নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুহৃদ আকবর

Do Well, Be Well

সুহৃদ আকবর › বিস্তারিত পোস্টঃ

গাঁদা ফুল: শীতের শিশিরের সাথে পাল্লা দেয়া সৌরভ

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৩৩

‘গাঁদা ফুলের মালা দিলাম যতন করে রাখিস,
বন্ধুর সাথে দেখা হলে আমার কথা বলিস।’ -সুহৃদ আকবর
এভাবে মনের মানুষের প্রতি প্রাণের আকুতি জানায় গ্রামের কোন কিশোরী মেয়ে বা নব্য বিবাহিতা স্ত্রী। গাঁদা শীতকালে ফোটে। শীতকালে সকালবেলা প্রকৃতি যখন শীতের চাদর মুড়িয়ে ঝিমায় তখন বাগান থেকে উঁকি দেয় গাঁদা। হলুদ গাঁদা। কমলা গাঁদা। সোনালী গাঁদা। বেগুনি গাঁদা। গাঢ় লাল রঙের গাঁদা। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সর্বত্র গাঁদা আমাদের চোখে পড়ে। তবে শহরের বাগানে ফোটা গাঁদা ফুল সবচেয়ে বেশি সুন্দর দেখায়। বড় বড়। যেন এক একটি গোলাপ। এক অপূর্ব সৌন্দর্য। সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। ফুলের উপর খেলা করে লাল-নীল রঙের প্রজাপতি। সেদিন গাউসুল আজম মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গিয়ে ফুল বাগানের পাশে রোদে দাঁড়িয়ে আছি। শীতকালে রোদ এমনিতেই ভাল লাগে। তার উপর যদি কোন ফুল বাগানের পাশে হয় তাহলেতো কথাই নেই। দুপুরের সাদা রোদ বাগানে এসে পড়ল। আমার ভালই লাগছিল। একটা মাটি রঙের প্রজাপতি নীল একটা গাঁদা ফুলের উপর বসে আছে মনের সুখে। কিছু মৌমাছিকেও উড়তে দেখলাম। সাথে সাথেই আমার মনটা আনন্দে নেচে উঠল। তবে ছোট বেলায় প্রথম গাঁদা ফুলের দেখা পেয়েছিলাম আমার বড় আপুর বাড়ি এবং নানার বাড়িতে। আমার নানার বাড়িটি পাহাড়ি এলাকায় হওয়াতে এখানে সবচেয়ে বেশি প্রাকৃতির রূপবৈচিত্র চোখে পড়ে। উত্তর ফটিকছড়ির (নানার বাড়ি) অধিকাংশ ঘরই মাটির দেয়াল দিয়ে তৈরী করা। সেখানে একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম। সেখানে প্রত্যের পরিবার তাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ঘরের পাশে একটি বাগান তৈরী করে। হযরত মুহম্মদ (সঃ) ফুলকে অসম্ভব রকম ভালবাসতেন। হযরতের সেই বাণীটি কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত কবিতায় খুবই চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন:
“জোটে যদি মোটে একটি পয়সা
খাদ্য কিনিও ক্ষুধার লাগি,
দু’টি যদি জোটে তবে অর্ধেকে
ফুল কিনে নিও, হে অনুরাগী।”
ছোট বেলা থেকে ফুল এবং ফুল বাগান আমার খুব প্রিয়। সম্ভবত সেই কারণেই ভেবেছিলাম পাহাড়ি এলাকার কোন মেয়েকে বিয়ে করব। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তা পরিবর্তন হয়ে যায়। তবে এটা যে ফুলের প্রতি ভালবাসা থেকে তাতে কোনই সন্দেহ নাই। তবে তখনকার পাহাড়ি এলাকার বাগানের গাঁদা আর বর্তমানের ঢাকা শহরের বাগানে ফোটা গাঁদার ভেতর একটা পার্থক্য দেখতে যায় তা হলো গ্রামের গাঁদা থেকে শহুরে গাঁদা সাইজে অনেক বড়। এখন বুঝেছি গাঁদা শুধু এক ধরণের হয় না অনেক ধরণের হয়। এখন গাঁদা সম্পর্কে যৎকিঞ্চিৎ জেনে নেয়া যাক।
বাংলা নাম গাঁদা। বৈজ্ঞানিক নাম-ঞধমধঃবং বৎবপঃধ (ট্যাগাটিস ইরেক্টা)।
আফ্রিকা ম্যারিগোল্ড, মেক্সিকোর প্রজাতিঃ। গাছ ৯০ সেমি পর্যন্ত উঁচু। কা- আমসৃণ, শাখায়িত। পাতা পক্ষাকারে কাটা। পাতার অসাধারণ কারুকাজ দেখে আমাদের চোখ ভরে যায়। পতায়ও এক ধরণের গন্ধ পাওয়া যায়। যৌগপত্রের মতো দেখায়, যা তীব্রগন্ধী। ডালের আগায় সিঙ্গল বা ডাবল ফুল, শেষেরটিই আদৃত। বড় বড় হলুদ বা কমলা রঙের ফুল, ৮Ñ১০ সেমি চওড়া। খাটো (২০Ñ৩০ সেমি) ভ্যারাইটিও আছে।
কালীগাদ ঞ. চধঃঁষধ বা ফ্রেঞ্চ ম্যারিগোল্ড মে∙িকো ও দক্ষিণ আমেরিকার, ২Ñ৫.৫ সেমি চওড়া, সুগন্ধি। গোটা গাছভরা ফুল, নানা রঙেরÑ হলুদ, কমলা, সোনালী, বেগুনি, গাঢ়-লাল ও এসব রঙের নানা মিশেল, সিঙ্গল বা ডাবল। বীজ ও কলমে চাষ। বেশি সার দিলে ফুল কম ফোটে। আজকাল আরেকটি প্রজাতিও ঞ. ঃবহঁরভড়ষধ বেশি জনপ্রিয়। খাটো গাছ (৩০-৪০ সেমি), পাতার লতি সরু, ফুল ছোট, সিঙ্গল, হলুদ বা কমলা রঙের, গাছ ভরে ফোটে। গাঁদা ফুলের মালা দিয়ে বিয়ের গাড়ি সাজানো হয়। দুলাকে মালা হিসেবে পরানো হয়। এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের গলায়ও জনগণের অভিনন্দন আর ভালবাসার প্রতীক হিসেবে গাঁদা ফুলের মালা

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.