নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

......

জীবন একটা বিষাদময় সুন্দরতম ঘটনার সংকলন!!!

শঙ্খচিল_শঙ্খচিল

বিষাদ হোক আর বিস্বাদ হোক কিংবা মজা লুটার -ই হোক, আমার বিশ্বাস সব পথ-ই সুন্দরে শেষ হয়। আবার কিছু সুন্দরও বিষাদময় হয়! বিষাদময় সুন্দরতম সময়গুলাকে দেখলে খুব মায়া লাগে, কেমন যেন মায়ার ছায়া বিছানো। মায়া মিশানো সময়ে আর মজার কুঠি\'র জগতে স্বার্থপর আমি মজা খুজি, মজা লুটি।

শঙ্খচিল_শঙ্খচিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

অপার বেদনার সম্পর্ক!

১৮ ই জুন, ২০১৪ রাত ৮:৪৫

গ্রীষ্মের শেষ অথবা বর্ষার শুরুর দিকে। দলধরে পিপড়ার হাটা চলা। বাঁশঝাড়ের বাগান পাশকাটিয়ে স্লুইস গেটকে ডানে রেখে, খালের পাড় ধরে একটু এগুলেই সামনে নদ- ব্রহ্মপুত্র। নদ-এ অথৈ পানি... বিচ্ছিন্নভাবে কচুরিপানার দল ভেসে আসে। এই কচুরিপানা ভেসে আসলে স্থানীয়রা বলে 'আড়ালিয়া-র বান ছুটছে'। কোথায় সেই আড়ালিয়া? আর কোথায় সেই বাঁধ?

বালক উত্তরদিকে তাকিয়ে থাকে আর ভাবে, পানি যেহেতু উত্তর থেকে আসছে আর দক্ষিনে নেমে যাচ্ছে, আড়ালিয়া তাহলে অই সামনে যেখানে নদ-এর বাঁকটা দেখা যায় তার একটু পরেই হবে!



নদ -এর পাড়েই কলাবাগান। বালকের পিতা ওখানে কাজ করে। তিনি মনে মনে শঙ্কিত, যে হারে পানি বাড়ছে তাতে মনে হয় এবছর কলা পরিপুষ্ট হওয়ার আগেই নদ -এর পানিতে নষ্ট হবে। বালকের মনে এসব চিন্তার বালাই নেই। সে কলার মুচার ফুলের মধ্যে মধু খুঁজায় ব্যস্ত! অথবা কখনো ঘাসফড়িঙ-এর পিছু পিছু ধাওয়ারত। তার সামনে বিশাল পৃথিবীঃ নদ,কলাখেত,ঘাসফড়িং,মাছরাঙ্গা, শালিক, পিঁপড়ার ঢিবি আরও কত কী!



পিতা বালকের সাথে কথা বলে, কখনো- আব্বা জানো? সিরিয়ার রাজধানী কিন্তু দামেস্ক! অথবা, একটা পাটকাঠি দিয়ে কিন্তু নদ-এ বাড়ন্ত পানি সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়!

কিংবা, হাত-এর পাঁচ আঙ্গুল সমান হলে কিন্তু খুব মুসিবত হতো, জানো?

বালক কৌতূহলী। তার মনেও সহস্র প্রশ্নঃ আচ্ছা আব্বা, এত পানি কই যায়? সাগরে যায়? সাগর থেকে কই যায়-মহাসাগর? অইখান থেকে কই যায়? ক্যান?

অথবা এত পাখি ক্যান? ওইটার নাম কি? ক্যান? আচ্ছা আব্বা, এই পিঁপড়ার নাম কি? পাঁচকামড়ি? ক্যান? ওউউ... চার পাঁচটা কামড় একসাথে দেয়, এই জন্য? আচ্ছা আব্বা, পাঁচকামড়ি যদি ছয়কামড় দেয় তাইলে এরে কি ছয়কামড়ি বোলব? পিতার অশেষ ধর্য্য। সবকিছুর উত্তর দিয়ে যায়।



পিতা চা-স্টল এ বসে, চা খায়। বালক তাকিয়ে থাকে। কি চমৎকার ভঙ্গিমায় একহাতে চায়ের কাপ তুলে ধরে আলতোকরে ঠোঁটে লাগিয়ে হালকা চুমুক। পিতার মায়াঝরা প্রশ্নঃ খাবা? দাঁড়াও একটু ঠাণ্ডা হোক। পিতা আড্ডা দেয়, চায়ের কাপ হাতে ঝড় তোলে। লেবানন, বসনিয়া, হারজেগোভেনিয়া, ইরাক, জার্মান এসবের খবরাখবর তার হাতের নাগালে। টু-বেন্ড এর ন্যাশনাল রেডিও তার সকল খবরের উৎস। বালক কিছু না বুঝেই নিশ্পলক তাকিয়ে থাকে।



বিকেলে বাজারে গেলে একটা রসগুল্লা বালকের পাওনা হয়। আসারপথে দু'টাকার বাদাম চিবোতে চিবোতে পিতার হাত ধরে মেঠো পথ ধরে বাড়ি ফেরা। সন্ধার সময়টা বালকের কাটতেই চায় না। পড়াশুনায় তার খুব বিরক্তি! বালকের সকল মনযোগ, কখন রাতের খাবার শেষে উঠানে মাদুর বিছিয়ে গল্পের আসর জমবে! পিতার কোলে মাথা রেখে গল্পের শুরু, আর ওখানেই শেষ। আকাশে চাদের সাথে মেঘের লুকোচুরি--চারপাশের পরিবেশ কি ভীষণ মায়ায় অপার্থিব! বাঁশঝাড়ে বাতাসে ভৌতিক শব্দ আর তক্ষকের ডাকে ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসে। বালকের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে পিতার গল্পের শাখা প্রশাখা বাড়তে থাকে!



আজ বালক অনেক পরিণত। তবুও মনের ভেতরের সেই গল্পের আবহ আজও খুঁজতে চায়। এখনকার বেশিরভাগ গল্পই হয়-নীরবতায়। বালক আর পিতা পাশাপাশি বসে চা খায়। এটা ওটা নিয়ে গল্প করে, কিন্ত সে পরিবেশ আর আসে না। বালক টের পায়, পিতার সেই মায়া আজ তার মধ্যে সংক্রমিত। পিতা চা খায়-বালক দু'চোখ ভরা মায়ানিয়ে পাশে বসে থাকে। বালক অসীম বেদনা নিয়ে পিতার আসেপাশে ঘুরঘুর করে। 'মায়ার কাছে আরও একটু মায়ার আবদারে!'



বেদনা!!!!????





হ্যাঁ.হ্যাঁ..



"অলৌকিক আনন্দের ভার বিধাতা যারে দ্যান, তার বক্ষে বেদনা অপার"-ই হয়!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৩১

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: ভালো লাগল

২| ২০ শে জুন, ২০১৪ রাত ১২:০৩

শঙ্খচিল_শঙ্খচিল বলেছেন: ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.