নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কমবুঝি কিন্ত কিছু একটা নিয়ে বোঝার চেস্টা করি তাই যত পারি বই পড়ি ।

ঠ্যঠা মফিজ

ঠ্যঠা মফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মালওয়া সালতানাত এর ইতিহাস

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:২৭


মালওয়া সালতানাত ছিল মধ্যযুগে ১৩৯২সাল থেকে ১৫৬২ সাল পর্যন্ত ভারতের একটি তুর্ক আফগান বংশোদ্ভূত রাজ্য। মালওয়ায় দিল্লি সালতানাতের গভর্নর দিলাওয়ার খান ঘুরি মালওয়া সালতানাত প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৩৯২ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করলেও ১৪০১ সালের পূর্ব পর্যন্ত রাজকীয় প্রতীক ধারণ করেননি। প্রথমে ধার ছিল রাজ্যের রাজধানী। কিন্তু শীঘ্রই তা মান্ডুতে স্থানান্তর করা হয় এবং রাজধানীর নতুন নাম রাখা হয় শাদিয়াবাদ। তার মৃত্যুর পর তার পুত্র আল্প খান শাসক হন এবং হোশাং শাহ উপাধি ধারণ করেন। প্রথম মাহমুদ শাহ ১৪৩৬ সালের ১৬ মে নতুন সুলতান হন এবং খিলজি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন। তার প্রতিষ্ঠিত খিলজি রাজবংশ ১৫৩১ সাল পর্যন্ত মালওয়া শাসন করেছে। প্রথম মাহমুদের পর তার জ্যেষ্ঠ পুত্র গিয়াসউদ্দিন সুলতান হন। গিয়াসউদ্দিনের শাসনের শেষ দিকে তার দুই পুত্র নাসিরউদ্দিন ও আলাউদ্দিনের মধ্যে সিংহাসনের উত্তরাধিকার নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে নাসিরউদ্দিন বিজয়ী হন এবং ১৫০০ সালের ২২ অক্টোবর সিংহাসনে বসেন। ১৫৩১ সালের ২৫ মে মান্ডু দুর্গ গুজরাটের সুলতান বাহাদুর শাহের কাছে পরাজিত হওয়ার পর শেষ শাসক দ্বিতীয় মাহমুদ শাহ আত্মসমর্পণ করেন।

মুঘল সম্রাট হুমায়ুন ১৫৩৫-৩৬ সালের সংক্ষিপ্ত সময় মালওয়া দখল করে নিলেও ১৫৩১-১৫৩৭ সাল পর্যন্ত মালওয়া বাহাদুর শাহর নিয়ন্ত্রণে ছিল। ১৫৩৭ সালে সাবেক খিলজি রাজবংশের একজন কর্মকর্তা কাদির শাহ রাজ্যের পূর্বাঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু ১৫৪২ সালে শের শাহ সুরি তাকে পরাজিত করে মালওয়া অধিকার করেন এবং শুজাত খানকে গভর্নর নিয়োগ দেন। তার পুত্র বাজ বাহাদুর ১৫৫৫ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ১৫৬১ সালে আধম খান ও পীর মুহাম্মদ খানের নেতৃত্বে আকবরের সেনারা মালওয়া আক্রমণ করে এবং ১৫৬১ সালের ২৯ মার্চ সারাংপুরের যুদ্ধে বাজ বাহাদুরকে পরাজিত করে। এরপর আকবর আধম খানকে ফিরিয়ে আনেন এবং পীর মুহাম্মদকে দায়িত্বপ্রদান করেন। পীর মুহাম্মদ খান কানদেশ আক্রমণ করে বুরহানপুর পর্যন্ত অগ্রসর হন। কিন্তু কানদেশের দ্বিতীয় মিরান মুবারক শাহ, বেরারের তুফাল খান এবং বাজ বাহাদুরের সম্মিলিত জোটবাহিনীর কাছে তিনি পরাজিত হন। পিছু হটার সময় পীর মুহাম্মদ মারা যান। জোটবাহিনী মুঘলদেরকে মালওয়া থেকে বিতাড়িত করে। বাজ বাহাদুর সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য সালতানাতে নিজের ক্ষমতা ফিরে পান। ১৫৬২ সালে আবদুল্লাহ খানের নেতৃত্বে আকবর দ্বিতীয় একটি বাহিনী পাঠান। এই বাহিনী বাজ বাহাদুরকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করে। তিনি চিতোর পালিয়ে যান। মালওয়া মুঘল সাম্রাজ্যের সুবায় পরিণত হয় এবং আবদুল্লাহ খান এর প্রথম সুবাদার হন।

