নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দুঃখ হীন পৃথিবী

দুঃখ হীন পৃথিবী

একশত সিপাহী ঢাল-তলোয়ার লইয়া যে ক্ষমতা না রাখে, অনুতাপের হাত তাহার চেয়ে অধিক ক্ষমতা রাখে।

দুঃখ হীন পৃথিবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিক্ষা এগিয়ে যাচ্ছে, বছরের শুরুতে পাঠ্যপুস্তক দিচ্ছে সাথে পরীক্ষায় আগের দিন প্রশ্নও দেয়া হচ্ছে।

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:০৫

গত ১৮ তারিখ মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা ছিল, সবাই অনেক অনেক ভাল প্রিপারেশন নিচ্ছেন আর কিছু ছেলে মেয়ে ঐ মেধাবীদের পরিশ্রম দেখে লুকিয়ে লুকিয়ে হেসেছেন। কেননা এরা এসএসসি পাশ করেছে পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে, এইচএসসিতেও ঠিক তেমনি প্রশ্নপত্র হাতে পেয়েছে পরীক্ষার আগে। সুতরাং লেখাপড়া না করেও বাবার টাকার জোড়ে এরা গোল্ডেন এ+ পেয়ে পাশ করেছে, তাই চোখের সামনে কাওকে পড়া লেখা নিয়ে কষ্ট করতে দেখলে এদের হাসি পায় আর ফিস ফিস করে বলে "এরা আসলেই বলদ, পরীক্ষার জন্য এত পরিশ্রম করতে হয়"
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার আগেরদিন ঠিকই প্রশ্নপেয়ে যাবে, আর হাসতে হাসতে পরীক্ষায় পাশ করে ঢাকা মেডিকেলে চান্স পেয়ে যাবে। ঠিকই পরীক্ষার আগের দিন প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে, এরা হাসতে হাসতে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে বাহিরে হয়েছে আর মেধাবিরা কপালে একটা বাজ নিয়ে এসেছে।

এসএসসি এবং এইচএসসিতে প্রশ্ন পত্র ফাঁস হল, সবাই দুইদিন চিল্লা ফাল্লা করে চুপখয়ে গেলাম। আমাদের জাফর স্যার আরো একটু এগিয়ে সারাদিন শহীদ মিনারে অনশন করে রাতে শিক্ষমন্ত্রীর হাত থেকে পুরষ্কার নিয়েছেন। আমরা দুই দিন পরে ভুলে গেছি আর স্যার সন্ধ্যার পরেই ভুলে গেছেন।

গত ১৮ তারিখে ছিল মেডিকেল ভর্তির পরীক্ষা অর্থাৎ এই পরীক্ষায় যারা পাশ করবে তারাই আমাদের ভবিষ্যত চিকিৎসক, এদের কলাকৌশলের কাছেই আমাদের জীবন মরন প্রশ্ন থাকবে। মেডিকেল সেক্টরটা নিয়ে পৃথিবীর কোন দেশ আপস করেনা, এই লেখা পড়া কঠিন থেকে কঠিন করছে দিন দিন। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার আগের দিন প্রশ্ন ফাঁস করে কিছু অমেধাবী ছেলে মেয়ের শরীরে সাদা এপ্রোন পড়িয়ে তৈরী করা হচ্ছে কিছু অাকামলা ডাকাত, এরা অপারেশন থিয়েটারে গিয়ে বইয়ের পাতা উল্টাবে কি করে এখন রোগিকে অপারেশন করতে হবে।

আমাদের বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর প্রশংসা না করে উপায় নেই, বছরের শুরুতে যেমন পাঠ্যপুস্তক হাতে দিচ্ছেন ঠিক তেমনি পরীক্ষার আগের দিনও হাতে তুলে দিচ্ছেন প্রশ্নপত্র। ধন্যবাদ মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী কোন একদিন যখন আপনি এই ডাক্তার দের কাছে নিজের চিকিৎসা নেবেন সেইদিন বুঝতে পারবেন আপনি কি আপদ তৈরী করেছেন এই দেশের জন্য।
বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে এমবিবিএস পাশ করা ছেলে বিসিএস ক্যাডারে পুলিশের চাকরি পছন্দ করে, এই বিশিষ্ঠ মেধাবী নিয়ে আমরা কোথায় যাব? এরা দেশের সম্পদ না আপদ? আমাদের টাকায় সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলি চলবে আর ঐখানে কিছু চোর তৈরী করা হবে তা কিছুতেই মেনে নেয়া যায়না, আর বর্তমান পরিস্থিতীতে না মেনেও উপায় নেই কেননা মায়ের ধর্ষনের বিচার চাইতে গিয়ে ছেলে যখন পুলিশের গুলিতে নিহত হয় তখন এই চোর তৈরীর প্রতিবাদ করতে গিয়ে ভাগ্যে কি হবে তা একমাত্র আল্লাহ জানে। সুতরাং আমার মুখে তালা, যা খুশি তাই হোক দেশ গুল্লায় যাক। আমিতো আর দেশে চিকিৎসা নিতে যাবনা, আস্তে আস্তে হয়তো কোন একদিন দেশের বাহিরে নিজেকে সেটেল করে নেব। তখন আমি পৃথিবীর নামকরা ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা নেব, ডাকাতেরা আমার কাছেও আসতে পারবেনা।

