নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্ব নেতৃত্বের সামনে শান্তির ৪ প্রস্তাব শেখ হাসিনার

২২ শে মে, ২০১৭ সকাল ৮:৫২


বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের সামনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তুলে ধরলেন বিশ্বে শান্তি স্থাপনে তার চারটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব। সেখানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্টে্রর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ বিশ্বের কয়েক ডজন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান। তাদের সামনে শেখ হাসিনা বললেন সন্ত্রাসীদের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে হবে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর জন্য অর্থায়ন বন্ধ করতে হবে, মুসলিম উম্মাহর বিভক্তি দূর করতে হবে আর সংলাপের মধ্য দিয়ে আসবে বিশ্বশান্তি।

অনুষ্ঠানটি ছিল আরব-ইসলামিক-আমেরিকান সম্মেলন। যার আয়োজনে সৌদি আরব। আর সে অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য সোদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ বিশেষ আমন্ত্রণ জানিয়ে এনেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিশ্ব ফোরামে বিশ্ব নেতার মতোই এসব প্রস্তাব তুলে ধরলেন শেখ হাসিনা।

কিং আবদুল আজিজ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে এই শীর্ষ সম্মলনে শেখ হাসিনা জানালেন, আরব-ইসলামিক-আমেরিকান সম্মেলনে সবার সাথে যোগ দিতে পেরে তিনি আনন্দিত। বললেন, কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি মহামান্য বাদশাহ সালমানকে, এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি কর্মসূচিতে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য।

রিয়াদে যে সন্ত্রাস-বিরোধী ইসলামিক সেন্টার স্থাপনের সিদ্ধান্ত বাদশাহ সালমান নিয়েছেন তার জন্যও তাকে ধন্যবাদ জানালেন শেখ হাসিনা। বললেন, এই সেন্টারের প্রতিষ্টাতা সদস্য দেশ হতে পেরে আমরা আনন্দিত।

মূল বক্তৃতা শেখ হাসিনা শুরু করেন সন্ত্রাসবাদ আর সহিংস মৌলবাদ প্রসঙ্গ দিয়ে। তিনি বলেন এই সন্ত্রাস আর জঙ্গিবাদ আজ বিশ্বশান্তি ও উন্নয়নের পথেই কেবল হুমকি বয়ে আনছে না, মানব সভ্যতাকেই বিপর্যস্ত করে তুলছে। এর বিস্তৃতির কুফল থেকে বিশ্বের কোনো দেশই রেহাই পাবেনা, কোন ধর্ম কিংবা কোন মতের মানুষই এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচতে পারবে না। এই চরম সত্য উপলব্দি থেকে বাংলাদেশ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধ জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে। আমাদের সীমারেখা কিংবা আমাদের সম্পদ কোনও সন্ত্রাসের কর্মকাণ্ডে যাতে কেউ ব্যবহার করতে না পারে সে ব্যাপারে আমরা দৃঢ় অবস্থানে রয়েছি।

আমাদের কাছে সন্ত্রাসীর আলাদা কোনও নাম নেই, যে সন্ত্রাসী সে সন্ত্রাসীই। ওদের কোনও ধর্ম নেই, নেই কোনো মত কিংবা জাতি, বিশ্ব ফোরামে এই দৃঢ় উচ্চারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, সহিংসতা, সন্ত্রাস আর হত্যার সমর্থন এই ধর্ম করে না। ধর্মের নামে কোনও ধরনের সহিংস মৌলবাদ আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

বিশ্ব ফোরামকে জানিয়ে দিলেন সন্ত্রাস মোকাবেলায় তার সরকারের অবস্থান ও কাজগুলোর কথা। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণভাবে বেড়ে ওঠা কিছু সহিংস মৌলবাদী শক্তিকে আমরা কার্যকরভাবে মোকাবেলা করছি। কিছু সংখ্যক সন্ত্রাসবাদী দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই অপশক্তিগুলো দেশের ভেতরেই কিছু স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর সমর্থন পেয়ে আসছিলো, যা ধীরে ধীরে দমন করা হচ্ছে।

বিশ্ব নেত্বত্বকে শেখ হাসিনা আরও জানান, এই অপতৎপরতা দমনে বহুমুখী কৌশল নিয়েছে বাংলাদেশ। আমাদের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সন্ত্রাস দমনে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে কার্যকর করে তোলা হয়েছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মাঝে জনমত গড়ে তোলা হচ্ছে।

আমি ব্যক্তিগতভাবে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে বৈঠক করে, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করছি, বিশেষ করে জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, ছাত্র, মসজিদের ইমামদের সঙ্গে কথা বলছি, যাতে তাদের মধ্য সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মতামত গড়ে তোলা যায়, বলেন শেখ হাসিনা।

