নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি লেখক নই, মাঝে মাঝে নিজের মনের ভাবনাগুলো লিখতে ভাল লাগে। যা মনে আসে তাই লিখি,নিজের ভাললাগার জন্য লিখি। বর্তমানের এই ভাবনাগুলোর সাথে ভবিষ্যতের আমাকে মেলানোর জন্যই এই টুকটাক লেখালেখি।

তারেক_মাহমুদ

পৃথিবীর সব ভাল টিকে থাকুক শেষ দিন পর্যন্ত

তারেক_মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হারানো ভালবাসা (২য় ও শেষ পর্ব)

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৫৪

শুভর পড়াশুনা বেশ ভালই চলছে, শুভ বরাবরই ভাল ছাত্র হিসাবে পরিচিত। কিন্তু পড়ার মাঝে মাঝে সুপ্তি নামক পোকাটা কুটুস করে কামড় দেয়। শুভ পড়ার মধ্যে আনমনা হয়ে যায়। মাঝেমাঝে জানালা দিয়ে উকি দেয় সুপ্তিকে দেখার জন্য। সুপ্তি পড়াশুনায় সিরিয়াস সুপ্তির ঘরের জানালা সবসময়ই বন্দ।

একসময় সুপ্তির এসএসসি শুভর ইন্টারমিডিয়েট পরিক্ষায় শেষ হয়। দুজন তখন মুক্ত বিহঙ্গ। সুপ্তির ঘরের জানালা খুলে যায় শুভর জন্য। ভালবাসাটা মোবাইল যুগের নয় তাই কথা হয় না তাদের মধ্যে, শুধুই একে অপরের দিকে জানালা দিকে আপলক তাকিয়ে থাকা। সুপ্তি মাঝেমধ্যে জিহবা বের করে ভেংচি কাটে। সুপ্তি যা করে সেটাই ভাললাগে শুভর।

একদিন সন্ধ্যায় সুপ্তি ইশারা করে শুভকে নিচে নামার জন্য। শুভ এইদিনটির জন্য অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করে ছিল। শুভ নিচে নেমে আসে, সুপ্তিও নিচে নেমে আসে তবে একা নয় সাথে বান্ধবী রিমা। সুপ্তি রিমাকে আনার কারণ ব্যাখ্যা করে এভাবে, আম্মু সন্ধ্যে বেলায় একা বাইরে বের হতে দিতো না, তাই রিমাদের বাসায় যাওয়ার নাম করে ওকে নিয়ে আসলাম। সেদিন রিমা থাকার কারনে ফরমাল কথাবার্তাই বেশি হয় যেমন পরিক্ষা কেমন হল? ভর্তি পরিক্ষার প্রস্তুতি কেমন চলছে ইত্যাদি।

একদিন সকালে শুভ সুপ্তিদের জানালায় তাকিয়ে দেখে সুপ্তি সাজগোছ করে বসে আছে,শুভকে দেখেই নিচে নিচে নামার জন্য ইশারা করে। শুভ তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিজের সাইকেলটা সঙ্গে নিয়ে বের হয়। সাথে নেয় আজাদ প্রোডাক্ট থেকে কেনা একটি হার্ট সেপ আকা কার্ড, আর্চিস থেকে কেনা দুটি হার্ট সেপ আকা একটি মগ। নিচে নেমে দেখে সুপ্তি অনেক দূরে এগিয়ে গেছে শুভ সাইকেল নিয়ে তাকে অনুসরণ করে। সুপ্তি সাইকেল দেখে বিরক্ত হয়,
-এটা আবার এনেছেন কেন?
-একটু দাড়ান সামনে বন্ধুর বাসায় সাইকেলটা রেখে আসি। বলেই শুভ দ্রুত সাইকেল চালিয়ে বন্ধুর বাসায় সাইকেলটা রেখে দশ মিনিট পর ফিরে আসে। শুভ ফিরতেই সুপ্তি বিরক্ত হয়।
-একটা মেয়েকে এতসময় একা একা রাস্তায় দাড় করিয়ে রাখা কোন ধরনের ভদ্রতা? শুভ দু:খ প্রকাশ করে, সুপ্তি বলে আচ্ছা ঠিক আছে এখন কোথায় যাওয়া যায়?
মিরপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনের উদ্দেশ্যে ওরা একটি বেবিট্যাক্সি ভাড়া করে। এই মুহুর্তটা শুভর জীবনে অন্যতম একটি আনন্দের মুহুর্ত। চলন্ত বেবিট্যাক্সিতে শুধুই সুপ্তি আর শুভ।

একসময় ওরা বোটানিক্যাল গার্ডেনে পৌছে যায়। শুভ প্রথমে কার্ডটি সুপ্তিকে দেয় যাতে লেখা, ভালবাসি তোমায়।
-আপনি এখনো আমাকে আপনি আপনি করে কথা বলেন আর কার্ডে লিখেছেন 'ভালবাসি তোমায়'। আপনা আপনি আর কতদিন চলবে মশাই?
-আপনি যতদিন চালাবেন শুভ বলে।
-আবার আপনি? সুপ্তি রেগে যায়।
-ঠিক আছে আর আপনি নয় শুধু তুমি শুভ বলে।
সুপ্তি শুভর জন্য আনা গানের ক্যাসেট উপহার দেয় যা ছিল তপন চৌধুরীর সেই বিখ্যাত গান, তুমি আমার প্রথম সকাল একাকী বিকেল ক্লান্ত দুপুরবেলা।

