নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কমবুঝি কিন্ত কিছু একটা নিয়ে বোঝার চেস্টা করি তাই যত পারি বই পড়ি ।

ঠ্যঠা মফিজ

ঠ্যঠা মফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামি স্বর্ণযুগ ও সংক্ষিপ্ত তার ইতিহাস

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:২৯


৬২২ সালে মদিনায় প্রথম ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং ইসলামি শক্তির উত্থানের সময় থেকে ইসলামি স্বর্ণ যুগ শুরু হয় আর ১২৫৮ সালে মঙ্গোলদের দ্বারা বাগদাদ অবরোধের সময়কে এর শেষ ধরা হয়। ১৪৯২ সালে ইবেরিয়ান উপদ্বীপের আন্দালুসে খ্রিষ্টান রিকনকোয়েস্টার ফলে গ্রানাডা আমিরাতের পতনকেও এর সমাপ্তিকাল হিসেবে গণ্য করা হয়।আব্বাসীয় খলিফা হারুনুর রশিদের সময় বাগদাদে বাইতুল হিকমাহর প্রতিষ্ঠার ফলে জ্ঞানচর্চার প্রভূত সুযোগ সৃষ্টি হয়।ফাতেমীয় যুগে মিশর সাম্রাজ্যের কেন্দ্রে পরিণত হয় এবং উত্তর আফ্রিকা ও সিসিল ফিলিস্তিন জর্ডান এবং লেবানন, সিরিয়া, আফ্রিকার লোহিত সাগর উপকূল,তিহমা , হেজাজ ও ইয়েমেনের অন্তর্গত ছিল। সেই যুগে মুসলিম বিশ্বের রাজধানী শহর বাগদাদ , কায়রো এবং কর্ডোবাবিজ্ঞান,দর্শন,চিকিৎসাবিজ্ঞান,বাণিজ্য এবং শিক্ষার বুদ্ধিবৃত্তিক কেন্দ্রে পরিণত হয়। আরবরা তাদের অধিকৃত অঞ্চলের বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের প্রতি আগ্রহী ছিল। হারিয়ে যেতে থাকা অনেক ধ্রুপদি রচনা আরবি ও ফারসিতে অনূদিত হয়। আরো পরে এগুলো তুর্কি, হিব্রু ও ল্যাটিনে অনূদিত হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিক ,রোমান,পারসিয়ান ,ভারতীয়,চৈনিক ,মিশরীয় ওফিনিশিয় সভ্যতা থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান তারা গ্রহণ, পর্যালোচনা ও অগ্রগতিতে অবদান রাখে।কোরআন এবং হাদিসের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষা আর জ্ঞান অর্জনের যথাযথ গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে এবং জ্ঞান অর্জনের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।তৎকালিন মুসলমানদের জ্ঞানঅর্জন,বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও শিক্ষালাভে উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা হিসেবে মুসলমানদের ধর্মীয় মূল্যবোধ যথাযথ ভূমিকা পালন করেছিল। তৎকালিন ইসলামি সাম্রাজ্য জ্ঞানী পন্ডিতদের যথাযথ পৃষ্ঠপোষক ছিল।সকল খরচ রাষ্ট্র বহন করতো।সে সময়ের ট্রান্সেলেশন মুভমেণ্ট বা তরজমা সংস্থার তরজমা করার কাজে যে অর্থ ব্যয় হতো তার পরিমাণ আনুমানিক যুক্তরাজ্যের মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের দুই বছরের বার্ষরিক রিসার্চ বাজেটের সমান।হুনাইন ইবনে ইসহাক-এর মতো বড় বড় জ্ঞানীবর্গ ও তর্জমাকারকদের বেতনের পরিমাণ ছিল আজকালকার পেশাগত এথলেটিক্সদের বেতনের মতো।আব্বাসীয় যুগে আল মনসুর ইরাকের বাগদাদ শহরে দ্যা হাউস অফ উইজডম নামে একটি বৃহৎ পাঠাগার প্রতিষ্ঠিত করেন।
