নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আবুল গ্রাম থেকে ঢাকায় এবার প্রথম এসেছে। সে গ্রামে এক গৃহস্থের বাৎসরিক কিষাণ। তার গৃহস্থের মেয়ের বাড়ীতে বাবা মার ভলোবাসা চালের আটা, গাছের তাল, পুকুরের কৈ মাছ ইত্যাদি সঙ্গে করে এনেছে। টেকনিক্যালে বাস থেকে নেমে গুলশান-২ এ গৃগস্থের মেয়ের বাড়ী যাবে। গৃহস্থ বলে দিয়েছিলো, বাস থেকে নেমে ছোট ছোট বাস ট্যাক্সিতে করে যেন গুলশানে যায়। সে মোতাবেক আবুল প্রাইভেট কার দেখে হাত দেখিয়ে থামতে আবেদন জানায়। কিন্তু থামে না। অনেকক্ষন পর একজন মহিলা রাস্তা পারাপারের কারণে একটা প্রাইভেট কার তার সামনে থামে। সে গাড়ীর দরজার গ্লাসে টোকার পর টোকা দিতেই গাড়ীর ড্রাইভার জিজ্ঞাসা করে,
"কি চান?" আবুল বলে,
"তোরা কি গুলশান-২ এ যামেন?"
"হ্যাঁ।"
"দরজাটা খুলেন। মুইও ঐদিক যাম, মোক এ্যানা নামায় দেন বাহে।" এবার গাড়ীর মালিক রেগে বলে,
"ইউ ব্লাডি রাস্কেল, গেট আউট।" ড্রাইভার সঙ্গে সঙ্গে দরজার গ্লাস তুলে গাড়ী চালিয়ে চলে যায়। এবার আবুল পাশে দাঁড়ানো এ ভদ্রলোককে জিজ্ঞাসা করলো,
"আচ্ছা ভাইজান, ইউ বেলাডি রাসকল মানে কি?" ভদ্রলোক বললো,
"তুমি অসভ্য বদমাইস লোক।" আবুল মনটা ভীষণ খারাপ করে বলে।
"হায় রে শহরের শিক্ষিত ভদ্রলোক। মানুষেরে ইংলিশে গালায় কতো খারাপ ভাষায়। জানেন ভাইজান, হামার গাঁও থেকি সাত মাইল দূরত সপ্তাহে একদিন হাট হয়। গৃহস্থের সারা সপ্তাহের মালসামান ঐ দিন কিনবার নাগে। হামার গরু গাড়ী ধরি মুই আর মোর গেরস্থ হাটত যাও। হাটত যাইতে কতো জন কয়, খাড়াও বাহে মুইও যাম। একজন দুইজন করি গোটা গাড়ী ভর্তি হয়া যায়। হামার গেরস্থ কাওকো টু শব্দ কয়া গালি তো দেওয়া দূরত থাক, বরং অমার সাথে মৌজে গল্প করতে করতে হাটত যায়। আর মুই অমার সাথে গুলশান-২ অত যাবার চানু, কি বিচ্চিরি গাল দিলি মোক। নিকুচি করো শহরের ভদ্রলোকোক। ভাই, তোরা কয়া দিবেন ক্যংকা করি যাম গুলশান-২ অত?" পরে ঐ ভদ্রলোক একটা অটো দেখিয়ে বললো,
"ঐ গাড়ীকে আপনার ঠিকানা বলেন, নিয়ে যাবে। অটো রিক্সা ঠিক করে উঠতে উঠতে আবুল বলছে,
"এইবার বুঝনু তোরাই ঢাকার আসল বাসিন্দা। আর অরা খ্যাতোত থেকি আইছে ঢাকাত বাস করবা।"
বিঃ দ্রঃ
গালিটা দিতে চেয়েছিলাম, "ইউ ব্লাডি ফাকিং গাই"। পরে ভাবলাম, বিশিষ্ট ভদ্রলোকেরা যদি মন খারাপ করে। তাই এটা ব্যবহার করলাম না। অথচ তারাই এ গালিটা অহরহ ব্যবহার করে।
২২ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:০৮
স্বতু সাঁই বলেছেন: নাতনী তো আবার কুট্টি না তো, তাইলে খবর আছে। হা হা হা...
