নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিহঙ্গ...

তাশমিন নূর

পথ ছাড়া নাই কিছু অনন্ত পথের অন্তর্ধানে।

তাশমিন নূর › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ শিক্ষক

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:১৯

শিখা বেগম উচ্চতায় ছোট-খাট একজন মানুষ। প্রায় চার ফুট নয় ইঞ্চির মতো উচ্চতা তাঁর। গায়ের রঙ শ্যামলা। তবে তাঁর চেহারা খুব ভালো। অল্প বয়সে আরও ভালো ছিল। আলাদা আলাদা করে দেখলে তাঁর চোখ-নাক-ঠোঁট-দাঁত কিংবা হাসি কোন কিছুতেই তেমন বিশেষত্ব ছিল না। তবু সব মিলিয়ে একসাথে দেখলে তাঁর চেহারা ভালোই মনে হত। কিন্তু বিয়ের ক্ষেত্রে চেহারা কোন বিবেচনার বিষয় নয়। খাটো আর কালো মেয়েরা এই দেশে বিয়ের ক্ষেত্রে শুরুতেই ডিসকোয়ালিফাইড হয়ে যায়। তাঁর বেলায়ও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অনেক বার এভাবে অপমানিত হওয়ার পর তাঁর বিয়ে হল আলমের সাথে। শিখা বেগম সারা জীবন ধরে এই একটি মানুষের প্রেমেই হাবুডুবু খেয়েছেন। মানুষটার অনেক টাকা নেই, দেখতেও তেমন আহামরি নয়। কিন্তু অসম্ভব সুন্দর একটি মন আছে তাঁর। শিখা বেগম নিজের সঙ্গীকে হঠাত পাওয়া পরশ পাথরের মতোই বিস্ময় এবং ভালোবাসার চোখে দেখে এসেছেন সব সময়। তাঁদের একমাত্র মেয়ের নাম মেঘা। মেয়েটিও ঠিক মায়ের মতো ছোটখাট হয়েছে।


আজ সকালে মেয়ের টেলিফোন পাওয়ার পর থেকেই কাঁদছেন তিনি। তাঁর খুব আনন্দ হচ্ছে। মেঘা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট-এ রেকর্ড মার্ক নিয়ে পাশ করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্কলারশীপ নিয়ে সেখানে পড়তে গেছে সে। সেখানেই একটি বাঙালী ছেলেকে বিয়ে করেছে। তারা দুজনেই দুটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার। মেঘার বিষয় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং। আর তার বরের বিষয় রোবটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং। তাদের একটি ছেলে আছে, সাফোয়ান নাম। তিন বছর বয়স। টেলিফোনে মাঝে মাঝে নানু নানু বলে ডাক পাড়ে। কী যে মিষ্টি লাগে শুনতে! মেয়ে সুখে আছে এটাই শিখা বেগমের কাছে সবচে আনন্দের। কিন্তু আজ যে আনন্দে তাঁর বার বার চোখ ভিজে উঠছে সেই আনন্দের কারন অন্য কিছু। এই আনন্দের খবর শোনার পর থেকে আজ তাঁর জীবনের একটি অপমানের এবং গভীর বেদনার স্মৃতিও বার বার মনে পড়ছে। আনন্দের সংবাদটি হল- মেঘা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের পুরস্কার পেতে যাচ্ছে এ বছর। আলম স্ত্রীর কাঁধে হাত রেখে বললেন-
-এতো কাঁদছ কেন? আনন্দের সংবাদ তো আরও একটি আছে। এখনি চোখের সব পানি ঝরিয়ে ফেললে হবে?
শিখা বেগম চোখ মুছে দ্বিতীয় আনন্দের সংবাদটি জানতে চাইলেন স্বামীর কাছে। আলম রহস্য করে বললেন,
-বল দেখি, কী? দেখি অনুমান করতে পারো কিনা?
-কী, তোমার চাকরীর মেয়াদ বেড়েছে?
-ধূর! হয়নি।
-তাহলে কী? বুড়ো বয়সে আবার প্রেমে পড়েছ?
আলম এ কথা শুনে শরীর দুলিয়ে হাসতে লাগলেন। বললেন,
-এটা তো সুখের সংবাদ হল না। আমি প্রেমে পড়লে তোমার হিংসা হবে। এটা তোমার জন্য দুঃসংবাদ। আবার চেষ্টা কর।
শিখা অধৈর্য্য হয়ে হাল ছেড়ে দিলেন। আলম বললেন,
-মেঘা আমাকে বলেছে আমি যেন সংবাদটি তোমাকে না জানাই। কিন্তু বুড়ো হয়ে গেছি বলে আমার পেট খারাপ হয়ে গেছে। এখন আর আমার পেটে কথা থাকে না, তাই তোমাকে বলে দিচ্ছি।
-বলছ আর কই? খালি দেরি করছ।
-বলছি। আগে একটা পান সেজে দাও।
শিখা চোখ পাকিয়ে তাকালেন। আলম সাহেব হাসতে হাসতে বললেন,
-এবার তোমার নাতীকে দেখতে পাবে চোখের সামনে।
-মানে?
-মানে মেঘা পাকাপাকিভাবে দেশে ফিরে আসবে। জামাইও যা করার আজীবন এই দেশে থেকেই নাকি করবে।
খবর শুনে শিখা বেগম আনন্দে স্বামীর গালে চুমু খেয়ে ফেললেন। তারপর লজ্জা পেয়ে রান্নাঘরে চলে গেলেন। আলম সাহেব গালে হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,
-এক কাপ চা দিও তো। এরচে’ মিষ্টি হয় যেন। আজকে ডায়াবেটিসও মানব না।
কথাটা বলেই হাহ হা করে হেসে উঠলেন। প্রাণময় হাসি। সুখী মানুষের হাসি।


