নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পূজক।

আমি মনে হয় মুরুব্বী হয়ে গেছি। :(

ভুল উচ্ছাস

আমি না আমার দর্শন বদলে গেছে।

ভুল উচ্ছাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

পিকটিনের খেরোখাতা

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:১২

তখন যেন কেমন ছিলাম আমি, উদ্ভট, পাগুলে, অস্থির, বেবি মেন্টালিটির। আমার চোখের সামনেই বন্ধুরা প্রেম করতো, প্রেমে পরত আর আমি ফ্যালফ্যাল করে ওদের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। শুনতাম কিউরিয়াস হয়ে কে কি বলে। যদিও অনেক কিছুই বুঝতাম না। আর ঠিক সন্ধ্যার আগেই ঘরে ফিরতাম, বই পড়তাম শুধু। অবশ্য টুকটাক টিভিও দেখতাম বিশেষ করে খেলার চ্যানেল গুলো। আমি এর বাহিরে তেমন কথাও জানতাম না। কি করে জানবো? ছোট বেলা থেকেই আমার নিজের একটা আলাদা জগত ছিলো যা অন্যদের সাথে একদম মিলত না। তবে একা একাই অনেক কিছু করতাম, ইয়েস তখন আমি ক্লাস সেভেনে পড়তাম, আমার সব থেকে প্রিয় বন্ধু ছিলো সেবার তিন গোয়েন্দা গুলো। একটা লাল রঙের sansi সাইকেল ছিলো, যদিও লাল রঙ আমার একদম পছন্দ নয়, বরাবরের মতো ওটাও আম্মুই পছন্দ করে দিয়েছিলো। প্রায়ই বিকেলে সাইকেল নিয়ে চলে যেতাম কীর্তনখোলার কিংবা ওপাশে আরো একটা নদী আছে মে বি ধানসিঁড়ি ওটার তীরে। তারপর বসে বসে সন্ধ্যাওবধি চলত আমার গল্পের বই পড়া। আমি এবং আমার সহজ জীবনধারা। তখন ছিলো ২০০১ সাল।



তারপর উঠে পড়লাম উপরের ক্লাসে, আম্মুর প্রেসারে দিন রাত শুধু বই বই আর বই। আম্মু খাবার খেতে বলত বই পড়, ঘুমাতেও বলত বই পড়, ডাকলেও বলত বই পড়। আমি আর আব্বু তো ভয়েই থাকতাম কবে না জানি আম্মুর মাথাটা বিগড়ে যায়। সে যাই হোক আমি পড়তাম আর পড়তাম। কিন্তু একটা কথা আছে না বেশি প্রেসার নিলে সব যায়, আমারো হয়েছিলো তাই আমার ক্লাস এইটে স্কলারশিপ পাওয়া হয়নি। আম্মুও আমাকে দিলো বিরক্ত হয়ে ছেড়ে। মুক্ত স্বাধীন আমি ক্লাস নাইন টেন কাটিয়েছি স্রেফ ঘুরে ঘুরে। কিভাবে যে এস এস সি তে পাশ করলাম কে জানে। তারপর যথারীতি কলেজ। আমার কলেজ লাইফ এটা ভাবতেই একটা মজার স্মৃতি চলে আসে, টিটিতে খুব ভালো ছিলাম আমি, আর ছিলো দাবা। দুটোতেই প্রথম হয়েছি কলেজে সেবার ফার্স্ট ইয়ারে। সবার কাছেই অনেক পপুলার আর দুস্টো হিসেবেও টিচাররা খুব ভালোবাসতো আমাকে। কলেজের শেষের দিকে আবারো দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সাথে ঝগড়া করে আবারো রেজাল্টের ১২ টা বাজালাম এমনকি আমার কোন টিচার আমার এই রেজাল্ট আশা করেই নাই। তাদের ধারনা ছিলো আমি গোল্ডেন পাবো কিন্তু আফসুস না আমি পেলাম না আমার দুই ঈর্ষা কাতর বন্ধু পেলো, তিন জনেই গবেট মার্কা রেজাল্ট করে, একজনের ঠাই হলো আহসানউল্লাহ ইউনির CSE তে একজনের BM কলেজের ইংরেজীতে আর আমি? এই মুরগীর খোপে। অবশ্য মাঝে কেমিস্ট্রি পড়েছি দুই বছর।



