নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কমবুঝি কিন্ত কিছু একটা নিয়ে বোঝার চেস্টা করি তাই যত পারি বই পড়ি ।

ঠ্যঠা মফিজ

ঠ্যঠা মফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কদম রসুল সম্পর্কিত প্রচলিত ইতিহাস

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৩১


মিরাজের রাত্রে বোরাকে উঠবার পূর্বে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)পাথরে তার পায়ের কিছু ছাপ অঙ্কিত হয়। পরবর্তীতে সাহাবিগণ পদ চিহ্নিত পাথর গুলো সংরক্ষণ করেন বলে অনেকে দাবি করেন। আর তার মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত পাথরটি বর্তমানে জেরুজালেমে সংরক্ষিত আছে। তাছাড়াও ইস্তাম্বুল,কায়রো এবং দামেস্কে অনুরূপ পাথর সংরক্ষিত আছে।১৬ শতকের শেষদিকে মাসুম খাঁ কাবুলিনামে একজন সম্ভ্রান্ত রাজা ছিলেন। তিনি ঈসা খাঁর বন্ধু ছিলেন। তিনি ১৫৮০ সালে আরব বণিকদের নিকট থেকে বহু অর্থের বিনিময়ে এই মহা মূল্যবান পাথরটি কিনে নেন। এবং এ স্থানে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। সুবাদার ইসলাম খান,শাহজান সহ আরো অনেক আমির ওমরা এ স্থান দর্শন করেন। সুলতান শুজা এই দরগার জন্য ৮০ বিঘা জমি দান করেন। সে সময় এখানে কীরকম ইমারত ছিল তা জানা যায় না। তার পরে ঈসা খাঁর প্রপৌত্র দেওয়ান মনয়ার খান এখানে একটি ইমারত তৈরি করেন। কিন্তু সেই ইমারতও কালের গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। এর পরে গোলাম নবীর তৃতীয় পুত্র গোলাম মোহাম্মাদ ১৮১৪ সালে পশ্চিমদিকের দোতলা তোরণটি নির্মাণ করেন। প্রথাগত মুসলিমরা সেটি স্বীকার করেন না। তাছাড়া বিভিন্ন জায়গায় সংরক্ষিত পদ চিহ্ন গুলি বিভিন্ন আকারের। যেখানে একজন মানুষের পায়ের ছাপ একই হওয়ার কথা।


কদম রসুল প্রচলিত অর্থে খন্ডের উপরে নবী করিম হযরত মুহাম্মাদ (সঃ)এর পায়ের ছাপ, তবে এই কদম রসুল ধারণার উৎপত্তি মূলত ভারতীয় উপমহাদেশ। নাসিরুদ্দিন হোসেন শাহ গৌড়ে প্রথম কদম রসুল এবং সংলগ্ন স্থাপত্য কাঠামো নির্মাণ করলেও এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা দেখা যায় মুঘল আমলে। সমগ্র ভারতবর্ষে কদম রসুলের সংখ্যা ১৪ টি। বাংলাদেশের নারায়নগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে আর একটা মজমপুর গ্রামে, চট্টগ্রামে দুইটা কদম রসুল আছে। কদম রসুলকে হযরত মুহাম্মদের পায়ের ছাপ হিসাবে দাবী করা হলেও মূল ইসলাম ধর্মে এর কোন স্বীকৃতি কিন্তু নেই। এই কারণে ইসলাম ধর্মের উৎপত্তিস্থাল মধ্যপ্রাচ্যে এ ধরণের কোন নিদর্শন সংরক্ষিত হয়নি এবং ধর্মীয় ভাবেও চর্চিত হয়না। প্রশ্ন জাগে তাহলে কেন কিভাবে এবং কি প্রয়োজনে এই কদম রসুলের উৎপত্তি হলো, তাও শুধু ভারতবর্ষে, যেখানে ইসলাম ধর্ম প্রচার পেয়েছে নবী করিম এর পরলোক গমনের কয়েকশ বছর পরে? ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম ধর্মের আগমন শুরু হয় প্রথমে বনিকদের সাথে আসা সুফী সাধকদের মাধ্যমে, পরে আফগান, তুর্কী, পার্সীয় আর মুঘল শাসকদের নেতৃত্ব আর কর্তিত্বে।

