নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডাঃ সিরাজুল কবির

ডাঃ সিরাজুল কবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

বায়ুদূষণকারী উপাদান (Pollutants)

২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:২২

বাতাসের সংজ্ঞা



বায়ুমণ্ডল বিভিন্ন গ্যাসের সংমিশ্রন, যা থেকে শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে অক্সিজেন গ্রহণ করি। (WordNet 2006)। মানুষসহ প্রত্যেক প্রাণীর পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য বাতাস অতীব প্রয়োজন। এটা এতই জরুরী যে, পানি ছাড়া কয়েক দিন বেঁচে থাকা সম্ভব কিন্তু বাতাস ছাড়া কয়েক মিনিটের বেশী সম্ভব নয়।–UNEP,2001

বায়ুদূষণের সংজ্ঞাঃ

কোন রাসায়নিক দ্রব্য, বস্তুগত পদার্থ, বা জৈব উপাদান দ্বারা আবাসিক (indoor) এবং বাহিরের পরিবেশীয় (outdoor) বাতাস কলুষিত হওয়ায় ‘বায়ুমণ্ডলের প্রাকৃতিক বৈশিষ্টে’র পরিবর্তনকে বায়ুদূষণ বলে।

বাতাসের পরিবর্তিত অবস্থা যা, ব্যক্তির স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, বা কল্যাণকে বিপদ/ঝুঁকির সম্মুখীন করে; জীবন ও সম্পদের জন্য হানিকর; জীব-জানোয়ার ও প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। (Government of Alberta, 2004).

দূষণসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ও নিকৃষ্ট হচ্ছে বাতাসের দূষণ।

পরিবেশীয় বায়ুদূষণ উন্নত ও উন্নয়নশীল সব দেশের জন্য প্রধান স্বাস্থ্য সমস্যা।

দূষণকারী উপাদানঃ

সালফার-ডাইঅক্সাইড (SO2), নাইট্রোজেন-অক্সাইড (NOX), জ্বালানী (Hydrocarbon), ক্ষুদ্র বস্তুকণা (Dust), কার্বন-মনোঅক্সাইড (CO), ভূপৃষ্ঠের ozone (O3), hydrogen sulphide (H2S), sulphates and nitrates, বিভিন্ন ধাতু ভয়ানকভাবে বায়ুদূষণের প্রধান কারণ।

এর অতিরিক্ত দূষণকারী হিসাবে চিহ্নিত- বিভিন্ন ধাতু (সীসা, আর্সেনিক, পারদ, ম্যাঙ্গানিজ, নিকেল), বেনজিন, ফরমালডিহাইড, PCB (polychlorinated biphenyles), ডাইওক্সিন, এবং অন্যন্য জৈব উপাদান। (পরিবেশ বিভাগের (Department of Environment) এক অধিকর্তার মতে)

Common দূষণকারী উপাদানঃ কার্বন-মনোঅক্সাইড (CO)- ৫২%, সালফার-ডাইঅক্সাইড (SO2)- ১৮%, নাইট্রোজেন- ডাই অক্সাইড (NO2)- ৬%, জ্বালানী (Hydrocarbon)- ১২%, ক্ষুদ্র বস্তুকণা (Dust)- ১০%, ozone (O3).

রাসায়নিকভাবে দূষণকারী উপাদানঃ

Non-metallic: CO, SO2, NO2, Hydrocarbon, ground-level ozone (O3), Dust, hydrogen sulphide (H2S), sulphates and nitrates.

Inorganic Fumes, Gas and Dust (Particulate Matter)

Organic: Volatile Organic Compounds (VOC), বহুমাত্রিক বিচিত্র ধরণের organic উপাদান (প্রাণীজ প্রোটিন, চত্রাক, mould)।

বায়ুদূষণের প্রকার (Type): (Khaliquzzaman, 1998)

বায়ুবীয়ঃ গ্যাস, বাষ্প, SOx, NOx, CO, Ozone, NH3.

