নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডাঃ সিরাজুল কবির

ডাঃ সিরাজুল কবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

Airborne Allergen : বায়ু বাহিত এলার্জেন

২৫ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:৩৯

পরিবেশে বিদ্যমান অসংখ্য বস্তুকণার (dust particles) অধিকাংশই অদুষ্ট (Innocuous)। তবে কিছু সাধারণ উপাদান এলার্জি উপসর্গ করতে পারে।

পরিবেশে বিদ্যমান জৈব, অজৈব, রাসায়নিক, পদার্থ , প্রাণীজ, বনজ, কৃষিজ, শিল্পজ অগুনিত dust particle এলার্জি-জনিত শারীরিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে।

পরিবেশের অসংখ্য সাধারণএলার্জেন (dust particles) বিভিন্ন উৎস থেকে উৎপন্ন হয়, যেমন- মাটি, গাছ-গাছড়া, flowering plants, পশু-পাখি, বিভিন্ন জৈব ও রাসায়নিক পদার্থ, কৃষি ও শিল্পে ব্যবহৃত পদার্থ ও এর বর্জ্য, বায়ু দূষণের বিবিধ উপকরন ইত্যাদি ইত্যাদি।

বাড়ি, অফিস, জনবসতি পরিবেশে এলার্জেন আধিক্য লক্ষ্য করা যায় ঘরের ধূলা House dust particles, গাছ, আগাছা, ফুলের রেনু, পশু-পাখির পালক, গৃহপালিত পশু-প্রানির লোম, বর্জ্য ও খসিত ত্বক-কোষ, কাগজ, কাপড় আঁশ, বিভিন্ন অগ্নি-দগ্ধ,পোড়া ছাই, বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ, কীট পতঙ্গের ভগ্নাংশ ও বসত বাড়ির বিবিধ বর্জ্য ও আবর্জনা।

বিভিন্ন জায়গায় এলার্জেনের প্রকৃতিগত তফাৎ দেখা যায়। তাছাড়া, ভিন্ন ঋতু, ভিন্ন আবহাওয়ায় Dust কণার গুণগত ও পরিমান গত তারতম্য ঘটে।

পরিবেশে বিদ্যমান অসংখ্য এলার্জেন বস্তুকণার (dust particles) অবস্থান ভেদে বাহিরের (Outdoor) এলার্জেন ও ঘরবাড়ির (IndoorIndoor) এলার্জেন আখ্যা করা হয়।



বাহিরের (Outdoor) এলার্জেন: ফুলের রেণু, ফাঙ্গাস (spore), ধুলাকণা, dust particles, পশু-প্রানির লোম, পালক ও বর্জ্য; কলকারখানার পেশা ও জীবিকা ভিত্তিক সামগ্রী, কৃষি ও শিল্পে ব্যবহৃত পদার্থ ও এর বর্জ্য, বায়ু দূষণের বিবিধ উপকরন প্রভৃতি। প্রধান এলার্জেনঃ ফুলের রেণু, ফাঙ্গাস (spore)।

• Pollen থেকে Seasonal Rhino-conjunctivitis ও Mold থেকে Perennial Rhinitis



ঘরবাড়ির (Indoor) এলার্জেনঃ বসত বাড়ি ও ঘরের ধূলীয় কণা,House dust, ‘মাইট’, ঘরের ফাঙ্গাস ও spore, মাকড়সা, তেলাপোকা, চিকা, ইদুর, পোষা-প্রানির লোম, মল, লালা প্রভৃতি বর্জ্য; বাহির থেকে আগত ফুলের রেণু, ফাঙ্গাস (spore), গৃহপালিত প্রাণী ও বসত বাড়ির বিবিধ বর্জ্য ও আবর্জনা।



প্রধান এলার্জেনঃ ঘরের ধূলা (House dust), ‘মাইট’, ফাঙ্গাস ও spore, তেলাপোকা, গৃহপালিত ও পোষা-প্রানির লোম, মল, লালা, dander প্রভৃতি বর্জ্য।

রোগ- এলার্জিক এজমা, এলার্জিক রাইনাইটিস ও একজিমা’-সাংবাৎসরিক (Perennial)।



প্রবেশ পথঃ[/sb

Dust এলার্জেন এমন এক জিনিষ যা বাতাসে ভর করে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে সব সময় শরীরে প্রবেশ করছে। একে কোনমতেই এড়িয়ে চলা যায় না। বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান ও পরিবেশ দূষণীয় উপাদান শরীর সংস্পর্শে আসতে পারে।

