নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি লেখক নই, মাঝে মাঝে নিজের মনের ভাবনাগুলো লিখতে ভাল লাগে। যা মনে আসে তাই লিখি,নিজের ভাললাগার জন্য লিখি। বর্তমানের এই ভাবনাগুলোর সাথে ভবিষ্যতের আমাকে মেলানোর জন্যই এই টুকটাক লেখালেখি।

তারেক_মাহমুদ

পৃথিবীর সব ভাল টিকে থাকুক শেষ দিন পর্যন্ত

তারেক_মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

করিম সাহেবের জীবন চক্র

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৪২

করিম সাহেব সরকারি ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার। আগেকার দিনের ভাষায় ছাপোষা কেরানি। একদিন করিম সাহেবের ঘর আলোকিত হল সুমন নামের তার ফুটফুটে ছেলের জন্মের মধ্যদিয়ে।

পৃথিবীতে জন্মের প্রথম দুই বছর মানুষের চেয়ে অসহায় কোন প্রাণী নেই। সৃষ্টির অন্যান্য প্রাণীরা জন্মের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই উঠে দাড়াতে শেখে। অথচ একজন মানুষকে নিজের পায়ের উপর ভর দিয়ে দাড়াতে দেড় থেকে দুই বছর লেগে যায়। এই দুই বছর করিম সাহেবের স্ত্রীকে কি অমানুষিক পরিশ্রম করতে হয়েছে তা শুধুমাত্র একজন মা ছাড়া পৃথিবীর কেউই উপলব্ধি করতে পারবে না। আর মাতৃ গর্ভের কষ্টের কথা বোঝানো সাধ্য কারই বা আছে। ছেলে বড় হওয়ার সাথে সাথে মা বাবার দায়িত্বও বাড়তে থাকে। সুমনের খাওয়া দাওয়ার খেয়াল রাখা স্কুলে আনা নেওয়া করা আরো কত কি? ছেলের সুশিক্ষার জন্য করিম সাহেব এবং উনার স্ত্রীর চেষ্টার অন্ত নেই ।ছেলেকে ভাল স্কুলে ভর্তি করার জন্য প্রথমেই তিন লাখ টাকা ডোনেশন গুনতে হল। ভাল টিচার বাসায় রেখে পড়ানোর জন্য মাসে ৫ হাজার টাকা গুনতে হয়। নিজের শার্ট প্যান্টের বয়স ৩-৪বছর হলেও সেদিকে তাকানোর সময় নেই কিন্তু সন্তানের জন্য প্রতিমাসে নতুন কাপড়ের ব্যবস্থা করা চাই ই। একসময় তার সন্তান স্কুলের গন্ডি পার হয়ে কলেজ জীবনে পদার্পণ করে। নাকের নিচে তার সরু গোফের রেখা, তখনি বাবার কাছে আবদার একটি দামী স্মার্ট ফোন চাই। করিম সাহেবের আপত্তি থাকলেও ছেলের মায়ের চাপাচাপিতে ক্রেডিট কার্ড থেকে লোন নিয়ে কিনে দেওয়া হল ছেলের জন্য দামী স্মার্ট ফোন। ক্রেডিট কার্ডের এই টাকা শোধ করার কথা চিন্তা করে করিম সাহেব যখন ব্লাড প্রেশারের চাপ সামলাতে ব্যস্ত, তখন ছেলে বাপের টাকায় গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে গুলশানের চাপ সামলাও রেস্টুরেন্টে সেল্ফি তোলায় ব্যস্ত। ছেলে একসময় ইন্টমিডিয়েট পাশ করলো। রেজাল্ট জিপিএ ৪.৫। এই রেজাল্টে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চ্যান্স পাওয়া সম্ভব নয়, কিংবা ছেলের ইচ্ছাও নেই পাবলিকে পড়ার। পাবলিকে পড়বে ছোটলোকের ছেলেমেয়েরা। ছেলে পড়তে চায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে। ওদিকে করিম সাহেবের গুলিস্তানের ফুটপাত থেকে ৫০০টাকায় কেনা জুতাটাকে অপারেশন করতে করতে মুচি বলে দিয়েছে এই জুতার জন্য এটাই শেষ অপারেশন। করিম সাহেবের স্ত্রীর শাড়ি ব্লাউজগুলোর যা তা অবস্থা,তিনি তার স্ত্রীকে বললেন তোমাকে একটা নতুন শাড়ি কিনে দেই। তখন উনার স্ত্রীর উওর,আমার শাড়ি নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না, সুই দিয়ে একটু সেলাই করে নিলেই হবে। তুমি আমার ছেলেকে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ভর্তি করে দাও। একসময় ছেলের পড়াশুনা শেষ,চাকুরীও পেয়ে গেছে।এদিকে বাবার চাকুরীও শেষ,চাকুরীর শেষে যা বেনিফিট পেয়েছিলেন ছেলেকে পড়াতে এবং হাতখরচ দিতে গিয়ে যে লোন হয়েছিল তা শোধ করতে গিয়ে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। ওদিকে ছেলের গার্ল ফেন্ড ছেলেকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। অতঃপর করিম সাহেব ছেলেকে বিয়ে করিয়ে দিলেন। শুরু হল ছেলের সুখের সংসার। কিন্তু এত পুরানো বাসা ছেলের বউয়ের মনে ধরছে না। তাই নতুন বাসা নিলো ছেলে। কিছুদিন পরই ছেলের বউয়ের আচরণ পাল্টাতে শুরু করলো। ছেলে বাবা মাকে গ্রামের বাড়ি চলে যেতে অনুরোধ করলো। কিন্তু ছেলেতো জানেনা গ্রামের বাড়ির সব সম্পত্তি তার পড়াশুনার পিছনেই ব্যয় হয়ে গেছে। অতঃপর বাবা মায়ের আশ্রয় হল বৃদ্ধাশ্রমে।করিম সাহেব ও তার স্ত্রী শেষ জীবনটা বৃদ্ধাশ্রমে বসে মৃত্যুর প্রহর গুনতে লাগলেন। ছবি: গুগল