ইসলামিক ঐতিহ্য ও আচারানুষ্ঠান ছিল ধর্মশাস্ত্র এবং ধর্মীয়গ্রন্থ কেন্দ্রিক।কোরআন হাদিস এবং অন্যান্য ধর্মীয় শিক্ষার ব্যাপক প্রসারতার কারনে মূলত তখন শিক্ষা ছিল ধর্মের প্রধান বুনিয়াদ এবং তা ইসলামের ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে।ইসলাম ধর্মে শিক্ষালাভ ও জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব বিভিন্ন হাদিসসমূহে উল্লেখ রয়েছে।সেগুলো মধ্যে একটি হলো,জ্ঞানার্জনের জন্যে সুদূর চীন দেশ হলেও যাও।এইরকম হাদিসসমূহের বিভিন্ন বিধিধারা বিশেষভাবে মুসলিম পন্ডিতগণ এবং বিশ্বব্যাপি মুসলিমদের মাঝে প্রয়োগ এবং প্রসার করতে দেখা গিয়েছিল।উল্লেখ্যসরূপ শিক্ষা নিয়ে আল জারনুযি এর একটি উক্তি ছিল বিদ্যার্জন করা আমাদের প্রত্যেকের জন্য যথাবিহিত ও বাধ্যতামূলক।প্রাক আধুনিক কালের ইসলামি সাম্রজ্যের শিক্ষার হার নির্ণয় করা অসম্ভব হলেও এটা নিশ্চিত করে বলা যায় যে তারা শিক্ষাক্ষেত্রে ও জ্ঞানার্জনে তুলনামূলকভাবে অনেক উচ্চস্তরে ছিল।বিশেষ করে তাদের সাথে তৎকালিন ইউরোপিয় পন্ডিতদের তুলনা করলে ইসলামিক পন্ডিতদের জ্ঞানের সকল ক্ষেত্রে অগ্রগতি দেখা যায়। সবাই ছোটবয়স থেকে শিক্ষার্জন করা শুরু করতো আরবি এবং কোরআন শিক্ষার পাশাপাশি; হয়ত বাড়িতে না হয় কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।যেটা কোন মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত থাকত।তারপর অনেক শিক্ষার্থী ইসলামিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষন এবং ইসলামিক মাসায়ালা বিষয়ে অধ্যয়ন ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতো। সে সময় এসব শিক্ষাকেও যথাযথ গুরুত্বের সহিত দেখা হতো।শিক্ষাব্যাবস্থা ছিল মুখস্থকরা কেন্দ্রিক।কিন্তু তাছাড়াও অগ্রগতিশীল মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাঠ্যগ্রন্থসমূহের প্রণেতা এবং ব্যাখ্যা-বিশ্লেষনের ক্ষেত্রে পাঠক ও লেখক হিসেবে প্রশিক্ষণ দেয়া হতো।এই প্রক্রিয়া সকল উচ্চাকাঙ্খী শিক্ষার্থীদের সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার জড়িত রাখত।ফলঃশ্রুতিতে উলামাদের তালিকায় তাদের সবধরণের সামাজিক ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল।
বীজগণিত,এলগরিদম এবং হিন্দু-আরবীয় সংখ্যার বিকাশ ও উন্নয়নে মুহাম্মদ ইবনে মুসা আল খাওয়ারিজমি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।তাকে বীজগণিতের জনক বলা হয়। ইবনে মুয়াজ আল-জাইয়্যানি হলেন অন্যতম ইসলামিক একজন গণিতবিদ যিনি সাইনের সূত্র আবিষ্কারের জন্য খ্যাত।১১ শতকে তিনি The Book of Unknown Arcs of a Sphere নামে একটি বই রচনা করেন।শুধুমাত্র সমকোণী ত্রিভুজ ছাড়াও সাইনের এই সূত্রটি যেকোনো ত্রিভুজের বাহুদ্বয়ের দৈর্ঘ্যের সাথে কোণদ্বয়ের সাইনের মানের সম্পর্ক গঠন করেছে।তার এই সূত্র অনুযায়ী,