আক্রান্ত স্থান:

নাসারন্ধ থেকে শ্বাসনালী হয়ে ফুসফুস, চোখ, নাক, ত্বক (বহিরাবরন সংস্পর্শ)।

প্রধান উপসর্গঃ অনবরত হাঁচি, পানি ঝরা ও বন্ধ-নাক (রাইনাইটিস); কাশি, বুকে চাপ, শ্বাস কষ্ট, হাঁপানি (এজমা)। চোখ লাল, পানি পড়া ও ফুলে চুলকানি (কনজাংটিভাইটিস)। চুলকানি, লাল হয়ে ফুসকুড়ি ও ফোস্কা পড়া (একজিমা, contact dermatis)।

প্রধান রোগঃ

এলার্জিক এজমা, এলার্জিক রাইনাইটিস, এলার্জিক কনজাংটিভাইটিস ও একজিমা’।

বাহিরের ধুলাতে (পরিবেশগত) এলার্জি হয়না, কিন্তু ধূলায় মিশ্রিত এলার্জেন, এলার্জি করতে পারে। ঘরের ধূলাতে অবশ্যই এলার্জি হবে, প্রধান কারণ ‘মাইট’।

আমাদের বসত বাড়ি, স্কুল-কলেজ, অফিস, কাজের স্থান অর্থাৎ পারিপার্শ্বিক পরিবেশ অনেক এলার্জেন উপাদান সমৃদ্ধ।

আমাদের দেশের আদ্র, উষ্ণ ও নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় সারা বছর প্রচুর পরিমাণ এলার্জেন trigger বিদ্যমান থাকায় এলার্জি লক্ষন প্রকাশ পায়।

স্থান, কাল, ঋতু, আবহাওয়া ও ভুগলিক আবস্থানের কারণে এলার্জেননের প্রকৃতি, গুনমান ও পরিমাণ নির্ভর করে। বিভিন্ন জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এলার্জেনের প্রকৃতিগত তফাৎ ও তারতম্য ঘটে।

কিছু এলার্জেন (Pollen) নির্দিষ্ট ঋতুতে হ্রাস ও বৃদ্ধি পায়। অন্যান্য এলার্জেন সারা বৎসরেই থাকে, কিন্তু বিভিন্ন সময়ে পরিমাণ গত তারতম্য ঘটে।

সিগারেট ধোঁয়া, প্রসাধনী সামগ্রী, hair spray, নানা রসায়ন,Ozone, এবং বায়ু-দূষণের অন্যান্য উপাদান প্রভৃতি প্রকৃত ‘এলার্জেন’ নয়, এদের উপস্থিতি এলার্জি উপসর্গ বাড়িয়ে দেয়। Non allergic effects এর ফলে/কারণে সত্যিকার এলার্জি প্রকোপ অনেক বৃদ্ধি পায় এবং চিকিৎসা দুরূহ হয়।

ব্যক্তি বিশেষের এলার্জি প্রবণতা ও এলার্জিক gene সম্পৃক্ততা এলার্জি প্রকোপ হ্রাস-বৃদ্ধি করতে পারে।

অধিক মাত্রায় পরিবেশ ও বায়ু- দূষণের ফলে শহর ও শিল্পাঞ্চলে এলার্জি প্রকোপ বেশি দেখা যায়। সমুদ্র ও সমুদ্র তীর তুলনামুলকভাবে এলার্জেন কম থাকে।

দূষণ-মুক্ত পরিবেশ রক্ষা করলে এবং নির্মল আবহাওয়া গড়ে উঠলেই, পরিবেশগত dust এলার্জেন ও এলার্জি অনেক হ্রাস পাবে।



এই Dust particles এ যদি এলার্জেন থাকে, সব সময় ঐ এলার্জেন বাতাসে ভর করে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে নাক হয়ে শ্বাস-তন্ত্রে প্রবেশ করছে। একে কোনমতেই এড়িয়ে চলা যায় না। ঐ একই এলার্জেন উপাদান চোখ, ত্বক ও শরীর আবরণীর সংস্পর্শে এসে এলার্জি উপসর্গ করে।

