই কোমর পানি ভেঙ্গে শুকনো খাবার, আলু ইত্যাদি জোগাড় করলেন, কিন্তু পানি উঠে মুদী দোকান সব বন্ধ হয়ে যাওয়াতে খাবার পানির অভাব তীব্র হতে লাগল! আমরা সবাই বালতি-হাড়ি-পাতিল ইত্যাদি নিয়ে চলে গেলাম বাসার ছাদে! সেবার এত বৃষ্টি হচ্ছিল যে ছাদের ড্রেনেজ সিস্টেম কাভার করতে পারছিল না! আমাদের ভাড়া বাসার বাড়ীওয়ালার বুয়া ছিলেন ঘোর শ্যামবর্ণের! তিনিও আমাদের সাথে ছাদে যেয়ে পানি নিলেন। বাসায় আসার পর আমার ছোটবোন জেদ ধরে রইল, ওই কালো বুয়ার পায়ে লাগা পানি সে কিছুতেই খাবে না! অবশ্য শেষ পর্যন্ত সে তার প্রতিজ্ঞায় অটুট থাকতে পারেনি!


আস্তে আস্তে বড় হলাম, মাস্তানি শিখলাম কিছু! দখল করে নিলাম পুরনো ঢাকার এক আবাসিক হোটেল! বড় ভাইর আন্ডারে আমরা সব পাতি মাস্তান! হোটেলে কোন বলদ থাকতে আসলেই ক্যাঁকরা দিব, আর যদি সাথে অবৈধ নারী থাকে তাহলে তো কথাই নাই! ভালই চলছিল পুরনো ঢাকার নারিন্দার সেই মাস্তানি! একদিন হঠাত ঝুম বৃষ্টির দিনে রিক্সা নিয়ে বাসা থেকে নারিন্দা রওনা হয়ে আমি বুঝতে পারলাম, ওই চিপা গলিতে যে হারে পানি জমসে, যেতে যেতেই এই সোয়া ছ’ফুট আমি রিক্সা সহ ডুবে যাব!


বৃষ্টির আরেক ভালোবাসার নাম হল আমাদের ঢাকার শান্তি নগর! এখানে যদি আকাশ হাল্কা হিসুও করে তবে দেখবেন গোড়ালী সহ জুতো/স্যান্ডেল পানির তলায়! আর ম্যানহোলের গর্তে রিক্সার আছাড়ের ছবিতো হামেশাই দেখা যায়!


মেডিকেল কলেজে উঠে প্রেমে পড়ে বুঝলাম, বাদলা দিনে বৃষ্টিতে রিক্সায় হুড তুলে পর্দা ঘেরা বাসর ঘরে কত আনন্দ! সে কথা নাহয় গোপন ই থাক! ওই সময় ধানমন্ডিতে ঐ তুমুল বাদলার দিনে এক ঘন্টা রিক্সায় ঘুরতে চল্লিশ টাকা লাগত!

আহ! ঢাকা! বর্ষায় কত সুন্দর তুমি!
এই মেঘলা দিনে একেলা ঘরে থাকে না যে মন!
কাছে যাব, কবে পাব, ওগো তোমার নিমন্ত্রণ!

মন্তব্য ১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ৮:২৭

যোগী বলেছেন:
ভালই লিখেছেন বিশেষ করে সার্ফ এক্সেলের ব্যাপারটা। বোমবাস্টিং খেলাটা আমারও খুব পছন্দের ছিল।
এখানে পুরা সপ্তাহ জুড়ে দিনরাত বৃষ্টি পড়ছে। ফুটবল খেলতে ইচ্ছে করে, হাতে অনেক কাজ তাই সেটা আর হয়ে উঠছে না।
গতকাল মধ্যরাতে একজনের মেসেজ ফ্রেন্স টোস্ট আর কফি খেতে চাইলে যেন বৃষ্টির মধ্যেই তার বাসায় হাজির হই। খুধার্ত আমি তাই কী আর করা বৃষ্টিভেজা শিতল হাতে দরজায় কড়া নাড়লাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.