সাইনের সুত্রের গাঠুনিক উপাংশ দ্বারা সম্পৃক্ত একটি ত্রিভুজ।বড় হাতের A,B,C হলো ত্রিভুজটির তিনটি কোন।আর ছোট হাতের a,b,c হলো যথাক্রমে কোণগুলোর বিপরীত বাহু(যেমন A কোণের বিপরীত বাহু a)।
যেখানে a,bও c হলো বাহুদ্বয়ের দৈর্ঘ্য আর A,B ও C হলো যথাক্রমে বাহুদ্বয়ের বিপরীত কোণ।

আনুমানিক ৯৬৪ সালে পারস্য জ্যোতিঃর্বিদ আব্দুর রহমান আল সূফি তার রচিত Book of Fixed Stars গ্রন্থে এন্ড্রোমিডা কন্সটিলেশনের মধ্যে নীহারিকাবেষ্টিত স্থানের বর্ণনা করেন।তিনিই সর্বপ্রথম ওই স্থানের যথাযথ তথ্য প্রদান করেন এবং উদ্ধৃতি দেন যেটা এখন এন্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি নামে পরিচিত।যেটা আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির সবচেয়ে নিকটতম সর্পিলাকার গ্যালাক্সি ।টলেমির সমস্যাযুক্ত ইকুয়্যাণ্ট সংশোধিত করতে নাসির আল দীন তুসী তুসী কাপল নামে একধরণের জ্যামিতিক পদ্ধতির আবিষ্কার করেন।সেই পদ্ধতি দ্বারা দুইটি বৃত্তাকার গতির সারাংশ থেকে রৈখিক গতি সৃষ্টির ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।এই তুসি কাপল পদ্ধতিটি পরবর্তীতে ইবনে আল শাতিরের ভূ-কেন্দ্রিক মডেল এবং নিকোলাস কোপার্নিকাসের সূর্য কেন্দ্রিক মডেলের উদ্ভাবন এবং বিকাশে প্রয়োগিত হয়।যদিও এর মধ্যে মধ্যস্থতাকারী কে ছিলেন বা কোপার্নিকাস নিজেই এই পদ্ধতি পুনরায় আবিস্কার করেছিলেন কিনা তা জানা যায় না।

তথ্যসূত্রঃ Click This Link
http://www.bbc.co.uk/programmes/b01k2bv8
http://www.loc.gov/rr/rarebook/coll/160.html

ছবি সংযোগ কৃতজ্ঞতা উইকিপিডিয়া।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৭

প্রামানিক বলেছেন: দারুণ পোষ্ট।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৪

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই।

২| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৪

দিলের্‌ আড্ডা বলেছেন: মুসলিমদের একসময় সোনালি যুগ ছিলো। তবে এখনকার মুসলিমরা বলতে পারতেছে না তাদের সোনালী যুগ আবার ফিরে আসবে কিনা। অনেকেই দেখি বিভিন্ন ভবিষ্যতবাণীর বিশ্লেষন করে।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৭

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই দিলের আড্ডা সুন্দর এবং সময়উপযোগী মন্তব্যের জন্য ।

৩| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:০৫

আবু তালেব শেখ বলেছেন: মুসলিমদের অনেক অবদানই পশ্চিমা সংস্কৃতি আড়াল করে রেখেছে।

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:১৪

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই আবুতালেব শেখ।

৪| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:২১

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: মুসলিমদের সোনালী যুগ ছিল বাট এখন মুসলিমরা ভোগে ব্যস্ত।

৫| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৩২

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ভালো বিষয় তুলে ধরেছেন।

৬| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৯

শাহ আজিজ বলেছেন: ছবিতে কারা বসে??

৭| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: কিছু বুঝতে পারলাম না। কারন আমার মাথায় বুদ্ধি কম।

৮| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:২৮

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: তথ্যসমৃদ্ধ চমৎকার এই লেখাটি পড়ে সত্যিই আমি খুব খুশি।
আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।

৯| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৭

সৈয়দ ইসলাম বলেছেন: অসম্ভব ভাললাগা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.