বাহিরের (Outdoor) ও ঘরবাড়ির (Indoor) এলার্জেনঃ সাধারণত ৬ ধরণের এলার্জেন উপাদান বায়ুবাহিত এলার্জির প্রধান কারণ। ঘরের ধূলিয় উপাদান, ‘মাইট’, ফুলের রেণু, ছত্রাক, তেলাপোকা ও প্রাণীজ এলার্জি।



ঘরের ধূলিয় উপাদান House Dust



সাধারণ পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতায় – ঝাড়ূ, ঝাট, ধোয়া মোছা ইত্যাদি কাজের সময় অনেকে নানা সমস্যায় ভুগেন, যথা- অনবরত হাঁচি, নাকে পানি ঝরা, বন্ধ-নাক, কাশী, বুকে চাপ, শ্বাসকষ্ট, চোখ চুলকানি, জ্বালা ও পানি পড়া ইত্যাদি ইত্যাদি।

এর প্রধান কারণ এলার্জি। House dust এর এক বা একাধিক ‘এলার্জেন’ উপাদানের উপস্থিতি।

ঘরের ভিতর ও বাহির থেকে আগত বিভিন্ন বস্তুকণার (dust particle) উপস্থিতি বিদ্যমান। বিভিন্ন উপাদানের সমাহার এই বস্তুকণার সংমিশ্রণকে ধূলিয় উপাদান (House dust) বলা হয়।



ঘরের ধূলিয় উপাদান সমূহঃ

ধূলিকণা, ‘মাইট’, মানুষ ও প্রাণীর খসে যাওয়া ত্বক-কোষ (মরা চামড়ার কোষ), চুল, লোম; লতাগুল্মের ও ফুলের রেনু; ছত্রাক ও mold spore; কীটপতঙ্গের লালা, মল, অপভ্রংশ; আঁশ-সূতা, কাগজ, উল, রেশম; ফোম, কাঁচ, কাঠ, রং এর ক্ষুদ্র-কণা; বাড়ি তৈরি ও সাজানোর উপকরণ কণা; চিনি, লবন ও খাদ্যকনা; সিগারেট ও রান্না-ঘরের ছাই প্রভৃতি।

মানুষ ও প্রাণীর খসিত ত্বক-কোষ ৮০% House dust এর উপাদান। একব্যক্তি দৈনিক ১.৫ গ্রাম ত্বক-কোষ shed করে, যা ১ মিলিয়ন ‘মাইটের’ খাদ্য।

এই Dust particles এ যদি এলার্জেন থাকে, তবে এলার্জি-প্রবণ ব্যক্তি এলার্জিতে ভুগতে পারেন।

House dust এ এলার্জেন প্রধানত ‘মাইট’, মানুষ ও প্রাণীর খসিত ত্বক-কোষ, ছত্রাক ও mold spore, বাহিত ফুলের রেণু, তেলাপোকা ও কীটপতঙ্গের লালা, মল, অপভ্রংশে থাকে এবং এলার্জির মূল কারণ। শুধুমাত্র ৮০% রোগী ‘মাইট’ এলার্জিতে ভুগে। ঘরের পুরাণ ধূলা বেশি এলার্জির কারণ।

১ গ্রাম House dust এ থাকেঃ জীবিত ‘মাইট’- ১০০-৫০০, মৃত ‘মাইট’-১০০০, ‘মাইট’ মল কণা (fecal pellet) -২৫০০০।

ঘরে ধূলা জমে – বিছানা, বালিশ, কাঁথা- কম্বল, লেপ, লোমশ কম্বল, পুরাণ কাপড়, বই-কাগজ, কার্পেট। পাখা, জানালার গ্রিল, মশারী ও আসবাবপত্রে ধুলাবালি জমে।

ঘরের জিনিষপত্র, আসবাবপত্র নাড়াচাড়া অথবা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় –ঝাড়ূ, ঝাট দেবার ফলে House dust বাতাসে ভেসে বেড়ায় ১- ১১/২ ঘণ্টা। তৎপর আস্তে আস্তে স্থিত settle হয়।

House dust এর এলার্জেনিক উপাদান সব সময় বাতাসে ভর করে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে নাক হয়ে শ্বাস-তন্ত্রে প্রবেশ করছে। ঐ একই এলার্জেন উপাদান চোখ, ত্বক ও শরীর আবরণীর সংস্পর্শে এসে এলার্জি উপসর্গ করে।

