নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দুঃখ হীন পৃথিবী

দুঃখ হীন পৃথিবী

একশত সিপাহী ঢাল-তলোয়ার লইয়া যে ক্ষমতা না রাখে, অনুতাপের হাত তাহার চেয়ে অধিক ক্ষমতা রাখে।

দুঃখ হীন পৃথিবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি তনি আর নতুন বাড়ি, ব্যাংক লোন যেখানে শত্রু হয়ে দাড়াল।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৩



লেখাপড়া শেষ করে বেশ ভালই একটা চাকরি জোটেছে, ভাড়া বাড়িতে থাকতে থাকতে কেমন হাপিয়ে উঠেছি। ইচ্ছা করে নিজের একটা বাড়ি হলে অনেক ভাল হয়, তাছাড়া ঢাকার জমির যে দাম তাতে জমি কিনে বাড়ি করা এক প্রকার অসম্ভব হয়ে পরছে। চিন্তা করলাম শেয়ার বাড়ি করব, কিন্তু তাতেও অনেক ঝামেলা। আমি আবার কোন প্রকার ঝামেলাতে জড়াতে পারিনা, সাধারন মানুষ ছিমছাম পছন্দ করি তাই চিন্তা করলাম কারো সাথে শেয়ারে না কিনে কোন একটা ভাল মানের কোম্পানি থেকে ফ্ল্যাট নিলে কোন প্রকার ঝামেলা নাই।
ঢাকার শহরে প্লট আর ফ্ল্যাট কেনার কথা কল্পনার করলেও নাকি ডেভলপার কোম্পানি গুলি কিভাবে জানি জেনে যায়, মনে হয় মনের কথা বুঝার মত কোন মেশিন এদের আছে।
যায় হোক ফ্ল্যাট এর কথা চিন্তা করতেই দেখলাম পরদিন সকালে বাড়ির সামনে লাল রং এর কাল গ্লাসের একটা জীপ দাড়িয়ে আছে, আলাদ্দীনের প্রদীপের দৈত্যের মত একজন অতি ভদ্র লোক আমাকে সালাম দিয়ে অতি নম্রভাবে বিনয়ের সাথে অফার করলেন ওনাদের কোম্পানির প্রকল্পটা একটু দেখে আসতে। ১২০০ স্কারফিটের ফ্ল্যাট মেঝেতে মারবেল দেয়ালে ইতালিয়ান টাইলস, ফিটিংস সব ইন্পোর্ট করা। এক কথায় বাংলাদেশের লেভার ছাড়া অন্য কোন কিছু এই প্রকল্পে ব্যবহার করা হয়নি, একেই বলে হাইক্লাস সোসাইটির চিন্তা ভাবনা। আরে ভাই এই দেশেই আছি, তাখলে দেশের তৈরি প্রোডাক্ট দিয়া বাড়ি করব কেন?
তনিটার অনেক দিনের ইচ্ছে নিজেদের একটা বাড়ি না হোক অন্ত্যত একটা ফ্ল্যাট যাতে হয়, নিজের ফ্লাট এর বারান্দায় বসে কফি খাওয়ার কিযে আনন্দ তা কি বলে বুজানো যাবে।
যায়হোক তারাতারি করে রেডি হয়ে বাহিরে দাড়ানো কোটি টাকার গাড়িতে গিয়ে বসলাম।
সবচেয়ে অবাক হলাম তনিটাও আজকে মাত্র ১০ মিনিটেই নিজেকে গোছিয়ে নিয়েছে, যেখানে কোথাও যেতে ১ ঘন্টা লাগে শুধু ওর ড্রেস মেচিং করতে আর আজকে বাড়ি দেখতে যাব সেখানে মাত্র ১০ মিনিটেরও কম সময় লেগেছে।
আমার বাসা থেকে ডেভেলপার এর অফিস প্রায় ৩০ মিনিটের রাস্তা, এয়ারকন্ডিশনার গাড়িতে বসে থাকতে কিযে ভাল লাগছে এক কথায় স্বর্গীয় ফিলিং। প্রতিদিন রাস্তায় জ্যামে পরলে সরকারের চৌদ্দগোষ্টি উদ্ধার করতাম আর আজ জ্যামে পরলে অনেক ভাল লাগছে একটু বেশি সময় এসির ঠান্ডা বাতাশ খেতে পারছি। তনিটা আমার হাতের উপরে হাত রেখে কেমন রহস্য জনক চাপ দিল আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই মোবাইল এর স্কীনটা চোখের সামনে রাখল, একটা গাড়ির ছবি অনেক সুন্দর সাথে দামটাও মনে হল নিজেদের নাগালের মধ্যেই।
ফিস ফিস করে কানের কাছে এসে বলছে "বাড়ির কাজের ঝামেলাটা শেষ হলে আমরা গাড়ির শো-রুমে যাব"
আমার নিজেরও কিছুদিন যাবত ইচ্ছা করছিল একটা গাড়ি কেনার জন্য, রাস্তায় যে জ্যাম তাতে নিজের গাড়ি ছাড়া বাহির হওয়ার মানে নিজেকে কোরবানি করে দেওয়া। তনির দিকে তাকিয়ে ছোট্ট একটা হাসি দিয়ে মনে মনে ভাবলাম এইমেয়েটা কি করে আমার মনের কথাটা বুঝতে পারল, আস্তে করে তনির কানের কাথে গিয়ে বল্লাম "ঠিক আছে, আজকেই আমরা বাড়ি এবং গাড়ির ঝামেলা শেষ করব"
তনিটা লাজ লজ্জা ভুলে গিয়ে আমাকে একটা চুমু খেল, ড্রাইভারের পাশে বসে থাকা অতি ভদ্র মানুষটা কেমন করে কেশে উঠলেন মনে হয় কিছু দেখেছে।

