নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিহঙ্গ...

তাশমিন নূর

পথ ছাড়া নাই কিছু অনন্ত পথের অন্তর্ধানে।

তাশমিন নূর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ট্রয় যুদ্ধের আদি ইতিহাস

১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:১৭

ট্রয় যুদ্ধের কাহিনী Greek mythology’র একটি অতি জনপ্রিয় আখ্যান। Wolfgang Petersen পরিচালিত ২০০৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘Troy’ মুভিটি আমরা প্রায় সকলেই দেখেছি, যেখানে ট্রয়বাসী এবং গ্রীকসেনাদের মাঝে সংঘটিত দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী ট্রয় যুদ্ধের খণ্ডচিত্র তুলে ধরা হয়। গ্রিক কবি Homer এর ‘Iliad’ মহাকাব্য অবলম্বনে মুভিটি নির্মিত হয়। কিন্তু হোমারের ‘ইলিয়াড’ এই যুদ্ধের মাত্র কয়েক দিনের ঘটনা নিয়ে রচিত। ট্রয় যুদ্ধের সূত্রপাত হয় Sparta’র রানী হেলেনের অপহরনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে। কিন্তু মূল ঘটনার সূত্রপাত আরও পেছনে। আসুন সংক্ষেপে জেনে নিই সেই চমকপ্রদ কাহিনী।



ইলিয়াডের মহাকাব্যে তিনি সব কিছু চিত্রিত করেন নি ঠিকই, কিন্তু অন্য গ্রীক কবিরা (যেমন- আপোলোডোরাস, ইস্কাইলাস, ইউরিপিডিস) তাঁদের কালজয়ী বিভিন্ন সাহিত্যকর্মে ট্রয় যুদ্ধের আগের ও পরের কাহিনীর বিভিন্ন পর্যায় সম্পর্কে লিখেছেন। সেইসব কাহিনীসূত্র থেকে যতটুকু জানা যায়, দেবতাদের আবাস অলিম্পাসে তিন রূপসী দেবীর মধ্যকার এক বিবাদ থেকেই এই কাহিনীর সূত্রপাত।



বিয়ে হবে রাজা পিলিউস এবং জলদেবী থেটিসের। সেই বিয়ের ভোজসভায় কলহের দেবী এরিস বাদে নিমন্ত্রন পেলেন অন্য সকল দেব-দেবী। অপমানিতা দেবী সংকল্প করলেন, যে করেই হোক বিবাহসভায় একটা ভেজাল বাধাবেন। তিনি ভোজসভায় গিয়ে টেবিলের উপর একটি সোনার আপেল রাখলেন, যাতে খোদাই করা ছিল একটি কথা-“কেবলমাত্র সুন্দরীশ্রেষ্ঠার জন্য।” সকল দেবীই এর দাবীদার হলেন, কেননা-প্রত্যেকের মতে তিনিই সবচে সুন্দরী। অবশেষে চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামলেন দেবী হীরা, এথিনা এবং আফ্রোদিতি। এখানে বলে রাখা ভাল যে, হীরা সম্পদের দেবী, এথিনা জ্ঞানের দেবী এবং আফ্রোদিতি প্রেমের দেবী। তাঁরা ফলাফলের জন্য গেলেন দেবরাজ জিউসের কাছে। এদিকে, হীরা আবার তাঁর স্ত্রী। জিউস দেখলেন, হীরাকে সুন্দরীশ্রেষ্ঠা হিসেবে ফলাফল না দিলে তিনি এক গোলযোগ বাধাবেন, আবার হীরার পক্ষে রায় দিলে পক্ষপাতিত্ব হয়ে যাবে। তাই তিনি বিচারের ভার দিলেন মনুষ্যকুলের হাতে। ঠিক হল, পৃথিবীর কোন মানুষের হাতে আপেলটি তুলে দেয়া হবে। সে যে দেবীর হাতে আপেলটি তুলে দেবে সে-ই সুন্দরীশ্রেষ্ঠা হিসেবে বিবেচিত হবে।