House dust এর পরিমাণ ঘরে-ঘরে, বাড়ীতে-বাড়ীতে তারতম্য হয়। একই ঘরের বিভিন্ন রুমে House dust এর কম-বেশী পরিলক্ষিত হয়। শয়ন-কক্ষে ‘মাইট’, রান্নাঘরে তেলাপোকা ও কীটপতঙ্গ, বাথরুমে ছত্রাক ও mold এবং অন্যত্র বিশেষ হেরফের হতে পারে।

সাধারণ পরিচ্ছন্নতায় House dust পুরাপুরি পরিষ্কার করা সম্ভব নয়। এমনকি স্বাস্থ্য-সম্মত পরিচ্ছন্নতায় এলার্জি থেকে রেহাই পাওয়া কঠিন। এতে অনেক এলার্জেন উপাদান থেকে যায়। সুতরাং রয়ে যাওয়া সামান্য মাত্রার এলার্জেন এলার্জিক-ব্যক্তির উপসর্গ তৈরি করতে সক্ষম। A hygienic house does not mean ‘an allergy free house’.

এজন্য বসত বাড়ীর এলার্জেন সারা বৎসর (perennial) এলার্জির প্রকাশ ঘটায়। একে কোনমতেই এড়িয়ে চলা যায় না।

যাদের ঘরের ধূলায় এলার্জি আছে, তাদের কতগুলি ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে- বিছানা ঝাড়া, ঘরবাড়ি পরিষ্কার করার সময় মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। শীতের কাপড় নতুন করে ধুয়ে ব্যবহার করবেন। বাক্স থেকে বের করে সরাসরি ব্যবহার করবেন না।



Dust ‘মাইট’



আমাদের দেশে বেশিরভাগ রোগী মাইট এলার্জিতে ভুগে। ‘মাইট মাকড়সা (spider) প্রজাতির এক প্রকার অণুজীব। পৃথিবী জুড়ে ‘মাইট এর উপস্থিতি বিদ্যমান। D. pteronyssinus D. farinea দুই নামের ‘মাইট দেখা যায়।

সাধারণের জন্য ‘মাইট’ ক্ষতিকর নয়, কিন্তু ‘মাইট এলার্জেন’ এলার্জি-প্রবণ রোগীর জন্য মারাত্মক।

ঘরের-ধূলাতে এলার্জির প্রধান কারণ ‘মাইট’। পুরানো ধূলার মধ্যেও মাইট থাকে। এজন্য পুরানো ধূলা সবচাইতে বেশী ক্ষতিকর। তাই আমাদের দেশে অনেকেই ঘরের ধূলা জনিত এলার্জিতে আক্রান্ত হয়। শতকরা ৮০ ভাগ এজমা রুগী ‘মাইট’ এলার্জিতে ভুগে।

১ গ্রাম House dust এ থাকেঃ জীবন্ত‘মাইট’ ১০০-৫০০, মৃত ‘মাইট’-১০০০, ‘মাইট’ মলকণা (fecal pellet)-২৫০০০। মৃত ‘মাইট’ ও ‘মাইট’ নিঃসৃত লালা, মল-কণিকা, অপভ্রংশ ধূলায় মিশে নিশ্বাসের সাথে শ্বাস-তন্ত্রে এলার্জি সৃষ্টি করে।

‘মাইট থেকে এলারজিতে ভুগেন।

• মোট জনসংখ্যার ১০% লোক

• এলার্জি রোগীদের ৮০% লোক

• এজমা রোগীদের ৫০-৮০% লোক

রোগঃ এলার্জিক এজমা, এলার্জিক রাইনাইটিস ও একজিমা’র মূল কারন ‘মাইট’ এলার্জেন।

‘মাইট এলার্জেনঃ মৃত ‘মাইট’ ও ‘মাইট’ নিঃসৃত লালা, মল-কণিকা, অপভ্রংশ শক্তিশালী এলারজেন, যা শ্বাস-তন্ত্রে এলার্জি সৃষ্টি করে। ২ ধরনের- Group 1 ও Group 2 এলার্জেন।

গ্রুপ ১- Der p1 (a cysteine protease with catalytic action) counterpart of Der f1. অন্ত্রনালির পাচক রসের কাজ করে এবং লালা ও মল- কণিকাতে থাকে’।

