নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুহৃদ আকবর

Do Well, Be Well

সুহৃদ আকবর › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বপ্নবাজ মানুষ: মিল্লাত ভাইয়া

১০ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৫

সকল মানুষই স্বপ্ন দেখে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে সকল মানুষই স্বপ্নবাজ। স্বপ্ন নিয়েই মানুষ বেঁচে থাকে। কথা হলো কারো স্বপ্ন পূরণ হয় আর কারো স্বপ্ন পূরণ হয় না। এখানে আরেকটা কথা বলে রাখা প্রয়োজন যে, যে স্বপ্ন ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখা হয় তা প্রকৃত স্বপ্ন নয়; যে স্বপ্ন মানুষকে ঘুমুতে দেয়না সেটাই হলো আসল স্বপ্ন। তার মানে স্বপ্ন পূরণের জন্য মানুষকে নিরন্তর কাজ করে যাওয়ার কথাই এখানে বলা হয়েছে। সেই রকমই একজন স্বপ্নবাজ মানুষ মাহবুবুল হক (মিল্লাত) ভাই। আমি তাঁকে মিল্লাত ভাইয়া নামেই ডাকি। যিনি এলাকার উন্নয়নের জন্য নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। কিছুদিন আগে নিজ এলাকার একটি রাস্তা পাকা করেছেন। ইতোমধ্যে চর মজলিশপুর ব্রিজের কাজ শুরু হয়েছে। এই ব্রিজটির জন্য ভাইয়াকে অনেক কষ্ট করতে দেখেছি। এক মন্ত্রণালয় থেকে আরেক মন্ত্রণালয় নিরন্তর ছুটে চলছেন। কাজ আদায়ের জন্য তদবির করেছেন। তাঁর অতি মূল্যবান সময় থেকে সময় বের করেছেন। তাঁর এ পথচলা আরো সুগম হবে বলে আশা করছি। ভাইয়ার জন্য অনেক অনেক শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা রইল। মহান আল্লাহ যেন ভবিষ্যতে তাঁকে আরো বেশি কাজ করা তৌফিক দেন এ দোয়াই করছি।
আমাদের সারা জীবনের স্বপ্ন ছিল ব্রিজটিকে নিয়ে। বিশেষ করে আমার স্বপ্ন ছিল। সেই জন্য যখনই ভাইয়ার সাথে একান্তে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি তখনই এলাকার বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট, ব্রিজের কথা বলেছি। তখন ভাইয়া আমাকে একটা কথা বলতেন, “এগুলো হলো জনপ্রতিনিধির কাজ, তারা করবে”। এর আগে ভাইয়া বেশ কিছু বছর আমেরিকা থেকে এসেছেন। আমি বললাম, “তারা আর কি কাজ করবে, তারাতো টাকা উসুল করতেই সময় ব্যয় করে”। ভাইয়াকে অনেক কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। ভাইয়ার সহজ, সরল, নম্র, ভদ্র আচরণ আমাকে মুগ্ধ করেছে বারবার। সরকারের বড় একজন কর্মকর্তা হয়েও অতি সাধারণ জীবন-যাপন করেন। সাধারণভাবে কথা বলেন। সাধারণ খাবার গ্রহণ করেন। কখনো ভাইয়াকে গলা উঁচু করে কথা বলতে দেখিনি। কারো সাথে ঝগড়া করতে দেখিনি। চোখ রাঙিয়ে, নিজের যুক্তিকে প্রতিষ্ঠা করার নোংরা সংস্কৃতি থেকে তিনি ছিলেন মুক্ত। এ রকম একজন মানুষকে জন্ম দিয়েছে মাওলানা পাড়া গ্রাম। উনার বাবা প্রাইমারি স্কুলের মাস্টার ছিলেন। আমরা তাঁকে হুজুর স্যার নামেই ডাকতাম। এখন আমেরিকায় ছোট ছেলের সাথে বসবাস করছেন। আমার বাবার সাথে হুজুর স্যারের ভালো একটা সম্পর্ক ছিল। মাওলানা পাড়ার পাশেই আমাদের (চাপরাশী বাড়ি) বাড়ি। আমাদের বাড়ির লোকদের সাথে মাওলানা পাড়ার একটা যোগসূত্র ছিল। যার অন্যতম কারণ ছিলো খেলাধুলা। আমাদের বাড়ির পাশে বড় একটা জমি ছিল। সে জমিতে শীতকালে মাঠ তৈরী করা হত। সেখানে দুই গ্রামের লোকেরা মিলে বিকালে ফুটবল, ক্রিকেট খেলা হত। প্রথমে তা ‘কাছি বুশ স্টেডিয়াম’ নামে পরিচিত ছিল পরে তা পরিবর্তন করে ‘বারাক ওবামা স্টেডিয়াম’ নামকরণ করা হয়। এ নামকরণের পিছনে মণি কাকার অগ্রণী ভূমিকা ছিল। বিশিষ্ট রাজনৈতিক, সংগঠন আর খেলাধুলা অন্তপ্রাণ একজন মানুষ মণি