নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি যা তা আমি নিজেই। অন্যকিছু তুলনার বাহিরে। আমার মতো পৃথিবীতে দ্বিতীয় নেই!

তাজুল ইসলাম নাজিম

তাজুল ইসলাম নাজিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

আহঃ এই নিরীহ উপজাতিদের সেনা-বাঙালি মিলে কি অত্যাচারটাই না করে

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০২


আপনি সমতলের কাঁচ ঢাকা শহরের কিংবা তারই স্রোতে প্রবাহিত কোন এক গ্রামের বাসিন্দা। খবরের কাগজে নতুবা ইলেট্রনিক মিডিয়ার সাহায্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে আপনার অর্জিত জ্ঞান ।
পাহাড়ের সৌন্দর্য আপনার হৃদয় ছুয়ে যায়। যেই সৌন্দর্য বাস্তবে অবলোকন করতে আপনি বিমুখ হয়ে আছেন।
-
কোন এক সময় পাহাড়ের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে ছুটে এলেন আপনি পাহাড়ে। ইতোমধ্যে আপনি মিডিয়ার সাহায্যে জেনেছেন যে পাহাড়ের বাঙ্গালীরা খুবই খারাপ। পার্বত্য ভূমিদস্যু এই বাঙ্গালীরা পাহাড়ের নিরীহ শান্তিপ্রিয় উপজাতিদের অমানবিক নির্যাতন করে আসছে। হয়তো আপনার দৃষ্টিতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ মানবাধিকার লংঘনের কাজ করছে পাহাড়ের বাঙ্গালীরা। আপনি অন্তরে পার্বত্য বাঙ্গালী সম্পর্কে এমন ধারনা নিয়ে যখন খাগড়াছড়ি শহরে প্রবেশ করেছিলেন তখন গাড়ীতে বসে বসে দেখছিলেন পার্বত্য উপজাতিদের বাসভূমি। হঠাৎ দেখলেন জীর্ন সীর্ন কোন এক টং ঘর। যে ঘরে বসবাস করছে নিরীহ উপজাতি পরিবার। আপনি টংটি দেখে হয়তো চিন্তা করছেন বাঙ্গালীরা তাদের বাড়ি ঘর কেড়ে নিয়ে জঙ্গলে টং ঘরে আশ্রয় নিতে বাধ্য করেছে।
-
আপনি এসে নামলেন খাগড়াছড়ি শহরে। বাজারে দেখলেন ছেড়া সার্ট গায়ে এবং গামছা পরিধান করে অনেক উপজাতি চলাফেরা করছে। উপজাতি নারীরা পিঠে করে মালামাল পরিবহন করছে। তাদের পোষাক এবং শারিরিক অবস্থা দেখে আপনার কোমল হৃদয়ে হাহাকার লেগে গেলো। ভাবছেন মনে মনে পাহাড়ের এই নিরীহ মানুষগুলো কতোইনা সহজ সরল!
-
খাগড়াছড়ি শহরে কোন এক হোটেলে রাত্রী যাপন করে আপনি সকাল বেলা যাত্রা শুরু করলেন সাজেক। সাজেক যেতে যেতে সেনা বেষ্টনীর নিরাপত্তায় আপনার মনে ধারনা হলো সত্যিই পাহাড়ের শাষক সেনাবাহিনী। এতোদিন পত্রিকার পাতায় কিংবা টেলিভিশনের পর্দায় সেনাবাহিনী সম্পর্কে যা শুনেছেন, জেনেছেন তা সম্পুর্ন সত্যি।
-
এসে পৌছালেন কাঙ্খিত সাজেক। সাজেকে এসে যখন আপনি হাপাতে হাপাতে চূড়াতে উঠছিলেন তখন কোন এক মধ্যবয়সী উপজাতি নারী মাথার উপর তিনটি পানির হাড়ি নিয়ে খুব সহজেই উঠছিলো। পাশাপাশি কোন এক উপজাতি দাদুও কাধে বস্তা নিয়ে আস্তে আস্তে উঠে যাচ্ছিল। যেখানে আপনি শক্তিশালী যুবক হয়ে কষ্টে হাপাচ্ছেন সেখানে তারা কতো সহজেই উঠে যাচ্ছে। নিজের কষ্টকে তাদের দৃষ্টিতে নিয়ে আপনার হৃদয়ে করুনার বাতাস বইতে শুরু করলো।
-