গ্রুপ২- ‘মাইট অঙ্গের প্রোটিন।

কমপক্ষে আরও ১৫ ধরণের এলার্জেন আছে, যা খুব লোকের এলার্জি করে।



সাধারণের জন্য ‘মাইট’ ক্ষতিকর নয়। ‘মাইট’ মানুষের শরীরে বাস করে না, কিন্তু আশেপাশে থাকে। জীবন্ত ‘মাইট’ কামড়ায় না, বা শরীরে গর্ত করে থাকেনা।



‘মাইট, মাকড়সা প্রজাতির এক প্রকার অষ্টপদি অণুজীব। ‘মাইট’ এত ছোট যে খালি চোখে দেখা যায় না। ১ ইঞ্চির ২০০ ভাগের ১ ভাগ লম্বা, ০’৩ মিমি। | মাইট সাধারণত ১৭ – ২১C তাপমাত্রা এবং ৭৫% থেকে ৯০% আপেক্ষিক আদ্রতায় বাঁচে এবং বংশ বৃদ্ধি ঘটায়। ‘মাইট শুষ্ক আবহাওয়া, কম তাপমাত্রায় ও ৫০ নিচে আদ্রতায় বাচতে পারে না। আমাদের দেশের জলবায়ু তাই মাইট এর বংশ বৃদ্ধিরসহায়ক।

‘মাইট’ খাদ্য হিসাবে- খসে যাওয়া ত্বক-কোষ, ফূলের রেণু, কাগজ, কম্বল,রেশম, পোষা প্রাণীর লোম ও বিভিন্ন ফাঙ্গাস প্রভৃতি থেকে পুষ্টি গ্রহন করে।

‘মাইট পানি খায়না, কিন্তু আদ্রতা, ঘাম, শ্বাস-প্রশ্বাসের জলীয় বাষ্প গ্রহণ করে।

Dust ‘মাইট’ আলো পরিহার (avoid) করে চলে। আলো পরিহারে তারা নরম জিনিষে ঢুকে থাকে’ যেমন-বিছানা, বালিশ, তোষক, কম্বল, কার্পেট, কাপড়-চোপড়, পূরানো বই-কাগজ, আসবাবপত্র, বাক্স বন্দী জামা কাপড় ইত্যাদিতে থাকে।

‘মাইট’ জন্মানোর সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান শয়ন-কক্ষ। কারন হিসাবে বিছানার -খসিত ত্বক-কোষ (পুষ্টি), -ঘাম ও নিশ্বাসের জলীয় বাষ্প (আদ্রতা), শরীরের তাপ (উষ্ণতা), এবং নরম বিছানা অন্ধকারে (আশ্রয়) দান করে।

এসব কারণে শয়ন কক্ষ ‘মাইটের কাঙ্খিত, আকর্ষণীয় থাকার ও বংশ-বৃদ্ধির আদর্শ স্থান।

ঘরে ‘মাইট অবস্থান করে –বিছানা, তোষক, বালিশ, কাঁথা-কম্বল, লেপ, লোমশ কম্বল, পুরাণ কাপড়, বই- কাগজ, কার্পেট, সোফা প্রভৃতি। পাখা, জানালার গ্রিল, মশারী ও আসবাবপত্রের ধূলায় ‘মাইট থাকে।

ঘরের জিনিষপত্র, আসবাবপত্র নাড়াচাড়া অথবা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় –ঝাড়ূ, ঝাট দেবার ফলে ‘মাইট ও মাইট-নিঃসৃত লালা, মল-কণিকা, অপভ্রংশ’ বাতাসে ভেসে বেড়ায় ১/২- ১ ঘণ্টা, তৎপর আস্তে আস্তে স্থিত (settle) হয়।

সারা দুনিয়ায় ‘মাইটের’ বসবাস এবং এরা বিছানার ‘অতিথি’। এজন্য ‘মাইটকে Cosmopolitan Guest বলা হয়।

‘মাইট ৫০ নিচে তাপমাত্রায় বাচতে পারে না। শুষ্ক আবহাওয়া ও পাহাড়ি অঞ্চলে ‘মাইট’ এলার্জির প্রকোপ কম, কারণ এই পরিবেশে ‘মাইট’ জন্মাতে পাড়ে না।

