নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি লেখক নই, মাঝে মাঝে নিজের মনের ভাবনাগুলো লিখতে ভাল লাগে। যা মনে আসে তাই লিখি,নিজের ভাললাগার জন্য লিখি। বর্তমানের এই ভাবনাগুলোর সাথে ভবিষ্যতের আমাকে মেলানোর জন্যই এই টুকটাক লেখালেখি।

তারেক_মাহমুদ

পৃথিবীর সব ভাল টিকে থাকুক শেষ দিন পর্যন্ত

তারেক_মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্মৃতি

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:২৫



হল ও মেসের বৈচিত্র্যময় জীবন:
আমি প্রথম সৈকতের সাথে অর্কিড ছাত্রাবাস এ উঠলাম। হলে সিট না পাওয়ায় মেসে উঠতে হয়েছিল। অর্কিড রাজশাহীর সবচেয়ে ভাল মেসগুলির একটি (বর্তমানে এটি মেয়েদের মেস)।মেসটির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এদের নিজস্ব বাস আছে রাবিতে যাতায়তের জন্য।হঠাৎ একদিন সৈকত কিছু লোকাল ছেলের কাছে মার খেয়েছিল। কি কারনে তা আজও আমার অজানা। সৈকতকে মেরে ওর শখের মোবাইল ফোনটা ছিনিয়ে নেয়( তখন মোবাইল ফোন খুব দামী জিনিস ছিল) এরপর সৈকত মেস ছেড়ে ওর এক আত্মীয়ের বাসায় চলে যায়। আমি তখন একা হয়ে পড়ি। আমিও বাধ্য হয়ে অর্কিড ছেড়ে দেই।

এরপর আমি কিছুদিন এর জন্য বাবুর কাছে মেহেরচন্ডীতে বরেন্দ্র ছাত্রাবাস এ উঠি। এখানে বাবু ছাড়াও চারুকলার ডাবলু ভাই ছিলেন যিনি খুব সুন্দর ছবি আঁকতেন। যিনি আমার একটা পোট্রেট করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেননি। আমার ডিপার্টমেন্ট এর সৈকত ভাই থাকতেন আমার পাশের রুমে। ওনার গার্লফেন্ড(নামটা বলবো না)হল থেকে খুব সুন্দর সুন্দর তরকারি রান্না করে দিতো, মাঝে মাঝে আমি কিছুটা ভাগ পেতাম।

কয়েক মাস পর বরেন্দ্র ছাত্রাবাস ছেড়ে আমি রাসেল ভাই এর সহায়তায় জিয়া হলে উঠে পড়ি। জিয়া হলের ৩০২ নম্বর রুমে আমার জীবনের একটি সুখের অধ্যায় কেটেছে। আমরা চারজন থাকতাম এই রুমে। এদের মধ্যে দুইজন খেলোয়াড়, সাঈদ সাতারু, এনামুল এথলেট , দেলোয়ার ছিল খুবই পড়ুয়া,সে আকাশ পাতাল ফাটিয়ে জোরে জোরে পড়াশুনা করতো। যার জন্য আমাদের কাছে খুব বকা খেতো। তবুও তার পড়ার স্পিড কমতো না।সাঈদ এর কথা একটু বলি আমার জীবনে যত রুমমেট পেয়েছি তার মধ্যে সাঈদই আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়, একবার আমার পায়ে একটা বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, আমি হাটতে পারছিলাম না,তখন ও আমাকে যেভাবে সেবা করেছে,ডাক্তার দেখিয়েছে সেটা আমার আপন ভাইও করতো কিনা সন্দেহ। ভাল থাক সাঈদ ভাই আমার।

হলের খাবার খুবই নিন্মমানের ছিল। হলের ডাইনিং এর ডাল কোনদিনই শেষ হতো না,ডাইনিং এ সবসময় গরমপানি রেডি থাকতো,গরমপানিতে একটু হলুদ গুলে দিলেই তৈরি হয়ে যেতো এক গামলা গরম ডাল। ভাতের ভিতর প্রায় মাছি পাওয়া যেতো। একবার শেরেবাংলা হলে নাকি ডালের মধ্যে ইদুর পাওয়া গিয়েছিলো। মাদারবক্স হলের ডাইনিং এ শেয়ালের মাথা পাওয়া গিয়েছিল। হলের খাবারের মান প্রসংগে একটা গল্প মনে পড়লো:

একদিন তিনটি মাছি এক জায়গায় বসে গল্প করছে, একটা মোটা মাছি, একটা মাঝারি মাছি, আর একটা শুটকো মাছি। মাঝারি এবং শুটকো মাছি মোটা মাছিকে জিজ্ঞেস করলো তুই এত মোটা কেন? মোটা মাছি বললো আমি ফাইভ স্টার হোটেলে থাকি যখনি ক্ষুধা লাগে তখনি স্যুপের বাটিতে ডুব দেই, ওরা তখন সব স্যুপ ফেলে দেয় আর আমি খেয়ে নেই তাই এত মোটা, মাঝারি মাছি বললো আমি নরমাল হোটেল থাকি ক্ষুধা লাগলে তরকারীর বাটিতে ডুব দেই তখন ওরা একটু তরকারিসহ আমাকে ফেলে দেয়,তখন আমি ওই তরকারিটুকু খেয়ে নেই। শুটকো মাছি বললো আমি রাবির ছেলেদের হলে ডাউলের মধ্যে ডুব দেই, ওরা আমাকে চুষে ডালটুকু খেয়ে ফেলে দেয় তাই আমি শুকনো।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৩

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:

আপনার মেসের ইতিহাস জেনে ভাল লাগল!

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৪০

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ ভ্রমরের ডানা ভাইয়া/আপু কষ্ট করে পড়ার জন্য।

২| ২৬ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৫১

খায়রুল আহসান বলেছেন: মেস জীবনের স্মৃতিচারণ ভাল লাগলো। বেশী ভাল লাগলো সাঈদের বন্ধু বাৎসল্য এবং সেবা পরায়ন মনোবৃত্তির কথা জেনে।

২৬ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৩

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: অনেকদিন পর আমার পোষ্টে আপনাকে পেলাম স্যার।অনেক ভালবাসা নিবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.