ট্রয় নগরীর পাশের ‘আইডা’ পর্বতে মেষ চরান প্যারিস। একদিন তিন দেবী নেমে এলেন স্বর্গ থেকে। দেবীরা প্যারিসের হাতে আপেলটি দিয়ে বললেন, “যুবক, আমাদের মধ্যে যে সবচে সুন্দরী তাঁর হাতেই এই আপেলটি তুলে দাও। আমরা তোমাকে বিচারক নিযুক্ত করলাম।” বললেন বটে, তবে প্যারিসকে লোভের ফাঁদে ফেলে প্রত্যেক দেবীই সফল হতে চাইলেন। হীরা দেবী তাকে ইউরোপ এবং এশিয়ার অধীশ্বর বানিয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিলেন, এথিনা তাকে দিতে চাইলেন পৃথিবীর তাবৎ জ্ঞান এবং দেবী আফ্রোদিতি পৃথিবীর সবচে সুন্দরী নারীকে তার প্রণয়িনী বানিয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেন। প্যারিস পৃথিবীর সবচে সুন্দরী নারীকে পাওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে আপেলটি তুলে দিলেন প্রেমের দেবী আফ্রোদিতির হাতে।[ইংরেজি প্রবাদ-Apple of discord(বিবাদের বিষয়)এই ঘটনাকেই স্মরণ করিয়ে দেয়।]



হেলেন, যে কিনা ভূখণ্ডে রূপে অদ্বিতীয়া, যাকে গ্রীসের এমন কোন রাজপুত্র ছিল না যে বিয়ে করতে চায় নি; স্বয়ম্ভর সভায় সেই হেলেনকে জিতে নিলেন মাইসিনির রাজা আগামেমনন এর ভাই মেনিলাউস। হেলেনের পিতা টিনডারিয়ুস কন্যা সম্প্রদান করলেন মেনিলাউসের হাতে এবং তাকে স্পারটার রাজা ঘোষণা করলেন। এদিকে, দেবী আফ্রোদিতি তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্যারিসকে হেলেনের সন্ধান দিলেন। প্যারিস তাঁর বন্ধুদের নিয়ে জাহাজ সাজিয়ে রওনা হলেন স্পারটার দিকে। ততদিনে তিনিও জেনে গেছেন যে, তিনি সাধারণ কোন মেষপালক নন; তিনি আসলে ট্রয় এর রাজা প্রায়ামের অন্যতম পুত্র(সেটা অন্য গল্প)। যাই হোক, স্পারটায় রাজা মেনেলাউস প্যারিসকে সাদর অভ্যর্থনা জানালেন। গ্রীকদের কাছে অতিথি দেবতাতুল্য। তাই তাঁরা ট্রয়ের রাজপুত্র প্যারিসের কোন অযত্ন হতে দিল না। বন্ধুদের নিয়ে ভোজনসভায় খেতে বসলেন প্যারিস। তখন সেখানে প্রবেশ করলেন রানী হেলেন, পৃথিবীতে যার রূপের কোন তুলনা নেই। হেলেনকে দেখামাত্রই প্রেমে পড়ে যায় প্যারিস। হেলেনও প্রেমে পড়ে যান প্যারিসের। আসলে পুরোটাই ছিল দেবী আফ্রোদিতির কারসাজি। যাই হোক, রাজগৃহে গোপনে মন দেয়া-নেয়া চলছিল প্যারিস ও হেলেনের। ইতোমধ্যে একদিন রাজকার্যে বাইরে যেতে হল হেলেনের স্বামী মেনেলাউসকে। এই সুযোগেই ঘর ছাড়লেন হেলেন, প্যারিসের হাত ধরে। জাহাজ পাল তুলে দিল ট্রয়ের দিকে। অপমানিত, ক্রুদ্ধ মেনিলাউস অন্যান্য রাজাদের সহযোগিতায়, তাঁদের পাঠানো সৈন্যদল নিয়ে বিশাল মিত্রবাহিনী গড়ে তুলে ট্রয় নগরী আক্রমন করলেন। প্রায় নয় বছর স্থায়ী হয়েছিল ট্রয় এর যুদ্ধ, যা সমৃদ্ধশালিনী এবং প্রতাপান্বিতা ট্রয়কে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছিল।

