নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুপুরলগ্নে নগরকান্দি বাজার তটে চা ঘরগুলোতে লোকজনের হিড়িক পড়ে। প্রতি শুক্রবার এমনটি ঘটে। বাজার ঘেঁষা নগরকান্দি মাধ্যমিক স্কুল প্রাঙ্গণে বেশ বড়সড় সাইকেলের হাট বসে। নতুন-পুরাতন সাইকেলের সমারোহ। বেশিরভাগ ই্ন্ডিয়ান সাইকেল। যশোর বর্ডার পথে এই সাইকেলগুলো আসে। মাজেদ মন্ডল রামুর চা-ঘরের চৌকিতে বসে আয়েশ ভঙ্গিতে চায়ে চুমুক দিচ্ছে। তের-চৌদ্দ বছরের হ্যাংলা গোছের একটা ছেলে হিরো সাইকেল হাতে বাজার কোনে দাঁড়িয়ে আছে। আরে, এ তো আমার সাইকেলটা, বাতাসে কথা ছেড়ে চায়ের কাপ রেখে ছুটে গেল ছেলের কাছে।
-এই ছেলে, এই সাইকেল পেলে কই?
বিস্ময় মুখে সাইকেলের হ্যান্ডেল শক্ত হাতে ধরে আমতা সুরে বলল, আমার সাইকেল, বিক্রি করতে আনছি।
তুমিই তবে আমার সাইকেল চুরি করছো, এক ঝটকায় ছেলের হাতে থেকে সাইকেল কেড়ে নিল মাজেদ মন্ডল।
ভয়ে তটস্থ হয়ে ছেলেটা বলল, এটা আমার সাইকেল, সাইকেল দেন। আমি আমার স্কুলের বন্ধুর কাছ থেকে কিনেছি।
মিথ্যা কথার জোগার নেই, ভাগো! কাউ কাউ করলে বেঁধে পিটাব। সাইকেল হাতে নিয়ে বাড়ির পথ ধরে মাজেদ মন্ডল।
ভাঙ্গা মন নিয়ে ছেলেটা মাজেদ মন্ডলের পিছু পথ ধরল।
-সাইকেলটা দিন।
-না! এটা আমার সাইকেল। তুমি চুরি করছো।
-না আমি চুরি করিনি। সাইকেলটা দিন।
-না!
বাড়ি পৌঁছে মাজেদ মন্ডল সাইকেল ঘরের ভিতরে ঢুকালো। সাইকেল রেখে ঘরের দুয়ারে এসে উচ্চস্বরে বলল, যাও যাও বাড়ি যাও! সাইকেল তুমি পাবে না। এটা আমার চুরি হওয়া সাইকেল।
বাড়ির উঠোন কোনে চোখের জল ছড়িয়ে নিরস মনে দাঁড়িয়ে আছে ছেলেটি।
পড়ন্ত বিকেল। ছেলেটি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে। ঘর থেকে উৎসুক কিছু চোখ উঁকি দিচ্ছে। দুয়ার খুলে ছেলেটির সমবয়সি একটি মেয়ে ছেলেটির দিকে এগিয়ে আসল। কি হল, যাচ্ছো না কেন তুমি? সাইকেলটা আমার বাবার। মাস খানেক আগে চুরি হয়েছে নগরকান্দি বাজার থেকে।
স্পষ্ট কন্ঠে ছেলেটি বলল, এটা আমার। আমার সহপাঠী থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে কিনেছিলাম। ও বলছিল, এটা ওর মামার। ওর নতুন সাইকেল থাকায় বিক্রি করবে। কম টাকায় ভালো সাইকেল পাওয়ায় আমি কিনেছিলাম। মা বলছিল, সাইকেলের হাটে নাকি ভালো দাম পাওয়া যায়। তাই সাইকেলটা আমি এখানে বিক্রি করতে এনেছি।
-সাইকেলটা বিক্রি করবে কেন?
- দুহাতের তালুতে চোখের জল মুছে, আমার ২৫০০ টাকা লাগবে, তাই!
-কেন?
গলগল করে বলতে লাগল, ক্যামেরা কিনব। আমার বন্ধুর পুরাতন একটা ক্যামেরা আছে, ওটা বিক্রি করবে।
কৌতুহলী সুরে মেয়েটি জিজ্ঞেস করল, তুমি ছবি তুলবে?
-হা, অনেক অনেক ছবি তুলব। আমার একটা ক্যামেরা থাকবে। আর আমি যখন তখন যা ইচ্ছে, তার ছবি তুলব।
উৎসুক কন্ঠে মেয়েটি বলল, ক্যামেরা চালাতে পারো?
আমাদের বাড়ির শাকিল ভাইয়া পারে, ওনার একটা ক্যামেরা আছে। কাউকে ধরতে দেন না। একবার ওনার বোনের জন্মদিনের দিন সবার অনেক ছবি তুলেছেন। আমার খুব ইচ্ছে হচ্ছিল আমিও তুলি। লুকিয়ে ক্যামেরা ধরতে গিয়ে ভাইয়া দেখে ফেলছেন। আমি ক্যামেরা ধরায়, আমাকে অনেক বকেছেন। আমাকে বলছেন, ক্যামেরা কিনলে শিখিয়ে দিবে। তার আগে নয়।
গদগদ করে ছুটে আসল মাজেদ মন্ডল। ওই ছেলে, ভাগো! দূর হ! চোর কোথাকার! হাত উঁচিয়ে থাপ্পড় বসাতে উদ্ধত হতেই মেয়েটি হাত ধরে ফেলে। বাবা, ওকে সাইকেলটা দিয়ে দাও। ওটা চুরি হবার পরতো তুমি আরেকটা সাইকেল কিনছই। ও সাইকেলটা বিক্রি করে একটা ক্যামেরা কিনবে। মেয়ের আবেগ মেশানো অনুরোধের কাছে হেরে গিয়ে ছেলেটার মাথার উপর হাত দেয় মাজেদ মন্ডল। ভারি স্বরে বলল, ঘরে এসো।
২৮১২১৩
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৪
নীল কথন বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
আমার ব্লগে স্বাগতম। ভালো থাকুন সারাবেলা।
২| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৩:১৫
অপ্রচলিত বলেছেন: শুরুটা দুর্দান্ত কিন্তু হঠাৎ এভাবে জোর করে শেষ করে দিলেন? শেষটা একদমই ভালো লাগল না। অকপটে বলে ফেলাটা আশা করি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতেই দেখবেন।
ভালো থাকুন লেখক।।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৫
নীল কথন বলেছেন: ঠিক ধরছেন। গল্পটা নিয়ে আরো একটু কাজ করতে হবে। এমন মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ গ্রহন করুন।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:০২
মামুন রশিদ বলেছেন: মোটামুটি লাগলো ।