তাই মাইট থেকে দূরে থাকা আবশ্যক।



ফুলের রেণু (Pollen)



ফুলের রেণু (Pollen) ও ছত্রাক (Mold) বায়ুবাহিত ও বায়ুতাড়িত এলারজেন। Mold সারা বৎসর থাকলেও Pollen এর আধিক্য ঋতুভিত্তিক পরিলক্ষিত হয়। জলবায়ু, বায়ুপ্রবাহ ও ঋতুর উপর বায়ুতাড়িত এলার্জেন মাত্রা নির্ভর করে। ঝড়ো ও ধুলিময় আবহাওয়ায় ফুলের রেণু (Pollen) ও ছত্রাক (Mold) বেশী পরিমাণে থাকে।



পরাগ রেনু (Pollen) ডিম্বাকৃতির ক্ষুদ্রকণার (microscopic) Powder এর মত। পরাগ রেনু হাওয়ায় ভেসে অনেকদূর যেতে পারে এবং পরাগায়ন ঘটায়।

ছোট, হাল্কা, শুষ্ক পরাগ রেনু (ঘাস, আগাছা) অনেক দূর যেতে পারে। ও এলার্জি উপসর্গ তৈরি করে।

অন্যদিকে আঠালো বড় রেনু (গোলাপ) কীট-পতঙ্গের মাধ্যমে এক ফুল থেকে অন্য ফুলে ছড়ায়, বেশিদুর যেতে পারেনা বিধায় -এলার্জি কম হয়।

প্রতিটি ফুলেল গাছ (Flowering Plants) বিশেষ ঋতুতে পরাগায়ন ঘটায়। বায়ু প্রবাহের উপর পরাগায়ন, বিস্তৃতি ও পরাগ ছড়ানো নির্ভর করে।

সুতরাং বিশেষ ফুলের ‘পরাগ রেনুর’ সংখ্যা ও পরিমান নির্ভর করবে পরাগায়ন ঋতু ও বায়ু প্রবাহের উপর। অন্য ভাবে বিশেষ ‘ঋতুতে’ কোন পরাগ রেনুর আধিক্যতা থাকবে, তা ফুল ও বায়ু প্রবাহের উপর নির্ভরশীল।

সাধারণত Pollen Season বৎসরের ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর। পরাগ রেনুর আধিক্য পরিলক্ষিত হয়, এভাবে-

Tree Pollen: ফেব্রুয়ারি থেকে মধ্য মে। বসন্তের প্রথম।

Grass Pollen: মে মাস থেকে মধ্য- জুলাই। বসন্তের শেষ থেকে গ্রীষ্মের প্রথম।

Weed Pollen: জুলাই শেষ থেকে নভেম্বরের প্রথম। গ্রীষ্মের শেষ থেকে শীতের প্রথম।

Pollen থেকে Seasonal Rhino-conjunctivitis হয়।



ছত্রাক (Mold)



Mold সর্বত্র সারা বৎসর পরিবেশে বিদ্যমান। বাহিরে ছত্রাক spore হিসাবে থাকে।

ছত্রাক spore সারা বৎসর থাকলেও উচ্চমাত্রায় জুলাই হইতে আগস্ট মাস পর্যন্ত থাকে।



নিশ্বাসের সাথে ছত্রাক (Mold) শরীরে প্রবেশ করে এবং সারা বছর-ব্যাপী এলার্জিক ‘এজমা’ ও ঋতু ভিত্তিক বা সাংবাৎসরিক ‘এলার্জিক রাইনাইটিস’ রোগের প্রকাশ ঘটায়।



ছত্রাক spore বাহিরের পরিবেশে বিদ্যমান থাকে -স্যাত-স্যাতে মাটি, জৈব পদার্থ আধিক্য জায়গা, ভেজা, পচা-কাঠ, গাছ-গাছড়া, পত্র-পল্লব, লতা-গুল্ম ও বাগান।



আবহাওয়া ও বায়ুপ্রবাহের উপর ছত্রাক (spore) এলার্জেন এর মাত্রা নির্ভর করে। ছত্রাক (spore) মেঘলা বৃষ্টির দিনে ও কম-বায়ু প্রবাহে পরিবেশে কম থাকে এবং শুষ্ক, উষ্ণ আবহাওয়ায় বেশি থাকে। ঝড়ো ও ধুলিময় আবহাওয়ায় বাহিরে ছত্রাক spore বেশী পরিমানে থাকে।



