নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুহৃদ আকবর

Do Well, Be Well

সুহৃদ আকবর › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবিতার কষ্ট

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৫২

কবিতা লেখা মোটেই সহজ নয়। যার তার দ্বারা কবিতা লেখা হয় না। কবিতা লিখতে কষ্ট আছে। এটাই বোধহয় পৃথিবীর কঠিনতম একটা কাজ। গদ্য রচনার চেয়ে পদ্য লেখা অনেক কঠিন সাধ্য ব্যাপার। সেই জন্যই কবি জীবনান্দ দাশ কবি সম্পর্কে বলেছেন, “সকলেই কবি নয়; কেউ কেউ কবি”। কেননা আল মাহমুদ বলেছিলেন, “কবিতা লিখতে গেলে পাঁজরের এক একটা হাড় ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়”। কপাল দিয়ে ঘাম নির্গত হয়। মুখ রক্তিমবর্ণ ধারণ করে। চোখ হয় ইষৎ নীল। শীতকালের শিশির কণার মতই কবিতার কষ্ট। নিশিডাকা পাখির ডানা ঝামটানিতে কবির বুকে কাঁপন তোলে। মনের সকল ভয়, আবেগ, অনুভূতি মিশে একাকার হয়ে যায় কবিতার ভেতর। উত্তেজনা, শিহরণে কেঁপে উঠে কবির বুক। চোখের পাতা নড়েচড়ে উঠে বারবার। স্থিরদৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকেন কবি। দিগন্তের নীল সাদা বেগুনি রঙের মেঘের ওড়াওড়িতে কবির মন ব্যাকুল হয়। আকাশের দিকে তাকিয়ে এটাওটা কতকি খোঁজেন। চাঁদের সাথে কথা বলেন। কবির কর্মকান্ড দেখে ধ্র“বতারা মুখ টিপে হাসে। কবির দৃষ্টি আবার মর্ত্যলোকে ফিরে আসে। এক সময় গাছের ডালে পাখির বাসার উপর চোখ আঁটকে যায় কবির। পাখির ডাকে মোহিত হয় কবির মন। এভাবে জন্ম নেয় কবিতা। সৃষ্টি হয় শিল্প। কবি যখন কবিতা লিখেন তখন তিনি জানতে পারেন না কত মহৎ একটা কবিতা তিনি রচনা করতে চলেছেন। খুব কম কবিই এটা উপলব্ধি করতে পারেন। আসলে কবিতা লেখার সময় কোনো কবির পইে তা জানা সম্ভব হয় না। পাঠকের চাহিদার উপর কিছুটা নির্ভর করে কবিতার সফলতা। আর কিছুটা নির্ভর করে তার স্থায়িত্বকাল নিয়ে। ইতিহাসের মানদন্ডে কতদিন স্থায়ী হবে কবিতাটি তিনি সেটা বলবেনইবা কিভাবে। ইতিহাস আর সময় এক সময় জানান দেয় তার কবিতাটি কতটুকু পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করেছে। কবি প্রকৃতির অর পাঠ করেন তবে অদৃষ্টের অর পাঠ করার শক্তি তার নেই।
যিনি কবিতা লিখেন তিনি কবি। কবিতাই কবির ধ্যান জ্ঞান। কবিতা নিয়েই কবির যত কারবার। তাঁর যত সাধনা-আরাধনা। তাইতো বারবার তিনি কবিতার কাছে ফিরে যান। শব্দ হলো কবিতার কাঁচামাল। কুমার কাদামাটি দিয়ে মাটির হাড়ি পাতিল তৈরী করেন। কবি কুমারের ভূমিকা পালন করেন। শব্দ নিয়ে খেলা করতে তিনি ভালোবাসেন। নির্মাণ করেন কবিতার শরীর। পৃথিবীতে অনেক ধরণের কবি আছেÑ সুখের কবি, দুঃখের কবি, বিদ্রোহের কবি, প্রেমের কবি, দ্রোহের কবি, বিপ্লবের কবি, সংগ্রামের কবি, স্বাধীনতার কবি, ভাষার কবি, পল্লী কবি, নাগরিক কবি, গ্রামীণ কবি, লোক কবি ইত্যাদি। এক একজন কবি তার লেখার মধ্য দিয়ে এক একটি বিষয় প্রকাশ করেন। কবির কবিতা লেখার যন্ত্রণা আর জন্মদাত্রীর প্রসব যন্ত্রণা একই রকম। জন্মদাত্রী পেটে সন্তান নিয়ে চটপট করতে থাকেন। কবিও কবিতার জন্য চটপট করে থাকেন সারাণ। হৃদয় তাঁর হাহাকার করে উঠে। একটি কবিতার জন্য তিনি প্রার্থনা করেন। নদীর কাছে, ঝরর্ণার কাছে, সাগরের কাছে, ফুলের কাছে, পাখির কাছে তিনি ছুটে যান। যতণ পর্যন্ত কবিতা লেখা না হয় ততণ তার মনে শান্তি আসে না। কোনো কাজে কবির মন বসতে চায় না। তাইতো কবিরা উদাস প্রকৃতির হয়। এই উদাস স্বভাব নিয়ে আমরা অনেকে হাসাহাসি করি। কিন্তু আসল ব্যাপারটা কেউ একবার তিয়ে দেখি না। কবিরা উদাস হন কবিতার জন্য। কবিদের প্রেম প্রকৃতির জন্য। মোহ সাগরের জন্য। কামনা নারীর জন্য। কবিতা নিয়েই কবিদের যত ব্যস্ততা।
সৃষ্টির ভেতর একটা অনন্দ আছে। কবিরা হলেন কবিতার স্রষ্টা। তারা কবিতা নির্মাণ করেন। সেই আনন্দ তারা উপলব্ধি করেন। একটি কবিতা যখন কোনো লিটল ম্যাগ কিংবা পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তখন কবির দেহে যে আনন্দ সঞ্চার হয় তার সাথে অন্য কিছুর তুলনা কি চলে? কবির চোখে আনন্দ। মুখে বিজয়ের হাসি। তাহলে সারা পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ তাঁয়ালার আনন্দ কতটুকু তা একবার ভেবে দেখুন। সমগ্র পৃথিবীটাই হলো আল্লাহর সৃষ্টি। তাইতো বৃলতা তরুলতা সিজদাবনত হয়ে রবের প্রার্থনা করছে অবিরত।
দেহের আনন্দ ভোগে। স্রষ্টার আনন্দ নির্মাণে। চোখের আনন্দ দর্শনে। মনের আনন্দ চিত্তবিনোদনে। দেহের সুস্থতার জন্য যেমন খেলাধুলা প্রয়োজন তেমনি মনের নির্মল আনন্দের জন্য চাই কবিতা। কবি তার বুকের ভেতর কষ্ট নিয়ে কবিতা লিখেন। কষ্টের গর্ব থেকে জন্ম নেয় এক একটি কবিতা। তাই কবিতার মধ্য দিয়ে কবি আর কবিতার কষ্ট ব্যঙময় হয়ে উঠে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২৪

