নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্তার কথা শুনো, মনের কথা নয় মন করে প্রবঞ্চনা, সত্তা কখনও নয়।

স্বতু সাঁই

প্রকৃত সত্যকে জানা

স্বতু সাঁই › বিস্তারিত পোস্টঃ

সব লুটেরার একই চরিত্র, তা দেশী হোক আর বিদেশী

২৮ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:৫৫

প্রায়শঃ আমরা ইউরোপ আমেরিকা কানাডাকে বলে থাকি কতো সভ্য সেসব রাষ্ট্রগুলো। সেসব সভ্যতার ব্যাখ্যাদানে বলা হয়, ঐসব সমাজে অপরাধ প্রবণতা কম, নারীর অবাধ স্বাধীনতা, নারীকে অবাধে বেশ্যাবৃত্তি করতে দেওয়া হয়, বেশ্যানারীদের কাছ থেকে নাকি বেশ্যাবৃত্তির জন্য সরকার ট্যাক্স গ্রহণ করে, এরকম নাকি সভ্য সমাজের পরিচিতি। যে সমাজে নারী দৈহিক ব্যবসার ট্যাক্সে বাজেট তৈরী হয় সে সমাজ কতোটা সভ্য সমাজ তাতো আলাপেই বোঝা যায়।

প্রায়শঃ শুনি নেদাল্যাণ্ডে কারাগারের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। অপরাধ যদি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়, তাহলে অপরাধ থাকে না। আবার অপরাধীকে যদি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়, তাহলে কারাগার থাকে না। এর অর্থ এই যে অপরাধীকে ছেড়ে দিয়ে পুলিশিং যদি বৃদ্ধি করা যায় তাহলে সমাজে অপরাধীর সংখ্যা কম দেখানো যায়। কারাগারে লালন পালন করে পর্যবেক্ষনে রেখে ডাণ্ডার উপর রাখা যায় তাহলে রাষ্ট্রের খরচ কমে, কারাগার অপ্রয়োজন হয়ে যায়। এটা একটা কৌশল মাত্র। তবে সেটা তখনই সম্ভব হয় যদি দেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব কম হয়। কোন দেশে কারগার নেই বা কারাগারের সংখ্যা কমানো হচ্ছে তার মানে এই নয় সে দেশে অপরাধ নেই। যেহেতু নেদারল্যাণ্ডে কারাগার কমছে সেহেতু নেদারল্যাণ্ডের কথাই ধরি, সেখানে সাইকেলের ব্যবহার খুব বেশী এবং এই সাইকেল চুরির সংখ্যাও অধিক। শুধু রাজধানীতেই নাকি প্রতি বছর সাইকেল চুরি হয় প্রায় এক লক্ষ। ১০০ ইউরোর চোরাই সাইকেল বিক্রি হলে কতো তে বিক্রি হবে? ধরে নিলাম ১০ ইউরো। ১০ ইউরো চুরি করার লোক যেখানে আছে, কি করে বলি সেখানে অপরাধীসহ অপরাধ প্রবণতা নেই। আর সেই সমাজ একেবারেই সভ্য সমাজ হয়ে গেছে!

কেউ না মানলেও ইতিহাস সাক্ষী দেয় গোটা ইউরোপের জাতিরা ছিলো লুটেরা, সন্ত্রাসী, শোষক, নির্যাতক, নিপীড়ণকারী। সারা জগতের সম্পদ লন্ঠন করে অর্থনৈতিক সাবলম্বী হয়ে শেষে বিশাল বিশাল ভূখণ্ড নিয়ে গুটি কয়েক লোকের বসতি করে এখন দেখাতে চায় তারা সভ্য জাতি। এসব রাজনীতি আমাদের দেশের মোড়ল চেয়াম্যানরাও করে। ভোট কেনার জন্য কিছু টাকা বিনিয়োগ করে পাঁচ বছরে লুটেপুটে খেয়ে, ছেলেকে বিলাত থেকে লিখা পড়া করায়ে নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকে। সব লুটেরার একই চরিত্র। সেটা দেশী হোক আর বিদেশী হোক।

সভ্য চোর বাটপারদের গল্প করতে গিয়ে মনে পড়ে গেলো আমার অতীতের এক ঘটনার কথা। ৭৭-এ আমাদের ৩টা গরু চুরি হয়েছিলো। অনেক খোঁজাখুঁজি করার পর এক চেয়ারম্যানের দালালের মাধ্যমে জানতে পারলাম, গরু এখনও আছে, বর্ডারের ওপারে যায় নি। অর্থাৎ গরু চুরির পর কিছুদিন গরু চোরের তত্ত্বাবধানে দেশের মধ্যে থাকে। গরুওয়ালা খোঁজ খবর করে পেতে চাইলে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে মধ্যস্থতায় গরু ফেরত দেওয়া হয়। যদি কোন চুরি যাওয়া গরুর মালিক খোঁজ খবর না করে তখন গরু বর্ডারের ওপারে, মানে ভারতে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিতো ডাকাতের দলেরা।