যায়হোক শান্তির একটা ভ্রমন শেষে আমরা এসে পৌছালাম উনাদের অফিসে, এতো দেখি এলাহি কান্ড। গাড়ি থামতেই সুন্দরি এক তরুনি এসে দরজা খুলে দিল, মনে হল আমি যেন বিশেষ কোন ভিআইপি। একগুচ্ছ ফুল দিয়ে উনি আমাদের শুভেচ্ছা জানালেন, পাশে তাকিয়ে দেখি বউ কেমন কিচির মিচির করে মেয়ের দিকে তাকাচ্ছে হয়তো ভাবছে মেয়েটা এত ঢং করার কি আছে।
এবার উনাদের হেড অব সেলসম্যান এসে আমাদের বরন করে নিলেন, সুন্দর পরিপাটি একটা রুমে নিয়ে বসালেন সামনে বিশাল একটা স্ক্রীন মনে হয় ষ্টার সিনেপ্লেক্সে এসেছি। পাশে অরেন্জ জুসের গ্লাস নিয়ে সুন্দরি দাড়িয়ে আছে, অন্য একজন এসে লেভেনডার ফ্লেভারের ওয়েট টিস্যু দিলেন........... আহা কি শান্তি..........
একজন সুন্দরী তমা, বলতে গেলে ডানা কাটা পরী একটা গ্লাসের ভিতরে থ্রীডি মডেলের বাড়িটা নিয়ে আসলেন। সেলস ম্যানেজার অতি সুন্দর ভাবে গ্লাসটা খুলে ফেল্লেন চোখের সামনে নিজের বাড়ির একটা ডেম্যু দেখে সুখে পুলকিত হতে লাগলাম। কত সুন্দর স্পষ্ট ভাষায় বিস্তারিত বুঝিয়ে দিচ্ছেন -
এটা প্রবেশ গেইট, একজন দাড়োয়ান দাড়িয়ে থাকবে গেইট খুলে দিয়ে স্যালুট দিবে। আহা কেমন ভিআইপি ভিআইপি ভাব........
বেইসমেন্ট কারপার্ক থেকে লিফটে ১৭তলায় আমার বাসায় যেতে পারব, আর মেইন এন্টারেন্স দিয়ে আসলে প্রথমেই চোখের সামনে পরবে গ্রীক ডিজানের ওয়টার ফেয়ারা। শত ক্লান্তির মাঝেও আপনাকে দেবে শান্তির পরশ, মনে হবে যেন আপনি এই মাত্র হেভেনে এসেছেন। সেভেনটিন্থ ফ্লোর থেকে যে দিকেই তাকাবেন অসাধারন একটা ভিও মনে হবে, টপ ফ্লোর থেকে চারিপাশের ভিওটা অনেক সুন্দর। পরন্ত বিকালে আপনারা যখন বারান্দায় বসে কফির কাপে চুমু দেবেন আর চারিপাশে তাকিয়ে দেখবেন মনে হবে আপনারা পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ......... ব্লা ব্লা ব্লা আরো কত কি।
দামের ব্যাপারে কথা বলতেই, উনি বল্লেন একেবারে পানির মূল্য স্যার। মাত্র ৭ হাজার টাকা স্কয়ার ফিট, ১২০০ স্কারফিটের ফ্ল্যাট সাথে একটা কার পার্ক ইউটিলিটি সব মিলিয়ে৭০০০*১২০০+৫০০০০০+৩০০০০০=৯২০০০০০ (৯২ লক্ষ টাকা)
