নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কমবুঝি কিন্ত কিছু একটা নিয়ে বোঝার চেস্টা করি তাই যত পারি বই পড়ি ।

ঠ্যঠা মফিজ

ঠ্যঠা মফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা সাহিত্যিক সৈয়দ আলী আহসান এর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি

২৫ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৬


সৈয়দ আলী আহসান বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা সাহিত্যিক কবি, সাহিত্য সমালোচক, অনুবাদক, প্রাবন্ধিক এবং শিক্ষাবিদ। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছেন । তিনি তার পাণ্ডিত্যের জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন। সৈয়দ আলী আহসান কৃত বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের ইংরেজি অনুবাদ সরকারি ভাষান্তর হিসাবে স্বীকৃত। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, কবি, প্রাবিন্ধিক, গবেষক, সম্পাদক, অনুবাদক ও জাতীয় অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান ১৯২২ খ্রীস্টাব্দের ২৬শে মার্চ বর্তমান মাগুরা জেলার আলোকদিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পুরোনো ঢাকা শহরের আরমানিটোলায় অবস্থিত আরমানিটোলা সরকারি হাইস্কুল থেকে এন্ট্রান্স এসএসসি এবং ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ বর্তমানে ঢাকা কলেজ থেকে এফএ এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে ১৯৪৩ সালে স্নাতক বিএ এবং ১৯৪৪ সালে স্নাতকোত্তর এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তারপর তিনি কলকাতা চলে যান। সেখানেই তিনি ১৯৪৬ সালের ৭ জুলাই বিয়ে করেন। তারপর যথাক্রমে অল ইন্ডিয়া রেডিও কলকাতা কেন্দ্রে এবং রেডিও পাকিস্তান ঢাকা কেন্দ্রে কর্মসূচি নিয়ামকরূপে চাকুরি করেছেন। তিনি ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৫৩ খ্রীস্টাব্দে সৈয়দ আলী আহসান করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান নিযুক্ত হন। ১৯৬০ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত সে পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৬০ সাল থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমীর পরিচালক প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তারপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এবং অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর পুনরায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে প্রত্যাবর্তন করেন। ১৯৭৫ সালে ২৭শে সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০২ সালের ২৫শে জুলাই তিনি ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। তাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
তিনি ১৯৭৭ থেকে ৭৮ সালে বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও ধর্ম সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা পদে নিযুক্ত ছিলেন। সুইডেনের নোবেল কমিটির সাহিত্য শাখার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত। ১৯৮৯ সালে তিনি জাতীয় অধ্যাপক হিসাবে অভিষিক্ত হন এবং সে বছরই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। শেষ বয়সে দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটির উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জাহাঙ্হীর নগর এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবেও তিনি শিক্ষামহলে বেশ পরিচিত।

১৯৭১ সালে সৈয়দ আলী আহসান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক হিসেবে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। সে সময় তিনি চেনাকণ্ঠ ছদ্মনামে পরিচিত ছিলেন।কবিতা সম্বন্ধে সৈয়দ আলী আহসানের ধ্যান ধারণা সমকালীন কবিদের চিন্তাভাবনার সঙ্গে তেমন একটা সাজুয্য রক্ষা করে চলেনি। যদিও তার রচনরায় রয়েছে ঐতিহ্য চেতনা, সৌন্দর্যবোধ এবং স্বদেশপ্রীতি, যা অন্য কবিদের লেখাতেও বর্তমান। কবির অসংখ্য গ্রন্থের মধ্যে ‘একক সন্ধ্যায় বসন্ত কে সেরা সংকলন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।একক সন্ধ্যায় বসন্ত কাব্যগ্রন্থে প্রধানত গদ্য কবিতা স্থান পেয়েছে, সেই গদ্য কবিতা রবীন্দ্রনাথ এবং ত্রিশের কবিদের গদ্য কবিতা থেকে পৃথক কেন না তার কবিতায় উপমা ও শব্দ ব্যবহারে রয়েছে নতুনত্ব এবং আধুনিকতা। উপমা ব্যবহারে জীবনানন্দ দাশের সঙ্গে তার পার্থক্য এই যে জীবনানন্দে আছে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য উপমা আর সৈয়দ আলী আহসান প্রধানত ব্যবহার করেছেন বিমূর্ত উপমা। তার উপমার কারুকাজ স্থাপনা কৌশল সচেতন পাঠককে মুগ্ধ করে। তার সন্ধ্যায় বসন্ত কাব্য সংকলনের শ্রেষ্ঠ কবিতা প্রার্থনা এবং আমার পূর্ববাংলা কবিতা। তার কবি প্রতিভার উদাহরণ পাওয়া যায় নিম্নোক্ত চরণগুলোতেঃ

এভাবেই আমার দিন রাত্রির অধীরতা
অনেক বনের মধ্য দিয়ে
অনেক নদী সমুদ্রের স্বচ্ছতায়
একদিন হয়তো পাহাড়ের দুর্গমতায়
পাথরের নিশ্চেতন সংকট পার হয়ে
ইউলিসিস ইথাকায় ফিরবে।


(প্রার্থনা একক সন্ধ্যায় বসন্ত)

প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ

সৈয়দ আলী আহসানের প্রকাশিত গ্রন্থের তালিকা নিচে প্রদান করা হলো। তাছাড়াও তিনি আরো কিছু গ্রন্থ রচনা করেন।।
কাব্যগ্রন্থ

