নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি লেখক নই, মাঝে মাঝে নিজের মনের ভাবনাগুলো লিখতে ভাল লাগে। যা মনে আসে তাই লিখি,নিজের ভাললাগার জন্য লিখি। বর্তমানের এই ভাবনাগুলোর সাথে ভবিষ্যতের আমাকে মেলানোর জন্যই এই টুকটাক লেখালেখি।

তারেক_মাহমুদ

পৃথিবীর সব ভাল টিকে থাকুক শেষ দিন পর্যন্ত

তারেক_মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার জেলা নড়াইল ও মাশরাফি

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৫৯

নবগঙ্গা, মধুমতি, কাজলা, চিত্রা বিধৌত ছোট্ট শহর নড়াইল। শান্ত নদী চিত্রার মত এখানকার মানুষগুলোও সহজ সরল ও আবেগী। দেশের একটি ক্ষুদ্র জেলা হলেও এখানে গুনি মানুষের অভাব নেই। তাই  শিল্পী এসএম সুলতান একজন আন্তর্জাতিক মানের ব্যক্তিত্ব হলেও কখনোই খ্যাতির মোহে এই শহর ছেড়ে যাননি। তার রঙ তুলিতে নড়াইলের রোগা কৃষকদের এঁকেছেন মাসেলম্যান হিসাবে, শিল্পীর ব্যাখ্যা  ছিল,
-'যে কৃষক এত পরিশ্রম করে মাটির বুক চিরে ফসল ফলাতে পারে সেতো এত রোগা হতে পারে না'
তাই শিল্পী সব ছবিতে বলিষ্ঠ স্বাস্থ্যের অধিকারী কৃষককে দেখা যায়।

শিল্পী সুলতান ছাড়াও এই নড়াইলে জন্মেছেন মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ,পণ্ডিত রবী সংকর,উদয় সংকর(উপমহাদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নৃত্য শিল্পী) চারণ কবি মোসলেম বয়াতী, কবিয়াল বিজয় সরকার,উপন্যাসিক নিহার রঞ্জন গুপ্ত, সৈয়দ নওশের আলী(শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের মন্ত্রী সভার একজন মন্ত্রী) নুর জালাল (তেভাগা আন্দোলনের মধ্যমণি) কমল দাশ গুপ্ত(নজরুল সংগীতের নির্ধারিত সুরকার, শিল্পি ফিরোজা বেগমের স্বামী, ব্যান্ড শিল্পি হামিন শাফিন আহম্মেদের বাবা),অমল কৃষ্ণ সোম, শুভ্রা মুখার্জী (ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর স্ত্রী) এবং ১৬ কোটি মানুষের নয়নের মনি মাশরাফি বিন মূর্তজা।

এবারের নির্বাচনে দেশের সবচেয়ে আলোচিত আসন হচ্ছে নড়াইল -২। এই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন নড়াইলের ধুলোবালি গায়ে মেখে বেড়ে ওঠা মাশরাফি বিন মোর্তুজা। এই মানুষটা নড়াইলের জন্য অন্তপ্রাণ, সুযোগ পেলেই ছুটে যান প্রিয় শহর নড়াইলে। নড়াইলে মাশরাফির বাড়ির দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত, প্রতিদিন হাজারো মানুষ তার বাড়িতে আসেন দেখা করার জন্য, মাশরাফিও তার পরিবার কখনোই বিরক্ত হন না,সবার সাথে দেখা করেন হাসিমুখে।

মাশরাফির ভাই মোরসালিন বিন মোর্তজার ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে জানা যায় গত ১৮ বছরে মাশরাফি তার ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা থেকে এক টাকাও সুদ গ্রহণ করেন নি। তার ছেলেবেলার অস্বচ্ছলতা বন্ধুদের বেশ কয়েকজনকে নিজ খরচে দোকান করে দিয়েছেন।  গত বিপিএল এ রংপুর রাইডার্সের দেওয়া ৪কোটির টাকার গাড়ি ফিরিয়ে দিয়ে নড়াইল সদর হাসপাতালের জন্য দুটি এম্বুলেন্স নিয়েছিলেন যা আমাদের সবারই জানা। মাশরাফি নড়াইলে আন্তর্জাতিক মানের থাইরোকেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু করেছেন যেখানে ৪০০ প্রকার টেষ্ট করানো যাবে ৫০% ডিসকাউন্টে। তিনি ২০০ বিদ্যুৎবিহীন পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য সোলার ল্যাম্পের ব্যবস্থা করেছেন। নড়াইল শহর এবং লোহাগড়া পৌর এলাকাকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার জন্য ২৪ লাখ টাকা ব্যায়ে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন নিজ খরচে। এছাড়া নড়াইলকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত রাখতে ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে এলাকার উঠতি তরুণদের ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবলের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। এছাড়া একটি জীম তৈরির জন্য ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। তিনি নড়াইলকে পরিচ্ছন্ন রাখতে দেড়শো ডাস্টবিন স্থাপন করেছেন। তিনটি পাবলিক টয়লেট স্থাপনের পরিকল্পনা চুড়ান্ত করেছেন। তাছাড়া নড়াইলকে ফুলের শহর হিসাবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন স্কুল, কলেজগুলোতে ফুলগাছ ও অন্যান্য সৌন্দর্যবর্ধক গাছ রোপন করে চলেছেন। সর্বশেষ এক হাজার দরিদ্র কৃষকের মধ্যে ৫টন উন্নত জাতের জিংকসমৃদ্ধ ধানের বীজ বিতরণ করেছেন। আর এ কাজগুলো তিনি করে যাচ্ছেন নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে।