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৪

রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: কেউ দেখেনি কেউদেখেনি তাদের চোখে ল

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৭

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: এমন গল্প কারো জীবনে যেন না ঘটে। ভাল থাকুক সব বাবা মায়েরা। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই।

২| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৮

তারেক ফাহিম বলেছেন: নেটগত সমস্যা ভুগছি গত এক সপ্তাহ যাবত
লাইন চেঞ্জ করে বুঝলাম আমার আগের বৌ, কালো হলেও ভালো ছিল :(

বাস্তব চিত্র গল্পে ফুটে উঠেছে।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৫০

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আহারে ভাইয়া আপনার অবস্থা দেখছি করুন, তবে বউ বদলানো ঠিক নয় ভাইজান। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

৩| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:১৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: করিম সাহেব এবং তার স্ত্রীর বৃদ্ধাশ্রমেই থাকা উচিত।
গুড প্যারেন্টিং সহজ কাজ নয়, দায়িত্বহীনভাবে সন্তানের অন্যায় আব্দার পূরণের কাজ নয়। তারা উভয়ে এতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাদের এ অবস্থার জন্য তাদের অপরিণামদর্শিতাই দায়ী।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৫২

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: এক সন্তান হলে বাবা মা এমন স্নেহে অন্ধ হয়ে সব অন্যায় আবদার পুরণ করে। ভাল থাকুক সব বাবা মা, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ স্যার।

৪| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:৩৩

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আমাদের সমাজ ও সংসার জীবন কঠিন ও জটিল হচ্ছে দিন দিন।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৫

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: হুম ঠিকই বলেছেন অধুনিকতার সাথে সাথে আমরাও যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছি। মায়া মমতা আমাদের মন থেকে উঠে যাচ্ছে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ মাইদুল ভাই।

৫| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:০৪

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: খায়রুল আহসান ভাইয়ার সাথে একমত।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:১৯

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: হুম খাইরুল স্যার চমৎকার বলেছেন, নিজের সাধ্যের বাইরে সন্তানের দাবী পুরণ করা ঠিক নয়। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ সোহেল ভাই অনেক ভালবাসা আপনার জন্য।

৬| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:০৭

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: সন্তানদেরকে আদরও করতে হবে সাথে শাসনের লাঠিটাও যেন সামনে থাকে। তা না হলে বৃদ্ধ বয়সে আশ্রম ছাড়া উপায় থাকবে না। বাবা-মা'দের এ ব্যাপারে আগে থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। সর্বোপরি ধর্মীয় আচার-আচরণের দিকেও তাগিদ দিতে হবে।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:২১

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: স্নেহে অন্ধ হয়ে অন্যায় আবদার পূরণ করা উচিত নয়,ভাল থাকুন সব বাবা মা। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ সম্রাট ভাই।

৭| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১০

চাঁদগাজী বলেছেন:


ছেলেমেয়েকে নিজের পরিবারের অর্থনীতি শেখাতে হবে ৩/৪ বছর বয়স থেকে।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৪

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: একাডেমীক পড়াশুনার পাশাপাশি এই শিক্ষাটাও খুবই জরুরী, নিজের সাধ্যের মধ্যেই ছেলেমেয়ের জন্য খরচ করা উচিত। ধন্যবাদ চাঁদগাজি ভাই।