কণাকার উপাদানঃ Particulate Matter (PM), ধূলা, ছাইভস্ম, ধুঁয়া, জলীয়কণা (droplets), কুয়াশা, শিশির, fumes, aerosol.

বায়ুদূষণের সাধারন উৎসঃ আবাসিক ও গৃহস্থালির বিভিন্ন অগ্নি-উৎপাদক, যান্ত্রিক যানবাহন, শিল্প স্থাপনা, বনের দাবানল, নানাবিধ বর্জ্য, বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা। ব্যাপক ধূমপানও বায়ুদূষণের আরেকটি কারণ। বায়ুদূষণ আবাসিক ঘরের ভিতর (indoor), এবং পরিবেশীয় ঘরের বাহির (outdoor) হতে পারে।

এই সমস্ত বিভিন্ন উৎস (শিল্প, বিদ্যুত কেন্দ্র, ইটভাটি, যানবাহন) থেকে উৎপন্ন সালফার-ডাইঅক্সাইড (SO2), নাইট্রোজেন-ডাই অক্সাইড (NO2), জ্বালানী (Hydrocarbon), কার্বন-মনোঅক্সাইড (CO), ক্ষুদ্র বস্তুকণা (Particulate Matter), বিভিন্ন ধাতু ভয়ানকভাবে বায়ুদূষণের প্রধান কারণ।



সালফার-ডাইঅক্সাইড (SO2)

SO2 রংহীন কটু গন্ধের গ্যাস। কয়লা, পেট্রোল/ডিজেল (fossil fuel) পোড়ানো, সালফার সম্পৃক্ত খনিজ ore গলানোর সময় সালফার-ডাইঅক্সাইড (SO2) উৎপন্ন হয়।

বড় ধরণের উৎসঃ আবাসিক তাপ, বিদ্যুত শক্তি, যান্ত্রিক যানবাহনের ইঞ্জিন। কয়লা পোড়ানোয় কালো ধুঁয়া ও সালফার-ডাইঅক্সাইড (SO2) উৎপন্ন হয়। উন্নয়নশীল দেশে এর ব্যবহার বেশী, বিশেষত চীন, ভারত, পূর্ব ইউরোপ ও রাশিয়াতে।

SO2 মাত্রা (WHO guideline values): ২৪ ঘন্টা গড়: 20 microgram/cm3; ১০ মিনিট গড়: 500 microgram/cm3.

১০ মিনিটের বেশী সময় 500 mgm/m3 মাত্রার SO2 থাকা উচিত ন্য। পর্যবেক্ষণে প্রমাণিত যে- এজমা আক্রান্ত ব্যক্তি ১০ মিনিটে শ্বাসতন্ত্রীয় লক্ষণ প্রকাশ ও ফুসফুসের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়।

২০০৫ সালের guideline বর্ণিত 125 microgram/cm3 মাত্রা থেকে বর্তমানে 20 microgram/cm3 মাত্রায় হ্রাস করার কারণ-

· খুব কম মাত্রায় স্বাস্থ্যের উপর লক্ষণীয় প্রভাব। · অধিক সতর্কতা ও রক্ষাব্যবস্থার প্রয়োজনিয়তা। · যদিও সমমাত্রায় ক্ষতি অনির্দিষ্ট, মাত্রা হ্রাসকরণে অন্যন্য সহযোগী দূষণকারী উপাদানেরও মাত্রা হ্রাস পায়।

স্বাস্থ্য সমস্যাঃ

SO2 ফুসফুস ও শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত করে, চোখে জ্বালা (inflammation) করে।

শ্বাসতন্ত্রে প্রদাহ কাশি, স্লেস্মা, ব্রঙ্কাইটিস, প্রকটিত এজমা, সংক্রমণ-প্রবণতা তৈরি হওয়া।

উচ্চমাত্রার দিনে হৃদরোগ জনিত হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যু বৃদ্ধি পায়।