যথা সময়ে দেশে ফিরল মেঘা। একদিন বিকেলে শিখা বেগম তাঁর মেয়েকে বললেন,
-চল একটা বাসায় যাই।
-কোথায় যাবে?
-মাহীর উদ্দিনের বাসায়।
-মাহীর উদ্দিনটা কে?
-গেলেই দেখবি। সাথে তোর অক্সফোর্ড এর সব সার্টিফিকেট আর এই বছর অক্সফোর্ড এর সেরা শিক্ষকের সম্মাননা হিসেবে যে ক্রেস্ট, মেডেল আর সনদ দেয়া হয়েছে সেটা সঙ্গে নিবি।
মেঘা অবাক চোখে তাকাল। মা এসব কেন নিতে বলছেন কে জানে। তবু মায়ের কথার উপর কোন কথা বলল না সে। বলল,
-ঠিক আছে। শুধু ব্যাপার কী সেটা বল।
-তখন বলব।
-কখন?
-মাহীর উদ্দিনের বাসায় গিয়ে।

মাহীর উদ্দিন যে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সেই কলেজের একজন শিক্ষকের কাছ থেকে ঠিকানা জোগাড় করে মা-মেয়ে বাড়িটার মূল দরজার সামনে এসে দাঁড়ালেন। বাড়ির নাম-পৃথিবী। বাড়ির নামের নিচে নামের চেয়ে একটু ছোট করে লেখা-

ডক্টর মাহীর উদ্দিন, পিএইচডি ইন এডুকেশন (ইংল্যান্ড)
প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রাক্তন অধ্যাপক, অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ।