আজ থেকে তিন বছর আগে যখন আমি এই প্রাইভেট ইউনি তে ভর্তি হই তখন থেকেই সমস্যাটা শুরু হয়েছিলো, আমি কল্পনায় অদ্ভুত কিছু করতাম। একটা উদাহরন দিচ্ছি আপাতত যেটা ফিজিক্সের স্টুডেন্টদের জন্যে বুঝতে পারা ইজি হবে অন্যদের জন্যে কি হবে জানিনা।

মনে করি একটি বিন্দু আর তাকে ঘিরে বৃত্তাকার একটি ক্লাউড, আর এই ক্লাউডে অবস্থান করছে আমাদের পৃথিবী ঐ বিন্দুটি হচ্ছে সূর্য। এবার ধরা যাক পুরো সূর্য ও তার ক্লাউডেড অঞ্চলটি অন্যে একটি বৃত্তাকার ক্লাউডের অংশ যাকে আমরা বলতে পারি ছায়া পথ। এভাবে অন্য একটি ছায়া পথ কল্পনা করা যাক, সেই ছায়াপথের একটি নক্ষত্রে একটি গ্রহ আছে সূর্যের মতো। একবার চিন্তা করুন পাঠক এখানে প্রতিটি জিনিস ঘূর্ণায়মান, সো পৃথিবী থেকে আমি যদি কোন মেসেজ সিগন্যাল আকারে ঐ আলাদা ছায়াপথের অন্য একটি গ্রহে পাঠাই কিংবা কোন একটি রকেট পাঠাই যোগাযোগের জন্যে তবে নির্দিষ্ট সময় পরে যেখানে আমার রকেটটি যাবে সেখানে কিন্তু ঐ গ্রহটি থাকবে না, কেন থাকবে না? যদি আমাকে ঐ গ্রহটি ধরতে হয়ে তবে এখানে কতগুলো ভেরিএবল হিসেবে নিয়ে আমাকে রকেটকে কোন পথে পাঠাতে হবে? এবং কোন গতিতে পাঠাতে হবে এবং কোনও কারনে যদি রকেটে ত্রুটি দেখা দেয় তবে কারেকশুন করে আবার কোনদিকে কোন গতিতে পাঠাতে হবে পুরো জিনিসটা আমি হিসেব করছিলাম। তাও মনে মনে হলে ভালো ছিলো কিন্তু যখন আমি এটা হিসেব করার জন্যে কাগজ কিনে আনলাম আর পুরো ফ্লোর জুড়ে কাগজ বিছিয়ে হিসেব করতে শুরু করলাম কয়েকদিন পরেই অর্ধউন্মাদ হয়ে গিয়েছিলাম। একটা জিজ্ঞেস করলে আরেকটা উত্তর দিতাম, অথবা মাঝ রাতে না ঘুমিয়ে বসে হা করে উদাস হয়ে থাকতাম, কি যে ভাবতাম কে জানে।



