নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কমবুঝি কিন্ত কিছু একটা নিয়ে বোঝার চেস্টা করি তাই যত পারি বই পড়ি ।

ঠ্যঠা মফিজ

ঠ্যঠা মফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আনজেনের যুদ্ধের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

২৮ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১১:২১


আনজেনের যুদ্ধ ৮৩৮ সালের ২২ জুলাই বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য এবং আব্বাসীয় খিলাফতের মধ্যে আনজেন বা দাজিমনে বর্তমান তুরস্কের দাজমানায় সংঘটিত হয়েছিল। পূর্বের বছরের সম্রাট থিওফিলোসের অভিযানের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে আব্বাসীয়রা দুইটি পৃথক বাহিনী নিয়ে সেসময় ব্যাপক অভিযান চালায়। অন্যতম বৃহৎ বাইজেন্টাইন শহর আমোরিয়াম ছিল আব্বাসীয়দের মূল লক্ষ্যবস্তু। সম্রাট থিওফিলোস তার বাহিনী নিয়ে অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র মুসলিম বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন। মুসলিম বাহিনীর প্রধান ছিলেন ইরানের আঞ্চলিক শাসক আফশিন।প্রথমদিকে সংখ্যাধিক বাইজেন্টাইন বাহিনী সফলতা লাভ করলেও থিওফিলোস ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ পরিচালনা করা থেকে বিরত হওয়ার পর বাইজেন্টাইন সৈনিকরা তার মৃত্যুর কথা ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আফশিনের তুর্কি অশ্বারোহী তীরন্দাজরা প্রবল আক্রমণ চালানোর পর বাইজেন্টাইনরা পালিয়ে যান। থিওফিলোস এবং রক্ষীরা পালানোর পূর্বে একটি পাহাড়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। সেই পরাজয়ের ফলে কয়েক সপ্তাহ পরে আমোরিয়ামে অভিযানের পথ উন্মুক্ত হয়।
৮২৯ সালে থিওফিলোস সিংহাসনে বসেন। তিনি উচ্চাভিলাষী ছিলেন এবং আব্বাসীয়দের বিরুদ্ধে সামরিক সফলতা অর্জন করেন নিজ শাসনকে শক্তিশালী করতে এবং তার ধর্মীয় নীতির প্রতি সমর্থন আদায় করতে চেয়েছিলেন। ৮৩০ সালের দিকে থিওফিলোস খিলাফতের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে অভিযান পরিচালনা করেন। সেসকল অভিযান আংশিকভাবে সফল হলেও থিওফিলোস রোমান কায়দায় বিজয়ী সম্রাট হিসেবে পরিচিতি লাভের জন্য যথেষ্ট ছিল। ৮৩৭ সালে থিওফিলোস ব্যক্তিগতভাবে ফোরাত নদী অঞ্চলে একটি বড় অভিযানে নেতৃত্ব দেন। সেসময় আরসামোসাতা এবং সাজোপেত্রা শহর ধ্বংস করে দেওয়া হয়। তাছাড়াও মালাতিয়া শহরের নিরাপত্তার বিনিময়ে কর প্রদান এবং জিম্মি প্রেরণের জন্য বাধ্য করা হয়েছিল।সে কারণে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে খলিফা আল মুতাসিম মধ্য আনাতোলিয়ার দুটি প্রধান বাইজেন্টাইন শহর আনকাইরা ও আমোরিয়াম দখলের জন্য বাইজেন্টাইনদের বিরুদ্ধে একটি বড় অভিযানের সিদ্ধান্ত নেন। ধারণা করা হয় যে দ্বিতীয় শহরটি তৎকালীন আনাতোলিয়ার সর্ববৃহৎ শহর ছিল। প্রাচীন বিবরণ অনুযায়ী আল মুতাসিমের সৈনিকরা তাদের ঢাল এবং ব্যানারে আমোরিয়াম শব্দটি উৎকীর্ণ করে রেখেছিল। একটি বড় বাহিনী তারসুস শহরে জড়ো হয় একে পরে দুইটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়। উত্তরের বাহিনী ছিল ইরানি আঞ্চলিক শাসক আফশিনের অধীনে। তাকে মালাতিয়ার আমির উমর আল আকতার সাথে যোগ দিয়ে মালাতিয়া অঞ্চল থেকে আর্মেনিয়াক থিমে আক্রমণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। দক্ষিণের বাহিনীকে খলিফা নিজে নেতৃত্ব দেন। তারা সিলিসিয়ান গিরিপথ দিয়ে কাপাডোকিয়া হয়ে আনকাইরা যাত্রার পরিকল্পনা করেন। সেই শহর অধিকার করার আরব বাহিনীগুলি একত্রিত হয়ে আমোরিয়াম আক্রমণের পরিকল্পনা ছিল। একাদশ শতাব্দীর গ্রীক ইতিহাসবিদ জন স্কাইলিটজেসের বর্ণনা অনুযায়ী আফশিনের বাহিনীতে আর্মেনীয় রাজাদের পুরো সেনাবাহিনী অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং তাদের সংখ্যা ছিল ২০,০০০ থেকে ৩০,০০০ যাদের মধ্যে ১০,০০০ ছিল তুর্কি অশ্বারোহী তীরন্দাজ।