৮| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২২

মোহেবুল্লাহ অয়ন বলেছেন: ব্লগার খায়রুল আহসান ও চাদ্গাজীর সাথে সম্পূর্ণ সহমত। পোলাপানকে এত মাথায় তুলতে নাই। ভালোবাসি বলেই অন্ধ হতে হবে এমন কোন কথা নাই। ছবি যোগ করে লেখাটাকে মজার করে তুলেছেন।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:১৯

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ছবি না থাকলে আসলে কাহিনীটা খুবই সাধারণ, আমিও উনাদের সাথে একমত। পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ অয়ন ভাই ।

৯| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:২৬

নূর-ই-হাফসা বলেছেন: পরিবারের অবস্থা বুঝে সন্তান এর চাহিদা পূরন করা উচিত । সামর্থ্যের বাহিরে কোন কিছু করা উচিত না ।
অল্পতে সব পেয়ে গেলে বাচ্চা গুলো পরিবারের অবস্থা বুঝতে চায় না

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৯:৫৯

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: বাস্তবতার সাথে ছেলেমেয়েদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া সব বাবামায়েরই দায়িত্ব। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ হাফসা আপু।

১০| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৪৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: তারেক_মাহমুদ ,




সমাজের বাস্তব চিত্রই বটে , তবে এর জন্যে দায়ী বাবা-মায়ের অবুঝ - অযৌক্তিক - অপরিনামদর্শী আপত্য স্নেহ । এই স্নেহের মূল্য সন্তান তখনই দিতে শিখবে যখন সহব্লগার খায়রুল আহসান এর কথা মতো সংসারে "গুড প্যারেন্টিং " এর আবহ থাকবে । ভালোবাসা যেমন থাকবে তেমনি থাকবে কঠিন শাসন । সন্তানকে সব সময় একটা নিয়ন্ত্রিত অভাবের মধ্যে রাখতে হবে । নিজেদের সামর্থ থাকলেও তা সন্তানকে বুঝতে দেয়া যাবেনা । সম্ভব হলে তাকে প্রাকযুবা বয়সেই কিছু না কিছু আয় করতে শেখাতে হবে । এতে তার নিজের উপর আত্মবিশ্বাস বাড়বে , নিজের ক্ষমতাকে পরিমাপ করতে শিখবে । শিখবে, নিজেকে কি ভাবে গড়তে হবে তা ও ।

ভালো লেখা ।

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৬

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ আহমেদ জী এস ভাই। আপনার সেই কুদ্দুসের নারী হওয়ার হেপা বুঝার গল্প এই গল্পের অনুপ্রেরণা। আমাদের সমাজে এমন ঘটনাতো ঘটছেই,সব বাবা মা ই উচিত নিজের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সন্তানদের স্বচ্ছ ধারনা দেওয়া।

১১| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৫১

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: তারেক ভাই, গল্প ভাল হয়েছে।খাইরুল স্যারের সঙ্গে আমিও একমত,অন্ধ আবেগে না চলে,সাধ্যের মধ্যে চলাই কাম্য।তবে আমারও একটি ছেলে। খুব ভয়ে আছি।এখনই মাঝে মাঝে যেন কন্ট্রোলের বাইরে চলে যায়।
যাক, শুভেচ্ছা রইল।

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৯

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: এই পোষ্টে খাইরুল স্যারের কমেন্টের উপর কোন কমেন্টই হয় না। পাঠ এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ পাদাতিক ভাই।

১২| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৪

প্রামানিক বলেছেন: শেষ পর্যন্ত বাবা মায়ের জায়গা বৃদ্ধাশ্রমে - -! বড়ই দুঃখজনক ঘটনা।

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৭

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: সন্তানকে সুশিক্ষিত না করলে এমনি হয়। শুধুমাত্র কাড়িকাড়ি টাকা খরচ করে নামি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেই মানুষ হয়না নৈতিকতার শিক্ষাও জরুরি। ধন্যবাদ প্রামাণিক ভাই।

১৩| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:০৩

মনিরুল ইসলাম বাবু বলেছেন: সন্তানকে আদরের পাশাপাশি শাসনও করতে হবে।

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৬

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: সব বাবা মার সেটাই করা উচিত মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ বাবু ভাই।

১৪| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: শেষের অংশটা মর্মস্পর্শী। পড়ে অনেক কষ্ট লাগল।
আপনার জন্য শুভ কামনা রইল।

আমার ব্লগে একবার ভিজিট করলে খুশি হব।

১১ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:৫৩

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: সমাজে এমন মর্মস্পর্শী ঘটনাইতো ঘটছে, পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ কাউসার ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.