২| ২২ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৬
শুভ্র বিকেল বলেছেন: বাস্তব সত্য। শহরের মানুষগুলো এমনই ব্যাবহার নিয়ে ভদ্র হয়েছে। তবে সবায় নয়, একটি বড় অংশ।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:০৯
স্বতু সাঁই বলেছেন: সভ্যতা বলতেই আমরা নগর জীবনকে বুঝে থাকি। আমাদের শিক্ষিত সমাজের মধ্যেও ধারণা, নগরবাসীরাই যেন সভ্য জগতের মানুষ। এদের চালচলন, কথাবার্তা, সামাজিকতা ও সংস্কৃতিই যেন সভ্যতার ধ্রুব হিসাবে মনে করে। বাকি সকলে অসভ্য। কথিত সভ্য সমাজের কু-কৃর্তি কথাগুলো যদি লেখকেরা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করে তখন তাদের আঁতে ঘা লাগে।
৩| ২২ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: শহরের মানুষ গুলো খুব বেশী নিষ্ঠুর।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:১৪
স্বতু সাঁই বলেছেন: তারচেয়েও নিষ্ঠুর ও ভয়ঙ্কর হলো সেই সব জাতি, যারা বর্তমানে নিজেদেরকে সভ্য ভাবে।
৪| ২২ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:০৯
ওমেরা বলেছেন: নানাজান আমি বাংগাল না !
২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:১৬
স্বতু সাঁই বলেছেন: তাহলে তো বাঙালের গালি শুনো নাই। যাক আর শুনালাম না।
৫| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:৩৮
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: অথচ তারাই এ গালিটা অহরহ ব্যবহার করে।
ভদ্রতার আবডালে অভদ্র শয়তানের বাস যে তাই এমন কপটতা তাঁদের ।
অল্প কথায় খুব সুন্দর ভাবে কিছু অসামঞ্জস্য তুলে ধরেছেন ভাল লাগলো । তবে আন্তরিকতায় বিদেশিরা জিরো । বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যে আন্তরিকতা পাওয়া যায় সেটা দুনিয়ার আর কোথাও নেই। নিউ ইয়র্ক শহরের মানুষ গুলাকে আমার কাছে মেশিন মনে হয়।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:৪৩
স্বতু সাঁই বলেছেন: বিদেশীদের ক্ষেত্রে আমার আগের মন্তব্য: তারচেয়েও নিষ্ঠুর ও ভয়ঙ্কর হলো সেই সব জাতি, যারা বর্তমানে নিজেদেরকে সভ্য ভাবে।
৬| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ২:৪৮
কানিজ রিনা বলেছেন: শহরের মানুষ যত শিক্ষিত ততো অসৎ
অহংকারী। কারন বড় বড় পদে তারাই
বসে আছে। যতসব ঘুসখোর চোরের দল।
তথাপি কিছু সৎ লোকও আছে তারা গরীব।
শহরের চোর বড়লোক আর ছেচড়া ডাকাতের
ব্যবহার একই। তবে বাঙালী চোরেরাও
মেহমানদারীতে অলসতা নাই। ধন্যবাদ।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৫
স্বতু সাঁই বলেছেন: তবে বাঙালী চোরেরাও মেহমানদারীতে অলসতা নাই।
শেষের এই বাক্যটি খুব ভালো লাগলো। এরা আতিথেয়তা দেখায় ধর্মীয়গুরু হুজুর ঠাকুরদের সাথে। কারণ তাদের পাপ মোচনে যদি তারা সহায়তা করে বেহেস্তে বা স্বর্গে নিয়ে যেতে পারে। ধন্যবাদ, শুভকামনা।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:৫৬
ওমেরা বলেছেন: নানাজান আমিও অরিজিনাল ঢাকাইয়া ।