নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ছটফটে, পাগলা কিছিমের, জঘন্য টাইপের বদরাগী, সাইকো লেভেলের একজন মানুষ। শুধু ছবি তুলতে গেলে উপাধিগুলো বাদ যায়!!!

চিত্রযোধী আবির

ক্ষনিক আলোকে আঁখির পলকে তোমায় যবে পাই দেখিতে...

চিত্রযোধী আবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পের শেষের অপেক্ষা

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:০৭

শ্যামলা হলেও নাহয় হতো, কিন্তু নীরা শ্যামলা না, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হাজারবার চেষ্টা করেছে নিজেকে শ্যামলা ভাবতে, পারেনি। কেননা, সে কালো। আর সেই কালো কারো চোখ এড়াতে ছাড়েনা, আর এজন্য নীরা নিজের চেহারা নিয়ে বেশি ভাবেও না।
ক্লাসে যাওয়ার জন্য চুলে চিরুনি চালানোর সময় এসব হাবিজাবি ভাবছিল নীরা। মায়ের কথায় হুঁশ আসে। নিজেকে সুন্দর করতে না পারে মানুষের চোখে, পরিপাটি হয়ে তো চলতেই পারে সে নিজের জন্য।
রিকশায় উঠে নীরা ভাবতে থাকে, আজ পর্যন্ত সে কয়বার নিজের গায়ের রং নিয়ে কথা শুনেছে? গুনতে গুনতে নীরার রিকশা ভার্সিটি চলে আসে। গোনা শেষ হয়না।
ক্লাস শেষে টিউশন শেষ করে বিকেলে বাসায় যাওয়ার সময় কেন যেন নীরা টিএসসিতে ফিরে আসে। বসে বসে সন্ধ্যা নামা দেখে হাঁটা ধরে নীরা। কিছুটা যাওয়ার পরেই বুঝতে পারে, কেউ তার পিছু নিয়েছে। সবসময় ভাবতো, কেউ অন্তত একবার তার পিছু নিক, কিন্তু আজ এমন নির্জনে সে ভয় পাচ্ছে। প্রচণ্ড ভয়।
তুর্য ভার্সিটি ঘুরতে এসেছে, সে ভর্তি হতে চায় এখানে। এবছর ভর্তি পরীক্ষা দেবে, সারাদিন বড় ভাইদের সাথে ঘুরে এখন মেসে যাচ্ছে তুর্য। সবখানে এই বয়সেই বাউন্ডুলে উপাধি বাগিয়ে নিয়েছে। আর এটা সে বেশ ভালোবাসে। ঠিক যেমনটা বাসে মনের মানুষটাকে। যার জন্য উঠতি তরুণ ঢাকায় একা।
রাস্তায় হাঁটার সময় তুর্য হঠাৎ দেখে, একটা মেয়ে তার সামনে, আলো-আধারিতে চেহারা দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু ঢেউ খেলানো চুল একেবারে কোমর ছাপিয়ে নিচে নেমে এসেছে। দেখে ঢোক গেলে তুর্য। কেননা সে তার গুরুর কাছে শুনেছে, লম্বা চুলের মেয়েদের চোখে তাকাতে হয়না। সেই চোখে তাকালে নাকি লুটপাট হয়ে যেতে হয়। কিন্তু তুর্য দেখবেই মেয়েটার চোখ, তাই পিছু নিয়ে নিল।
যা থাকে কপালে, ধরা খেলে বলবে, ছবি তুলতে চায়, আজকাল ক্যামেরা কাঁধে থাকলে অনেককিছুই মাফ!
নীরা ভয়ে নীল হয়ে একটা ল্যাম্পপোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে যায়। তুর্য দৌড়ে নীরার কাছে পৌঁছে গিয়ে বলে,
“আপনার চোখ দেখবো। প্লীজ, মানা করবেন না, চুল দেখেই পিছু নিয়েছি, চোখ দেখেই চলে যাবো, কসম!!!”
নীরা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে হা করে তাকিয়ে থাকে তুর্যের দিকে, আজ পর্যন্ত সে এমন কথা শোনেনি। বলে কি ছেলে। নীরা এসব ভাবছিল আর তুর্য নীরার চোখ দেখে লুটপাট হয়ে, বজ্রাহত তালগাছের মতো দাঁড়িয়ে ছিল।
হয়ত এখানেই শুরু হতে পারতো কোন ভালোবাসার সুন্দর একটা গল্প, হতে পারতো অসাধারণ একটি প্রেমের মহাকাব্য। কিন্তু তা হয়নি।
নীরা আর তুর্য অনেকবার দেখা করেছে, বন্ধু হয়েছে। নীরা ভালবাসতে শুরু করেছিল তুর্য নামের পাগল ছেলেটাকে, ভালোবেসে ফেলেছিল তুর্যের ছবি। সূর্যের আলোর মতো তুর্য তাকে আলোকিত করেছিল।
তুর্য নীরার চোখ দেখে বজ্রাহত হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু সে নীরাকে বন্ধু ভেবেই বসেছিল, কেননা তুর্যের ধ্যান ছিল অন্য কারো কাছে সমর্পিত। তুর্য ভালোবাসতো অচেনা এক মানবীকে। নীরা তার কাছে ছিল শুধুই বন্ধু। নীরার ভালোবাসার সেই আবেশ, নীরার ভালোবাসা তুর্য কখনোই অনুভব করতে পারেনি। হয়তো.....
যেদিন তুর্য তার দেবীরুপী ভালোবাসা খুজে পেয়েছিল, সেদিন নীরাকে সে বলতে গিয়েছিলো,
“সে পেয়েছে তার মনের মানুষ”। কিন্তু তার আগেই নীরা বলে বসে তার ভালোবাসার কথা। আর তুর্য অবহেলে ফিরিয়ে দিয়ে চলে এসেছিল।
এখানেও শেষ হতে পারতো ভালোবাসার করুণ এক গল্প, ভালোবাসার জন্য ত্যাগের একটা গল্প। কিন্তু হয়নি।
তুর্যকে তার দেবী ছেড়ে চলে যায়, তুর্য বিধ্বস্ত হয়ে যেদিন নিঃস্ব হয়, সেদিন নীরা এসেছিল আবার, ভালোবাসার হাতটি বাড়িয়ে। জড়িয়ে ধরে বলতে চেয়েছিল, “তুর্য, আমি তোমাকে ভালোবাসি।“
নীরা বলার আগেই তুর্য সেবার চোখ নিচু করে কান্না লুকিয়ে বলে উঠেছিলো,
“নীরা, তোমার ভালোবাসার যোগ্য আমি না”
গল্পের শেষটা এখনো জানা হয়নি।
নীরা এখন একটা মফস্বলের কলেজে লেকচারার, আর তুর্য সারা দেশ ঘুরে বেড়ায় নেশার টানে, পেশার কল্যাণে।
কেউ জানেনা, কে কোথায় আছে।
আচ্ছা, একদিন যদি ঘোর বর্ষায় দুইজন একই কদম গাছের নিচে আশ্রয় নেয়, কেমন হয়???