দুইবার কলবেল চাপার পর ছোট্ট একটা মেয়ে এসে দরজা খুলে দিল। সাত-আট বছর বয়স হবে মেয়েটার। শিখা মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করলেন,
-খুকী, মাহীর উদ্দিন কি আছেন?
মেয়েটা জোরে জোরে উপর-নিচ মাথা ঝাঁকিয়ে দৌড়ে ভেতরে চলে গেল। শিখা বেগমের চোখ-মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। তিনি বেশ উত্তেজনা অনুভব করছেন। একটা অপমানের জবাব দেবেন তিনি আজ। কিছুক্ষণ বসে থাকার পর প্রায় তারই বয়সী এক ভদ্রলোক এসে সালাম দিলেন দুজনকে। শিখা বেগম সালামের উত্তর দিলেন। ভদ্রলোক বললেন,
-আমি মাহীর উদ্দিনের ছেলে। মানে আপনি যাকে খুঁজতে এসেছেন তাঁর ছেলে। আমার নাম সালিম উদ্দিন। আমরা কি আপনাকে কোনভাবে চিনি?
শিখা বেগম বললেন,
-না, আপনি চিনবেন না। মনে করিয়ে দিতে পারলে আপনার বাবা হয়তো চিনবেন। উনাকে একটু ডেকে দেবেন?
-ঠিক আছে, একটু বসুন।
কিছুক্ষণ পর মাহীর উদ্দিনের ছেলে পরিচয় দেওয়া ভদ্রলোক একটা হুইল চেয়ার নিয়ে এলেন ঠেলে ঠেলে। বৃদ্ধ মাহীর উদ্দিন মাথাটা একদিকে কাত করে শোধ-বোধহীনের মতো পড়ে রইলেন। একবার মাথা তুলে তাকালেন না পর্যন্ত। সালিম উদ্দিন বললেন,
-আপনি কি বাবাকে কোন কথা বলতে চান?
শিখা বললেন,
-হ্যাঁ, চাই। অনেক দিন আগের একটি ঘটনা মনে করিয়ে দিতে চাই।
-আপনি বলতে পারেন, কিন্তু তাতে কোন লাভ হবে না। বাবা কিছুই মনে করতে পারবেন না। উনার দশ মিনিট আগের কথাও মনে থাকে না। উনি আলঝেইমার্স-এ আক্রান্ত।
শিখা বললেন- ‘ও’। তাঁর কণ্ঠ ফাটা বেলুনের মতো চুপসে গেল। তিনি মেঘাকে নিয়ে সেখান থেকে বের হয়ে এলেন। শিখা বেগম শাড়ির আঁচলে চোখ মুছলেন। মেঘা বলল,
-মা, আমাকে বল তোমার কীসের এতো দুঃখ? এরকম করে কেঁদো না।

শিখা বেগম বলতে শুরু করলেন,
-তোর তখন সবে জন্ম হয়েছে। তোর বাবার ছোট চাকরিতে আমাদের খুব টানা-পোড়েনে সংসার চলছিল। এর মধ্যে একদিন আবার হুট করে উনার চাকরিও চলে গেল। মাহীর উদ্দিনের অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে গেলাম সহকারী শিক্ষক পদে চাকরীর জন্য। আমার এক আত্মীয় আগেই উনাকে আমার সব কথা বলেছিলেন। আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা, পরিবারের আর্থিক দূর্দশা-সব। সব শুনে উনি তাকে বললেন, বায়োডাটা রেডি করে আমি যেন দেখা করি উনার সাথে। নির্দিষ্ট দিন আমি আমার ইন্টারমিডিয়েটের সার্টিফিকেট নিয়ে উনার সাথে দেখা করলাম। আমার বয়স তখন বিশ-একুশ। মাহীর উদ্দিন বিদেশ থেকে পিএইচডি করে এসে এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তোর বাবা আমাকে বিএ-তে ভর্তি করিয়েছিলেন। কিন্তু আমার মাথায় সারাক্ষণ সংসারের চিন্তা।

এই পর্যন্ত বলে শিখা বেগম থামলেন। মেঘা বলল,
-তারপর?
শিখা আবার বলতে শুরু করলেন,
-মাহীর উদ্দিনের সাথে দেখা করলাম। উনি আমাকে দেখে সাথে সাথে জিহ্বায় কামড় দিয়ে বললেন, ছি ছি! এর হাইট তো একেবারেই কম। এতো খাটো মেয়ে কিভাবে শিক্ষকতা করবে?
আমি উনার কথা শুনে একেবারে হতবাক হয়ে গেলাম। আমি বললাম, স্যার, উচ্চতার সাথে শিক্ষকতার সম্পর্ক কী? শিক্ষকতা মানুষ মাথা দিয়ে করবে, কণ্ঠস্বর দিয়ে করবে, বাচনভঙ্গি দিয়ে করবে, উচ্চতা দিয়ে তো নয়। আমাদের এক স্যার ছিলেন খুব খাটো, কিন্তু তিনি খুব ভালো পাঠদান করতে পারতেন। এই কথা শুনে উনি বললেন, ঐ স্যার নাকি আসলে কোন স্যারই না। আমি যতটা অবাক হয়েছিলাম। তারচে বেশি রেগে গিয়েছিলাম। উনি আমাকে নিজে ডেকে নিয়ে এই অপমানটা করলেন। আমি জানি, আমি খাটো। কিন্তু উনি আমার যোগ্যতা যাচাই না করে……..।