বুকিং মানি ১ লক্ষ টাকা আর ৩ মাসে মধ্যে ২৫% ডাউন পেমেন্ট ২২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা দিতে হবে বাকী টাকা ৩৬টা সমান কিস্তিতে কোন প্রকার সুধ ছাড়াই দিতে পারবেন, আমরা স্যার সুধকে ঘৃণা করি।
আমি ততক্ষনে মোবাইলের বাটনে টিপাটিপি করে দেখলাম আমাকে প্রতিমাসে দিতে হবে ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা করে, একটু নরাচড়া শুরু করে দিলাম সেলসম্যান কিছুটা বুঝতে পারল তখন একটু হাসি দিয়ে বল্লেন স্যার আপনার যদি কেপিটালের সমস্যা থাকে তাখলে আমরা ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেব উনারা আপনাকে ৭০% লোন দিবে।
আহা কি শান্তি, কিছু বলার আগেই উনারা বুঝে নিচ্ছে। এতো এক তেলেসমাতি কারবার।
১০ মিনিটের মধ্যেই একজন অতি রূপবতি ২৫/২৬ বয়সের মেয়ে এসে হাজির, উনি ব্যাংক থেকে এসেছেন। এই বিল্ডিং এর দুই তলায় ব্যাংকের অফিস উনাদের ইনফর্ম করতেই এসে হাজির, কইন্যার দিকে তাকিয়ে আমি ফিদা হওয়ার অবস্থা। ব্রাউন কালারের চুল ঠোটে লাল লিপিষ্টিক গালে কিছুটা আটা ময়দা মাখা থাকলেও বুঝা যায় প্রাকৃতিক ভাবেই মেয়েটা সুন্দর। নীল একটা শাড়ি পরেছে, শাড়ি পরাতেও কেমন একটা শৈল্পিক ছোয়া নিয়ে এসেছে। কোমরের উপর থেকে কেমন করে যেন শাড়িটা নিয়ে আসল পেটের অর্ধেকটা দেখা যায় আবার বুকের উপরেও একটা ছোট বাজ দিয়েছে তাতে কেমন উঠতি ঝুগলের উপস্থিতি স্পষ্ট বুঝাচ্ছে।
আচ্ছা এমন মেয়েদেরকি সেক্সি বলে নাকি স্মার্ট বলে? আমি ক্ষেতই থেকে গেলাম সারা জীবন। কোন মায়াদের কি নাম তাও শিখিনি.....
সুন্দরি এসে আমার পাশে বসে একটা ফর্ম বাহির করে লেখতে শুরু করলেন, আহা কি নম্র ভদ্র হয় এই মেয়ে গুলি। শুধু বিয়া করতে গেলে এমন মেয়ে খুজে পাওয়া যায়না, যত ঝামেলার মেয়ে বউ হিসাবে পাওয়া যায়। এই মেয়ের জামাই কত ভাগ্যবান ভাবতেই আমার চোখের কোনে জল এসে গেল।