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৬

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: গল্পের শুরুটা ভালো লাগল।
তবে গল্পের কাহিনী আর ও বিস্তৃত আশা করেছিল।

ভাল থাকবেন।

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:০৬

চিত্রযোধী আবির বলেছেন: ধন্যবাদ, গল্পের নতুন মোড় আসলে আরও বিস্তৃত করে বলবো। আপনার প্রত্যাশা মতো........

২| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:০৭

তোমার গল্পের মৃত রাজকন্যা বলেছেন:


:) একবার তো বলেই দিয়েছি অনেক অনেক ভালো লাগা এই লেখাটায় ... আরেকবার বলবো ভাইয়া ?



সব গুলো পড়বো আস্তে আস্তে আশা করি
অনেক অনেক শুভ কামনা :D :D

হ্যাপি ব্লগিং !:#P



অনুসরণে নিলাম :) :)

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৪

চিত্রযোধী আবির বলেছেন: ব্লগের ভাষা বড়ই বিচিত্র!!!

৩| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৯

আজিজার বলেছেন: অনুসরণে নিলাম

৪| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:২৫

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: এই শহরের কদম গাছ কই পাবেন..কংক্রিট পাইতে পারেন.. 8-|

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২২

চিত্রযোধী আবির বলেছেন: আছে হে, আছে, এই শহরেই কদম গাছ আছে, যেখানে বর্ষায় ফুল ফোটে.. নিয়ে যাবো কোনদিন......... একদিন

৫| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৩৬

প্রেতরাজ বলেছেন: কেমন আর হবে তূর্য আবার লূটপাট হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.