নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কমবুঝি কিন্ত কিছু একটা নিয়ে বোঝার চেস্টা করি তাই যত পারি বই পড়ি ।

ঠ্যঠা মফিজ

ঠ্যঠা মফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাখাইন এবং রাখাইনদের ইতিহাস ()

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:১১

আধুনিক পোশাকে একজন রাখাইন তরুণী
রাখাইন বাংলাদেশে বসবাসরত একটি আদিবাসী জনগোষ্ঠী,রাখাইন শব্দটির উৎস পলি ভাষা। প্রথমে একে বলা হত রক্ষাইন যার অর্থ রক্ষণশীল জাতি। রাখাইন জাতির আবির্ভাব হয় খৃষ্টপূর্ব ৩৩১৫ বছর আগে। ঐতিহাসিক তথ্যানুসারে, ১৭৮৪ সালে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং পটুয়াখালীতে রাখাইনদের আগমন ঘটে। মূলত সেসময় বার্মিজ রাজা বোদোপ্রা আরাকান রাজ্য জয় করেন। তার জয়লাভের পর ভয় পেয়ে বিপুল সংখ্যক রাখাইন সমপ্রদায়ের লোক পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। আরাকানের মেঘবতির সান্ধ্যে জেলা থেকে দেড়শ রাখাইন পরিবার বাঁচার আশায় পঞ্চাশটি নৌকাযোগে অজানার উদ্দেশ্যে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দেয়। কয়েকদিন পর তারা কূলের সন্ধান পায় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী দ্বীপে। এই দ্বীপে তারা বসতি স্থাপন করেন এবং তাদের সঙ্গে করে আনা ধান এবং অন্যান্য ফল মূলের বীজ বপন করে সেখানে জমি আবাদ শুরু করেন। রাখাইনদের বিভিন্ন দলের নেতৃত্বদানকারী প্রধানগণ ছিলেন ক্যাপ্টেন প্যোঅং, উঃগোম্বাগ্রী এবং অক্যো চৌধুরী। কয়েকবছর পর বেশি ফসলের আশায় তারা রাঙ্গাবালী ছেড়ে চলে যান মৌডুবিতে। লোকসংখ্যা বাড়লে তারা ছড়িয়ে পড়ে বড়বাইশদিয়া, ছোটবাইশদিয়া, কুয়াকাটা, টিয়াখালী, বালিয়াতলী, বগীসহ বিভিন্ন দ্বীপ এলাকাগুলোতে।আর্য বংশোদ্ভূত প্রকৃতি উপাসক রাখাইনরা প্রাচীনযুগে মগধ রাজ্যে বসবাস করত। উল্লেখিত সময়ে মগধ থেকে রখঙ্গ, রখাইঙ্গপি, আরখঙ্গ, রোসাঙ্গ, রাখাইনপ্রে বা আরাকানে এসে বসবাস শুরু করলে মগধী বা মগ রূপে ইতিহাসে পরিচিতি লাভ করেন।প্রায় তিন হাজার বছর আগে আরাকানে আস্সাং নাগিদ্ধা নামক ঋষি আদি শিলালিপিতে লিখেছিলেন আম্মিও সিলা নেথা নাহ্-গো, প্রে-ওয়া মেন-দাই, চাঙ থিং নাই-মা রাখাইন না-মা বো-য়ে মি-হ্লা-গো আন্নোথা ছাই নিয়া খ-এ রা-দে। যার অর্থ জাতি ও শীল এই দুইটিকে স্মৃতিসৌধের মত যিনি সার্বক্ষণিক রক্ষা করতে সক্ষম হবেন তিনিই রাখাইন। এটি যিনি যতদিন বজায় রাখতে পারবেন তিনি ততদিন এই বিশেষণে বিশেষিত হবেন। রাখাইনদের মধ্যে বিশ্বাস যে সুদূর অতীতে ২৬ জন ব্রাহ্মণ রাজা আরাকান শাসন করেন। রাখাইন রাজা মারিও থেকে মহা সামাদা, ১৭৮৪ সালে পর্যন্ত মোট ২৩৪ জন আরাকান শাসন করেন। এই শাসনকাল ইতিহাসে ধন্যাবতী, বৈশালী, লেম্রু ও ম্রাউ যুগ হিসাবে চিহ্নিত।

