নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

......

জীবন একটা বিষাদময় সুন্দরতম ঘটনার সংকলন!!!

শঙ্খচিল_শঙ্খচিল

বিষাদ হোক আর বিস্বাদ হোক কিংবা মজা লুটার -ই হোক, আমার বিশ্বাস সব পথ-ই সুন্দরে শেষ হয়। আবার কিছু সুন্দরও বিষাদময় হয়! বিষাদময় সুন্দরতম সময়গুলাকে দেখলে খুব মায়া লাগে, কেমন যেন মায়ার ছায়া বিছানো। মায়া মিশানো সময়ে আর মজার কুঠি\'র জগতে স্বার্থপর আমি মজা খুজি, মজা লুটি।

শঙ্খচিল_শঙ্খচিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্নেহ থাকে, থাকুক স্নেহ অটুট !

২৭ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১:২৩

সন্ধ্যে নামতে যা দেরী, বালকের বাড়ী ফেরা নিয়ে কঠোর নির্দেশ জ্ঞাপনকারী উঠোন থেকে হাঁক দেয়...

“স্বপন ! স্ব..অ..অ..প..অ..ন !”

প্রতিউত্তরের জন্যে ক্ষণকাল অপেক্ষা শেষে, উঠোন থেকে বাইরে পা বাড়ান। গন্তব্যঃ অনতিদূরের খেলার মাঠ।
এখনো কোলাহল শোনা যাচ্ছে! মাঠের কাছাকাছি যেতেই, সারা গায়ে একরাশ ধুলাবালি আর শুষ্ক ঠোট নিয়ে ত্রস্তপায়ে- বাড়ির ফিরতি পথে বালকের সাক্ষাত মেলে। পিতাকে দেখেই তার বুকে দুরুদুরু, শুষ্ক ঠোট আরো খটখটে!

পিতাকে পাশ কাটিয়ে, এক দৌড়ে মসজিদের পাশের টিউবঅয়েল থেকে দুপদাপ হাতমুখ ধুয়েই- কেরোসিনের হ্যারিকেন/কুপি বাতিতে বালকের সান্ধ্য অধ্যয়ন শুরু! সারাদিনের হুড়োমোরি- ছুটাছুটিতে হুট করেই ঘুম আসে। দুচোখ কচলে টকটকে লালের মধ্যেই চেষ্টা চলে রচনা “অধ্যবসায়” অথবা “শ্রমের মর্যাদা” টাইপ কিছু শেখার! অথবা, সরল-শতকরা-সুদকষা নিয়ে টানাটানি! অনেক কিছুই মাথায় ঢোকেনা, গুনের কাজ আগে হবে না যোগেরটা, ব্র্যাকেট থাকলে কিভাবে আগাতে হবে, অথবা পৌনঃপৌণিক!

অনেকটা সময়নিয়ে মাত্র দু- আড়াই ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরে খাওয়ার ডাক পরে। বালকের গ্রামে তখনো শহুরে শব্দের আনাগোনা নাই! তখন তাই, নাস্তা, লাঞ্চ আর ডিনারের পরিবর্তে তিনবেলায়ই তাদের খাওয়া হয়!

খাওয়া শেষে, মাদুর নিয়ে তারা উঠোনে। পিতার হাতে তালপাতার পাখা, বালকের চোখ থেকে কর্পুরের মত উধাও ঘুম! পাশেই একটা টুলের উপর মা’ও আসন নেন! ঢিমেতালে আলো জ্বলে। গল্প চলে- সেই সব রাত বেড়ে চলে!
হটাত কোথাও থেকে এক আকাশ ভর্তি খুব ঠাণ্ডা বাতাস বয়ে গেলে, পিতার স্বগোক্তি- “আঃ, কোত্থেইকা জানিরে ঠাণ্ডা বাতাস আইতাছে!” ঝিমোতে ঝিমোতে প্রায় ঘুমের প্রাক্কালে আবার শুনা যায়, “ ও ঘুমায়ে গেছে, অরে বিছানায় নিয়া যাও। আর বাতাস কর।”
বালক পরম নির্ভরতায় ঘুমায়।

ঝিরিঝিরি বাতাসে নিভুনিভু প্রায় বাতির আগুন, আবারও মাথা উচু করে দাড়ায়! পিতা বই নিয়ে বসেন-অধ্যবসায়, নোট লেখেন- শ্রমের মর্যাদা, চিন্তায় মাতেন- সরল কিভাবে আরো সরলতম ভাষায় প্রকাশ করা যায়; সাথে সুদকষার চক্রবৃদ্ধি!