কষ্ট করে শিতের মধ্যেও শরীরে ঘাম ঝরিয়ে আপনি পাহাড়ে উঠলেন। পাহাড়ে এসেই দেখলেন কোন এক উপজাতি নারী আপনাকে ডাকছেন;- "জাম্বুরা ভর্তা খাবেন দাদা? ভালো জাম্বুরা আছে। বেশি ঝাল দিয়ে ভর্তা করে দিই।" উপজাতীয় নারীর ডাক শুনে আপনি গিয়ে বসলেন তার তাবুতে। মেয়েটি আপনাকে জাম্বুরা ছুলে সাথে সাথে ভর্তা করে দিল। এই ফাকে আপনি চিন্তা করছেন বাঙ্গালীরা পাহাড়ে কতোই আরামে আছে। আর উপজাতিরা পাহাড়ে কতো কষ্টে আছে। খাগড়াছড়ি শহরে, দিঘিনালা, বাঘাইহাট বাজারে বাঙ্গালীদের জীবন দর্শন কতো সুন্দর। এরই ফাকে ভর্তা শেষ হলে আপনি তৃপ্তি সহকারে তা খেয়ে পরিশ্রান্ত শরীরে প্রশান্তি ফিরিয়ে আনলেন। সারাদিন পাহাড় পর্বতে ঘুরে আপনি যে ধারনা পেলেন তা দিয়ে চিন্তা করলে একটি বাস্তব প্রতিবেদন লিখবেন। আসলেই পাহাড়ে উপজাতিরা পার্বত্য বাঙ্গালীদের দ্বারা নির্যাতিত। লেখনীর চিন্তা মাথায় নিয়ে আপনি ফিরে এলেন কাঁচ ঢাকা শহরে।
-
বস্তুতঃ আপনি যখন পাহাড়ে গেলেন তখন বাঙ্গালী স্রোতের বাইরে ভিন্ন জাতিসত্তা উপজাতিদের প্রতি আপনার আকর্ষণ বেশি ছিলো। যেই আকর্ষণ আপনাকে উপজাতিদের প্রতিই ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই তাদের চিরায়ত জীবন দর্শন এবং ঐতিহ্যবাহী কাজগুলো আপনার কাছে পরিশ্রমের মনে হয়েছে। তাদের পোষাক পরিচ্ছদ, কাজ কর্ম যে ঐতিহ্যগত রুপ সেটা আপনার দৃষ্টিতে আসেনি। আপনার দৃষ্টিতে এসেছে বাঙ্গালীদের নির্যাতনে উপজাতিরা এমন জীবন অতিবাহিত করছে। আপনি দেখেননি ছেড়া সার্ট পরিধান করা উপজাতির পরনে যে হাফ প্যান্ট ছিলো এবং সেই হাফ প্যান্টের পকেটে হাজার টাকার নোট রয়েছে।
আপনি দেখেননি রাস্তার মোড়ে মোড়ে অবস্থান করা উপজাতীয় যুবকের পকেটে চাঁদাবাজির রসিদ এবং মাঝায় লুকানো অস্ত্র।
-
পাহাড়ের উপরে উপজাতি নারীর জাম্বুরা ভর্তা আপনার বিবেককে কম্পিত করলেও আপনি দেখেননি দিঘিনালার গুচ্ছগ্রাম নামক বন্দি শিবিরে বাঙ্গালীদের করুন আত্মহুতি। আপনার চোখে আসেনি উন্নয়ন হতে অবহেলিত বাঙ্গালী অধ্যুষিত গ্রাম এবং সেই গ্রামের মানুষগুলোর জীবন দর্শন।
-
এভাবেই ভিন্ন জাতির প্রতি বিশেষ আকর্ষণ নিয়ে পাহাড়ে ভ্রমন এবং একপেশে দৃষ্টিতে বিচার বিশ্লেষন করে আপনার সম্যক ধারনাগুলো আপনার কাছে মানবতার কাজ মনে হলেও রাষ্ট্রের জন্য এটা খুবই মারাত্মক। শুধু রাষ্ট্র কেন? আপনার মানবতার পক্ষে বর্তমান কর্মকান্ড ভবিষ্যতে আপনাকে জাতির কলঙ্ক হিসেবে তুলে ধরবে। আপনাকে বুঝতে হবে পার্বত্য বাঙ্গালীর দালানে কোন অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হয়নি, অবৈধ অস্ত্র পাওয়া গেছে সাধারন উপজাতির করনাময় টং ঘরে। এই সমস্ত টং ঘর যে উপজাতীয় রাষ্ট্রদ্রোহী সন্ত্রাসীদের সকল অপকর্মের আস্তানা সেটা আপনাকে

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:২২

আবু তালেব শেখ বলেছেন: আপনি ঠিক বলেছেন। পার্বত্যভূমিতে বাংগালিরা সংখ্যালগু হয়ে বসবাস করে। সন্ত্রাস চাদাবাজিতে অতিষ্ঠ বাংগালি জাতি এটা আমার নিজ চোখে দেখা। আমার শশুরালয় বান্দরবন হওয়ায় অনেক কিছু দেখেছি

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৩৮

তাজুল ইসলাম নাজিম বলেছেন: কিন্তু ওই বামাতী জানোয়ারদের এই কথা বুঝাবে কে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.