নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর সব ভাল টিকে থাকুক শেষ দিন পর্যন্ত
(এই গল্পটি সেফ হওয়ার আগে পোষ্ট করেছিলাম, তখন এই গল্পে মন্তব্য করেছিলেন, প্রামাণিক ভাই, মাহমুদুর রহমান সুজন ভাই,মোস্তাফা সোহেল ভাই, মোঃ মাইদুল ইসলাম ভাই, ও হাসু মামা)
ফজলুল হক সাহেব হুংকার দিয়ে উঠলেন
-এককাপ চা বানাইতেই এত দেরী হয়?
-ময়নার মা এক চুলায় ভাত, এক চুলায় তরকারী বসাইছিল তাই চুলা খালি ছিল না, এইজন্য চা বানাতে দেরী হয়ে গেল বললেন আমেনা বেগম।
গত ৪০ বছর এমন আচরণ সহ্য করতে করতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন আমেনা বেগম তাই এখন আর খারাপ লাগেনা। প্রথম দশ বছর ভিশন কষ্ট পেতেন । অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল আমেনা বেগমের :
আমেনা গ্রামের মেয়ে, অল্প শিক্ষিত, এস এস সি পাস করেছিলেন সেকেন্ড ডিভিশনে। ওই সময় সেকেন্ড ডিভিশনে এস এস সি পাশ করা খুবই ভাল রেজাল্ট। তারপরই হক সাহেবের সাথে বিয়ে হয়ে যায় আমেনার । আর পড়াশুনা হয়নি। পাড়ার সবাই আমেনার বাবারে বলতো --তোমার মেয়েরতো রাজ কপাল এত ভাল ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছে, কত বড় চাকুরী করে।
বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই আমেনা বুঝলো হক সাহেব মানুষ ভাল হলেও অতিমাত্রায় অহংকারী, এবং কথায় কথায় সবার সাথে দূরব্যবহার করা উনার অভ্যাস। অবশ্য কাজটি করার কিছুক্ষণের মধ্যেই বুঝতে পারেন কাজটি ঠিক হয়নি তখনি সরি টরি বলে পার পেতে চান।
বিয়ের প্রথম এক বছরের মাথায় একদিন ইত্তেফাক পত্রিকায় আমেনা রাজ্জাক কবরীর একটা সিনেমার বিজ্ঞাপন দেখে খুব শখ হল সিনেমা দেখার। গ্রামে থাকার সময় আমেনাদের বাড়ির পাশের ওয়ালে সিনেমার পোষ্টার দেখে তারও মন চাইতো সিনেমা দেখতে। পাড়ার ছেলেরা সব দলবেঁধে শহরে যেতো সিনেমা দেখতে। সিনেমা দেখে এসে আমেনার চাচতো ভাই মিলন রসিয়ে রসিয়ে সিনেমার গল্প করতো। সেই থেকে আমেনার হলে গিয়ে সিনেমা দেখার খুব শখ। আমেনা স্বামীকে সাহস করে বলেই ফেললেন নিজের সিনেমা দেখার শখের কথা,শুনে হক সাহেব তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন। বললেন
-তোমাদের মত ছোটলোকের মেয়েদের এরচেয়ে আর কি ভাল শখ হবে। কথাটি শুনে আমেনা ভিশন কষ্ট পেলেন। কোন কথা না বলে রান্নাঘরে গিয়ে কিছুক্ষণ ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদলেন। তারপর চোখ মুছে আবার ঘরের কাজে মনোনিবেশ করলেন। বিকেল বেলা হক সাহেব হাসি হাসি মুখ নিয়ে বাসায় আসলেন, আমেনা বেগমকে বললেন তাড়াতাড়ি রেডি হও, বাইরে যেতে হবে। উনাদের গাড়ি মধুমিতা সিনেমা হলের সামনে থামলো। সেদিনই আমেনা প্রথম সিনেমা দেখেন। পরে হক সাহেব বাসায় এসে অনেক দু:খপ্রকাশ করেন। সেদিনই আমেনা বুঝতে পারেন হক সাহেব কথায় কথায় দুর্ব্যবহার করলেও মানুষ খারাপ না।
গত পনের বছর যাবত হক সাহেব বাইরের কোন মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন না । শুধুমাত্র আমেনা ব্যতিক্রম, একদিন রাত দুটোর সময় আমেনা কান্নার শব্দ পেলেন। আমেনা চোখ ডলতে ডলতে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন হক সাহেব ছোট্ট শিশুর মত কাঁদছে। তখন আমেনা জিজ্ঞাসা করলেন
-কি হয়েছে আপনার?
হক সাহেব বললেন
-আমি কি খুবই খারাপ মানুষ?