এই পর্যন্ত বলে শিখা বেগম কাঁদতে শুরু করলেন। মেঘা একটা হাত মায়ের ঘাড়ের উপর দিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরল। শিখা বললেন,
-আমার বাবা মারা যাবার পর আমি অনেক জায়গায় অনেক ভাবেই নিগৃহীত হয়েছি। কিন্তু সেদিনকার মতো কষ্ট কখনো পাইনি। আমি সারা রাস্তা কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরেছিলাম। এই জন্যই আজ তোকে নিয়ে এসেছিলাম। মাহীর উদ্দিনকে বলেছিলাম, আপনি একদিন আপনার এই আচরনের জন্য অনুশোচনা করবেন।
মেঘা মাকে শান্তনা দিল এই বলে,
-কেঁদোনা মা, উনি নিশ্চয়ই মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।


পুনশ্চ ১- একটি কলেজে সহকারী শিক্ষক পদে ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে এরকমই একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলাম আমি নিজে। আমাকে ঐভাবে অপমান করা লোকটিও কিন্তু পিএইচডি ইন এডুকেশন, ব্র্যাকেটে লন্ডন।

পুনশ্চ ২- ‘মেঘমালা’ নামে একটি লেখা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করতে শুরু করেছিলাম সামুতে। পান্ডুলিপি আধাআধি লেখা হয়ে গেছে। বই প্রকাশনা জগতের সাথে জড়িত একজন সেটা পড়ে বললেন, এটা যেন আর কোথাও প্রকাশ না করি (উনার মনে হয় কোন পরিকল্পনা আছে, যদিও আমি জানি না কী পরিকল্পনা। :P) । গুরুজনের কথা শুনতে হয়। আমিও শুনি। তাই ওটা প্রকাশ বন্ধ করেছি। সেজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:১৩

সুমন কর বলেছেন: পুনশ্চ ২- জানলাম।

গল্পে ভাল লাগা।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১০

তাশমিন নূর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, সুমন কর ভাই।

ভালো থাকবেন।

২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:১৫

নিলু বলেছেন: মেয়ে কালা হোলেও সমস্যা নেই , যদি হয় জাতের । যোগ্যতা লম্বা / ছোটতে আসে যায় না , তবে লম্বা বুদ্ধি আর ছোট বুদ্ধিতে সমস্যা আছে বোধ হয় । লিখে যান

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১৩

তাশমিন নূর বলেছেন: মেয়ে কালা হোলেও সমস্যা নেই , যদি হয় জাতের । যোগ্যতা লম্বা / ছোটতে আসে যায় না , তবে লম্বা বুদ্ধি আর ছোট বুদ্ধিতে সমস্যা আছে বোধ হয়।


ধন্যবাদ, নিলু। আপনাকে আমার ব্লগে প্রথম দেখলাম মনে হয়। স্বাগতম। অনেক অনেক ভালো থাকবেন।

৩| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:১৯

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: ডক্টর মাহীর উদ্দিন, শিখা বেগমকে উচ্চতায় খাটো বলে অপমান করে চাকুরী বঞ্চিত করেছিলেন। যোগ্যতার বিচারের মানদণ্ড হিসাবে উচ্চতাকে নির্ধারণ করেছিলেন। অথচ মাহীর উদ্দিন একজন শিক্ষক।
অন্যদিকে শিখা বেগম তার মেয়ে মেঘার সাফল্যের কথা শুনিয়ে অপমানের প্রতিশোধ নিতে মাহীর উদ্দিনের বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু মাহীর উদ্দিন অসুস্থ থাকায় অপমান করতে পারেন নাই। তার জন্য শিখা বেগম যখন দুঃখ করছিল, তখন মেয়ে মেঘা ঘটনা জানতে চায়। শিখা বেগমের কাছে বিস্তারিত শুনে মেঘা মাকে তার মাকে বলে,