আরাকানের ইতিহাস রাজোয়াং সূত্র মতে ১৪৬৪ সালে রাজা চন্দ্র-সূর্য চট্টগ্রাম-আরাকান রাজ্য প্রতিষ্ঠাকালে তার সঙ্গী মগধাগত বৌদ্ধ সৈন্যরা চট্টগ্রাম তথা কক্সবাজার আসেন। আরাকানী রাজা সুল-তৈংগ-চন্দয়স সুরতন রাজ্য জয়ে বের হলে ৯৫০ সালে একবার চট্টগ্রামের কুমিরা পর্যন্ত অধিকার করে আরাকানী শব্দ চাই মাতাই কং বা চেত্তগৌং অর্থাৎ আর যুদ্ধ নয়, খোদিত বিজয় স্তম্ভ স্থাপন করেছিলেন। মুগলরা মার্মাদের বসবাস পছন্দ করতেন না বলে ১৬৬৬ সালে শায়েস্তা খানের সময়ে বাংলাদেশের কক্সবাজার-চট্টগ্রামে মগজমা নামে কর বসানো শুরু করেন। এ.পি ফিরের বর্ণনাতে লেম্রু যুগের শেষে বার্মার রাজা বো-দ-মাও ওয়ে আরাকান দখল করলে রাজা মেঙ সোয়ামাউ (জি.ই হার্ভের হিস্টরি অব বার্মা’য় যার নাম নরমিখিলা) বাংলার (গৌড়) স্বাধীন সুলতানের কাছে ১৪০৬ সালে আশ্রয় নেয়। পরে সুলতান জালাল উদ্দীন মুহাম্মদ শাহ দুই দফায় লক্ষাধিক সৈন্য দিলে মেঙ সোয়ে মাউ ১৪৩০ সালে আরাকান পুনরুদ্ধার করেন।

তৎসময়ের কিছু রৌপ্য মুদ্রা এপি ফিরে আবিষ্কার করেন। ব্রিটিশ মিউজিয়ামে এই ধরনের কয়েকটি মুদ্রা এখনো সংরক্ষিত রয়েছে। ইতিপূর্বে আরাকানে সাংকেতিক মুদ্রার প্রচলন ছিল। সেই থেকে আরাকানী রাজারা রাখাইন এবং মুসলমানী (ফার্সি) নাম এবং কলেমা মুদ্রায় উৎকীর্ণ করতে থাকে। মেঙ সোয়ে মাউ (মাং চ মোয়ে) ম্রাউক নগরীতে রাজধানী স্থাপন করে ম্রাউ যুগের সূচনা করেন।
মধ্য-আঠারো শতকে আমত্য হারির আমন্ত্রণে ১৭৮৪ সালে বর্মী রাজ আরাকান দখল করেন। ১৭৯১ সালে ওয়েমোর নেতৃত্বে কক্সবাজার থেকে আরাকান গিয়ে পূর্বের গণহত্যার প্রতিশোধ নিয়ে ফিরে আসেন। ১৭৯৬ সালে আরাকানে দেশব্যাপী বিদ্রোহ হয়। তার ফলে অনেক আরাকানী কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেন। ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স এক কথায় যার নামানুসারে কক্সবাজার,তিনি ১৭৯৯ সালে কক্সবাজারের সুপারিনটেনডেন্ট নিযুক্ত হন। তিনি উদ্বাস্ত্তদের পুনর্বাসনের নীতিমালা প্রণয়ন, স্থান নির্ধারণ এবং জমি পত্তনি দেওয়ার সময় শের মোস্তফা খান, কালিচরণ, সাদ উদ্দীন প্রভৃতি ভূস্বামীগণ দ্বন্দ্ব শুরু করেন। ১৮১৭ সালে পিচেলের চেষ্টায় কক্সবাজারের সরকারি সম্পত্তি প্রকৃত ব্যবসায়ীদের জন্য করমুক্ত ঘোষণা করেন।
টংক হার’ পরিহিত একজন রাখাইন তরুণী
১৭৯৯সালের জুলাই তে হিরাম কক্স এক রিপোর্টে আগত রাখাইনদের বসতি স্থাপনের সংখ্যা জানিয়েছিলেন ৪০থেকে ৫০ হাজারের মত। ১৮০০ থেকে ১৮১৩ সালের ২৯ জানুয়ারি তারিখের রিপোর্ট মতে, ১৪,৪৫১ জনকে পূনর্বাসন করা হয়। কোম্পানি ১৮০০ সালের মে মাসে রাখাইনদের অধিকতর অভিবাসন বন্ধের আদেশনামা জারি করেন। ১৭৮৫ সালের তামাদা পালিয়ে গেলে ব্রাহ্মরাজ বোধ পায়া আরাকানকে ব্রহ্মদেশের সাথে অর্ন্তভুক্ত করে প্রায় দুই লক্ষ আরাকানী নারী-পুরুষ হত্যা করেছিল এবং সমসংখ্যক দাস হিসেবে বার্মায় প্রেরণ করা হয়েছিল। স্যার ওয়ান্টার হেমিল্টন রামুতে প্রায় লক্ষাধিক আরাকানী শরণার্থী দেখেছিলেন। ইংরেজরা তাদেরকে দ্বিতীয় দফায় কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং পটুয়াখালীতে পুর্ণবাসন করেন। এটি ছিল রাখাইনদের বড় ধরণের অভিবাসন। বর্তমানে বাংলাদেশে কক্সবাজারের পৌর এলাকা, খুরুশকুল, চৌফলদন্ডী, রামু, পানের ছড়া, আশকর কাটা, টেকনাফ, খারাংখালী, হ্নীলা, চকরিয়ার হারবাং, মহেশখালীর গোরকঘাটা এবং পটুয়খালীর খেপুপাড়া ও কুয়াকাটায় রাখাইনরা বসবাস করছে।
আরাখা (রাখাইন)রা অরাল ফর্মে কয়েক হাজার বছর পূর্ব মগধে এই ভাষার উদ্ভব ঘটায় বলে ধারণা করা হয়। প্রায় ৬ হাজার বছর আগে নানান্দা পাথরে খোদাই করা শিলালিপিতে প্রথম রাখাইন বর্ণমালার উৎপত্তির দলিল পাওয়া যায়। এই শিলালিপিটি পূর্ব আরাকানে সাঁই থং পাট্টু দগ্রিতে সংরক্ষিত রয়েছে। উত্তর ভারতের আদি ব্রাহ্মী লিপি থেকে রাখাইন বর্ণমালার উৎপত্তি। ভাষা তাত্ত্বিকগণের মতে এটি ইন্দু-মঙ্গোলিয়েট ভাষা। মগধিরা আরাকানে এই ভাষা-বর্ণমালা নিয়ে আসলে বর্মীরা এই ভাষা-বর্ণমালার অধিকারী হয়। আরাকানে প্রথম ও দ্বিতীয় ধন্যবতী যুগে, বৈশালী যুগের শুরু এবং শেষের দিকে, লেম্রু যুগে ও ম্রাউ যুগে বর্ণলেখনে সামান্য পরিবর্তন আসে।