কিছুটা সময় কথা বলে সিদ্ধান্ত হল ৫০ লক্ষ টাকা লোন নেব, যদিও ব্যাংক আরো বেশি কিছুটা দিতে আগ্রহী ছিল তারপরও নিজের টাকা থাকটে অতিরিক্ত নিয়ে লাভ কি। সুদের হার ১৫ পার্সেন্ট ১৫ বছরে পরিশোধ করতে হবে।
এক লক্ষ টাকা বুকিং মানি দিয়ে মনের মধ্যে একটা তৃপ্তি নিয়ে ছোটলাম গাড়ির শো-রুমে, সবগুলিই ভাল লাগে তরপরও কিনতে হবে একটা। বউয়ের পছন্দ থেকে হোন্ডা সিভিকটা নিলাম। উনাদের ৮ লক্ষ টাকা ডাউনপেমেন্ট দিয়ে আসলাম সাথে সাথেই, বাবাকে ফোন করে বল্লাম গ্রাম থেকে পরিচিত একজন ড্রাইভার পাঠাতে শহরের গুলি কেমন ঝামেলা করে।
আহা কি সুন্দর একটা দিনইনা কাটালাম, বাড়ি গাড়ি সব কিছুর ঝামেলা শেষ হয়ে গেল...................

নামিদামী ডেপলপার কোম্পানি গুলি যথা সময়ের ফ্ল্যাট হেন্ডওভার করে, এরাও ঠিক সময়ের দুই দিন আগে আমাদের নিয়ে এক অনারাম্ভন অনুষ্ঠান করে হাতে ফ্ল্যাটের চাবি দিলেন। আহা কি সুখ, বউয়ের ভালবাসা মনে হয় আমারপ্রতি হাজার গুন বেরে গেল। চারিপাশে তাকিয়ে দেখলাম শুধু আমার বউই না, সবার বউই টুক টাক দুই একটা কিসদিয়ে বসেছে আনন্দে।

নতুন বাসাতে উঠালাম সাথে নতুন গাড়ি, বউতো কোন কাজ ছাড়াই খুটহাট করে গাড়ি নিয়ে বাহিরে চলে যায়। আহা কিযে সুখী পরিবার আমার।
বাবা মা গ্রামের মানুষ এরা নাকি এই বাড়িটাকে জেলখানা মনে করে, এত ছোট বাসায় কেও থাকতে পারে? হাবিঝাবি আরো কত কি................
আজকে সকালে আমাদের গাড়িতে করে বাবা মাকে গ্রামে দিয়ে আসলাম, উনারাও সেখেনে ভাল থাকুক আমরাও এখানে ভাল থাকি। যদিও বউয়ের খুব ইচ্ছে ছিল উনারা এখানে থাকুক, বাসায় মুরুব্বি থাকা নাকি ভাল।

নতুন বাসায় উঠেছে অনেক কিছুই কেনাকাটা করতে হবে, ক্যাশ টাকা যা ছিল সবই শেষ। এমন সময় এক ব্যাংকের মিষ্টি কন্ঠের তরুনি ফোন করে বল্ল স্যার আমাদের ব্যাংকের একটা ক্রেডিট কার্ড যদি নিতেন, আমাদের সার্ভিস বলতে গেলে দেশের সেরা সার্ভিস। তিন বছর কোন প্রকার চার্জ দিতে হবেনা, অরো অনেক কিছু............................
জীবনটা কেমন জানি অটোমেটিক হয়ে যাচ্ছে কোন কিছু কল্পনা করার আগেই হাতের কাছে এসে হাজির। আজকে বিকালের মধ্যেই কার্ড হাতে পেয়ে গেলাম, বউকে নিয়ে ছোটলাম নামিদামী মার্কেটে সেখানে আবার কার্ড ছাড়া শপিং করা যায় না। মনের মত করে কেনাকাটা করলাম, বউয়ের হাতে কার্ড দিয়ে দিলাম যা খুশি তা কিনে আনোক। বিলটা দেখে একটু ভয় পেয়ে গেছিলাম তারপর দেখলাম ২ বছরের ইন্সটলমেন্টে দিতে হবে তখন ভাবলাম এইটা খুব বড় কিছুনা।
আজ ৬ মাস হতে চল্ল আমাদের নিজেদের বাড়ি গাড়ি হয়েছে, উচ্চবিলাসি একটা লাইফষ্টাইল।