-কেঁদোনা মা, উনি নিশ্চয়ই মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।

এই একটা বাক্যই মাহীর উদ্দিন ও মেঘার মধ্য থেকে আসল শিক্ষকের স্বরূপটা উঠে আসে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় যে মেঘাকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের পুরুস্কারে ভূষিত করছে সেটা যে শুধু তার ভালো পড়ানোর জন্যই নয় বরং তার নৈতিকতা, নবিকতা, সৌজন্যবোধ, উদারতা আর বিনয়ী মনোভাবের জন্যও, তা ঐ একটা বাক্যে মাহীর উদ্দিনের সম্মান রক্ষা করার মাধ্যমেই প্রমাণিত। ইচ্ছা করলেই মেঘা তার মায়ের অপমানের প্রতিশোধের আগুনে ঘি ঢেলে দিতে পারতো। কিন্তু একজন শিক্ষক হয়ে সে এটা করতে পারে না। এখানেই মেঘার সাথে মাহীর উদ্দিনের মতো শিক্ষকের পার্থক্য। আর এই জন্যই মেঘা শ্রেষ্ঠ শিক্ষক।

'মেঘমালা' কেন প্রকাশ করছেন না জানতে পাড়লাম। লেখকরা যে প্রকাশকের হাতে জিম্মি সেটা আবার অনুধাবন করলাম। পাঠক না হয় চুলোয় যাক!

তারপরও আপনাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন তাশমিন নূর। আপনার উপন্যাসটা পাঠক সমাদৃত হবে বলে আমার বিশ্বাস।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:২১

তাশমিন নূর বলেছেন: "-কেঁদোনা মা, উনি নিশ্চয়ই মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।

এই একটা বাক্যই মাহীর উদ্দিন ও মেঘার মধ্য থেকে আসল শিক্ষকের স্বরূপটা উঠে আসে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় যে মেঘাকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের পুরুস্কারে ভূষিত করছে সেটা যে শুধু তার ভালো পড়ানোর জন্যই নয় বরং তার নৈতিকতা, নবিকতা, সৌজন্যবোধ, উদারতা আর বিনয়ী মনোভাবের জন্যও, তা ঐ একটা বাক্যে মাহীর উদ্দিনের সম্মান রক্ষা করার মাধ্যমেই প্রমাণিত। ইচ্ছা করলেই মেঘা তার মায়ের অপমানের প্রতিশোধের আগুনে ঘি ঢেলে দিতে পারতো। কিন্তু একজন শিক্ষক হয়ে সে এটা করতে পারে না। এখানেই মেঘার সাথে মাহীর উদ্দিনের মতো শিক্ষকের পার্থক্য। আর এই জন্যই মেঘা শ্রেষ্ঠ শিক্ষক।"

হ্যাঁ, দুজন শিক্ষক চরিত্র দিয়ে আমি ঠিক এই জিনিসটিই বোঝাতে চেয়েছি। আর মুন যা বলল তা আমার গল্পের মেসেজ। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।


লেখকরা জিম্মি তা ঠিক হতে পারে। কেননা, নবীন লেখকদের লেখা নিয়ে বই প্রকাশের ক্ষেত্রে পূর্বে কোথাও প্রকাশিত হয়নি এমন লেখা জমা দিতে হবে এরূপ শর্ত দেয়া থাকে। অবশ্য আমি এখনই জোর দিয়ে কিছু বলছি না। শুধু কারনটা জানালাম। যোগাযোগ মন্ত্রীর মতো বলতে চাই- আকাশে চাঁদ উঠলে সবাই দেখতে পাবে। :)


