নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দুঃখ হীন পৃথিবী

দুঃখ হীন পৃথিবী

একশত সিপাহী ঢাল-তলোয়ার লইয়া যে ক্ষমতা না রাখে, অনুতাপের হাত তাহার চেয়ে অধিক ক্ষমতা রাখে।

দুঃখ হীন পৃথিবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

পলিটেকনিের ভর্তি ফর্ম জমা না দিয়ে জেলা শহরের সবচেয়ে বড় একজন ব্যবসায়ি।

২১ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:২৪

পলিটেকনিের ভর্তি ফর্ম জমা না দিয়ে জেলা শহরের সবচেয়ে বড় একজন ব্যবসায়ি।
২০০৪ সালে আমি আমার এক বন্ধুর সাথে সিলেট যাচ্ছি পলিটেকনিকে ভর্তির ফর্ম জমা দেওয়ার জন্য, এটা ছিল আমাদের দুজনেরই প্রথম সিলেট যাত্রা যার জন্য অনেকটা মজাও লাগছিল।
আগেই টিকেট কেটে জানালার পাশে সিট নিয়ে ছিলাম, তাতে করে বাহিরের মনমুগ্ধকর দৃষ্যগুলি পলকহীন ভাবে তাকিয়ে দেখছিলাম।
সিলেটের কাছাকাছি কোন একটা জায়গায় সম্ভবত ক্রসিং এর জন্য অপেক্ষা করছে আমাদের ট্রেন, অপেক্ষাও কি প্রায় ২/৩ ঘন্টা। আমরা দুজনই নিচে নেমে একটু হাটাহাটি করছি আবার ফিরে এসে নিজের সিটে বসছি এমন করে কিছুটা সময় পার করার পর হঠাৎ এক পিচ্ছি ছেলে ট্রেনে উঠল কিছু লেবুর প্যাকেট নিয়ে, আমাদের খুব বেশি একটা আগ্রহ ছিলনা এদের প্রতি। দেখতে দেখতে অনেক গুলি হকার উঠল এবং চিল্লা চেচামেচি শুরু করল, একটা বিরক্ত বিরক্ত লাগছে আবার এলাকাটার সুন্দর্য দেখে আমি সব রাগ ভুলে সৌন্দর্য নিয়ে পরে আছি।
কি থেকে কি যেন ভেবে আমার ফ্রেন্ড একটা পিচ্চি হকারের কাছে লেবুর দাম জিজ্ঞাসা করল, দাম শুনেতো দুই জনই থ হয়ে বসে রইলাম।
ঐ সময় আমাদের বাজারে একটা লেবুর দাম ৪ টাকা আর এরা প্রায় ৫০টা লেবুর প্যাকেট বিক্রী করছে ৫/৬ টাকা, আমি ফ্রেন্ড কে বল্লাম হয়ত পিচ্ছি ছেলে তাই দাম ঠিক জানেনা অন্য একজনকে জিজ্ঞাস করে দেখ।
সবাই একি দাম বলাতে আমি চিন্তা করলাম ফেরার সময় এক প্যাকেট নিয়ে আসব তাতে করে মা লেবুর আচার বানাতে পারবে।
আমি চিন্তা করছি ফেরার পথে লেবু কিনব আর ফ্রেন্ড বলছে সে সিলেটে যাবেনা এখানেই নেমেযাবে, লেখাপড়া শেষ এখন ব্যবসা করবে। কিযে এক মছিবত একা করে যেতেও সাহস পাচ্ছিনা আবার ফ্রেন্ডও যাবেনা শেষ পর্যন্ত একাই গিয়ে ফর্ম জমা দিয়ে আসলাম আর বন্ধু লেবুর দান্ধা শুরু করে দিল।
দুই দিন পরে ফিরে দেখি এলাহী কান্ড ফ্রেন্ড কম করে হলেও ৩ ট্রাক লেবু সরাসরি আমাদের জেলা শহরে পাইকারি মার্কেটে নিয়ে উঠছে এবং ২টাকা পিছ চাইতেই নাকি এক ব্যবসায়ী সব কিনে নিছে ঐ ৩ ট্রাকে সব বাধ দিয়ে নাকি ওর প্রায় ৫০ হাজার টাকা লাভ হয়ছে।
এই বয়সে ৫০ হাজার টাকা এক সাথে চোখেও দেখিনি আর ও লাভ করে বসে আছে, এখন ওর মাথায় শুধু একটাই চিন্তা কি করে কোন ব্যবসা করা যায়। ঐ সিজনে সে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা লাভ করেছে শুধু লেবুর ব্যবসা করে। ১৬/১৭ বছর বয়সে কয়েক মাসে ৫ লক্ষ টাকা লাভ করা চাট্টি খানি কথানা, আমরা যা চিন্তাও করতে পারিনি সে কিন্তু তা করেই দেখাল।
এরপর আমি চলে আসলাম ঢাকাতে একটা প্রাইভেট ইন্সটিটিউট এ ডেন্টাল ডিপ্লোমা করার জন্য আর বন্ধু একজন ব্যবসায়ি বনে গেল, ১ বছর ক্লাস করার পর আমি ডেন্টাল ডিপ্লোমা ছেড়ে বাড়ি চলে আসলাম বলতে গেলে এক প্রকার পালিয়ে চলে আসলাম। মেডিকেল সাইন্সের লেখাপড়া আমার জন্য না, এটা বুঝতে পেরে আমি পালালাম একেবারে পিছনের দরজা দিয়ে।
গ্রামের বাজারে বাবার সাথে ছোট্ট একটা ফার্মেসী দিলাম আর বন্ধু এই জেলা থেকে ঐ জেলাতে ঘুরে বেড়ায় কি পন্য কিনে কিছু লাভ করতে পারবে, বাজারের ১৫/২০ বছরের পুরাতন ব্যবসায়ীরা যে ব্যবসার চিন্তাও করতে পারেনা সে যায়গায় তরুন একটা ছেলে সবাইকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে কি করে ব্যবসা করতে হয়।
একদিন ঐ বন্ধু ফরিদপুর যাচ্ছে শুনে আমি জিজ্ঞাস করলাম এত দূরে তর কি কাম, তার উত্তর শুনে আমি আবার থ হয়ে গেলাম। সে বল্লা ঐ এলাকাতে খেজুরের ঘুর অনেক শস্তা প্রতি সপ্তাহে ১০ ট্রাক এনে বিক্রী করা যাবে, সে গত ১৫ দিন মার্কেটে পাইকারি দোকান গুলির সাথে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছে। তখন আমাদের এলাকাতে খেজুরের গুড় ৬০/৭০ টাকা কেজি তাও বেজাল মিশ্রীত, আর ফরিদপুরে ২৫/৩০ টাকা একেবারে পিউর। পিউর গুড় পাইকারি ৬০টাকা পর্যন্ত বিক্রী করতে পারবে, সব হিসাব নিকাশ শেষ করেই সে ফরিদপুরে যাচ্ছে।
প্রায় ১১বছর হল বন্ধু ব্যবসা করছে, দেশের খুটিনাটি সবকিছু এখন এর নহ দর্পে। দেখতে দেখতে আমাদের জেলা শহরে সবচেয়ে পরিচিত ব্যবসায়ি মুখ হয়ে উঠল আমার ফ্রেন্ড। শহরের সবচেয়ে দামী জায়গাতে একটা বাড়ি করেছে যারা প্রতিমাসে বাড়া পাচ্ছে প্রায় ২ লক্ষ টাকার মত।
আসলেই ক্রিয়েটিভ মাইন্ডের লোক হলে কোথাও না কোথাও ঠিকই ব্যবসা খুজে পাবে, আর যারা ব্যবসা নিয়ে পিএইচডি করে তারা শুধু ব্যাবসায়ির নিকট চাকরির জন্য বসে থাকে।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:৪২