সো এরকম আরেকটি উদাহরন দিয়ে আপনাদের মাথার বারোটা বাজাবার ইচ্ছা নাই আমার। কিন্তু এরপরেই শুরু হলো হ্যালুশিনেশন। যা হচ্ছেই না আমি তাই দেখছি, আমার সর্বশেষ হ্যালুসিনেশনটা শেয়ার করছি। এটা আজ থেকে দুই বছর আগের কথা, আমি সন্ধ্যার কিছু আগে ঘুমাবার প্রস্তুতি নিচ্ছি আর তক্ষুনি মনে হলো আমি আসলে বিশাল একটি মাঠের মধ্যে দাড়িয়ে আছি, আর আমার সামনে একটা প্রানী ঠিক কি জিনিস বুঝতে পারছি না, সো আমি ওটাকে কিছু শুকনো গাছের পাতা দিলাম, ওটা সেগুলো খেয়ে ফেলল, এভাবে কয়েকবার দিলাম ওটা সেগুলো খেয়ে ফেলছে। আমার মনে হল এটা হয়তো কোন এক প্রকার তৃণভোজী কিছু হবে। আমার নিজেকে খুব ক্ষুধার্ত মনে হচ্ছিলো, আমি ওটাকে ধরে ঝলসে ফেলার জন্যেই ওটার দিকে হাত বাড়ালাম কিন্তু একি ওটা ছিলো একটা কুকুর এবং সে উল্টো আমার উপরেই শ্বদন্ত বের করে ঝাপিয়ে পড়লো। ঠিক ঐ মুহূর্তে আমি ভয়ে চিৎকার দিলাম।



এরপর থেকেই নিয়মিত ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি। ডাক্তারের অনেক নিষেধ যে কোন কিছু পড়া যাবে না, পড়াশুনা বাদ, আমাকে থাকতে হবে ফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডারত। সব সময় মাস্তি। আব্বু আম্মুও আসলে আমাকে অনেক ভালোবাসেন তাই তারাও চাইত না আমি পড়াশুনা করি। কিন্তু এটাই আমার জীবন। পড়াশুনা না করলেই এখন ভালো লাগে না। আব্বু তাই খুব বকেও আম্মুকে এখন, আমার ছেলেটা যদি পাগল হয় তো তুমিই দায়ী, সারাক্ষন শুধু পড় পড় পড়। এখন বুঝো। কিন্তু আমি তো পাগল নই। অবশ্যই নই। নিজেকে তা মনেও করি নাই কোনদিন। হ্যা কিছুটা অদ্ভুত স্বীকার করছি।





ওহ হ্যা পাঠক আমার নামটা বলা হয় নাই, আমিই পিকটিন, আর আপনারা এখন পিকটিনের ডায়েরী পড়েছেন। আজ এটুকুই দিলাম। বাকিটা কাল রাতে আবার।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:১৯

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ভাল লাগলো পিকটিনের ডায়েরী :)
নিয়মিত পড়তে চাই , পাব তো ?

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:২৬

ভুল উচ্ছাস বলেছেন: পাবেন অবশ্যই। ধন্যবাদ পড়ার জন্যে। :)

২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৩৫

ঘুমকাতুর বলেছেন: ভাল লাগলো

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১৪

ভুল উচ্ছাস বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। :)

৩| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪৫

বোকামন বলেছেন: সম্মানিত লেখক,

ভালৈ তো লিখে ফেললেন..

শুভকামনা

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১৫

ভুল উচ্ছাস বলেছেন: ভালো মন্দের হিসেব করছি না, লিখতে পারছি এইটাই অনেক। ধন্যবাদ পড়ার জন্যে।

৪| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:১৩

মায়াবী রূপকথা বলেছেন: আপনার খেরোখাতা এখন পড়লাম, আগে এসে দেখে গিয়েছিলাম। চোখে ছিলো কেবলই ঘুম, পড়বার ধৈর্য্য ছিলোনা।