SO2 পানির সাথে মিশে সালফুরিক আসিড তরি করে। এসিড বৃষ্টি বনাঞ্চল ধংস করার ফসল।

সাফিউরিক এসিড তৈরি করে তাৎক্ষনিক শ্বাসনালীর সংকোচন ঘটায়।

দীর্ঘস্থায়ী (১-২ মাস) ১০ ppm মাত্রায় এজমা উদ্দীপক ও মিউকাস ঝিল্লির পুরুত্ব বাড়ায়।

নাইট্রোজেন-ডাই অক্সাইড (NO2)



NO2 মাত্রা (WHO guideline values): বার্ষিক গড়: 40 microgram/cm3; ১ ঘন্টা গড়: 200 microgram/cm3

স্বল্পকালীন 200 microgram/cm3 অধিক মাত্রায় NO2 বিষাক্ত গ্যাস। উল্লেখযোগ্যভাবে শ্বাসনালীর প্রদাহ করে।

উৎসঃ জ্বালানী হিসাবে পেট্রোল ও ডিজেল (বিদ্যুত শক্তি, যানবাহনের ইঞ্জিন, তাপ উৎপাদন), রান্নাঘরের আগুন (solid fuel) ও গ্যাস ব্যবহারে উৎপন্ন হয়। .

পেট্রোল ও ডিজেল (hydrocarbon): যানবাহনের জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার নূতন ধরণের বায়ুদূষণের কারণ।

প্রাথমিক দূষণকারী- NO, NO2 (nitrogen oxides); ডিজেল-কণা; polyaromatic hydrocarbon এবং O3 (ozone).

সহযোগী দূষণকারী- photochemical reaction এ বায়ুমণ্ডলে তৈরি হয়। ozone মাত্রা সবচেয়ে বেশী- গ্রাম ও রৌদ্রজ্জ্বল দিনে।

রান্নাঘরে solid biomass থেকে চুলার আগুন ও গ্যাসঃ NO2 উৎপন্ন হয়। বেশী মাত্রায় রান্নাঘরে বদ্ধ পরিসরে ও শয়ন কক্ষে থাকে।

স্বাস্থ্য সমস্যা

স্বল্পকালীন কম মাত্রায় এজমা উদ্দীপক। এলার্জেন, histamine, acetylcholine জনিত শ্বাসনালীর অতিসংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে।

২-৩ ppm মাত্রায় ফুসফুসের কর্মক্ষমতা হ্রাস করে এবং শ্বাসনালী ও ফুসফুস উত্তেজক (irritant)।

দীর্ঘকালীন exposure (1 ppm মাত্রায়) এ শিশুদের এজমেটিক ব্রঙ্কাইটিস, ফুসফুসের development ও কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। প্রাপ্তবয়স্কদের bronchitis, emphysema, fibrosis হয়।

কৃষিকাজে নিয়োজিত ব্যক্তির ঝুঁকি বেশী থাকে। pulmonary edema করে।

নাইট্রোজেন-ডাই অক্সাইড (NO2) নাইট্রো-এরোসলের প্রধান উৎস, যা PM2.5 কনাকার উপাদান হিসাবে থাকে।

নাইট্রোজেন-ডাই অক্সাইড (NO2) সূর্যরশ্মির (অতি বেগুনী রশ্মি) সাথে বিক্রিয়ায় ওজোন O3(ozone) উৎপন্ন করে।



ওজোন O3 ozone



O3 ozone মাত্রা (WHO guideline values): ৮ ঘন্টা গড়: 100 microgram/cm3.