বাড়ি এবং গাড়ির লোনের কাগজ পত্রগুলি নিয়ে অনেক ক্ষন চুপ করে বসে আছি, জীবনটা কেমন জানি একটা মেশিনের মত হয়ে গেছে।
ব্যাংকলোন প্রতিমাসে ৭০ হাজার টাকা করে দিতে হচ্ছে, যদিও বাড়ি কেনার সময় ভাবলাম বাড়ির দাম ৯২ লক্ষ টাকা কিন্তু আজ হিসাব করে দেখলাম ব্যাংক লোন শেষ করতে করতে বাড়ির দামহবে (৭০০০০*১৮০=১২৬০০০০০) ১ কোটি ছাব্বিস লাখ টাকা সাথে ডাউন পেমেন্ট আর বুকিং মানি, সব মিলিয়ে বাড়ির দাম পরছে (১২৬০০০০+১০০০০+২২৭৫০০০=১৪৯৭৫০০০) ১ কোটি ৪৯ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ ৯২ লক্ষ টাকার বাড়ি আমি কিনলাম ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে।

এবার গাড়ির হিসাব - ২০ লক্ষ টাকার গাড়ি ৮ লক্ষ টাকা নগত বাকী ১২ লক্ষ টাকা ব্যাংক লোন, ৫ বছর সময় ১৫ পারসেন্ট সুধ। এখন হিসাব করে দেখলাম আমার ২০ লক্ষ টাকার গাড়ির দাম পরছে (২৮৫৪৮*৬০=১৭১২৮৮০+৮০০০০০=২৫১২৮৮০) ২৫ লক্ষ ১২ হাজার ৮ শত আশি টাকা।
বাড়ি গাড়ি ক্রেডিট কার্ড সব মিলিয়ে আমাকে ব্যাংক লোন দিতে হচ্ছে (৭০০০০+২৯০০০+১২০০০=১১১০০০) ১ লক্ষ ১১ হাজার টাকা।

এখন আমার একার টাকায় লোনের কিস্তি দেওয়ার পর সংসারের জন্য তেমন কিছুই থাকেনা, বাধ্য হয়েই তনিকে একটা জব খুজতে হয়েছে। বর্তমানে সেও একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জব করে। যেখানে তিন বছর আগে প্রতিরাতে বাসায় ফেরার সময় তনির জন্য বেলি কিংবা রজনিগন্ধা ফুল নিয়ে আসতাম সেখানে আজ তনির জন্মদিনেও একটা ফুল কিনতে পারিনি শুধু অতিরিক্ত টাকা খরচ কমানোর জন্য।

অনেক দিন পর আজ রিয়েলাইজ করছি, এখন আমাদের নিজেদের বাড়ি গাড়ি আছে কিন্তু সেই সুখটা নেই যা কিনা গত ৩ বছর পূর্বেও আমাদের মাঝে ছিল। তনিটা আজ আর খুটহাট করে সবার সামনে আমাকে কিস করে বসেনা, কেমন জানি দুইজন জীবনের যুদ্ধে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত। এখন একটু মুক্তি চাই, বাবা মায়ের সাথে সেই গ্রামে ফিরে যেতে চাই যেখানে চারদিকে মুক্ত বাতাশ। কিন্তু তা আর কোন দিনও হবার নই.................

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৪০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দুইজন জীবনের যুদ্ধে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত। এখন একটু মুক্তি চাই, বাবা মায়ের সাথে সেই গ্রামে ফিরে যেতে চাই যেখানে চারদিকে মুক্ত বাতাশ। কিন্তু তা আর কোন দিনও হবার নই.................

হুম! খুব কঠিন এক কর্পোরেট চক্র!!! ওয়ান ওয়ে! ঢৌকা যায় নিজের ইচ।ছেয় বেরুনো যায় না! আর যখন বেরুবার সময় হবে- তখন নিজের অস্তিত্বটাই খূজে পাওয়া যাবে না! ডেট এক্সপায়ার্ড.....!