-হঠাৎ এমন প্রশ্ন? এরপর হক সাহেব যা বললেন তা শুনে আমেনা আকাশ থেকে পড়লেন :
হক সাহেবের বাসায় এর আগে হালিমা নামের একজন বুয়া ছিলেন।সেদিন আমেনা বাপের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন। হালিমা বুয়ার একটা পাচ বছরের ছেলে ছিল তার নাম করিম। করিমও মায়ের সাথে হক সাহেবের বাসায় থাকতো। একদিন হক সাহেব অফিস থেকে এসে দেখলেন করিম ড্রইংরুমের সোফায় ঘুমাচ্ছে। হক সাহেব চিৎকার দিয়ে উঠলেন,
-এই বান্দির পোলা সোফায় ঘুমাচ্ছিস ক্যান? যা আমার জন্য একগ্লাস পানি নিয়ে আয় । করিম পানি নিয়ে এলো। পানির গ্লাস নোংরা ছিল,তাই হক সাহেব আরো ক্ষেপে গেলেন, প্রচণ্ড জোরে চড় কশে দিলেন করিমের গালে। এবং বললেন যা ভাল করে গ্লাস ধুয়ে পানি নিয়ে আয়। করিম পানি আনতে চলে গেল। হক সাহেব সাথে সাথে নিজের ভুল বুঝতে পারলেন। এত ছোট বাচ্চার সাথে এতটা খারাফ ব্যবহার করা উচিৎ হয়নি। ভাললেন ছেলেটার কাছে গিয়ে ওকে আদর করে দুটো টাকা দেই চকলেট খাওয়ার জন্য। কি মনে বাইরে দাঁড়ালেন এবং জানালা দিয়ে দেখলেন করিম খুব যত্ন করে গ্লাস পরিষ্কার করছে, ছেলেটার জন্য খুব মায়া হল হক সাহেবের ভাবলেন ওকে স্কুলে ভর্তি করে দিবেন। এরপর করিম গ্লাসে পানি ভরলো। তারপর যা করলো সেটা হক সাহেব কোনদিন স্বপ্নেও ভাবেন নি। ছেলেটা প্যান্টের জিপার খুলে ছোট্ট নুনু বের করে গ্লাসে ডুবালো তারপর গ্লাসটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
হক সাহেব সেদিন দেখলেন একটা পাচ বছরের বাচ্চা কিভাবে ঘৃনার বহিঃপ্রকাশ। এই ঘটনার পর থেকে হক সাহেব সম্পুর্ণ অন্য মানুষ। কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করেন না। এখন আর সেই অহংকারও নেই, তবে আমেনা বেগমের সাথে উনার ব্যবহার আগের মতই। আমেনারও গা সওয়া হয়ে গেছে। স্বামী বরং ভাল ব্যবহার করলে উনার সন্দেহ হয় স্বামীর শরীর ঠিক আছেতো!
০৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ৮:৫৩
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: তা ঠিক বলেছেন গাজী ভাই, বাংলার মেয়েদের অনেক কিছু মুখ বুঝে সহ্য হয়। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
২| ০৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ৮:৪৯
সুমন কর বলেছেন: ভালোই ছিল।
০৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ৮:৫৫
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ সুমন ভাই।
৩| ০৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ৮:৫২
বিজন রয় বলেছেন: এটা গল্পৈ নয় জাস্ট ঘটনার বিবরন।
সরি।
০৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ৮:৫৭
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: মানুষের জীবনটাই একটাই গল্প, পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ বিজন দা।
৪| ০৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ১১:১৩
মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: তারেক ভাইয়ু
গল্পটা পছন্দ হয়েছে!
প্যান্টের জিপার খোলা ছেলেটাকে স্যালুট দিতে হয়
হক সাহেবরা মানসিক রুগী
@"স্বামী বরং ভাল ব্যবহার করলে উনার সন্দেহ হয় স্বামীর শরীর ঠিক আছেতো!"
-- সাকিন সারিসুরি, নাটক টা দেখেছেন? রুইতোনের বোন, হেনা আপারও সেম কেস!!!
০৯ ই জুন, ২০১৮ রাত ৩:৪৯
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: স্বামী বরং ভাল ব্যবহার করলে উনার সন্দেহ হয় স্বামীর শরীর ঠিক আছেতো! যারা খারাপ ব্যবহার পেয়ে সবসময় অভস্থ্য হঠাৎ করে ভাল ব্যবহার করলে এমনটি মনে হয় তাদের।
পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ নিজাম ভাই।
৫| ০৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ১১:৩০
সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: চমৎকৃত হলাম! ছোট ছেলেটার কান্ড দেখে!