যাইহোক, বেড়ে ওঠাটাকে আমার স্বাভাবিকই মনে হয়েছে। মাঝখানে কেবল অতৃপ্তি বলতে ঐ হাল্কা খারাপ রেজাল্ট আর বন্ধুদের সাথে ঝগড়াটা বাদ দিয়ে। আমি মানসিক রোগের ডাক্তার নই, তবে পড়া শেষ করে মনে হয়েছে যে নিজের প্রতি যেটুকু এক্সপেকটেশন ছিলো আপনার, অথবা আপনার বাবা মা যেমন করে চেয়েছিলো সেভাবে আপনি নিজেকে প্রমান করতে পারেননি। আর হয়তো সে কারনেই অন্যরকম কিছু করে নিজের উচ্চতা বাড়াবার একটা সুপ্ত ইচ্ছা আপনার মধ্যে থাকতে পারে। সেজন্যই ওমন জটিল হিসেবে নিজেকে ডুবিয়েছেন, হয়তো ভেবেছেন এটা হিসেব করতে পারলে বেশ বড় ধরনের কোন স্বীকৃতি পেয়েও যেতে পারেন। কেবলমাত্র বিজ্ঞানের প্রতি ঝোক থেকে আপনার ওই বয়সের মত একটা ছেলে এমন করলে সেটা খুব বেশি রকমভাবেই অস্বাভাবিক।

কে জানে, নিজের না পাওয়া, অথবা অপ্রাপ্তির যন্ত্রনাগুলো আপনাকে এভাবে জ্বালাচ্ছে নাকি। But, once you could learn how to push the horizon instead of being pushed, u'll see the difference. & Definitely u'll feel that u r not left with only a heavy head or some sort of irritation. But you need to find the rit way. & What is the way, I dont know... :| :(

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৪৫

ভুল উচ্ছাস বলেছেন: ঘুম খুব ভালো জিনিস। আচ্ছা প্রথমেই একটা জিনিস বলি, পিক্টিন আর আমি এক নই। মানে আমার অনেক কিছু নিয়েই পিকটিন যদিও তারপরেও আমরা আলাদা। বলতেই পারেন আমি পিকটিনের ক্রিয়েটর।

হ্যা একটা ছেলে যে কিনা খুব ইন্ট্রোভারট তার কাছে খুব কাছের দুইটা মাত্র বন্ধু যারা কিনা দুইমাত্র ও বলা চলে, তাদের সাথে যদি ডিস্ট্যান্স ক্রিয়েট হয় সেটা স্বাভাবিকভাবে নেয়া ইম্পসিবল আর মফঃস্বলের ছেলেমেয়েদের সাথে বাবামায়ের অনেক দুরুত্ত থাকে এটা ইগ্নোর করছেন কেন?

এক্সপেক্টেশনের এই ব্যাপারটা সাধারনত আমাদের বাবামায়েদের জন্যেই আকাশচুম্বী হয়ে দাড়ায়, তারা অনেক কিছুই চাপিয়ে দেয় যে কারনে স্বাভাবিক বৃত্তি গুলো আমরা হারিয়ে ফেলি।

অনেক কিছুই আছে, সেসব নিয়ে লিখতে ইচ্ছে করছে না, তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি প্রতিমুহূর্তে নিজেকে আপডেট করি, নিজের ভুল শুধরে নিতে পছন্দ করি, কেউ সমালোচনা করলেও সেটাকে নিয়ে ভাবি আমি।

আপনিই তো বলে দিয়েছেন শেষে এসে, আমি অনেক কিছু শিখেছি লাইফের, অনেক গুলো মর্মান্তিক সত্য কথা, যেগুলো অনেক ক্রুয়েল বটে। তাও নিজেকে এখনো ঐ পর্যায়ে নিয়ে যাই নাই, ইচ্ছেও নাই। আমি আমার পথ সব সময় খুজে নেয়ার চেষ্টা করেছি, কখনো পেরেছি, কখনো মরেছি, কিন্তু আগেই বলেছি কেউ কেউ থাকেই ফিনিক্স পাখির মতো। ছাই থেকেও বারবার নিজেকে গুছিয়ে নেয়া যার অশ্রুতে ব্যাসিলিস্কের বিষ ও হার মানে।


ভালো থাকবেন। আর সুন্দর এই মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.