কাকা। আমিও কয়েকদিন তাদের সাথে খেলেছি। আমাদের পাড়া থেকে মণি কাকা, জসীম ভাইয়া আর ও পাড়া থেকে আলম ভাইয়া, সেলিম ভাইয়া, খুরশিদ ভাইয়া নেতৃত্ব দিতেন। মাঝে মাঝে ঝগড়া বেঁধে যেত। বড় ধরণের অঘটন ছাড়াই মিটমাট হয়ে যেত। আর একটা ভালো ভালো দিক ছিল মাগরিবের আযানের সাথে সাথেই খেলা বন্ধ হয়ে যেত। এটা ছিল আমাদের দুই একাকার অঘোষিত নিয়ম। বাংলাদেশের আর কোনো এলাকার এ নিয়ম আছে বলে আমার জানা নেই। খেলাধুলা শেষে ছেলেরা দলবেধে মসজিদে যেত। এ রকম সুন্দর সংস্কৃতি আমাদের এলাকায় বহু দিন থেকে চালু রয়েছে। তবে ইদানিং কিছু যুবক ছেলের অপ্রত্যাশিত আচরণ আমাদেরকে ব্যথিত করছে। তাদের কাজকর্ম আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলছে। যা আমাদের এলাকার সুনাম সুখ্যাতির সাথে কিছুতেই যায় না। এ েেত্র সচেতন যুব সমাজকে অগ্রণী ভূমিকা পালনের উদাত্ত আহ্বান জানাই।
ইতোমধ্যে লেবার শেড তৈরী হয়েছে। শিগরিই শুরু হবে পাইলিং এর কাজ। চর মজলিশপুর, চর লীগঞ্জ, বদরপুর, পাইক পড়া, তাকিয়া বাজার, ফাজিলের ঘাট মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল এ ব্রিজ। এছাড়া সোনাগাজী এবং দাগনভূঁইয়া উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে সেতুটির মধ্য দিয়ে। তবে ব্রিজ হওয়ার মধ্য দিয়ে মিয়াজী পাড়া এবং ওপারের কিছু মাঝির খারাপ আচরণ ও গালিগালাজ থেকে নিরীহ মানুষরা মুক্তি পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। অনেক মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে আমি দেখেছি। তারা এতটাই মতাবান ছিল যে, কেউ প্রতিবাদ করলে তাকেই অপমান করে ছাড়ত। তাই শুধুমাত্র অপমানের ভয়ে কেউ কিছু বলত না। তবে আমি এখানে সব মাঝিকে দোষারোপ করছি না। কিছু মাঝি এ রকম আচরণ করত। ভালো মাঝির সংখ্যাই ছিল বেশি। সমস্যা হলো খারাপ টাই বেশি ছড়িয়ে পড়ে।
ফুল যখন ফোটে সে বলেনা আমি ফুটেছি তোমরা আমাকে দেখে যাও। মানুষই ছুটে যায় ফুটে কাছে। অতিকথন, তৈলমর্ধন, চাপাবাজি, গলাবাজি দিয়ে অনেক কিছু করা যায় সত্য। তবে এ শব্দগুলোকে আমি মন থেকেই ঘৃণা করি। আমার ডিকশনারিতে এ শব্দগুলোকে আমি কখনোই স্থান দিই না। আমি সব সময় কাজে বিশ্বাসী। সাদাকে সাদা কালোকে কালো বলাতেই আমি অভ্যস্থ। যুক্তি দিয়ে রঙ পরিবর্তন করার পে আমি নই। ব্রিজের কাজ শুরু হয়েছে শুনে আমি এতটাই খুশি হয়েছি যে এ লেখাটি না লিখে পারলাম না। আর সত্যিকার অর্থে মাহবুবুল হক মিল্লাত ভাইয়া তো অন্তত এতটুকু ধন্যবাদ পাওয়ার দাবিদার। মহৎ মানুষকে ধন্যবাদ দিয়ে অমরা কিছুটা হলেও নিজেদের ভার লাঘব করতে চাই।
আমাদের ছোট্ট এলাকাটিকে নিয়ে আরো যারা স্বপ্ন দেখতেন তারা হলেন আমাদের বাড়ির: মাস্টার আব্দুল মান্নান ফারুক (আমার বড় ভাই), আবদুল আউয়াল, আবদুল হালিম, মনির উদ্দিন মণি। মিয়াজী পাড়ার: প্রয়াত কামাল ভাইয়া, জসীম ভাইয়া, আবদুস সোবহান কাকা। মাওলানা পাড়ার: মাওলানা নূর মোহাম্মদ, নুরুল করিম, মিজান ভাইয়া। এছাড়া মঞ্জুর হোসেন সুমন এলাকার উন্নয়নের জন্য কিছু কাজ করছে। এ ক্ষুদ্র পরিসরে সকলের নাম উল্লেখ সম্ভব হয়নি বলে দুঃখিত।
ভাই ভবিষ্যতে এলাকার সবাই নিজেকে সংশোধন করে মিলেমিশে বসবাস করবে এটাই প্রত্যাশা করি। আমাদের এলাকার নদীর উপর ব্রিজ হচ্ছে ভাবতেই মনটা খুশিতে নেচে উঠছে বারবার।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:২৮

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ব্রিজটি তৈরি হোক, এই কামনা করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.