সেই সব দিনের পরে আলভা এডিসন সাহেবের বিজলী বাতির’ও দেখা মেলে। স্কুলের সরলের পরে আসে ক্যালকুলাস- ইন্টিগ্রাল, ডিফারেন্সিয়াল; ভেক্টর- ম্যাট্রিক্স হাবিজাবি কতকি!
পিতা পৃষ্ঠা উল্টান, সময়ও বালকের পৃষ্ঠা উলটে দেয়- কিশোর, তরুণ, যুবক! অনেক ছাড় আসে- মাগরিবের আযানের পরেও বাড়ি ঢুকা যায়, আড্ডা দিয়ে গভীর রাতেও মাঝে মাঝে!

ইউনি-তে যাওয়ার পর খালি স্নেহ থাকে! স্নেহ থাকে বাড়ীর সকলের কুশলাদি জানানোর ফাকে ফাকে, স্বাস্থ্যের খোজ-খবরের পরে; আর স্নেহ থাকে- শ্বাস আর প্রশ্বাসের মধ্যবর্তী সময়ে!

সময়ের অমিলে আজকাল মাঝে মাঝেই স্নেহ খোঁজা মানিব্যাগের ভাজে রাখা সেই পুরুনো মানি অর্ডারের নোটে; এখনো পড়া যায়-

“প্রিয় স্বপন, স্নেহ রহিল...............”

স্নেহেরা থেকেই যায়...থেকেই যাবে...থেকেই যাবে !

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:০৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: +

২৮ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৪:৩৫

শঙ্খচিল_শঙ্খচিল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, হাসান মাহবুব ভাই!

ভাল থাকুন, সবসময়।

২| ২৭ শে জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৯

সুমন কর বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।
৩+।

২৮ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৪:৩৭

শঙ্খচিল_শঙ্খচিল বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যে ভালোলাগা!

আর ভালো থাকা হোক, সবসময়।

৩| ২৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:৩২

খেয়ালি দুপুর বলেছেন: অসম্ভব ভাল হয়েছে। ভাল লেগেছে ভিষণ। শুভকামনা রইল।

৩০ শে জুন, ২০১৫ রাত ৩:০৪

শঙ্খচিল_শঙ্খচিল বলেছেন: বলেছেন: আপনার ভালোলাগা'য় আমার মুগ্ধতা!

ভাল থাকবেন, সবসময়।

৪| ০৭ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৮

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: স্নেহেরা থাকুক অটুট, আজীবন।

১২ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:১৪

শঙ্খচিল_শঙ্খচিল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, প্রোফেসর। শুভেচ্ছা রইল।

৫| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫৭

শামছুল ইসলাম বলেছেন: আপনার লেখাটা মনকে ছুঁয়ে গেছে ভীষণ ভাবে।

আপনার অসম্ভ সুন্দর বর্ণনায় নিজের অতীতকে খুঁজে পেলামঃ

//পিতা পৃষ্ঠা উল্টান, সময়ও বালকের পৃষ্ঠা উলটে দেয়- কিশোর, তরুণ, যুবক! অনেক ছাড় আসে- মাগরিবের আযানের পরেও বাড়ি ঢুকা যায়, আড্ডা দিয়ে গভীর রাতেও মাঝে মাঝে!//

.................

//ইউনি-তে যাওয়ার পর খালি স্নেহ থাকে! স্নেহ থাকে বাড়ীর সকলের কুশলাদি জানানোর ফাকে ফাকে, স্বাস্থ্যের খোজ-খবরের পরে; আর স্নেহ থাকে- শ্বাস আর প্রশ্বাসের মধ্যবর্তী সময়ে!//

স্নেহ, স্বপন জড়িয়ে থাকেঃ

//সময়ের অমিলে আজকাল মাঝে মাঝেই স্নেহ খোঁজা মানিব্যাগের ভাজে রাখা সেই পুরুনো মানি অর্ডারের নোটে; এখনো পড়া যায়-

“প্রিয় স্বপন, স্নেহ রহিল...............”

স্নেহেরা থেকেই যায়...থেকেই যাবে...থেকেই যাবে !//


স্বপন তার লেখার মায়ায় জড়িয়ে নেয় এক মুগ্ধ পাঠককে।

ভাল থাকুন। সবসময়।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১৭

শঙ্খচিল_শঙ্খচিল বলেছেন: কি বলবো! অশেষ ধন্যবাদ, ভাই।
লেখা, বর্ননা ভাল লেগেছে জেনে ভীষণ খুশি লাগছে :)

"স্বপন তার লেখার মায়ায় জড়িয়ে নেয় এক মুগ্ধ পাঠককে।"

মুগ্ধ পাঠক !, আপনিও ভাল থাকুন, সবসময় !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.