আমার বাবা একজন গ্রামের ডাক্তার, বাড়িতেই উনার ফার্মাসী এই জন্য ছোট বেলা থেকেই এই পেশাটাকে খুব কাছ থেকে দেখছি।
একদিন এক মহিলা তার সন্তান নিয়ে এসে আব্বুকে বলছে "ভাইজান আমার পুলাটার শরীরটা অকেন দূর্বল, একটা ফাইমক্সিল সিরাপ দিলে একটু শরীরে ভিটামিন হয়তো শক্তি পাইতো" সেইদিন দেখছিলাম বাবা অনেক কষ্টে নিজের রাগটা লুকিয়ে আস্তে করে বলছিলেন "ফাইমক্সিল ভিটামিনের ঔষধ না, এটা এন্টিভায়টিক"
গ্রামের অশিক্ষিত মহিলা হয়তো মুহস্ত করা একটা ঔষধের নাম বলেছে, কিন্তু কেও একজন ওনার ভুলটা ঠিক করে দিতে পেরেছে। কিন্তু বর্তমানে চোরিকরে এমবিবিএস সার্টিফিকেট পাওয়া মানুষগুলির এমন ভুল কি কেও সুধরিয়ে দিতে পারবেন?
আমার ভয় হয়, না জানি এই ডাকাতগুলি পেটের ব্যাথায় ডাইক্লোফেনাক দিয়ে বসে, ব্যাথাতো ব্যাথায় বাতের ব্যাথায় যদি ডাইক্লোফেনাক কাজ করে তাখলে নিশ্চয় পাকস্থলির ব্যাথায়ও কাজ করবে।
বর্তমান মহামারি থেকে একমাত্র আল্লাহর কোন গায়েবি রহমত না আসলে আমাদের বাচার কোন পথ নেই, আল্লাহ আমাদের রক্ষা কর।

শেষে একটি ছুট্ট গল্প শেয়ার করি -

২০২৫ সাল, অপারেশন থিয়েটারে বেডে শুয়ে আছেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী উনার হার্ডে সমস্যা অপারেশন করতে হবে।
অপারেশন থিয়েটারের লাইট জ্বলে উঠল, সবাই চারপাশে দাড়িয়ে আছে কিন্তু কেও এনেস্থেসিয়ার মাক্স উনার মুখে দিচ্ছেনা। পাশে একজন অনেক বড় একটা বই উল্টায়ে পাল্টায়ে কি যেন দেখছেন, আর ঘামছেন।
মন্ত্রীর কেমন একটু সন্ধেখ হল, তাই জিজ্ঞাসা করলেন "আপনারা অপারেশনের কাজ শুরু না করে ওটিতে বই নিয়ে কি দেখছেন?"
এবার বিজ্ঞলোক বই রেখে মন্ত্রীকে বলছে, স্যার গতকাল একটা হার্ট অপরেশন করেছিলাম। লোকটাকে এনেস্থিশিয়া দেয়ার পর হার্ট ভিতর থেকে কেটে বাহিরে এনে অপারেশনের কাজ শেষ করি প্রায় ২ ঘন্টায়, খুব সুন্দর অপারেশন হয়েছে কিন্তু হার্ট ভিতরে রেখে করার পরে বুঝতে পারলাম লোকটা হার্ট বাহির করার সাথে সাথেই মারা গেছে।
তাই দেখছি আপনার হার্ট কেটে বাহিরে না এনে ভিতরে রেখে চিকিৎসা করা যায় কিনা, সাথে সাথেই মন্ত্রী হার্ট এটাকে মারা গেলেন চিকিৎসার আর প্রয়োজন হয়নি।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর প্রশংসা না করে উপায় নেই, বছরের শুরুতে যেমন পাঠ্যপুস্তক হাতে দিচ্ছেন ঠিক তেমনি পরীক্ষার আগের দিনও হাতে তুলে দিচ্ছেন প্রশ্নপত্র। ধন্যবাদ মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী কোন একদিন যখন আপনি এই ডাক্তার দের কাছে নিজের চিকিৎসা নেবেন সেইদিন বুঝতে পারবেন আপনি কি আপদ তৈরী করেছেন এই দেশের জন্য।


&

অসাধারন ভবিষ্য চোট্ট কল্প গল্প!

আমাদের কি মন্ত্রীর অপারেশন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে? এই দুর্দশা থেকে মুক্তি পেতে!!!!

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১০

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: এছাড়াযে আর কোন পথ দেখছিনা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.