জনম দাসী বলেছেন: কবিতা লেখা মোটেই সহজ নয়। যার তার দ্বারা কবিতা লেখা হয় না। কবিতা লিখতে কষ্ট আছে। এটাই বোধহয় পৃথিবীর কঠিনতম একটা কাজ। গদ্য রচনার চেয়ে পদ্য লেখা অনেক কঠিন সাধ্য ব্যাপার। সেই জন্যই কবি জীবনান্দ দাশ কবি সম্পর্কে বলেছেন, “সকলেই কবি নয়; কেউ কেউ কবি”। কেননা আল মাহমুদ বলেছিলেন, “কবিতা লিখতে গেলে পাঁজরের এক একটা হাড় ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়”। কপাল দিয়ে ঘাম নির্গত হয়। মুখ রক্তিমবর্ণ ধারণ করে। চোখ হয় ইষৎ নীল। শীতকালের শিশির কণার মতই কবিতার কষ্ট। নিশিডাকা পাখির ডানা ঝামটানিতে কবির বুকে কাঁপন তোলে। মনের সকল ভয়, আবেগ, অনুভূতি মিশে একাকার হয়ে যায় কবিতার ভেতর। উত্তেজনা, শিহরণে কেঁপে উঠে কবির বুক। চোখের পাতা নড়েচড়ে উঠে বারবার। স্থিরদৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকেন কবি। দিগন্তের নীল সাদা বেগুনি রঙের মেঘের ওড়াওড়িতে কবির মন ব্যাকুল হয়। আকাশের দিকে তাকিয়ে এটাওটা কতকি খোঁজেন। চাঁদের সাথে কথা বলেন। কবির কর্মকান্ড দেখে ধ্র“বতারা মুখ টিপে হাসে। কবির দৃষ্টি আবার মর্ত্যলোকে ফিরে আসে। এক সময় গাছের ডালে পাখির বাসার উপর চোখ আঁটকে যায় কবির। পাখির ডাকে মোহিত হয় কবির মন। এভাবে জন্ম নেয় কবিতা। সৃষ্টি হয় শিল্প। কবি যখন কবিতা লিখেন তখন তিনি জানতে পারেন না কত মহৎ একটা কবিতা তিনি রচনা করতে চলেছেন। খুব কম কবিই এটা উপলব্ধি করতে পারেন।


আমিও বলি জীবনবাবুর একই কথা, '' সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি।

লেখাটি ভালো লেগেছে, ++++++++

২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০৯

মনস্বিনী বলেছেন: ভালো লাগলো । কিন্তু কবিতা কি, তা এখনো বুঝে উঠতে পারিনি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.