অন্যদিকে সম্রাট থিওফিলোস খলিফা আল মুতাসিমের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে পারেন এবং জুনের শুরুর দিকে কনস্টান্টিনোপল থেকে যাত্রা শুরু করেন। বাইজেন্টাইনরা ডোরিলাইয়ামে শিবির স্থাপন করেন। সেখানে বাইজেন্টাইন বাহিনীকে বিভক্ত করা হয়। আমোরিয়ামের সুরক্ষার জন্য একটি শক্তিশালী বাহিনী প্রেরণ করা হয় এবং সম্রাট নিজে বাকি ২৫,০০০ থেকে ৪০,০০০ সৈনিক নিয়ে সামনে অগ্রসর হন।
জুনের মধ্যভাগে আফশিন তোরোসের বিপরীত পর্বতমালা অতিক্রম করে দাজিমনের দুর্গে শিবির স্থাপন করেন। এর অবস্থান ছিল আমাসেইয়া এবং তোকাতের মধ্যবর্তী স্থানে ও এটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কয়েকদিন পরে ১৯ জুন আব্বাসীয় বাহিনীর একটি অগ্রবর্তী দল বাইজেন্টাইন অঞ্চলে আক্রমণ চালায় এবং তার দুইদিন পরে খলিফা মূল বাহিনী নিয়ে যোগ দেন। মধ্য জুলাইয়ে থিওফিলোস এই সংক্রান্ত খবর পান। আফশিনের বাহিনী আকারে ছোট ছিল এবং সরবরাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ঝুকি ছিল। সেসময় থিওফিলোস খলিফার বাহিনীর সাথে মোকাবেলা করার জন্য একটি ক্ষুদ্র সেনাদল রেখে আফশিনের সাথে লড়াইয়ের জন্য পূর্ব দিকে অগ্রসর হন। ২১শে জুলাই বাইজেন্টাইনরা আরব বাহিনীর দেখা পায় এবং দাজিমন দুর্গের দক্ষিণে পাহাড়ে শিবির স্থাপন করেন।
থিওফিলোসের প্রধান কমান্ডার থিওফোবোস ও ম্যানুয়েল উভয়ে রাতের বেলা ঝটিকা আক্রমণের পরামর্শ প্রদান করলেও সম্রাট অন্য অফিসারদের প্রস্তাবে সায় দেন এবং পরের দিন আক্রমণ চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। বাইজেন্টাইনরা ভোরে আক্রমণ করে এবং প্রাথমিকভাবে সফলতা লাভ করে। আরব বাহিনীর একটি পার্শ্বভাগ ব্যাপক আক্রান্ত হয় এবং আরবদের পক্ষে ৩,০০০ জন হতাহত হয়। দুপুরের দিকে থিওফিলোস অন্য পার্শ্বভাগে আক্রমণের জন্য ২,০০০ বাইজেন্টাইন ও কুর্দিকে প্রেরণ করেন এবং নিজ অবস্থান ত্যাগ করে বাহিনীর পেছনে অবস্থান নেন। সেসময় আফশিন তার তুর্কি অশ্বারোহী তীরন্দাজদের মাঠে নামান। তাদের মারাত্মক আক্রমণের ফলে বাইজেন্টাইনরা বাঁধা পায় এবং আরবরা সংগঠিত হওয়ার সুযোগ পায়। সেসময় বাইজেন্টাইনরা সম্রাটের অনুপস্থিতি লক্ষ্য করে এবং তার মৃত্যুর কথা ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ফলে দ্রুত সেনারা পিছু হটতে থাকে।তার ফলে থিওফিলোস তার বাহিনী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। আরবরা পাহাড় ঘিরে ফেলার জন্য অগ্রসর হয় কিন্তু আকস্মিক বৃষ্টিপাতের ফলে বাইজেন্টাইনরা বেঁচে যান। আফশিন এরপর আক্রমণের জন্য ক্যাটাপুল্ট প্রেরণ করেন। সেসময় থিওফিলোসের অফিসাররা পিছু হটার পরামর্শ দেন এবং থিওফিলোস তার ক্ষুদ্র দল নিয়ে চিলিওকোমোন পৌছায়। সেখানে তিনি সেনাবাহিনীর বাকি অংশকে সংগঠিত করতে থাকেন।