দৈনিক মৃত্যু ও ওজোন মাত্রার সম্পর্ক পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনার ভিত্তিতে সাম্প্রতিক সময়ে ২০০৫ সালের guideline সংশোধন করে ১২০ থেকে হ্রাস করে ১০০ মাত্রায় অনুমোদিত হয়েছে। Ozone মাত্রা সবচেয়ে বেশী গ্রাম ও রৌদ্রজ্জ্বল দিনে থাকে।

ভূপৃষ্ঠে photochemical smog এর প্রধান উপাদান ওজোন। (ঊর্ধ্বাকাশে ওজোন স্তরের সাথে তুলনীয় নয়)। বায়ুমণ্ডলে oxidant হিসাবে উচ্চ মাত্রায় থাকে।

জ্বালানী হিসাবে ব্যবহৃত পেট্রোল-ডিজেল, আগুন ও গ্যাস থেকে নির্গত রাসায়নিক উপাদান বায়ুমণ্ডলে photochemical reaction এর ফলে সহযোগী (secondary) দূষণকারী ozone তৈরি হয়।

ওজোন উৎপন্ন হয় সূর্যরশ্মির সাথে দূষণকারী উপাদানের (NOX & VOCs) বিক্রিয়ায়। যন্ত্রযান ও শিল্প স্থাপনা থেকে নির্গত নাইট্রোজেন অক্সাইড এবং দ্রাবক, যানবাহনের ইঞ্জিন, শিল্পের উপাদান ও বর্জ্য থেকে বায়বীয় জৈব উপাদান (VOCs) ওজোন উৎপন্ন হওয়ার উৎস। সুতরাং রৌদ্রজ্জ্বল দিনে ও শীতকালে ওজোন মাত্রা বেশী থাকে ও বায়ুদূষণ হয়। WHO Fact sheet updated Mars 2014.

স্বাস্থ্য সমস্যা

মাত্রাধিক ওজোন উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করে।

· শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা · এজমা উদ্দীপক, · ফুসফুসের কর্মক্ষমতা হ্রাস ও · শ্বাসতন্ত্রীয় রোগ।

দীর্ঘকালীন exposure (1 ppm) এ bronchitis, emphysema, fibrosis হয়। কৃষিকাজে নিয়োজিত ব্যক্তির ঝুঁকি বেশী থাকে। শ্বাসনালীতে -এলার্জেন, histamine, acetylcholine জনিত অতিসংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে।

দূষণকারী হিসাবে ইউরোপের সাম্প্রতিক উদ্বেগের প্রধান কারণ ওজোন। কয়েকটি ইউরোপিয়ান studies এর রিপোর্ট অনুযায়ী “ প্রতি 10 mg/m3 ওজোন বৃদ্ধির ফলে মৃত্যুহার ০,৩% ও হৃদরোগ ০,৪% বৃদ্ধি পায়”।



কার্বন-মনোঅক্সাইড (CO)



ভূপৃষ্ঠের (lower atmosphere) অন্যতম স্বাদ, গন্ধ, রংহীন গ্যাস। গড়মাত্রা 0.1 ppm. প্রাকৃতিক উৎসের ৯০ ভাগ উৎপন্ন হয়- · মিথেন oxidation, · কাঠ পোড়ানো, · ফসলের উচ্ছিষ্ট ও শহরের বর্জ্য উম্মুক্ত পোড়ানো · বনের দাবানল/আগুন, · terpine oxidation, · বিড়ি-সিগারেটের ধুঁয়া প্রভৃতি।

যান্ত্রিক যানবাহন- মানবসৃষ্ট সবচেয়ে বড় উৎস। CO পরিমান হ্রাস পায় -CO2 এ রুপান্তরে, ঊর্ধ্ব-বায়ুমণ্ডলে, ভূপৃষ্ঠের মাটিতে।

স্বাস্থ্য সমস্যা

অক্সিজেনের পরিবর্তে CO রক্তের হেমোগ্লোবিনের সাত্থে যুক্ত হয়ে কারবোক্সি-হেমোগ্লোবিন (COHb) তৈরি হয়। (হেমোগ্লোবিনের সাথে মিলিত হওয়ার ক্ষমতা অক্সিজেনের থেকে ২২০ গুন বেশী)। কারবোক্সি-হেমোগ্লোবিন (COHb) এর অক্সিজেন বহনের ক্ষমতা থাকেনা। ফলে হেমোগ্লোবিনের অক্সিজেন বহন ও টিসুতে অক্সিজেন সরবরাহ করার ক্ষমতা হ্রাস পায়। উপসর্গ-

