নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় দলের লোকদের ষড়যন্ত্র ছিল

১৮ ই মে, ২০১৭ সকাল ১০:২০



বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র চার বছরের মাথায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার নেপথ্যে দলের লোকদের ষড়যন্ত্রকেই দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার স্থপতিকে হত্যায় তৎকালীন মন্ত্রী খোন্দকার মোশতাক আহমেদের জড়িত থাকার কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আরও অনেকে এর মধ্যে জড়িত ছিল, এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে। আসলে ঘরের শত্রু বিভীষণ। ঘরের থেকে শত্রুতা না করলে বাইরের শত্রু সুযোগ পায় না। সে সুযোগটা করে দিয়েছিল। গতকাল বুধবার সকালে গণভবনে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার সময় দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে গিয়েছিলেন দুই বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা। সেই থেকে দিনটিকে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস হিসেবে পালন করে আওয়ামী লীগ। দিবসটি উপলক্ষে গতকাল বুধবার আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতারা গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। এ সময় প্রায় ৫২ মিনিটের বক্তব্যে ’৭৫ পরবর্তী সময়ের স্মৃতিচারণ করেন শেখ হাসিনা।

৬ বছর প্রবাসে থাকার পর ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন শেখ হাসিনা। সেই থেকে অদ্যাবধি টানা ৩৬ বছর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।

১৯৭৫-এর প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, অনেকেই তাকে (বঙ্গবন্ধুকে) সাবধান করেছিলেনÑ এরকম একটা ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি বিশ্বাস করেননি। আব্বা বলতেন, না, ওরা তো আমার ছেলের মতো, আমাকে কে মারবে? এ হত্যাকা-ে যারা জড়িত ছিলেন তাদের অনেকের নিয়মিত ধানম-ির ৩২ নম্বর সড়কের বাড়িতে যাওয়া-আসা ছিল। ডালিম (শরিফুল হক ডালিম), ডালিমের শ্বাশুড়ি, ডালিমের বউ, ডালিমের শালী ২৪ ঘণ্টা সেখানে পড়ে থাকত। ডালিমের শ্বাশুড়ি তো সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত, ডালিমের বউ তো সারা দিনই আমাদের বাসায় থাকত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুনি মেজর নূর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে জেনারেল ওসমানীর এডিসি হিসেবে কর্মরত ছিল। আরেক খুনি সৈয়দ ফারুক রহমান বঙ্গবন্ধুর তৎকালীন মন্ত্রিসভার অর্থমন্ত্রী এ আর মল্লিকের শালীর ছেলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুব দূরের না। এরাই ষড়যন্ত্র করল।

বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার কথা আবারও উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা এভাবে বেইমানি করে, মোনাফেকি করে, তারা কিন্তু এভাবে থাকতে পারে না। মোশতাক রাষ্ট্রপতি হয়ে জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান করে। তাদের মধ্যে অবশ্যই যোগসাজশ ছিল।

জিয়ার পারিবারিক সমস্যা সমাধানে বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগ নেওয়ার কথাও তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান প্রতি সপ্তাহে একদিন তার স্ত্রীকে (খালেদা জিয়া) নিয়ে ৩২ নম্বরের বাড়িতে যেত।

কান্নাজড়ানো কণ্ঠে শেখ হাসিনা বলেন, আমার মাঝে মধ্যে মনে হয়, আব্বা যখন দেখেছেন, তাকে গুলি করছে তারই দেশের লোক, তার হাতে গড়া সেনাবাহিনীর সদস্য, তার হাতে গড়া মানুষÑ জানি না তার মনে কী প্রশ্ন জেগেছিল।

স্বামী এম ওয়াজেদ মিয়ার গবেষণার কারণে ১৯৭৫ সালের ৩০ জুলাই জার্মানিতে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা, ছোট বোন শেখ রেহানাও সেখানে গিয়েছিলেন বেড়াতে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের দিন দুই বোন ছিলেন বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে। খবর শোনার পর পশ্চিম জার্মানিতে ফিরে তৎকালীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর বাসায় ওঠেন তারা। পরে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের ভারতে আশ্রয় দিয়েছিলেন।

এক দিনে পরিবারের সবাইকে হারানোর দিনটি মনে করতে গিয়ে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্মৃতিচারণ করে বলেন, তখনো ততটা জানতে পরিনি কী ঘটে গেছে বাংলাদেশে। যখন জানতে পারলাম, তখন সহ্য করাটা কঠিন ছিল। ওই সময় তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনের পশ্চিম জার্মানির বন শহরে সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের কথা চেপে যাওয়ার কথাও বলেন শেখ হাসিনা। বলেন, তিনি এ হত্যাকা- সম্পর্কে একটা কথাও বললেন না। তার কোথায় যাওয়ার কথা ছিল চলে গেলেন। হুমায়ুন রশীদ সাহেব এ হত্যাকা-কে কনডেম করলেন প্রেসের সামনে।