জাহিদ নীল বলেছেন: Onuparona pailam

২১ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৪:৩২

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: যদি কোন একজন বিন্দু পরিমানও অনুপেরনা পেয়ে থাকে তাখলে আমার বন্ধুর গল্পটা স্বার্থক হবে।

২| ২১ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৩

উম্মে সালমা কলি বলেছেন: আসলেই,সাহস করে শুরু করতে পারাটাই বড় কথা।

২১ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:১৯

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: সত্যিই তাই, সেদিন যদি সে এমন একটা পাগলামী না করত তাখলে হয়ত এখন ১০/১৫ হাজার টাকা বেতনের জন্য অফিসে অফিসে হেটে বেড়াত।

৩| ২১ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৪

ভিটামিন সি বলেছেন: কিতা কইন ভাইজান। কেমতে সম্ভব??

২১ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০২

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: আজকে অনেকক্ষ উর সাথে গল্প করে তারপর লেখলাম, আসলেই মানুষ ইচ্ছা করলে সব কিছুই করতে পারে।
তো আপনার কি খবর, একেবারে ভুলে গেলেন মনে হয়।

৪| ২১ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:২০

ভিটামিন সি বলেছেন: নাহ আছি তো আপনাদের আশে পাশেই। আজকে অফিস থেকে ৪.২০ চলে এসেছি। এসে রান্না করলাম। আগামীকাল ও পরের দিন বন্ধ। কয়েকটা মুভি ডাউনলোডাইতেছি। দুইদিন কাটানোর জন্য। আপনি কেমন আছেন? ৮৫৪৫৩০৩১

২২ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৭:৩৬

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: আমিও ভাল আছি, আমারতো সপ্তাহে বন্ধ নাই বল্লেই চলে।
তবে আগামীকাল অর্থাৎ রবিবারে ক্লাশ থাকতে অফিসে আসবনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.