১। অক্সিজেন স্বল্পতাজনিত সংজ্ঞালোপ (unconciousness)। (বাসাবাড়ি, কল-কারখানায় অগ্নিকান্ডে)।

< ৪৮ বৎসরের ব্যক্তির সংজ্ঞালোপ > ২১ ঘন্টা হলে অসম্পূর্ণ recovery হয়।

৪৮ বৎসরের ব্যক্তির সংজ্ঞালোপ > ১১ ঘন্টা হলে সম্পূর্ণ recovery হয়।

২। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরন, এডেমা, ও subendocardial infarction. এবং বিবিধ ত্বকীয় উপসর্গ।

৩। নিম্নমাত্রায় দীর্ঘকালীন CO গ্রহণে (ধূমপান) হৃদরোগ, atherosclerosis, ব্যক্তির ব্যবহার বদলে যাওয়া, এবং RBC count বৃদ্ধি পায়।



বস্তুকণা (Particulate Matter)



Particulate Matter (PM<1->20) বস্তুকণা

বাতাসে থাকা কণাকার (solid, liquid) জৈব ও অজৈব উপাদানের জটিল/যৌগিক সংমিশ্রন। প্রধান উপকরণ/উপাদানঃ সালফেট, নাইট্রেট, অ্যামোনিয়া, সোডিয়াম ক্লোরাইড, কালো কার্বন, খনিজ পদার্থ (dust), ও পানি। WHO Fact sheet updated Mars 2014.

অন্য যে কোন দূষণকারী থেকে এই Particulate Matter (PM) অধিক মানুষের ক্ষতি করে। কনাকার বস্তুকণার ব্যাসার্ধের (micron) ভিত্তিতে কণার আকার নির্ধারিত হয়।

কণাকারে বস্তুর উপাদানঃ

বড় আকারের (PM10~>20), মাঝারী আকারের (PM5~10), ছোট আকারের (PM1~.5), মিহি আকারের (PM1~2.5)

কম ব্যাসার্ধের বস্তুকণা (PM≤10) শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রবেশিত হয়ে শ্বাসনালী ও ফুসফুসে স্থিত ও অবস্থান নেয়। দীর্ঘকালীন exposure এ শ্বাসতন্ত্রীয় রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

উপাদান কণার আকার ও শ্বাসতন্ত্রে স্থিত (deposition):

৯০% বড় আকারের (PM>10~25) কণা নাক ও নাক-গলার সংযোগস্থলে বাধাপ্রাপ্ত হয়।

৫ micron আকারের কণা গলা, ঊর্ধ্ব শ্বাসনালীতে স্থিত হয়। ।

১-৫ micron আকারের কণা প্রান্তিক শ্বাসনালী ও alveoli পর্যন্ত পৌছায় ও তথায় স্থিত হয়।

< ১ micron আকারের কণা শ্বাসনালীতে বাতাসে ভাসমান থাকে ও নিয়মিত ভিতর-বাহির হতে পারে।

অপসারন প্রক্রিয়া হিসাবে হাঁচি, কাশি (নাক, গলা); শ্বাসনালীর mucociliary escalation উপরে তুলে আনে শ্বাসনালী, alveoli থেকে; phagocytosis & immune system.