ভারতে নির্বাসিত জীবনের কথা বলতে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতেই শেখ হাসিনা বলেন, ভাবলাম দেশের কাছে যাই। কখনো শুনি, মা বেঁচে আছে। কখনো শুনি, রাসেল বেঁচে আছে। একেক সময় একেক খবর পেতাম। ওই আশা নিয়ে চলে এলাম। কেউ বেঁচে থাকলে ঠিক পাব। ২৪ আগস্ট দিল্লি পৌঁছলাম। মিসেস গান্ধী (ইন্দিরা গান্ধী) আমাদের ডাকলেন। তার কাছ থেকে শুনলাম, কেউ বেঁচে নেই। হুমায়ুন রশীদ সাহেব আগে বলেছিলেন। কিন্তু আমি রেহানাকে বলতে পারিনি। কারণ ওর মনে একটা আশা ছিল, কেউ না কেউ বেঁচে থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিল্লিতে মিসেস গান্ধী থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন। ওয়াজেদ সাহেবকে এটমিক এনার্জিতে কাজের ব্যবস্থা করে দিলেন। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে শেখ হাসিনা বলেন, এটা কী কষ্টের কাউকে বুঝিয়ে বলতে পারব না। অর্থের কারণে ১৯৭৭ সালে বোন শেখ রেহানার বিয়েতে লন্ডনে যেতে না পারার বেদনা তুলে ধরে তিনি বলেন, দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে যাব, অত টাকা ছিল না। আর, কোথায় থাকব?

১৯৮০ সালে লন্ডনে যাওয়ার ক্ষেত্রে ইন্দিরা গান্ধীর ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা স্মরণ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। বলেন, ওর (শেখ রেহানা) যখন বাচ্চা হবে, আমি মিসেস গান্ধীকে গিয়ে বললাম, আমি যেতে চাই রেহানার কাছে। তিনি ব্যবস্থা করে দিলেন। টিকিটের ব্যবস্থা করে দিলেন। থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন। ’৮০-এর শেষে দিল্লিতে ফিরে আসি। টাকাও ছিল না।

১৯৮০ সালে বিদেশে থাকার সময়ই আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে সভাপতি নির্বাচিত করা হয় রাজনীতির বাইরে থাকা শেখ হাসিনাকে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এত বড় সংগঠন করার অভিজ্ঞতাও আমার ছিল না। আমার চলার পথ অত সহজ ছিল না।

দল এবং দলের বাইরে নানা প্রতিকূলতার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, খুনিরা বহাল তবিয়তে বিভিন্ন দূতাবাসে কর্মরত। স্বাধীনতার বিরোধীরা তখন বহাল তবিয়তে। তারাই ক্ষমতার মালিক। যে পরিবারকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল, সে পরিবারের একজন এসে রাজনীতি করবে। সেটি এত সহজ ছিল না, প্রতি পদে পদে প্রতিবন্ধকতা ছিল।

বক্তব্যের এ পর্যায়ে উপস্থিত নেতাদের আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব খুঁজতে বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আজকে ৩৫ বছর পেরিয়ে ৩৬ বছরে পা দিলাম এই আওয়ামী লীগে। এত লম্বা সময় কেউ কখনো দায়িত্বে থাকে না। আমার মনে হয় আমাদেরও এখন নতুন নেতৃত্ব খোঁজা উচিত ভবিষ্যতের জন্য। তখন সমস্বরে ‘না না, যতদিন বেঁচে আছেন আমরা আপনাকে চাই’ বলে ওঠেন নেতাকর্মীরা।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে গণভবনের ব্যাংকোয়েট হলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মতিয়া চৌধুরী, ওবায়দুল কাদের, মাহবুব-উল আলম হানিফ, আব্দুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আমিনুল ইসলাম, এসএম কামাল হোসেন প্রমুখ ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রীকে। এ ছাড়া যুবলীগের পক্ষ থেকে সংগঠনের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ, ছাত্রলীগের পক্ষে সাইফুর রহমান সোহাগ, এসএম জাকির হোসাইন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের পক্ষে মোল্লা মো. আবু কাওছার, পংকজ দেবনাথ, যুব মহিলা লীগের পক্ষে নাজমা আক্তারসহ আওয়ামী লীগের সব সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের শীর্ষ নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
সুত্র

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মে, ২০১৭ সকাল ১০:৫৭

MAD2017 বলেছেন: তালপাতারসেপাই ভাই আপনার লেখাটি ভালো লেগেছে, আপনার লেখাটি পড়ে কয়েকটি প্রশ্ন মনের মাঝে উঁকি দিচ্ছে,

১. কে জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান করে? ঃ মোশতাক
২. কে এই মোশতাক? ঃ আওয়ামীলীগের নেতা ও মন্ত্রী
৩. সে সময়ে আর কে সেনা প্রধানের জন্য যোগ্য প্রার্থী ছিলেন?
৪. জিয়াউর রহমান সত্যই যদি কিছু করে থাকে তবে তিনি কেন রাস্ট্রপতি না হয়ে মোশতাককে করলেন?
৫. মানুষ কার সঙ্গে ব্যাক্তিগত সমস্যা শেয়ার করেন?
৬. জিয়াউর রহমানের সাথে যদি বঙ্গবন্ধুর ভালো সম্পর্ক নাই থাকলো তবে তিনি কেন তার সমস্যা তার সঙ্গে শেয়ার করতেন?
৭. বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কোন সরকারের আমলে নিরাপদে দেশে ফিরে আসেন, সেই সময়টিকেই কেন তিনি নিরাপদ মনে করলেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.