সন্ত্রাস ও সহিংস মৌলবাদীতার উত্থানে আজ শরণার্থী সমস্যা প্রকট হয়ে উঠছে। এর কার্যকর সমাধান প্রয়োজন। এসময় আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে শেখ হাসিনা বলেন, তিন বছরের শিশু আইলানকে সমুদ্র তীরে মৃত পরে থাকার দৃশ্য কিংবা আলেপ্পোয় রক্তমাখা নিস্তব্ধ শিশু ওমরান আমাদের বিবেককে নাড়া দিয়ে গেছে। একজন মা হিসেবে বিশ্বের যেখানেই ঘটুক, এমন দৃশ্য আমি সহ্য করতে পারি না।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, একজন উদ্বাস্তুর কি বেদনা বা যন্ত্রণা তা আমি ভালো করেই বুঝি কিংবা জানি, কারণ আমি নিজেও একদিন উদ্বাস্তু ছিলাম। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যরা ঢাকা থেকে বিতাড়িত হয়েছিলাম। আর ১৯৭৫ সালে আমার পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যখন ১৯৭৫ সালে হত্যা করা হলো, পরিবারের আরো ১৮ সদস্য সহ, তখন আমি আর আমার ছোট বোনকে ছয় বছর এমন শরণার্থীর জীবন যাপন করতে হয়েছে। সুতরাং শরণার্থীর বেদনা আমার চেয়ে কেই ভালো বুঝতে পারবে? বিশ্ব ফোরামে এভাবেই শরণার্থী সঙ্কটের গভীরতম আত্ম উপলব্দির কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

বিশ্ব নেতৃত্ব আপনারা শুনুন, ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর দীর্ঘ ভোগান্তি আর অবহেলা আজ তরুণ প্রজন্মের কাছে এক অবিচার বলেই প্রতীয়মান। সুতরাং ফিলিস্তিনকে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে, বলেন শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেন যুদ্ধ বিদ্ধস্ত ইরাক ও সিরিয়ার কথা। দেশদুটি আজ সন্ত্রাসীদের প্রধানতম বিচরণভূমিতে পরিণত হয়েছে, সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। আসুন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর মার্শাল প্ল্যানকে সামনে রেখে আমরা সবাই এই দেশগুলোকে পুনর্গঠিত হতে সাহায্য করি।

আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আন্তর্জাতিক কোনও সঙ্কট নিরসনে যুদ্ধ কখনোই সমাধান দিতে পারে নি। বরং যুদ্ধ সঙ্কটগুলোকে গভীরতর করে তুলেছে। আমাদের এখন দ্বন্দ্বেলিপ্ত শক্তিগুলোর সঙ্গে বেশি বেশি সংলাপের কথা বলতে হবে, আর সে পথ ধরেই একটি শান্তিপূর্ণ, স্থায়ী সমাধান আমরা দেখতে পাবো।

সবশেষে আমি গোটা কয় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব রাখছি-

প্রথমত, আমাদের অবশ্যই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর কাছে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে হবে। দ্বীতিয়ত সন্ত্রাসী ও তাদের অঙ্গ সংগঠনগুলোর প্রতি অর্থ যোগান বন্ধ করতে হবে। তৃতীয়ত, ইসলামী উম্মাহর মধ্যে বিভক্তি থাকতে পারবে না আর চতূর্থত, সংলাপের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সঙ্কটগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ বের করতে হবে যাতে সকল পক্ষই তাদের নিজ নিজ সাফল্যের দিকটি নিশ্চিত করতে পারে।

আরও একবার আমি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
সুত্র

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মে, ২০১৭ সকাল ৯:২৭

নাদিম আহসান তুহিন বলেছেন: আপনার আগে পরে সকল পোস্ট ১৫-২০ বার পঠিত। আর আপনার টা মাত্র ৫মিনিটেই ২০০+ পঠিত। বাহ, কি নিদারূন রিফ্রেশমেন্ট। বসে বসে রিফ্রেশ করে সর্বাধিক পঠিত হিসিবে আলোচিত ব্লগে আসার ইচ্ছে???

২| ২২ শে মে, ২০১৭ রাত ৮:৪৭

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: প্রস্তাবগুলো কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সেগুলো নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে।

৩| ২২ শে মে, ২০১৭ রাত ১০:৫৫

বিলুনী বলেছেন: পোষ্ট প্রসব করে পোষ্টে ফিরে না আসা এটা দিয়ে কি বুঝানো হচ্চে !!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.