নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি লেখক নই, মাঝে মাঝে নিজের মনের ভাবনাগুলো লিখতে ভাল লাগে। যা মনে আসে তাই লিখি,নিজের ভাললাগার জন্য লিখি। বর্তমানের এই ভাবনাগুলোর সাথে ভবিষ্যতের আমাকে মেলানোর জন্যই এই টুকটাক লেখালেখি।

তারেক_মাহমুদ

পৃথিবীর সব ভাল টিকে থাকুক শেষ দিন পর্যন্ত

তারেক_মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

উপন্যাস রিভিউ : চৌকাঠ

২৪ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:০৫

'চৌকাঠ' এবারের বইমেলার আলোচিত একটি উপন্যাস। গুলতেকিন খান(হুমায়ুন আহম্মেদের প্রথম স্ত্রী) রচিত উপন্যাসটি প্রকাশ করেছে তাম্রলিপি প্রকাশনী।

চৌকাঠ উপন্যাসে দেখানো হয়েছে নোমান চৌধুরী ধনী,দয়ালু এবং নিঃসঙ্গ একজন মানুষ। দুটি ছেলে সায়ান এবং আয়ান দেশের বাইরে থাকেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর নোমান চৌধুরী একা হয়ে পড়েন। উনার দুঃসম্পর্কের আত্মীয় আজিজ সাহেব সংসারে টানাপোড়নের কারণে উনার বাড়িতেই পরিবারসহ আশ্রিত। আজিজ সাহেব একছেলে দুই মেয়ে, আজিজ সাহেব মানুষ হিসেবে মোটেই সুবিধের নন,একটা ছোট চাকুরী করতেন, টানাপোড়নের সংসার, একসময় ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে আজিজ সাহেবের চাকুরী চলে যায়। এরপর আজিজ সাহেবের ছেলে অয়নের টিউশনির টাকায় তাদের সংসারের খরচ চলে । আজিজ সাহেবের তিনটি ছেলে মেয়েই খুবই মেধাবী।অয়ন বুয়েটের স্টুডেন্ট, দুই মেয়ে নিশি আর মিতুল। নিশির পড়াশুনায় খুব বেশি মন নেই, নিশির ধ্যান জ্ঞান নাচ শেখায়। ছোটমেয়ে মিতুলও পড়াশুনায় খুব ভাল। নোমান চৌধুরী সাহেব আজিজ সাহেবের এই তিনটি ছেলেমেয়েকে খুবই ভালবাসেন। আজিজ সাহেবের স্ত্রী নাজমা বেগম ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার ব্যাপারে খুবই সিরিয়াস। তিনি চান ছেলে অয়ন ইনজিনিয়ার হয়ে সংসারের হাল ধরুক। অয়ন পড়াশুনার ভাল হলেও অয়নের ইচ্ছা লেখক হওয়ার। নোমান চৌধুরী সাহেব অয়নকে লেখক হওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ যোগাতেন, এমনকি নিজের টাকায়ও অয়নকে বই বের করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অয়ন সোনাদাদুর(নোমান চৌধুরী) টাকায় বই বের করতে রাজী হয়নি। অয়ন বাংলাবাজারে গিয়ে প্রকাশক খুঁজতে থাকে।

উপন্যাসের আর একটি চরিত্র হচ্ছে রহমত মিয়া। রহমত মিয়া নোমান চৌধুরীর খুবই বিশ্বস্ত ভৃত্য। নোমান সাহেবের ছেলেমেয়েরা দেশের বাইরে থাকায় রহমত মিয়াই চৌধুরী নোমান চৌধুরী সাহেবের দেখাশুনা করে । রহমত মিয়ার বাবা মুনসুর চোরা, একবার চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে, জেলের ভিতরেই কিছু খুনিদের হাতে নিহত হয়। রহমতের মা ছেলেকে চোরের ছেলে অপবাদ থেকে বাঁচাবার জন্য বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ নানার বাড়ি নিয়ে আসেন। রহমতের মা তার নয় বছর বয়সে মারা যায়। এরপর রহমত বিভিন্ন বাড়ি কাজ করে নিজের পেট চালাতে থাকে। একসময় রহমত জরিনা সুন্দরীর প্রেমে পড়ে যায়। রহমত জরিনা সুন্দরীর বাবার কাছে জরিনাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। জরিনার বাবা রহমতকে বিশেষ স্নেহ করতেন তাই রহমতের প্রস্তাব মেনে নেয়। রহমতকে একটি দোকানও করে দেন তিনি। বেশ ভালই চলছিল রহমত এবং জরিনার সংসার,তাদের সংসারে মতি মিয়া নামের একটি ছেলের জন্ম হয়।কিন্তু দেড় বছরের মতিকে রেখে তার মা জরিনা চেয়ারম্যানের ছেলের সাথে পালিয়ে যায়।এরপর থেকে বাপ ছেলে মিলেই সেই দোকান চালাতো,রহমত মিয়া আর বিয়ে করেনি ছেলের কথা ভেবে। ছেলে একটু বড় হলে ছেলেকে দোকান বুঝিয়ে দিয়ে রহমত মিয়া চলে আসেন নোমান চৌধুরী সাহেবের দেখাশোনার কাজে।