মন্তব্য ২৫ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০১

রাঘব বোয়াল বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

২| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৩

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: চমৎকার!! খুব সহজ ভাষায় ট্রয় যুদ্ধের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেছেন। আশা করি আরো লিখবেন।


ভালো থাকুন। শুভকামনা রইল।

৩| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৪

ঢাকাবাসী বলেছেন: অতি সংক্ষেপে ভাল লেখা।

৪| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৯

নক্‌শী কাঁথার মাঠ বলেছেন: খুব চমৎকার...

৫| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৭

তাশমিন নূর বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ়় রাঘব বোয়াল।

৬| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫১

তাশমিন নূর বলেছেন: গ্রীক এবং হিন্দু উভয় মিথোলোজিতেই আমার আগ্রহ আছে। আরও লেখার ইচ্ছে আছে। উৎসাহ দানের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভাল থাকুন। মহামহোপাধ্যায়

৭| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫২

তাশমিন নূর বলেছেন: ধন্যবাদ়়ঢাকাবাসী।

৮| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৪

তাশমিন নূর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভাল থাকুন়়নকশী কাঁথার মাঠ।

৯| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১১

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: গ্রীক এবং ভারতীয় মিথে আপনার আগ্রহ আছে জেনে ভালো লাগল।

মন্তব্যের প্রতি উত্তর দেয়ার ক্ষেত্রে (কম্পিউটার থেকে) আমরা সাধারনত প্রতিটি মন্তব্যের উপরে থাকা সবুজ তীর চিহ্নে ক্লিক করে উত্তর লেখার জন্য একটা উইন্ডো নিয়ে আসি এবং সেখানে উত্তর লিখে "মন্তব্য প্রকাশ করুন" ক্লিক করে মন্তব্য প্রকাশ করি। এতে প্রতিটি মন্তব্যের সাথেই আপনার দেয়া মন্তব্য/উত্তরটি থেকে যায়।

মোবাইল থেকে উত্তর দেবার ক্ষেত্রে উইন্ডোটি আনতে প্রতিটি মন্তব্যের নিচে থাকা "মন্তব্য" অংশে ক্লিক করুন এবং একই ভাবে উত্তর দিন।

শুভ ব্লগিং :)

১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:১৭

তাশমিন নূর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

১০| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৩৯

আমিনুর রহমান বলেছেন:




এই লিঙ্কে যে পোষ্টটি আছে এটা কি আপনার লিখা ছিলো

১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২১

তাশমিন নূর বলেছেন: শো করছে না তো। পেইজ নট ফাউন্ড বলছে। দুঃখিত। ওটা যদি আমার দেয়া লিঙ্ক হয়, তাহলে হয়ত আমারই লিখা।

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৫৯

তাশমিন নূর বলেছেন: আমিনুর ভাইয়া, আপনার দেয়া লিঙ্কটা শো করছে না কেন? যাই হোক, একটা ব্যাপার পরিষ্কার করে দিই, আমি কখনো অন্যের লেখা কার্টেসি ব্যতীত কপি-পেস্ট করি না। এটা আমার কাছে ডিসক্রেডিট মনে হয়। ঐ লেখাটা কী সম্পর্কিত ছিল? আর যে আইডিতে ছিল, সেই আইডি লিঙ্কটা দিন। অথবা আপনার ফেবু আইডির লিঙ্কটা দিন। আমরা মেসেজে কথা বলতে পারি। অথবা আমাকে আপনি ই-মেইল করতে পারেন-

[email protected]

১১| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫০

তেলাপোকা রোমেন বলেছেন: কাল রাতে মুভিটা দেখছিলাম। অর্ধেক দেখে ঘুমায়ে গেছিলাম। এখন বাকী অর্ধেক দেখার সময় আপনার পোষ্ট চোখে পড়লো :)

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৩০

তাশমিন নূর বলেছেন: হাহাহা। দারুন একটা মুভি। কিন্তু মুভিতে মনে হয় সব কিছু সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয় নাই।

১২| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:১২

মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: ভাল লাগলো!