০৯ ই জুন, ২০১৮ রাত ৩:৫১
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ছোট বাচ্চাদের সাথে এমন ব্যবহার করা আমাদের উচিৎ নয়। পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ সম্রাট ভাই
৬| ০৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ১১:৫৭
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: চমৎকার একটি গল্প, তারেক ভাই। হক সাহেবের চরিত্রটি খুব ভাল লেগেছে।
০৯ ই জুন, ২০১৮ রাত ৩:৫৫
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: অহংকারী কিছু মানুষ আছে যারা অন্যকে মানুষই মনে করে না তাদের কথা ভেবেই গল্পটি লেখা।
অনেক ধন্যবাদ প্রিয় কাওসার ভাই।
৭| ০৯ ই জুন, ২০১৮ রাত ১২:৫১
ওমেরা বলেছেন: যাদের রাগ বেশী তাদের ভালবাসাও বেশী । তবে বাচ্চা ছেলেটা খুবই বেয়াদব শুধু বেয়াদব না একটা অসভ্য বেয়াদব।
০৯ ই জুন, ২০১৮ রাত ৩:৫৯
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: গল্পটিতে আমি বলতে চেয়েছি ছোট বাচ্চাদের প্রতি খারাপ আচরণ করা উচিত নয়।পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ওমেরা আপু।
৮| ০৯ ই জুন, ২০১৮ ভোর ৬:৫৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
বাংলাদেশের অনেক মানুষ আছে যাদের ব্যবহার খুবই খারাপ। এরা কথায় কথায় গরম হয়ে যায়। জানি না তাদের সমস্যাটা কী?
গল্পটি অসাধারণ। এমন লেখা পড়লে খুব ভালো লাগে। মানুষকে জানতে পারি। তাদের সাইকোলজি জানা যায়।
আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকুন সব সময়।
০৯ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৭:৫৯
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: শুভ সকাল সাজ্জাদ ভাই,
সকাল সকাল এমন চমৎকার একটি কমেন্ট পেয়ে মনটা ভাল হয়ে গেল, অনেক ধন্যবাদ প্রিয় সাজ্জাদ ভাই।
৯| ০৯ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১০:২২
রাজীব নুর বলেছেন: প্রতিভা বিকশিত হবে। হবেই।
০৯ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৯
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: হা হা হা ভালই বলেছেন রাজীব ভাই, শিশুদের সাথে কখনোই খারাপ ব্যবহার করা উচিত নয়। অনেক ধন্যবাদ
১০| ০৯ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ২:০৯
অচেনা হৃদি বলেছেন: রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন- কথাটা সবাই জানে, সবাই বলে । আসলে নিজে রেগে যাবার পর কয়জন জিতে যায় তা কেবল উপরওয়ালা জানেন ।
০৯ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ২:৫৫
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: রাগ অহংকার খুবই খারাপ জিনিষ, তাই সকলেরই এগুলো পরিহার করা উচিত। সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপুমনি।
১১| ১০ ই জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৮
রাকু হাসান বলেছেন: হক সাহেব ,বদলেছেন ভাল লাগলো । এমন ই ভাবে আমরা যদি বদলাতে পারতাম !!
১০ ই জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৩
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: মানুষ ইচ্ছা করলেই তার অভ্যাস বদলাতে পারে,সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ রকু হাসান ভাই।
১২| ১০ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:৪৫
নাজিম সৌরভ বলেছেন: এরকম অসংখ্য হোক সাহেব আমাদের আশেপাশে আছেন, হোক সাহেবরা নিজেরা জীবনে সুখে থাকতে পারেন না, উনাদের পরিবারের অন্যদেরও সুখী হতে দেন না ।
১১ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৭:৫০
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: এমন অহংকারী মানুষদের জন্য গল্পের ছোট্ট ছেলেটি যা করেছিল তেমনটিই করা উচিত তবে যদি উচিত শিক্ষা পায় পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ সৌরভ ভাই।
১৩| ১১ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১০:৩৫
শামচুল হক বলেছেন: চমৎকার গল্প, সমাজের এক শ্রেণীর মানুষের চরিত্র তুলে ধরেছেন, খুব ভালো লাগল। ধন্যবাদ
১১ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১০:৫৩
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ শামচুল ভাই, আপনার মত গল্পকারের কাছ থেকে পাওয়া এমন চমৎকার মন্তব্য আমার অনুপ্রেরণা।
১৪| ১১ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১০:৫৫
জুন বলেছেন: বাস্তব চিত্র। আমেনা বেগমের মত আমরা অনেকেই তারেক মাহমুদ
+
১১ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১১:০৫
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জুনাপি।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই জুন, ২০১৮ রাত ৮:৩১
চাঁদগাজী বলেছেন:
বাংলার মেয়েরা বাংলার ছেলেদের বিয়ে করে কষ্টকে সাথী করে নেন।