অনেক আকাশ (১৯৬০ সাল)
একক সন্ধ্যায় বসন্ত (১৯৬২ সাল)
সহসা সচকিত (১৯৬৮সাল)
উচ্চারণ (১৯৬৮সাল)
আমার প্রতিদিনের শব্দ (১৯৭৩সাল)
প্রেম যেখানে সর্বস্ব

প্রবন্ধ গ্রন্থ

বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত (আধুনিক যুগ) মুহম্মদ আবদুল হাইয়ের সাথে (১৯৫৬ সালে)
কবিতার কথা (১৯৫৭সাল)
কবিতার কথা ও অন্যান্য বিবেচনা (১৯৬৮সাল)
আধুনিক বাংলা কবিতাঃ শব্দের অনুষঙ্গে (১৯৭০সালে)
রবীন্দ্রনাথঃ কাব্য বিচারের ভূমিকা (১৯৭৩সাল) মধুসূদনঃ কবিকৃতি ও কাব্যাদর্শ (১৯৭৬সালে)
আধুনিক জার্মান সাহিত্য (১৯৭৬সালে)

বাংলা সাহিত্যে ইতিহাস মধ্যযুগ
শিল্পবোধ এবং শিল্পচৈতন্য ।

সম্পাদিত গ্রন্থঃ

পদ্মাবতী (১৯৬৮ সালে )
মধুমালতী (১৯৭১ সালে )

অনূদিত গ্রন্থঃ

ইকবালের কবিতা (১৯৫২ সালে )
প্রেমের কবিতা (১৯৬০ সালে )
ইতিহাস (১৯৬৮সালে)

ইসলামী গ্রন্থঃ

মহানবী
আল্লাহ আমার প্রভু

অন্যান্য গ্রন্থঃ

যখন সময় এলো
রক্তাক্ত বাংলা
পাণ্ডুলিপি
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা
রজনীগন্ধা
চর্যাগীতিকা
আমাদের আত্মপরিচয় এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ
১৯৭৫ সাল
বাংলাদেশের সংস্কৃতি

কবি প্রতিভার মূল্যায়ন

সেনেগালের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফরাসি ভাষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি লিউপোল্ড সেডর সেংঘর ছিলেন কবি সৈয়দ আলী আহসানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সৈয়দ আলী আহসানকে নিয়ে লেখা তার কবিতায় তিনি বলেছিলেনঃ

তুমি এলে।
তোমার চোখ আমার চোখের
সামনে দিয়ে চলে গেল,
তোমার চোখ ঈষদুষ্ণ বাড়ির স্পর্শে
চুম্বকের স্বাদ পেল।


সেংঘরের এই কথা যে যথার্থ তার প্রমাণ আমরা পাব অন্নদাশংকর রায়ের লেখায় তিনি একজন সত্যিকার কবি। যেমনঃ হৃদয়বান, তেমনি রূপদর্শী। যে ভাষায় তিনি লেখেন তা খাঁটি বাংলা। তার কবি পরিচয়ই শ্রেষ্ঠ পরিচয়।আধুনিক উর্দু সাহিত্যের প্রখ্যাত কবি কলিম সাসারামী সৈয়দ আলী আহসানের ষাটতম জন্মদিনে তাকে শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন এই বলেনঃ যখন বিধাতা সাহিত্যের জন্য একটি উজ্জ্বল কেন্দ্রবিন্দুর কথা ভাবলেন, সৈয়দ আলী আহসান সাহিত্যের দিগন্তে আবির্ভূত হলেন কিরণসঞ্চারি সূর্যের মতো। এবং তখন কাব্যলোক আনন্দের সারত্সার এবং উচ্ছলতা উত্ফুল্লে নৃত্যরত হলো। স্বর্গ থেকে ধরিত্রী পর্যন্ত উপাদান সঙ্গীতে সমৃদ্ধ হলো।

পুরস্কার এবং সম্মাননাঃ

বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬৮সালে)
দাউদ পুরস্কার (১৯৬৯সালে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রাক্কালে প্রত্যাখ্যান)
শেরে বাংলা পুরস্কার
সুফি মোতাহার হোসেন স্বর্ণপদক (১৯৭৬সালে)
বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ব একুশে পদক (১৯৮২সালে )
নাসির উদ্দীন স্বর্ণপদক (১৯৮৫সালে)
মধুসূদন পুরস্কার (১৯৮৫সালে)
স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৮৭সালে)
জাতীয় অধ্যাপকরূপে নিযুক্তি (১৯৮৯সালে)
কিশোরকণ্ঠ সাহিত্য পুরস্কার (মরণোত্তর)২০০৩ সালে ।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৯

কোলড বলেছেন: Strangely, you will hardly find any article on Syed Ahsan and Alauddin Al Azad's writings. I think Syed Ahsan was an intellectual in the truest sense.

২৬ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৩৮

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন:
thanks brother . Although I have not yet posted any political uddhase beautiful thank you very much for your comments.

২| ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৭:২৮

কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: অসামান্য গুণী কবির প্রতি শ্রদ্ধা
পোষ্টে ভালোলাগা এবং বরাবরের মতনই প্রিয়তে।

২৬ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৩৯

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় কবি প্রিয় কি করি আজ ভেবে না পাই ভাই ।

৩| ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৮:৩৬

দইজ্জার তুআন বলেছেন: ভালো লাগা

২৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৩৯

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য ভাই দইজ্জার তুআন ।

৪| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৮:১৪

নাইক্যডিয়া বলেছেন: ++++++++++++++

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:২০

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.