মালওয়া সালতানাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ চিত্রায়িত পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত হয়েছিল। প্রথম মাহমুদ শাহর শাসনামলে কল্প সূত্র (১৪৩৯সাল) গ্রন্থের একটি চিত্রায়িত পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত হয়েছিল। রন্ধনশৈলীর উপর লিখিত নিমত নামা একটি গুরুত্বপূর্ণ পাণ্ডুলিপি। এতে গিয়াসউদ্দিন শাহর পোর্ট্রে‌ট রয়েছে। তবে বইয়ের শেষে নাসিরউদ্দিনের নাম রয়েছে। এই যুগের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চিত্রায়িত পাণ্ডুলিপির মধ্যে রয়েছে মিফতাহ-উল-ফুজালা, বুস্তান (১৫০২সাল) এবং আজাইব-উস-সানআতি (১৫০৮সাল)। আনোয়ার-ই-সুহাইলি পান্ডুলিপিও এই যুগের বলে ধারণা করা হয়।সালতানাতের যুগে নির্মিত স্মৃতিসৌধগুলির অধিকাংশ মান্ডু শহর কেন্দ্রিক। এসবের মধ্যে রয়েছে কামাল মাওলা মসজিদ (আনুমানিক ১৪০০), লাল মসজিদ (১৪০৫সাল), দিলাওয়ার খানের মসজিদ (আনুমানিক ১৪০৫সাল) এবং মালিক মুগিসের মসজিদ (১৪৫২সাল)।

হোশাং শাহ মান্ডু দুর্গের ভিত্তি স্থাপন করেন। তার মাধ্যমে মালওয়া স্থাপত্যের দ্বিতীয় ও ধ্রুপদি ধারা শুরু হয়। মান্ডু দুর্গের ২৫ মাইল দেয়ালের দশটি দরজার কয়েকটি মালওয়া সুলতানগণ নির্মাণ করেছিলেন। এর মধ্যে দিল্লি দারওয়াজা সবচেয়ে প্রাচীন। দুর্গের দেয়ালের ভেতর শুধু চল্লিশটি স্থাপনা টিকে রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় স্থাপনা হল জামে মসজিদ। শিলালিপি অনুযায়ী এটি হোশাং শাহর সময় নির্মাণ শুরু হয় এবং প্রথম মাহমুদ শাহর সময় ১৪৫৪ সালে নির্মাণ শেষ হয়। হিন্দোলা মহল নামে পরিচিত আকর্ষণীয় দরবার কক্ষ হোশাং শাহর সময় নির্মিত। জামে মসজিদের বিপরীতে অবস্থিত আশরাফি মহল বেশ কয়েকটি ভবন নিয়ে গঠিত এবং এগুলি বিভিন্ন সময় নির্মিত হয়েছে। এর মূল কেন্দ্র ছিল একটি মাদ্রাসা ভবন। এটি হোশাং শাহর সময় নির্মিত বলে ধারণা করা হয়। মুহাম্মদ কাসিম ফিরিশতার মতে প্রথম মাহমুদ শাহ কর্তৃক হোশাং শাহর মাজার নির্মিত হয়েছিল। দারিয়া খানের মাজার দাই কা মহল এবং ছাপ্পান মহলসহ আরো কিছু সমাধি একই নকশায় নির্মিত। দুইটি হ্রদের মধ্যবর্তী স্থানে নির্মিত দীর্ঘ স্থাপনা জাহাজ মহল নামে পরিচিত। এর নির্মাণের তারিখ নির্দিষ্টভাবে জানা যায় না তবে নকশার দিক থেকে এটির সাথে গিয়াসউদ্দিন খিলজির যুগের স্থাপত্যের মিল রয়েছে। রিওয়া কুন্ডের পাশে পাহাড়ের ঢালে নির্মিত ভবনটি স্থানীয়ভাবে বাজ বাহাদুরের প্রাসাদ নামে পরিচিত। শিলালিপি অনুযায়ী এটি নাসিরউদ্দিন শাহর সময় নির্মিত হয়েছিল। উচ্চভূমির দক্ষিণ প্রান্তে রাণী রূপমতি প্যাভেলিয়ন অবস্থিত। এর অবস্থান ও গঠনগত কারণে এটি সামরিক উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:১৭

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:

তুর্কিরা বড়ই যালিম আর বর্বর ছিল। তাদের ইতিহাস, ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলা উচিত।

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:০৩

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: সে আপনাদের যা ভালো মনে হয়।

২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১১

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: ভ্রমরের ডানা বলেছেন:

তুর্কিরা বড়ই যালিম আর বর্বর ছিল। তাদের ইতিহাস, ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলা উচিত।


সহমত আমিও।

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:০৩

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: সে আপনাদের যা ভালো মনে হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.