নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভ্যাট আইন আমজনতা ও সরকারের ক্ষতি করত

০২ রা জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৫৯


ভ্যাট আইন-২০১২ বলবৎ দুই বছরের জন্য স্থগিত করার সিদ্ধান্তের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই। এ আইন বাংলাদেশের অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। আইনটি চূড়ান্ত করার প্রস্তুতি পর্যায়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হয়েছে। এ সময়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা যেসব যুক্তির সঙ্গে একমত হয়েছেন, পরে দেখেছি সভার কার্যবিরণীতে তার স্থান হয়নি। এ কারণে আমাদের মনে হয়েছে, রাজস্ব বোর্ড যেনতেন প্রকারে আইনটি কার্যকর করতে চায়। আমরা আলোচনার সময় সবার জন্য ১৫ শতাংশ নয়, বরং বিভিন্ন হার চালুর কথা বলেছি। যেমন, দামি সিগারেট কিংবা মদ ও মাদক জাতীয় পণ্য। এর হার ১৫ শতাংশ না হয়ে ২৫ শতাংশ হলে ক্ষতি কী? বাংলাদেশে ২০০ টাকায় এক প্যাকেট বেনসন সিগারেট পাওয়া যায়। অনেক দেশে এর দাম ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। তাদের সুবিধার জন্যই কি এ আইন? সোনারগাঁও বা র‌্যাডিসন হোটেলে খেতে হলে যে হারে ভ্যাট দিতে হবে; সাধারণ মানের হোটেলেও কেন একই হার হবে? এতদিন আমরা রডের জন্য টনপ্রতি ৮০০ টাকা কর দিয়েছি। নতুন আইনে এর পরিমাণ দাঁড়াত ৯ হাজার টাকা। স্বর্ণালঙ্কারের জন্য কর ছিল ৪ শতাংশ। নতুন আইনে প্রতি ভরির জন্য অতিরিক্ত দিতে হতো ৯ হাজার টাকা। এ আইন যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করত, তা সরকার কীভাবে সামাল দিত? বিদ্যমান আইনে ব্যবসায়ীরা অগ্রিম ভ্যাট পরিশোধ করে থাকেন। আমাদের নিজেদের স্বার্থেই এ অর্থ আদায়ের তাগিদ থাকত। নতুন আইনে ভোক্তার কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করে ৪৫ দিনের মধ্যে রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে হিসাব চূড়ান্ত করে তা পরিশোধ করার কথা। এতে বহুজাতিক কোম্পানি ও বড় ব্যবসায়ীদের সুবিধা। কিন্তু সমস্যা ছোট ও মাঝারি হাজার হাজার প্রতিষ্ঠানের। এভাবে রাজস্ব বোর্ডের ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্য পূরণ হওয়ার কথা নয়। আমাদের দেশে এমন সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি যে, স্বেচ্ছায় সততার সঙ্গে সরকারের ভাণ্ডারে ভ্যাট ও অন্যান্য কর পরিশোধ করা হবে। সরকারেরও সমস্যা আছে। আমার কাছ থেকে যদি রাজস্ব বোর্ড কোনো কারণে ১০০ টাকা বেশি কর আদায় করে, তাহলে বছর শেষে চেকের মাধ্যমে সে অর্থ বাসায় পেঁৗছে দেওয়ার কথা। বাস্তবে এ অর্থ ফেরত পাওয়া যে কত কঠিন, তার ভুক্তভোগী লাখ লাখ মানুষ। ভ্যাট আইন অনেক বড়, কিন্তু বিধিমালা ছোট। ব্যবসায়ীদের সমস্যা দেখা দিলে অর্থ, বাণিজ্য, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান পাওয়া যায়। কোনোটির তাৎক্ষণিক সমাধান মেলে। কখনও বা আইনের পরিবর্তন প্রয়োজন পড়ে। বাংলাদেশ কেবল স্বল্পোন্নত দেশের গণ্ডি অতিক্রম করছে। ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের বেশিরভাগ প্রথম প্রজন্মের। আমাদের অনেক সমস্যার জন্য পদে পদে সরকারের দ্বারস্থ হতে হয়। অনেক সমস্যার দ্রুত সমাধান মেলে। কিন্তু ভ্যাট আইন-২০১২ বলবৎ হলে ছোটখাটো সমস্যারও সমাধান পাওয়া কঠিন হতো- এমনই মত বেশিরভাগ ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তার। এ আইনকে বলা হয়েছে, আধুুনিক প্রযুক্তিনির্ভর। আইন বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণের জন্য অর্থ বরাদ্দ ছিল। রাজস্ব বোর্ড প্রচার করছে, তারা ২ লাখ লোককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। প্রশিক্ষণ দিলে তো আমাদের জানার কথা। বাস্তবে ২০০ লোককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কি-না সন্দেহ। যে কোনো যুদ্ধে যেতে অস্ত্র প্রয়োজন। ভ্যাট আইন বলবৎ করতে হলে প্রয়োজন লাখ লাখ ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্টার। এ মেশিন সরবরাহের কথা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের। তারা কতটা মেশিন আমদানি করেছে? ১ জুলাই তারা ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু কোথাও কি নতুন করে এ মেশিন তারা সরবরাহ করেছে? এখন যদি কেউ বলেন, অর্থনীতিতে যে অগ্রগতির ধারা তাতে বিঘ্ন সৃষ্টির একটি প্রচ্ছন্ন অপচেষ্টা ছিল, সেটা কি অস্বীকার করা যাবে? নতুন আইনে বিভিন্ন পর্যায়ে রেয়াতের সুবিধার কথা বলা হয়েছে। আমাদের দেশে হাজার হাজার উদ্যোক্তা স্থানীয় বাজার থেকে কাঁচামাল ক্রয় করে পণ্য উৎপাদন করে। কিন্তু প্রস্তাবিত আইনে এ রেয়াত নেওয়ার সুযোগ কতটা? এ সুবিধা স্পষ্ট না হওয়ায় বিপুল সংখ্যক পণ্যের দাম বাজারে বেড়ে যেত। এখন ব্যবসা প্রবল প্রতিযোগিতাপূর্ণ। দেশের বাজারেই আমরা বিদেশি পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করি। ভ্যাট আইন চালু হলে এ প্রতিযোগিতা আরও বেড়ে যেত। আমরা বারবার দেশীয় শিল্পের জন্য সুরক্ষা চেয়েছি। অন্যদিকে সরকারের ভেতর থেকে কেউ কেউ বলেন, আর কতকাল সুরক্ষা দেওয়া হবে? অথচ আমাদের পাশেই দুটি বড় অর্থনীতির দেশ চীন ও ভারত। তারা কিন্তু ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সংরক্ষণ সুবিধা প্রদান করে থাকে। তাদের দেশ থেকে বাংলাদেশে আসা পণ্যের সঙ্গে আমাদের উৎপাদিত পণ্যের প্রতিযোগিতা হয় বাংলাদেশেই। টিকে থাকা যে কত কঠিন, সেটা প্রতি মুহূর্তে উপলব্ধি করি আমরা। ভালোভাবে প্রস্তুতি না নিয়ে ভ্যাট আইন চালু হলে অর্থনীতির তেজিভাব বজায় রাখা কঠিন হতো- সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারি। এতে ভোক্তাদের সমস্যা বাড়ত, রাজস্ব আদায় কমে যেত। প্রধানমন্ত্রী এ বাস্তবতা উপলব্ধি করেছেন। মানুষের মধ্যে কম জনেরই ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় থাকে, যা দিয়ে জটিল ও দুরূহ সমস্যার সমাধান করা যায়। তিনি এটা করতে পেরেছেন। তাৎক্ষণিক সমাধান দিয়ে অর্থনীতিকে বিপর্যয় থেকে বাঁচিয়েছেন।
সুত্র

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: আবারও একটা ভুল হয়ে গেছে!!
গতকাল রাতে একটা লেখা পোষ্ট করেছিলাম। তারপর সকালে আরেকটা লেখা পোষ্ট করেছি। কিন্তু আমি জানতাম না- আমার আরেকটা পোষ্ট প্রথম পাতায় আছে। (যেটা রাতে পোষ্পট করেছিলাম) আমি ভেবে ছিলাম সামুতে তো একটা লেখা প্রথম পাতায় বেশিক্ষন থাকে না। রাতের পোষ্ট তো আর সকাল পর্যন্ত থাকবে না।
সামু মেইল দিয়েছে। এবং আমাকে ''জেনারেল'' করেছে। আমি মেইলে তাদের জানিয়েছি- এটা ইচ্ছাকৃত ভুল না। খুব করে স্যরি বলেছি।

এখন আমি কি করবো?

২| ০২ রা জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৪

মেঘনা পাড়ের ছেলে বলেছেন: আমজনতার ক্ষতি হতোনা, তবে সরকারের মানে আওয়ামিলীগের ব্যাপক ক্ষতি হতো। আপনি এই কথাটা প্রাইমমিনিস্টার ডিসিশন দেবার আগে বলতে পারলেন না ?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.