বড় আকারের PM>10 উৎপন্ন হয় কৃষি, খামার ও নির্মাণকার্য স্থলে।

মিহি আকারের (PM2.5)– জীবাশ্ম জ্বালানী (fossil fuels) থেকে আসে। দীর্ঘ সময় বাতাসে ভাসমান থাকে এবং দূর-দুরান্তে পরিবাহিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। এধরনের মিহিকনায় বিভিন্ন শ্বাসতন্ত্রীয় ও হৃদরোগ তৈরি হয়।

বায়ুর গুনাগুণ নির্ণীত হয় দূষণকারী উপাদানের দৈনিক/বার্ষিক গড় মাত্রা (concentration) এর উপর। অর্থাৎ প্রতি ঘন মিটার বাতাসে কত মাইক্রোগ্রাম PM আছে (উপাদান মাত্রা)।



PM2.5~10 মাত্রা (WHO guideline values): WHO Fact sheet updated Mars 2014.

PM10 : বার্ষিক গড়: 20 microgram/cm3 ; ২৪ ঘন্টা গড়: 50 microgram/cm3.

PM2.5: বার্ষিক গড়: 10 microgram/cm3 ; ২৪ ঘন্টা গড়: 25 microgram/cm3.

স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব

PM20~PM2.5

ছোট আকারের PM10~PM2.5 বেশিমাত্রায় exposure মাত্রার সাথে রোগগ্রস্ততা (morbidity) এবং রোগেমৃত্যুর (mortality) বৃদ্ধি পায়।

বিপরীতভাবে কম মাত্রায় ক্ষুদ্র ও মিহি আকারের PM5~

PM জনিত বায়ুদূষণ শহর ও গ্রামে, উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের প্রায়ই সবার স্বাস্থ্যের জন্য হানিকারক।

ধ্রুত উন্নয়নশীল দেশের শহরাঞ্চলে দূষণের মাত্রা অধিক।

Guidelines এর মাত্রায় দূষণ কমাতে পারলে, আকস্মিক ও দীর্ঘকালীন অনেক স্বাস্থ্য-ঝুঁকির রাশ টানা সম্ভব। “WHO Air Quality Guidelines” হিসাব মতে উন্নয়নশীল শহরের PM10 বার্ষিক গড় মাত্রা 70 microgram/cm3 থেকে WHO guideline values 20 mmicrogram/cm3 তে হ্রাস করতে পারলে বায়ুদূষণ জনিত মৃত্যু ১৫% কমে আসবে। ইউরোপের শহরাঞ্চলে ৭০% বস্তুকণার কারণ ডিজেল পোড়ানো, যা PM2.5 3~5 mg/m3 মাত্রার বায়ুদূষণ করে মাত্র।

২০০৭ সালের AQMP পরিসংখ্যানে দেখা যায় ঢাকার বাতাসে PM2.5 191.83 microgram/cm3 মাত্রায় বিদ্যমান।

আমাদের লক্ষ্য (target) PM10 ও PM2.5 মাত্র মাত্রা guideline অনুযায়ী স্থির রাখা।

একনজরে বায়ুর মাণ নির্ণয়ে WHO নির্দেশিকায় মাপকাঠি

Bold WHO Fact sheet updated Mars 2014.

বায়ু দূষণকারী এবং স্বাস্থ্যের উপর প্রতিক্রিয়া

Guidelines (2005) Ppb Updated Mars 2014

Average conc. (গড় মাত্রা) Poor air Quality Susceptible /ঝুঁকি-প্রবন ব্যক্তি কিভাবে স্বাস্থ্য ক্ষতি হয়



SO2: 5~15 ppb

২৪ ঘন্টা গড়: 20 microgram/cm3

১০ মিনিট গড়:500 microgram/cm3 >125 ppb ব্যক্তির এজমা Neurogenic শ্বাসনালী সংকোচন



NO2: 25~40 ppb

বার্ষিক গড়: 40 microgram/cm3

১ ঘন্টা গড়: 200 microgram/cm3 > 100 ppb ব্যক্তির এলার্জি প্রকটিত এলার্জি প্রতিক্রিয়া,শ্বাসনালীর প্রদাহ



O3 ozone: 10~30 ppb



৮ ঘন্টা গড়: 100 microgram/cm3 > 90 ppb সবাই, বিশেষত ব্যায়ামকালীন Restrictive ফুসফুসিয় রোগ, প্রকটিত এলার্জি প্রতিক্রিয়া, শ্বাসনালীর প্রদাহ