ওদিকে আজিজ সাহেবের ছেলে অয়ন বুয়েটের ক্লাশ বাদ দিয়ে হন্যে হয়ে তার উপন্যাসের প্রকাশক খুঁজতে থাকে। কিন্তু কেউই নতুন লেখকের উপন্যাস প্রকাশ করতে রাজী নয়। অয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিশিষ্ট উপন্যাসিক মনসুর চৌধুরীর কাছে তার উপন্যাসের ফটোকপি পাঠায়। মনসুর চৌধুরী সাহেব অয়নের উপন্যাস পড়ে মুগ্ধ হন, এবং একজন প্রকাশককে সুপারিশ করেন নতুন লেখক অয়নের বই প্রকাশের জন্য।

অয়ন একসময় বুঝতে পারে তার জন্য লেখক হতে চাওয়ার বিলাসিতা মানায় না। অয়ন ক্লাসে যায় কিন্তু ততদিনে অনেক দেরী হয়ে গেছে তার সহপাঠীদের চেয়ে সে অনেক পিছিয়ে পড়েছে। অনেকদিনের অনিয়মের ফলে অয়ন জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে । ওদিকে বইমেলায় অয়নের বই খুবই ভাল চলছিল।

বইটির শেষ অংশে রহমত মিয়া নোমান চৌধুরী কাছ থেকে জানতে পারেন মুনসুর চোরা নামে এক ব্যক্তি নোমান চৌধুরীর শ্বশুর বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে। নোমান চৌধুরীর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে জেলে দিয়েছিল তার পরের কাহিনী নোমান চৌধুরী জানেন না। তখন রহমত বুঝতে পারে নোমান চৌধুরীর বর্ণিত মনসুর চোরাই তার বাবা। এই বিষয় জানার পর রহমত মিয়া নিজেই নিজের বুকে ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যা করে।

উপন্যাসের কাহিনী এখানেই শেষ। হুমায়ুন আহম্মেদের স্ত্রীর কাছ থেকে যেমন আশা করেছিলাম উপন্যাসটি ততটাই ভাল লেগেছে আমার কাছে।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:১৯

জাহিদ অনিক বলেছেন:

যাক ! আমি মনে মনে ভাবছিলাম এই উপন্যাসটির কথা।। আপনার রিভিউ পেয়ে ভালো লাগলো।
কাহিনী বোঝা গেল।

পাঠক'কে ধরে রাখতে পারবে এই বই ?

২৪ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৩৯

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: কাহিনীটি আমার কাছে ভালই লেগেছে। হুমায়ুন আহম্মেদের স্ত্রী বলে কথা,পরশ পাথরের স্পর্শে যেখানে লোহা সোনা হয়, সেখানে পাঠক ধরে রাখতে না পারার কোন কারণ নেই।

২| ২৪ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: উপন্যাসটি হাতের কাছে আছে। এখনও পড়িনি।
আপনার রিভিউ পড়ে বেশ খানিকটা ধারনা পেলাম।

২৫ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৭:৫৮

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: পড়ে ফেলেন আশাকরি ভাল লাগবে, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ রাজীব ভাই।

৩| ২৪ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৪৪

জাহিদ অনিক বলেছেন:


হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী দ্বয়ের কারও লেখাই আমার পড়া নেই--

২৫ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৮:০১

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আমারো পড়া হয়নি, এটাই প্রথম, তবে ছেলে নুহাশের একটা লেখা পড়েছিলাম পত্রিকায় আসাধারণ লেখে সে। আবারো মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জাহিদ অনিক ভাই।

৪| ২৪ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৫৮

নূর-ই-হাফসা বলেছেন: গুলতেকিন কে আমার ভালো লাগে । পড়ার ইচ্ছে র ইলো ।
রিভিউ বেশ ভালো লাগলো