আমাদের বাড়ী পৌরসভার মধ্যে। কিন্তু গরুর খোঁজ পেলাম ১৫/১৬ মাইল দূরে অন্য একটি ইউনিয়নে। ঐ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের ছেলে আমার ক্লাশমেট। খোঁজ পাওয়ার পর আমার বন্ধুটাকে নিয়ে তাদের গ্রামে গেলাম তার বাবার সাথে দেখা করতে। সেখানে গিয়ে বিস্তারিত জানলাম, ডাকাতের দল গরু ফেরত দিতে রাজি আছে তবে বাজার দর হিসাবে গরুর মূল্যের অর্ধেক দাম তাদেরকে দিতে হবে। চুরি যাওয়া গরু ফেরত পাওয়ার এটাই নাকি নিয়ম। যাহোক অনেক দেন দরবারে নির্ধারন হলো, যেহেতু আমি চেয়ারম্যানের ছেলের বন্ধু তাই কিছু কম রেখে তিন ভাগের এক ভাগ মূল্য দিয়ে গরু নিয়ে যেতে পারবো। পরে জানতে পারলাম, চেয়ারম্যান ডাকাত দিয়ে গরু মহিষ চুরি করায়ে যে টাকা উদ্ধার হয় তার অর্ধেক ডাকাত দলকে দেওয়া হতো, বাকি অর্ধেকের কিছু টাকা থানাকে দিয়ে বাকিটুকু চেয়ারম্যান ভোগ করতো। এই হলো ভদ্র সমাজের ভদ্র লোকের চোরাই ভদ্রনীতি। যেমন চেয়ারম্যান হতভাগা গরু মালিকের চুরি যাওয়া গরু উদ্ধার করে দিয়ে সমাজে হতভাগাদের বাহবা কুড়ালেন। অন্ধকারে চেয়ারম্যান নাটক করে হতভাগাদেরকে কি ঘোল খাওয়ালেন তা কেউ বুঝলো না। আদিকাল থেকেই এভাবেই গড়া হয়েছে গোটা বিশ্বের সমাজ ব্যবস্থাকে। সমাজের খোস-পাচড়া সমাজপতিরা ঢেকে রাখে বাহারী বোরকা দিয়ে। বাহারী বোরকার জৌলুসে সমাজকেও সভ্য বলেই মনে হয়।

তাই নিজের সমাজকে অন্যের সাথে নোংরাভাবে তুলনা না করে, নিজের সমাজ কিভাবে সুন্দর করে গড়া যায় তা নিয়ে সকলকে ভাবা উচিত। নিজ জাতিকে হীন মানসিকতায় না দেখে, একটু নাকটা উঁচু করে নিজ জাতির দিকে তাকালে জাতি অনেক এগিয়ে যাবে।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:১২

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: সমাজ সচেতনতামুলক লেখাটিতে যথেষ্ট পরিমান যুক্তি আছে । এখন বিদেশে বসে যারা হরহামেসা বিদেশের তুলনায় নীজের দেশের খারাপটা বেশী বড় করে দেখেন তারা বিষয়টিকে কি ভাবে নেন তাই দেখার বিষয় ।

শুভেচ্ছা রইল ।

২৮ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:১৮

স্বতু সাঁই বলেছেন: ধন্যবাদ। এই প্রথম আপনাকে আমার ব্লগে দেখলাম। শুভকামনা রইলো।

২| ২৮ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:২৯

আমি চির-দুরন্ত বলেছেন: ভালো আলোচনা। চুরি, পতিতাবৃত্তি যেখানে অপরাধ এর মধ্যেই পরে না সেখানে অপরাধী কম হবে সেটাই স্বাভাবিক।

২৮ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:২২

স্বতু সাঁই বলেছেন: ধন্যবাদ, শুভকামনা।

৩| ২৮ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:৩২

আখেনাটেন বলেছেন: সারা জগতের সম্পদ লন্ঠন করে অর্থনৈতিক সাবলম্বী হয়ে শেষে বিশাল বিশাল ভূখণ্ড নিয়ে গুটি কয়েক লোকের বসতি করে এখন দেখাতে চায় তারা সভ্য জাতি। - ভালো বলেছেন।