পরাজয় এবং মৃত্যুর খবর প্রচারিত হওয়ার ফলে থিওফিলোসের অবস্থান বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। তিনি অভিযান ত্যাগ করে ডোরিলাইয়ামে পিছু হটেন এবং সেখান থেকে দ্রুত রাজধানী রওয়ানা হন। আনকাইরা শহরও ত্যাগ করা হয় এবং ২৭শে জুলাই আরবরা এখানে আক্রমণ করে। তারপর সম্মিলিত আব্বাসীয় বাহিনী আমোরিয়ামের দিকে অগ্রসর হয়। দুই সপ্তাহ অবরোধের পর শহরের পতন ঘটে। ৯ম শতাব্দীতে বাইজেন্টাইনদের আক্রমণের মধ্যে শহরের পতন অন্যতম মারাত্মক ঘটনা ছিল। অন্যদিকে বিদ্রোহের খবর পাওয়ার ফলে খলিফা আল মুতাসিমও আর সামনে অগ্রসর হননি।একই সময়ে থিওফিলোসকেও থিওফোবোস ও তার কুর্দিদের বিদ্রোহের মোকাবেলা করতে হয়। থিওফিলোসের মৃত্যুর খবর রাজধানীতে পৌছানোর পর কেউ কেউ নতুন সম্রাট হিসেবে থিওফিলোসের নাম প্রস্তাব করেন। রাজধানীতে ফেরার পর থিওফিলোস তাকে তলব করেন কিন্তু শাস্তির ভয়ে থিওফোবোস তার অনুগত কুর্দিদের নিয়ে সিনোপে পালিয়ে যান এবং সেখানে নিজেকে সম্রাট ঘোষণা করেন।পরের বছর থিওফোবোস শান্তিপূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করতে রাজি হন।

তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৩২

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: সালাম,

ভালো লাগলো, নতুন কিছু জানতে পারলাম।

২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:২৪

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ শাহাদাৎ ভাই ।

২| ২৮ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১:১০

শান্তনু চৌধুরী শান্তু বলেছেন: অনেক কিছু জানা গেলো । তবে জাস্ট গতানুগতিক ইতিহাস। এর ফল নিয়ে আরেকটু বিস্তারিত আলোচনা করা উচিৎ ছিলো ।

২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:২৫

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ শান্তনু ভাই । দেখি সময় পেলে বিস্তারিত আলোচনা করবো ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.