মাশরাফির নির্বাচনে জয়ের সম্ভবনাঃ

নড়াইল ২ আসন থেকে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী খশরুজ্জান জয়ী হন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাদের শিকদার বিএনপি প্রার্থীকে পরাজিত করে জয়লাভ করে। ১৯৯৬ সালের ১২ই জুন নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী শরীফ খশরুজ্জামান বিজয়ী হন। ২০০১ সালে এই আসন থেকে শেখ হাসিনা নির্বাচন করেন এবং বিজয়ী হন অবশ্য শেখ হাসিনা আসনটি ছেড়ে দিলে উপনির্বানে বিএনপির শরীক দল থেকে মুফতি শহিদুল ইসলাম জয়ী হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আবার আওয়ামীলীগ প্রার্থী  ব্রিগেডিয়ার আবু বাকের জয়ী হন। ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচনে আওয়ামীলীগ তার শরীক দল ওয়ার্কার্স পার্টিকে আসনটি ছেড়ে দেয় এবং শেখ হাফিজুর রহমান সংসদ নির্বাচিত হন।

এই আসনে ১৯৯৬ সালের ১৫ ই ফেব্রুয়ারির একতরফা নির্বাচনেও বিএনপি জিততে পারেনি, এই আসনে শুধুমাত্র ২০০১ সালে শেখ হাসিনার ছেড়ে দেওয়া আসনে বিএনপির শরীকদল জয়লাভ করে।

জনগণ বার বার এই আসনে আওয়ামীলীগকে বিজয়ী করলেও এখানকার সংসদ সদস্যরা কেউই জনগনের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেন নি । তাই এবার নড়াইলবাসী মাশরাফি কে নিয়ে আশায় বুক বেধেছে স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর তারা এবার সত্যিকারের নেতা পেয়েছে।

বিঃদ্রঃ তথ্যগুলো নড়াইলের বিভিন্ন ফেসবুক পেজ থেকে সংগ্রহ করে নিজের মত করে লেখা।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:২৪

বিজন রয় বলেছেন: ভাল পোস্ট।
ওই সব মহামানবদের সম্পর্কে আজকালকের পোলাপান জানেই না।
ভাল করেছেন নামগুলো উল্লেখ করে।

শুভকামনা।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৩৪

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ বিজন দা, এইসব গুনিজনদের সম্পর্কে আমাদের সবারই জানা উচিত।

২| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৫

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
অনেক গুণীজন আছে আপনার এলাকায়
আমাদের কুমিল্লায়ও আছে অনেক গুণী জন।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:১৫

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ মাইদুল ভাই।

৩| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:১১

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: নড়াইলবাসীর অনেক ইতিহাস আছে এখানে। অনেক ভালো লাগলো আসলে এটা অনেক পরিশ্রম এর কাজ।


ধন্যবাদ

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:১৭

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: খুবই বেশি পরিশ্রম করতে হয়নি আসলে নিজ জেলার এসব ইতিহাস ছোটবেলা থেকে শুনতে শুনতে মনে গেঁথে আছে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ তাজুল ভাই।

৪| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৯

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: এদেশের প্রতিটি জেলাই গুণীদের মেলা। আমাদের সূর্যসন্তানের অভাব নেই, অভাব শুধু সুস্থ রাজনীতির। নেতারা কবে যে মানুষ হবে???..:(


মাশরাফি ভালো ছেলে। এবারের নির্বাচনে ও জিতবে(৯০%)। নড়াইলের উন্নয়নও হবে। কিন্তু আমাদের জেলার কী হবে???

[তারেক ভাই? আমি নির্বাচনে দাঁড়ালে কেমন হয়? সবাই কী টেলিছামাদ বলে ক্ষ্যাপাবে??]:P

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৩

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: হা হা আইডিয়া মন্দ না দাঁড়িয়ে পড়ুন, হিরো আলম এমপি হতে পারলে আপনিও পারবেন।

৫| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৩৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় তারেকভাই ,

ভালো পোস্ট। আবেগ আছে ,পোস্টে লাইক। মাশরাফি আবেগ এবার নির্বাচনে দারুণভাবে জনসচেতনতা ও ও জনপ্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করবে। সংশ্লিষ্ট দলের অ্যাডভান্টেজ বৈকি। বাকিটা সময় বলবে।


শুভ কামনা ও ভালোবাসা রইলো।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৭

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আসলে মাশরাফি একটা আবেগের নাম, অনেকেই মাশরাফির রাজনীতিতে জড়ানোতে ভাল চোখে দেখছেন না কিন্তু ও অবহেলিত নড়াইলের মানুষের জন্য কাজ করতে চায়, ওকে সুযোগ দেওয়া উচিত।
পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ পদাতিক ভাই।

৬| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: মধুমতি নদী কিন্তু ফরিদপুরেও কিছুটা পড়েছে।
আসলেই নড়াইলে অনেক গ্রেট লোকদের জন্ম হয়েছে।
ছোট পোষ্টে কিন্তু অনেক তথ্যে ঠাসা।
ধন্যবাদ আপনাকে।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৯

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাই। আপনি কি এই সময় ম্যাগাজিনের সাথে জড়িত নাকি,আলোকচিত্র শিল্পির হিসাবে আপনার নাম দেখলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.