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৩২

তাশমিন নূর বলেছেন: আপনার ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল। ধন্যবাদ।

১৩| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৪৪

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: Click This Link ফেসবুকের ৭ নভেম্বরের এই লেখাটা কি আপনার ? নাকি আপনি কপি পেস্ট করেছেন ?

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৩

তাশমিন নূর বলেছেন: হ্যাঁ, ওটা আমারই লিখা। আমার ফেইসবুক আইডিতেও লিখাটা ছিল। আমার আইডি- তাশমিন বিনতে নূর। আইডিটা এখন ডিএক্টিভেট করা আছে। আর ঐ পেইজটা আমিই চালাই। আপনার কি প্রমাণের দরকার আছে?

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৯

তাশমিন নূর বলেছেন: পোস্টটার নিচে কার্টেসি দিয়ে দিচ্ছি, একটু ওয়েট করুন।

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৫০

তাশমিন নূর বলেছেন: এই অনভিপ্রেত ভুলের জন্য বিশেষভাবে দুঃখিত। আসলে তখনই কার্টেসি দেওয়া উচিত ছিল। তখন ভাবিনি, লেখাটা কখনো ব্লগে পোস্ট করব। আপনি ইচ্ছা করলে পেইজে লাইক দিয়ে ওটার সাথে যুক্ত থাকতে পারেন। ধন্যবাদ। :)

এখন আপনার দেয়া লিঙ্কে ক্লিক করে দেখুন। ব্লগ পোস্টের লিঙ্কটাও দিয়ে দিয়েছি।

১৪| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৫৪

নতুন বলেছেন: হীরা = হেরা ই উচ্চারন করে সবাই..

চমতকার লেখা.... চালিয়ে যান... আরো অনেক কাহিনি লিখুন..

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:১৬

তাশমিন নূর বলেছেন: ধন্যবাদ, নতুন। আরও লেখার ইচ্ছা আছে পুরাণ থেকে।

হীরার ব্যাপারটা আমার জানা আছে। তবে আমি পুরাণ নিয়ে যতগুলো বাংলা অনুবাদ বই পড়েছি তার কোন কোনটিতে হীরাও লেখা আছে। জ্ঞানের দেবীর নাম কোথাও লেখা আছে এথিনি, আবার কোথাও এথিনা। আরোগ্যদেবতার নাম কোথাও লেখা আছে এসক্লিপিউস, আবার কোথাও এসক্লেপিয়স। বায়ুদেবতার নাম কোন কোন বইতে জিফিরিউস, আবার কোন কোন বইতে জেফিরস। ক্যালিডনের রাজার নাম- কোথাও ইনিয়ুস, আবার কোথাও ওনিয়ুস লেখা। তাই আমি একটু কনফিউশনে ছিলাম কোনটা লিখব। তবে আমার হয়তো এটা নিয়ে আরেকটু ভাবা উচিত ছিল।

আবারও ধন্যবাদ। :)

১৫| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৫২

ফয়সাল খালাসী বলেছেন: এই লেখা টা মনে হয় ১০ নভেম্বর একবার পোস্ট করেছিলেন। পরে খুব ভালো লেগেছিল। পোস্ট মুছে ফেলার কারনে তখন মন্তব্য লিখতে পারি নাই।
এখন লিখে দিলাম। :) ++
সাথে আছি, ভালো থাকুন। :)

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ২:২৯

তাশমিন নূর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.