তথসূত্রঃ ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ ।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৫১

চাঁদগাজী বলেছেন:


পাকিস্তানী আমল থেকে রাখাইনরা আরাকানে ফেরত যাবার শুরু করেছে এখন দেশে এদের সংখ্যা কমে গেছে।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৪

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: হ্যা এখন বলতে গেলে এদের সংখ্যা প্রায় বিলপ্ত।

২| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:০৫

চাঁদগাজী বলেছেন:



ওদের চলে যাওয়ার সাথে রোহিংগা সমস্যার সম্পর্ক আছে

০২ রা অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১১:৩৭

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: হয়ত আপনার ভাবনাই ঠিক ভাই।

৩| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:০৭

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:

ইনফরনেটিভ লেখা... প্রিয়তে গেল...

০২ রা অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১১:৪২

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ভ্রমনের ডানা।

৪| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৬

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: তথ্য জেনে ভালো হল

০২ রা অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১১:৪২

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন।

৫| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৫৩

প্রামানিক বলেছেন: রাখাইনদের সম্পর্কে অনেক কিছু জানা হলো। ধন্যবাদ

৬| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১:২৯

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: ভাই পোস্ট প্রিয়তে যোগ করলাম । তথ্য যুক্ত পোস্ট।

৭| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ২:০১

অনল চৌধুরী বলেছেন: আধুনিক পোশাকে একজন রাখাইন তরুণী[/sbআধুনিক না,ওটাই ওদের পোষাক।
এইসব বর্মী উপজাতিরা রোহিঙ্গাদের মতোই প্রাণ বাচানোর জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে এসে এখন নিজেদের অাদিবাসী বলে দাবী করছে।অঅর এতে মদদ দিচ্ছে বিদেশী সংস্থা,এদেশেরই কিছু নেতা,শিক্ষক অার এনজিও।

৮| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৩:০১

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: সুন্দর শেয়ার।। ভাললাগা রইলো।।

৯| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:২৩

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: প্রিয়তে......................

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.