আমরা জানি ভারতের ধর্মীয় সংস্কৃতির প্রাণ জুড়ে রয়েছে মূর্তি বা বস্তুগত পুজিত নিদর্শন। পাহাড়, নদী, গাছ, সাপ ইত্যাদির বস্তুগত এবং মানব আকৃতিতে পুজার চর্চার রীতি প্রচলিত ছিল ভারতবর্ষে বহু আদিকাল থেকে। প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মমত জৈন ও বৌদ্ধ ধর্মের উৎপত্তি ভারতে প্রায় সমসাময়িক সময়ে। বৌদ্ধ ধর্মের প্রারম্ভিক যুগে এখানে মূর্তি ভিত্তিক কোন ধর্মীয় আচার ছিল না কেবল বৌদ্ধ দর্শন চর্চা আর নির্বান লাভই দিল অনুসারীদের প্রধান ব্রত। তবে গৌতম বুদ্ধের মহাপ্রায়নের পরে বেশিদিন আর এই ভাবগত চর্চা প্রচলিত থাকেনি সেই মূর্তিরূপের উপসানা শুরু হয়ে যায়। যারই একটা পর্যায়ে বুদ্ধের পদচিন্থের উপাসনা শুরু হয়। বৌদ্ধ উপকথা অনুযায়ী গৌতম বুদ্ধ তার জীবদ্দশায় শ্রীলংকায় ভ্রমনের সময়ে শ্রী পদ নামের একটা পাহাড়ে তার পায়ের ছাপ রেখে গিয়েছিলেন। যদিও হিন্দু ধর্মাবলম্বী গন এই পায়ের ছাপকে শিবের আর মুসলিমরা এটা নবী আদম এর বলে বিশ্বাস করেন। পবিত্র আরাধ্য হিসাবে পদ চিন্থের উপাসনা এই রীতি উপমহাদেশে প্রচলন ছিল বহু যুগ আগে থেকেই। পরবর্তি কালে হিন্দু ধর্মেও তা সংক্রমিত হয় যে কারণে লক্ষীর পা, বা বিষ্ণুপদের উপসনা, এবং একে ঘিরে অনেক মন্দিরও গড়ে উঠতে দেখা যায়। পরবর্তীতে সনাতন এবং বুদ্ধ অনুসারীরা ইসলামের প্রতি অনুরক্ত হন। যদিও ইসলামের প্রাত্যহিক করনীয় হলো নামাজ সমগ্র ইসলাম ধর্মে মূর্তির কোন স্থান নেই এটা শেরক। কিন্তু এ ধরনের ধর্মীয় চর্চা এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের মনছবিতে যে মূর্তি উপাসনার অভ্যস্ততা ছিল সেটা হয়তো পূরন করতে পারছিল না সেই প্রেক্ষিতেই হয়তো এক সময়ে ভারতবর্ষের কদম রসুলের উদ্ভব হয়।


মনোবাসনা পূরণ করতে মানুষজন এই কদম রসুলে বিভিন্ন মানত রাখতে শুরু করেন। নারায়ণগগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জে কদম রসুল দরগাহ অবস্থিত। কদম শব্দের অর্থ পা এবং রাসুল শব্দের অর্থ আল্লাহু প্রেরিত রাসুল। কদম রসুল দরগায় মহানবী হযরত মুহাম্মদ(সাঃ) এর কদম মোবারক এর চিহ্ন সংবলিত একটি পাথর আছে এবং এ জন্যই দরগাহ এর নামকরণ করা হয়েছে কদম রসুল দরগাহ। ৭০০ শতকে রচিত বাহির স্থানই গায়েবী নামক গ্রন্থে লেখক মির্জা নাথান নবীগঞ্জের এই পাথরটির কথা উল্লেখ করেছেন। মূল দরগাহের ভেতরে একটি ধাতব পাত্রে গোলাপ জলে পাথরটি ডোবানো অবস্থায় থাকে। পাথরটি অবশ্য এখন আর পূর্বের অকাট আকৃতিতে নেই। সংরক্ষনের সময়ে পাথরটি কেটে অনেকটা পদাকৃতি করা হয়েছে। দরগাহের আশেপাশে অনেকগুলো কবর ও মাজার শরীফ আছে। ৭০০ শতকেয়েবী নামক গ্রন্থে লেখক মির্জা নাথান নবীগঞ্জের এই পাথরটির কথা উল্লেখ করেছেন।

তথ্যসূত্রঃ https://archnet.org/
অনুবাদঃ বাংলা পিডিয়া।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৫১

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: সঠিক তথ্য পাওয়া খুবই কঠিন।
পোস্ট ভাল লাগল ভাই।

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৫০

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সম্রাট ভাই ।

২| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৫২

চাঁদগাজী বলেছেন:


ততকালীন আরব বণিকদের ব্যবসায়িক বুদ্ধির পরিচয় বহন করছে

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৫১

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ঠিক ।

৩| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: আমি কোনো কুসংস্কার বিশ্বাস করি না।

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৫২

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: আমিও না, তবে সবকিছু আবার কুসংস্কারও না।

৪| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:২৪

আবু তালেব শেখ বলেছেন: কদম রসুলের পায়ের ছাপ মুখ্য নয়
রাসুল(স) কে অন্তর থেকে ভালবাসাটাই মুখ্য

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৫৩

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: সেটাই ভাই ।মাবুদ আমাদের সেই তৌফিক দান করুক ।

৫| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:১০

ইমরান আশফাক বলেছেন: নি:সন্দেহে ভাল এবং সচেতনামূলক পোস্ট। এই ব্যাপারটা আমাদের জানা দরকার ছিল।

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৫৪

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ইমরান আশফাক ভাই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.