এই এক চক্র- এপার কহে ছাড়িয়ে নি:শ্বাস
ওপারেতে সব সূখ আমার বিশ্বাস!!

এই কবিতাটা মনে রাখেননি যে ;)

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১৪

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: ভাই এটা আসলে আমার বাস্তব জীবনের গল্পনা, আজকে একজন ডেভলপার এর সাথে কথা বলার পর ব্যাংকের সাথেও কথা বল্লাম তাখ যে হিসাবটা পেলাম তার একটা ফিরিস্তি উঠালাম আর কি।

ব্যাংক লোন নিয়ে এমন কিছু করলে গল্পটা বাস্তব হতে খুব বেশি সময় লাগবে বলে মনে হয়না।

২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৪৫

আজিজার বলেছেন: বাবা মায়ের সাথে সেই গ্রামে ফিরে যেতে চাই যেখানে চারদিকে মুক্ত বাতাশ। কিন্তু তা আর কোন দিনও হবার নই.................
সত্য কথা বলেছেন।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২৩

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: কিন্তু যারা এমন কর্পোরেট ঝামেলাতে জড়িয়ে যায় তারা আর যেতে পারেনা

৩| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৪৭

বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: বাবা মায়ের সাথে সেই গ্রামে ফিরে যেতে চাই যেখানে চারদিকে মুক্ত বাতাশ। কিন্তু তা আর কোন দিনও হবার নই.................

আজ দশ বছর যাবত ছটফট করছি এইটুকু শান্তির জন্য।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২৫

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: ভাই সময় পেলে একটু বেড়িয়ে আসতে পারেন, এই সুখের উপরে আর কোন সুখ নেই।

৪| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫২

গোধুলী রঙ বলেছেন: আমার ভাড়া বাড়িই সই।
বিয়ার আগে পরবর্তী খরচ সামলানোর জন্য স্যালারি-একাউন্টের ব্যাংক থেকে এক লাখ টাকা লোন নিতে চাইছিলাম, ১৭ টা সাইন করার পর কে জানি কানে কানে ফিস ফিস করে বললো আর আগাস না পাগল, কলমের খাপ লাগাইয়া ব্যাংকের লোকটাকে বললাম আর সাইন দিমু না লোন ও নিমু না।
তিন বছরের বিবাহিত জীবন পার করার পর আমার অন্য সহকর্মীদের সাথে নিজেকে মিলিয়ে দেখি যারা ব্যাংকের কাছ থেকে ধার করে চলে, অনেক অনেক শান্তিতে আছি।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪১

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: ভাই অনেক সুন্দর বলেছেন, আমি পারতে কখনো ব্যাক্তিগত লোন পর্যন্ত করিনা। ব্যাংকের লোনতো অনেক পরের বিষয়।
এইটা আমার একটা কল্পনা মাত্র, আজ এক ব্যাংক এবং ডেভেলপার এর সাথে কথা বলে এই গল্পটা তৈরী হল। কর্পোরেটদের কথায় পাগল হলে এমন গল্প প্রতিটা জীবনের তৈরী হবে।

আমাকে এক ব্যাংক একটা ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছিল ৩ বছরের কোন প্রকার ফি ছাড়া, ২ বছর ১০ মাস পর যখন টার্মিনেশন করতে গেলাম তখন অফিসার একটু হেসে বল্ল "ব্যাংকের টাকা এতদিব ব্যবহার করলেন কিন্তু একটা টাকাও আমাদরে লাভ দিলেন না"।

৫| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: আমিও মুক্তি চাই
কিন্তু কিসের থেকে
জীবন না মোহ থেকে
তা আজও বুঝতে
পারছিনা!!

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪২

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: জীবন থেকে মুক্তি পাওয়ার কোন পথ নেই, তবে একটু চেষ্টা করলেই মোহ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব

৬| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৩৪

মোঃ আবু হেনা সাজ্জাদ বলেছেন: বাবা মায়ের সাথে সেই গ্রামে ফিরে যেতে চাই যেখানে চারদিকে মুক্ত বাতাশ। কিন্তু তা আর কোন দিনও হবার নই.................