২৫ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৮:০৪

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আপনার মত আমারো গুলতেকিন আহম্মেদকে ভাল লাগে সেই ভালোলাগা থেকেই বইটি কেনা। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ হাফসা আপু।

৫| ২৪ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:১৮

আফরিন নাজিয়া বলেছেন: চমৎকার লেখনীতে সুদৃশ্য বইটির রিভিউ পড়ে খুব ভালো লাগলো...গুলতেকিন খানকে আমারো বেশ ভালো লাগে... তবে বানানের দিকে একটুখানি মনোযোগ দিলে আপনার লেখা আরো আকর্ষণীয় হবে... অনবদ্য ভাষায় রিভিউয়ের জন্য ধন্যবাদ...

২৫ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৮:০৮

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপু, একটু তাড়াহুড়ো করেই রিভিউটি পোষ্ট করেছিলাম তাই কিছু ভুল রয়ে গেছে,যেগুলো চোখে পড়েছে সংশোধন করে দিলাম। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ নাজিয়া আপু।

৬| ২৫ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১২:৩০

ধ্রুবক আলো বলেছেন: বইটা এখনও পড়া হয়নি। সংগ্রহে আছে।

২৫ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৮:১০

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: পড়ে ফেলেন, আশাকরি ভালই লাগবে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ধ্রুবক আলো ভাই।

৭| ২৫ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:১৪

কালীদাস বলেছেন: এটা রিভিউ না, এটা পুরাই স্পয়লার ম্যান :( এবং আপনার পোস্টে বইয়ের কাহিনী পুরাটাই জেনে যাওয়ায় আমি এই বইটা পড়ব না।

নেক্সট টাইম যখন লিখবেন; একটা রিভিউয়ে সামারি থাকবে খুবই ব্রিফ (কনটেন্টের ২৫ পার্সেন্টের বেশি কোনভাবেই না) বাকিটা থাকবে ক্রিটিক: আপনার পারসোনাল ভিউ প্লট/ইভেন্টের ভাল/মন্দ দুই দিক থেকেই।

২৫ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:৩০

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: যারা বইটি পড়তে চায় তাদের মজা কিছুটা নষ্ট হবে এটা ঠিক।তবে যারা বইটি পড়তে চায় না কিন্তু কাহিনী জানতে চায় তারা লাভবান হবেন। পরবর্তীতে লেখার সময় আপনার কথাটি মনে থাকবে। মন্তব্য এবং সুপরামর্শের জন্য ধন্যবাদ কালিদাস ভাই।

৮| ২৭ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৫৫

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: তারেকভাই,আপনার রিভিউটি বেশ ভালো হয়েছে।আমারতো মনে হয়েছে আলাদা করে আর উপন্যাসটি পড়ার দরকার হবেনা।
ধন্যবাদ,শুভেচ্ছা অনন্ত।

২৮ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:৪৪

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: এখন বই পড়ার সময় অনেকেই নেই তাদের জন্য পুরো কাহিনীটি তুলে ধরলাম। মন্তব্যের জন্য ভালবাসা পদাতিক ভাইয়া।

৯| ২৭ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৩

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: চমৎকার।
উপন্যাসটি না পড়েই মনে হলো এইমাত্র পড়ে শেষ করলাম।
আমার শুভেচ্ছা নিন।

২৮ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:৪০

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ বরকতউল্লাহ ভাই,মন্তব্যের জন্য ভালবাসা।

১০| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:৪৪

অর্ক বলেছেন: ভালো লাগলো। সিনেমা’র ক্ষেত্রে স্পয়লার অতোটা প্রভাব না ফেললেও, উপন্যাস বা বইয়ের ক্ষেত্রে এটা সাংঘাতিক! এমনকি লেখক বা লেখিকা আইনগত...

যাই হোক আগামীতে সাবধান থাকবেন। গল্প জেনে গেলে আর বইটা কেন পাঠক সংগ্রহ করবে। আপনার বর্ণনা সাবলীল। আরও ভালো হোক। আমার শুভেচ্ছা রাখলাম!

০২ রা এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:৫৮

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ, ৭নং কমেন্টে আপনার উওরটি দিয়ে দিয়েছি, এটাকে স্পয়লার বলা ঠিক হবে না, এত বড় একটা উপন্যাসে আরো অনেক কাহিনী আছে যার বর্ণনা দেওয়া হয়নি, আশাকরি এই রিভিউ পড়ার পর ও বইটি পড়তে খারাপ লাগবে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.