PM10: 25~30 mmicrogram/cm3 (Particulate Matter)



বার্ষিক গড়: 20 microgram/cm3

২৪ ঘন্টা গড়: 50 microgram/cm3 > 65 mg/m3 বয়স্ক ও ব্যক্তির এলার্জি IgE তৈরি, alveoli ও শ্বাসনালীর প্রদাহ



PM2.5: 3~5 mg/m3

বার্ষিক গড়: 10 microgram/cm3

২৪ ঘন্টা গড়: 25 microgram/cm3 > 25 mg/m3 শ্বাসতন্ত্র ও হৃদ রোগ শ্বাসনালীর প্রদাহ

ppb (parts per billion) WHO air quality Guideline Global update 2005. Copenhagen



বায়ু-বাহিত সীসা কণা (lead)



কণাকার উপাদানের (PM) মধ্যে বায়ুবাহিত সীসা সবচেয়ে ক্ষতিকর।

উৎস ঃ যান্ত্রিক বাহনের জ্বালানী, কয়লা ও কাঠ পোড়ানো, ধাতু নিষ্কাশন, ফসফেট সার প্রভৃতি।

বাংলাদেশে খনিজ তৈল পরিশোধনের পর Tetraethyl lead (TEL) যোগ করা হয় ‘অকটেন’ নাম্বার বৃদ্ধির জন্য। গ্যাসোলিনে সীসার (lead) পরিমাণ নির্ভর করে জ্বালানির উপর।

ঢাকায়- মানব রক্তে সীসার মাত্রাঃ ~50 microgram/dl (adult).

বাতাসে 1 microgram/cm3 মাত্রায় সীসা দূষণে ১ পয়েন্ট মানুষের IQ হ্রাস পায়।

স্বাস্থ্য সমস্যা-

কেন্দ্রিয় স্নায়ু তন্ত্রের ক্ষতি (শিশুরা বয়স্কদের চেয়ে ৩ গুণ বেশী)

কিডনি রোগ, উচ্চ রক্তচাপ

গাছপালার ক্ষতি

সীসা দূষণে শিশুদের মানসিক সক্ষমতা হ্রাসের ফলে অদুর ভবিষ্যতে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার ঘাটতি দেখা দিতে পারে। -- Shakeel Ahmed Ibne Mahmood, ASPA member, The University of Maine, is also a member, BAPA,

পথের ধূলা



ফুটপাথের ধূলিয়কণাকে (dust particals) বর্ণনা করা হয় এভাবে- এগুলো হচ্ছে মৃত্তিকার ধুলা, গাড়ির নির্গত নিঃশোষিত পদার্থ, টায়ার ঘর্ষণে রাস্তার বস্তুকণা, গাছ-পাতার ভগ্নাংশ, ছত্রাক, মোল্ড এবং অন্যান্য যৌগিক পদার্থের জটিল সংমিশ্রণ।

ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির মতে, পাথর, ইট, বালি প্রভৃতি দ্বারা আস্তর করা পথের বিভিন্ন উৎস হতে কমপক্ষে ২০টি এলার্জেন পাওয়া যায়। নিউইয়র্কের গবেষকরা বলেছেন, যানবাহন রাজপথে হাঁচি উদ্রেককারী এলার্জেন সৃষ্টি করে।

এলার্জি/এজমা রোগী প্রবলভাবে এই শহুরে dust particles গ্রহণ করে। কারণ রাজপথ দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন, লোকজন প্রভৃতির মাধ্যমে এগুলো দ্রুত বায়ুমণ্ডলে মিশে যায়। তাদের মতে, শতকরা ১২ ভাগ শহরবাসী নিঃশ্বাসের সঙ্গে এমন বায়ুবাহিত-এলার্জেন শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে গ্রহণ করে।

microgram/cm3

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.