অামাদের অধিক জনসংখ্যা, অধিক সমস্যা। আর এই সমস্যার ফাঁকগুলো খুঁজে নিয়ে তারা লুটপাট চালিয়েছিল, চালাচ্ছে, চালাবে। অাজকের নিউজ দেখলাম, অাফগানিস্তানে মার্কিন সেনা উপস্থিতি বাড়বে কারণ সেখানকার খনিজ সম্পদের উপর তারা চোখ রাখছে। তাদের চুরি-বাটপাড়িগুলো হয় বড় বড় তাই খোলা চোখে এগুলোকে বাটপাড়ি বলে মনে হয় না।

তবে আমাদের দেশে যে চোর-বাটপাড় বেশি এতে কোন সন্দেহ নেই। কারণটাও উপলব্ধি করা যায়। অাইনের শাসনের অভাব। জেল থেকে দাগী সন্ত্রাসী ছাড়া পেলে অপরাধ বাড়বে না কমবে। এটাই হয়ত অামাদের নিয়তি।

২৮ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:২৭

স্বতু সাঁই বলেছেন: ভুল সংশোধনে উত্তম উপায় হচ্ছে আত্মসমালোচনা। তবে সে আত্ম-সমালোচনা হতে হবে গঠনমূলক। কিন্তু আমরা আত্ম-সমালোচনার চেয়ে সমালোচনা করি অধিক। ফলে আমরা নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করি অতিমাত্রায়।

৪| ২৮ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


এশিয়া ও আফ্রিকার মানুষ সুযোগের সন্ধানে এখন ইউরোপ যায়; কারণ, ইউরোপ ভালো আছে।

২৮ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:২৯

স্বতু সাঁই বলেছেন: স্বেচ্ছা দাসত্ববরণকে সুযোগ বলে না। এটা স্বার্থন্বেষী প্রবণতা।

৫| ২৮ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৪

প্রোলার্ড বলেছেন: ইউরোপ তো লুটেরাদের মহাদেশ । আর তাদের থেকে যারা বের হয়েছে যেমন আমেরিকা , অস্ট্রেলিয়া , কানাডা তাদের রক্তও ঐ একই । এরা লুট করেছে আফ্রিকা , এশিয়া । লুটপাটের টাকা দিয়ে এখন তারা বড়লোক হয়েছে , সভ্য ট্যাগ পেয়েছে। এখন তারা যাদেরকে লুটে ফট্টুহারা করে দিয়েছে (এক সময়ে যারা সমৃদ্ধ ছিল) তাদেরকেই সভ্যে হবার জ্ঞান দেয় !

২৮ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:৩২

স্বতু সাঁই বলেছেন: গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল। এটা ঘটেছে আমাদের মতো রাষ্ট্র প্রধানদের তৈলমর্দনে।

৬| ২৮ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:০৫

রাবেয়া রাহীম বলেছেন: দীর্ঘ বছর দেশের বাইরে থাকায় অনেক দেশের মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে । তার থেকে যা বুঝেছি সেটা হলো দুনিয়ার তাবৎ মানুষ একরকম আচরন করে থাকে শুধু দেশ হিসেবে ভাষা ও ব্যবহার কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে।

ইউরোপ আমেরিকায় আইনের শাসন ও তার প্রয়োগ আছে তাই অপরাধ অনেক কম। আমেরিকায় যদি আইনের শাসন এতটা কঠোর না হতো তবে এইদেশের অপরাধ বাংলাদেশের চেয়ে অনেকগুন বেশী হতো।

২৮ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:২৭

স্বতু সাঁই বলেছেন: ইউরোপ আমেরিকায় আইনের শাসন ও তার প্রয়োগ আছে তাই অপরাধ অনেক কম। আমেরিকায় যদি আইনের শাসন এতটা কঠোর না হতো তবে এইদেশের অপরাধ বাংলাদেশের চেয়ে অনেকগুন বেশী হতো।

দক্ষিন এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ, যেমন ভারত চায়না মালয়শিয়া, থাইল্যণ্ড, সিঙ্গাপৌর, ইন্দোনেশিয়া দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। এসব দেশের আইন শৃঙ্খলা এবং আমাদের দেশের আইন শৃঙ্খলার মধ্য তেমন কিছুই পার্থক্য নেই। ইউরোপ আমেরিকা দেখার সৌভাগ্য হয় নি। তবে বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে ঐসব দেশকে যতটুকু জেনেছি, সে দেশের নাগরিকরা কারাগারের সশ্রম কয়েদির মতই মনে হয় আমার কাছে। আমরা অনিয়মের মধ্যেও যতটা স্বাধীনতা ভোগ করি সেক্ষেত্রে ঐ অঞ্চলের মানুষগুলো অনেক বন্দী দশার মধ্যে বসবাস করে। জানি না ঐ জীবন ব্যবস্থাকে কি করে স্বর্গীয় বলে মনে হয়, তা আমার বোধগম্য নয়।

ধন্যবাদ, আমার ব্লগে প্রথম আগমনে। শুভকামনা রইলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.