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৭

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: কিন্তু সেই সুখ খুজে পাওয়া যে এত সহজ না...................

৭| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০০

রাতুল_শাহ বলেছেন: হুমমম.............

ভাবছি কি বলি.......

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:৫৪

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: ভাইরে আর বলার মত কিছু পাওয়া যাবে না..........

৮| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৭

দেবজ্যোতিকাজল বলেছেন: ঋৃন করে ঘি খেলে তা অবস্থা খারপই হবে

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:৫৮

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: কথা ঠিক বলেছেন, তাই খাওয়ার আগে কল্পনাটা করে দেখে নিলাম।
কল্পনাটা যেহেতু করতে পেরেছি, আশাকরি ঋৃণ করে আর ঘি খেতে হবেনা........... ধন্যবাদ

৯| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৬

আজমান আন্দালিব বলেছেন: সব জটিলতার অবসান চাই...

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৭:০৭

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: কর্পোরেট জগতে একবার প্রবেশ করলে আর জটিলতা থেকে বেড়িয়ে আসার কোন পথ খোলা নেই।

১০| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৫

সুমন কর বলেছেন: অনেক দিন পর আজ রিয়েলাইজ করছি, এখন আমাদের নিজেদের বাড়ি গাড়ি আছে কিন্তু সেই সুখটা নেই যা কিনা গত ৩ বছর পূর্বেও আমাদের মাঝে ছিল। -- লেখার শেষে অতৃপ্তিটা প্রকাশ পেয়ে গেল।

আপনার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। শুভকামনা!!

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:১২

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: আসলেই যারা এমন কর্পোরেটের আর অটোমেকিট লাইফের দিকে পা বাড়াই তারা হতাশা ছাড়া আর কিছুই পাইনা.........
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

১১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪০

কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: একটার জন্য আরেকটা ছাড়তে হবে ।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:১৩

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: কিন্তু সুখের বিনিময়ে কেবল হতাশাটাই খুজে নিতে হয়।

১২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩৬

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


মানুষ যত আধুনিকতার দিকে পা বাড়ায় ততই হতাশা ঘীরে ধরে কথাটা ভুল না।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:১৪

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: আধুনিক জীবন কেবল মেশিনের মত, হতাশা ছাড়া আর কিছুই নেই।

১৩| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১১

আরুই বলেছেন: কমেন্ট করার জন্যই একাউন্ট খুলে ফেললাম । আমার বর্তমান অবস্থার সাথে ৮০% মিল । পার্থক্য আমি গাড়ির লোন নিলেও ফ্লাট এর জন্য লোণ নেই নাই । গাড়ি , ফ্লাট , ক্রেডিট কার্ড সবকিছু দিয়ে হাতে কিছুই থাকে না । আমার ওয়াইফকে অবশ্য চাকরি করতে হয়নি । তারপরও ভয়ে ভয়ে দিন পার করছি । এভাবে কোনমতে আর দেড় বছর কেটে যাক । ফ্লাট এর টা শোধ হলেই বাচি ।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:৫১

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: আসলে ভাল একটা ব্যাকআপ না থাকলে লোন নেওয়াটা অনেক ঝামেলার, নিজ থেকে ছোট কিছু করতে পারলেও অনেক ভাল যদি লোনের দিকে না যেতে হয়।

১৪| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:২১

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আমার জব ক্যারিয়ার শুরু করেছিলাম রিয়েল এস্টেট কোম্পানি দিয়ে। আমি ভাই কখনো গাড়ী-বাড়ী করার পক্ষে নেই, যা আয় করা হোক, তা দিয়ে বর্তমানটা উপভোগ করা শ্রেয়, সম্পদের চেয়ে।

আপনার লেখার হাত খুব ভাল, বর্ণনা চমৎকার। +++

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৭:২৬

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, তবে সীমার ভিতরে থাকেল লোন করেও কিছু করতে আমি মানা করিনা কিন্তু নিজের আয়ের চেয়ে বেশি লোন আমি কখনো সমর্থন করিনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.