এভাবেই বেশ ভালই চলছিল তাদের ভালোবাসার তরী। একসময় দুজনের পরিক্ষার রেজাল্ট বের হয়, সুপ্তি স্টার মার্কস পেলেও শুভর রেজাল্ট আশানুরূপ নয়,ফাস্ট ডিভিশন। বাসায় বাবা মা ভিষন বিরক্ত শুভর উপর। সবাই বলে এই রেজাল্ট দিয়ে ভাল কোথাও ভর্তি হতে পারবি না।

একদিন এক রিকশায় শুভ আর সুপ্তি রেড়াতে বের হয়েছিল। সেদিনই হঠাৎ ভিলেনের মত সামনে হাজির সুপ্তির বাবা। সুপ্তিকে শুভর সাথে এক রিকাশায় দেখে অগ্নিমুর্তি ধারণ করেন সুপ্তির বাবা। সুপ্তিকে রিকশা থেকে নামিয়ে নিয়ে যান। সেদিন বিকেলেই শুভদের বাসায় হাজির সুপ্তির বাবা। শুভর বাবাকে বলেন
-আপনার ছেলেকে সামলান,আমার মেয়ের দিকে আর যেন না তাকায়। শুভর বাবা ভিষন অপমানিত বোধ করেন। এমনিতেই শুভর রেজাল্টে কেউ খুশি নয় তার উপর বাসায় এসে এভাবে অপমান করে যাওয়াটা কেউই ভালভাবে নেয়নি।

এরপর থেকে সুপ্তির ঘরের জানালাটা বন্দ হয়ে যায় শুভর জন্য। কিছুদিন পরেই শুভ দেখে সুপ্তিদের বাসার সব মালামাল একটি ট্রাকে উঠানো হচ্ছে। শুভ চরমভাবে ভেঙ্গে পড়ে, সুপ্তি আর তার মা একটি বেবিট্যাক্সিতে উঠে পড়ে। সেদিনই শুভ সুপ্তির কান্নামাখা মুখটি শেষবারের মত দেখতে পায়।

শুভ প্রথমবার কোন বিশ্ববিদ্যালয় এ চান্স না পেলেও দ্বিতীয়বার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তির সুযোগ পেয়ে যায়। এখন শুভর পড়াশুনা শেষ কিন্তু সুপ্তির জন্য বুকের ভিতর হাহাকারটা রয়েই গেছে। শুভ ভাবে ইস সেদিন যদি মোবাইল ফোন, ফেসবুক থাকতো তাহলে এভাবে হারিয়ে যেতে দিতো না তার ভালবাসার সুপ্তিকে।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:১৫

আটলান্টিক বলেছেন: আহা সুপ্তি.......
এখন তো ফেসবুক আছে।এখন ফেসবুকে খুজলেই হয়।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৫২

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: সময় কি আর কারো জন্য বসে থাকে আটলান্টিক ভাইয়া।

২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: শুভ আর সুপ্তির জন্য শুভ কামনা।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৫৪

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাইয়া, আপনার কমেন্ট এ অনুপ্রেরণা পাই।

৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৪১

সামিয়া বলেছেন: ভালোলাগলো

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৫৭

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: এটা আমার পরম পাওয়া আপু, আপনার জন্য শুভেচ্ছা।

৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:২১

আবু তালেব শেখ বলেছেন: গল্পটা মনে হয় কাল্পনিক নয়? হতে পারে চরিত্রের শুভ আপনি বা অন্য কেউ?

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৩১

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: এমন মনে হল কেন ভাইয়া?

৫| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৩২

জনৈক অচম ভুত বলেছেন: দুঃখজনক। :|

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৭

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: কিশোর প্রেমের পরিনতি এমনি হয় ভুত ভাইয়া।

৬| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:০৮

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: তারেক ভাই আমি অনেক আগে মনে হয় দুতিনটি প্রেমের গল্প লিখেছি।এখন আর প্রেমের গল্প লেখা হয়না।
আপনার গল্পে তেমন গভীরতা নেই তবে উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েদের হয়তো এমন গল্প ভাল লাগতে পারে।
লিখতে থাকুন সামনে আরও ভাল হবে।
আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:২১

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আমি একটি কিশোর প্রেমের গল্প লেখার চেষ্টা করেছি,ধন্যবাদ পড়ার জন্য সোহেল ভাই।

৭| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:২০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: এ বয়সের ভালো লাগা-ভালোবাসার পরিণতি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বোধহয় বিরহপীড়িত হয়। কিছু করার নেই; এসব সামলেই তো এগিয়ে চলে মানুষের জীবন।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:২৫

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া, কিশোর প্রেমের পরিনতি এমনি হয় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই। পড়ার জন্য আবারো ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.