ভালো থাকবেন।


৪| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:০১

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
গল্প পাঠে ভালো লাগা জানবেন।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৪৭

তাশমিন নূর বলেছেন: জানলাম। অনেক ধন্যবাদ। :)


ভালো থাকবেন খুব।

৫| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৫

ডি মুন বলেছেন:
গল্প বেশ ভালো লেগেছে।

মানুষের বিচার হওয়া উচিত তার যোগ্যতার ভিত্তিতে। বয়স, উচ্চতা, গাঁয়ের রঙ, মাথার চুল ইত্যাদির ভিত্তিতে নয়।

++++

পুনশ্চ - ২ এর জন্যে অগ্রিম অভিনন্দন :)

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৪২

তাশমিন নূর বলেছেন: ধন্যবাদ, মুন। আমার গল্পের বার্তাই এটা।


আকাশে চাঁদটা তো উঠুক আগে। :)


ভালো থাকা হোক। শুভকামনা।

৬| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫০

আহমেদ জী এস বলেছেন: তাশমিন নূর ,




আপনার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই গল্পটি কি ? নাকি গল্পটি থেকেই অভিজ্ঞতার কথা মনে হোল ? সম্ভবত প্রথমটি ।
যাই হোক , বাস্তবেও শিখা বেগমের মতো এরকম বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হন অনেকেই । এই সব স্মৃতি ভুলে থাকাই ভালো ।

ডিগ্রীধারী শিক্ষক হলেই যে সবাই জ্ঞানী হবেন এমনটা নয় । এই যেমন আপনার অভিজ্ঞতার কথাই ধরুন । পিএইচডি ইন এডুকেশন, ব্র্যাকেটে লন্ডন এর লোকটি ( লোকটিই বললুম, শিক্ষক নয় ) কি আদৌ শিক্ষক ? পেশা হয়তো শিক্ষকের কিন্তু মোটেও শিক্ষক বা জ্ঞানী নন । বরং এই লেখাটির ভেতর থেকে আপনার নিজের জ্ঞানকেই সমুন্নত দেখছি । কি
করে ? উপরে ব্লগার বিদ্রোহী বাঙালী তা বলে দিয়েছেন আগেই ।

আমার এই লেখাটি হয়তো আপনাকে আশ্বস্ত করতে পারে --- Click This Link



শুভেচ্ছান্তে ।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৩৬

তাশমিন নূর বলেছেন: হ্যাঁ, এটা অভিজ্ঞতা থেকে গল্প। প্রথমে আসলেই খুব মন খারাপ হয়েছিল।


উৎসাহ দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমি আপনার সাথে একমত। শুধু সার্টিফিকেট দিয়ে মানুষ চেনা যায় না।


অনেক ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন। শুভকামনা।

৭| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:০২

আবু শাকিল বলেছেন: ডি মুন ভাইয়ের সাথে সহমত-

"মানুষের বিচার হওয়া উচিত তার যোগ্যতার ভিত্তিতে। বয়স, উচ্চতা, গাঁয়ের রঙ, মাথার চুল ইত্যাদির ভিত্তিতে নয়।

++++

পুনশ্চ - ২ এর জন্যে অগ্রিম অভিনন্দন :)

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৪৮

তাশমিন নূর বলেছেন: ধন্যবাদ, আবু শাকিল ভাই।

ভালো থাকবেন।

৮| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:২৫

হাসান মাহমুদ ১২৩৪ বলেছেন: ভালো লেগেছে :)

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৫০

তাশমিন নূর বলেছেন: ধন্যবাদ, হাসান মাহমুদ ১২৩৪। ভালো থাকবেন।

৯| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৫২

শ্রমজীবি বলেছেন: আপা, একটা কথা বলি, আমাদের দেশের অরিজিনাল রঙ তো কালই। সাদা রঙ এই দেশে থাকারই কথা না। কারণ হল আমাদের দেশের সুর্যের ওয়েদারে হিট বেশি বলে কাল রঙ থাকলে ক্যান্সার কম হয়। সাদা যেই রঙ সেইটা আসছে বিদেশী যারা আসছে বাণিজ্য করতে তাদের শরীর থেকে। আমি সাদাকে ছোট করতে চাই না। কিন্তু কাল সাদার চাইতে আসলে বেশি আমাদের নিজের মনে হয়। যারা সাদা সাদা করে তাদের নিজের প্রতি আস্থা কম। কাল কে ছোট বললে নিজের আম্মা যে কালো সেইটা মনে থাকে না। নিজের বোন যে কাল সেইটাও না।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:০৭