ঝড়ো বায়ূ-প্রবাহ, নাড়াচাড়ায় বাহিরের ছত্রাক (spore) বাতাসে ভেসে বসত বাড়ীতে ঢূকে এবং দরজা, জানালা, আসবাব পত্র, বাথ-রুম, রান্নাঘরে জমা হয়।



উপযুক্ত পরিবেশে (পরিমিত উষ্ণতা, আদ্রতা) এই বাহিত Spore ছত্রাকে গজায়। স্যাত স্যাতে জায়গা ও রান্না ঘরের নষ্ট-উচ্ছিষ্ট খাবার ও আবর্জনায় spore ছত্রাকে পরিণত হয়।



তাই বাথরুম, দেয়াল, পূরানো কাঠ, কাপড়, কাগজ, বই, চামড়া, প্রভৃতিতে জন্মায়। তাছাড়া কার্পেট, আসবাবপত্র, পাখা, জানালার গ্রিল, মশারী, টিভি স্ট্যান্ডে জমে থাকা ধুলাবালিতে ছত্রাকের অবস্থান পাওয়া যায়। দেয়ালে দেখা না গেলেও সবসময় ছত্রাকের অস্তিত্ব থাকে।



পাঊ রুটি , ফলমূল, সবজি, নষ্ট- উচ্ছিষ্ট খাবার ছত্রাকের খাদ্য। ফুলের টব, বাগান, ঘরের আনাচে-কানাচে ছত্রাক ও spore আধিক্য বেশী।



তেলাপোকা



তেলাপোকা নিঃসৃত লালা, মল, ও অপভ্রংশ প্রোটিন Gjv‡R©b হিসাবে এজমা করে। এগুলো House dust এর উপাদান। জন বহুল, আসবাবপত্রে ঠাসা, পূরানো ঘর বাড়ি তেলাপোকার আবাসস্থল।

তেলাপোকা ‘নাই’ এমন ঘর কমই পাওয়া যাবে। যদিও সারা বাড়িতে এরা বিচরন করে, রান্না ঘরে বেশি পাওয়া যায়, কারন ওখানেই খাবার ও আদ্রতা পরিমিত থাকে।

পাঊ-রুটি, ফলমূল, সবজি, নষ্ট-উচ্ছিষ্ট খাবার তেলাপোকার খাদ্য।



প্রাণীজ এলার্জি Animal Dander



পোষা প্রাণী- কুকুর, বিড়াল; গৃহ পালিত পশু- গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি; ঘরে ইদুর, চিকা ইত্যাদি প্রাণীজ ত্বক, লোম, লালা ও প্রস্রাব এলার্জেন সমৃদ্ধ। এদের পশম, পালক থেকেও এলার্জি হতে পারে। বলা হয়ে থাকে ‘এলার্জি-ছাড়া/ মুক্ত কোন কুকুর বিড়াল নাই’।

পোষা প্রাণী ও গৃহ পালিত প্রাণীর লোম মালিকের কাপড় চোপড়ের মাধ্যমে স্কুল বা কর্মস্থলে ছড়ায় এবং অন্যদের এলার্জির কারণ হয়।

পোষা প্রাণী ঘরের বাহিরে অথবা বাহির বাড়িতে রাখবেন। কোনক্রমেই ঘরে, বিশেষত শয়ন- কক্ষে আসতে দেয়া যাবে না।

আপনার বাড়ির আশেপাশে পশুর ‘খামার’ থাকলে সতর্ক থাকবেন।



ফুলের রেণু (Pollen) ও ছত্রাক (Mold) বায়ুবাহিত ও বায়ুতাড়িত এলারজেন। Mold সারা বৎসর থাকলেও Pollen এর আধিক্য ঋতুভিত্তিক পরিলক্ষিত হয়। জলবায়ু, বায়ুপ্রবাহ ও ঋতুর উপর বায়ুতাড়িত এলার্জেন মাত্রা নির্ভর করে। ঝড়ো ও ধুলিময় আবহাওয়ায় ফুলের রেণু (Pollen) ও ছত্রাক (Mold) বেশী পরিমাণে থাকে।



-Dr. Serajul Kabir

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.