তাশমিন নূর বলেছেন: আপনি চমৎকার একটি কথা বলেছেন। এই বিষয়ে আমার নিজের এক আত্মীয়ার কথা মনে পড়ল, যিনি সব সময় নাতনীর গায়ের রঙ নিয়ে চিন্তিত থাকেন। এগুলো দিনকে দিন আরও প্রকট সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে মনে হয়। তা না হয়, আমাদের দেশে শুধুমাত্র রঙ ফর্সাকারী ক্রিমের কোম্পানীগুলো কিভাবে দাপিয়ে বাণিজ্য করে বেড়াচ্ছে একবার ভেবে দেখুন।

১০| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:১৩

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: গল্প ভালো লাগলো। প্রচণ্ড এক সংগ্রামী নারীর কথা জানলাম।


গুরুজনের কথা শোনার জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছি :) ভাগ্যিস মেঘমালা পড়া শুরু করিনি। একেবারে দুই মলাটের মাঝেই পড়ার আশা রাখলাম :)


ভালো থাকুন। শুভকামনা :)

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:৪৮

তাশমিন নূর বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।
দুয়া করবেন আকাশে চাঁদটা যেন সত্যি সত্যিই ওঠে। :)

অনেক অনেক ভালো থাকুন, মহামহোপাধ্যায়।

১১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: বাস্তব ঘটনা অবলম্বন করে লিখলেই সেটা শক্তিশালী গল্প হয় না। গল্প ভালো হবার জন্যে আরো কিছু জিনিস লাগে। এখানে সেই কিছু জিনিসের কমতি রয়েছে।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৭

তাশমিন নূর বলেছেন: হুম, আরেকটু ভাবা উচিত ছিল। তবে মেইনলি গল্প লেখার চেও ক্ষোভটাই প্রকাশ করতে চেয়েছি, তাই এরকম হয়েছে হয়তো।

ধন্যবাদ, হামা ভাই। ভালো থাকবেন।

১২| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:০৬

জাফরুল মবীন বলেছেন: উচ্চশিক্ষিত হওয়ার পরও যে কেউ কেউ অালোকিত মানুষ হতে পারে না মাহীর উদ্দিনের অাচরণে সেটা ভালভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

অনেক অনেক শুভকামনা জানবেন।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৮

তাশমিন নূর বলেছেন: ধন্যবাদ, মবীন ভাই।

ভাল থাকবেন।

১৩| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৫৯

তুষার কাব্য বলেছেন: দারুন লেগেছে গল্প।

অগ্রিম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন দিয়ে গেলাম... :)

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৯

তাশমিন নূর বলেছেন: ধন্যবাদ, তুষার ভাই।

ভাল থাকবেন। শুভকামনা।

১৪| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২১

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: পুনশ্চ ২- এর জন্য অভিনন্দন । :) আকাশে চাঁদ উঠুক ।/


আহা এমন প্রকাশক ভাগ্য যে কবে হবে !!


-কেঁদোনা মা, উনি নিশ্চয়ই মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।

এই একটা বাক্যই মাহীর উদ্দিন ও মেঘার মধ্য থেকে আসল শিক্ষকের স্বরূপটা উঠে আসে।


বিদ্রোহী বাঙ্গালী ভাইয়ের সাথে একমত ।

ভাল থাকবেন ।
শুভকামনা রইল ।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৪৪

তাশমিন নূর বলেছেন: ধন্যবাদ, মাহমুদ ভাই।


আপনার আকাশে তো চাঁদ কবেই উঠে গেছে। এখন তো শুধুই সামনে এগিয়ে যাওয়া। আমরা তো দোলনার বাসিন্দা। :)


শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.