নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আদ্যন্ত গৃহী। বইপোকা। লেখালিখিটা প্যাশন; তেমন বাছবিচার না থাকলেও থ্রিলার আর হরর জনরাতে স্বাচ্ছন্দ্য বেশি। অল্প বিস্তর ছবিয়ালও। ইন্সটাতে shajus shot হিসেবে পাবেন। মুভি দেখতে ভালো লাগে, ভালো লাগে খোলা আকাশ, সাগরের পাড়ে চুপ করে বসে থাকা আর নিস্তব্ধতা। প্রিয়

মন থেকে বলি

জীবনের স্থায়িত্বকাল কত অল্প। কিন্তু কত কিছু যে ইচ্ছে করে করতে। তাই পারি আর না-ই পারি, ইচ্ছেগুলোর ডানা মেলে দিয়ে যাই - এই আমার আকাশের জানালায়।

মন থেকে বলি › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্য আনডিফিটেড সুপারহিরো

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৯

সাল ১৯০২।

অমৃতসর থেকে বছর বিশেকের এক তরুন এলেন বরোদায়। আর এসে একটা ভেল্কি দেখিয়ে দিলেন। কি ছিল সেই ভেল্কি? তেমন কিছু না। সেই তরুন একটা পাথর তুলেছিলেন

ভাবছেন, এ কোন ভেল্কি হলো? পাথর তোলা কি এমন কাজ? হ্যাঁ....১০০ কেজি ওজন হলে একটা কথা ছিল। আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি, পাথরটার ওজন ছিল 'একটু বেশি'। মাত্র ১২০০ কেজি।

থামুন...থামুন...হেঁচকি তুলবেন না। ১২০ কেজি লিখতে গিয়ে টাইপো করিনি। আপনি ঠিকই পড়েছেনঃ ১২০০ কেজি।

আজও সোওয়াজিবাগের বরোদা মিউজিয়ামে সেই পাথরটি রাখা আছে এক 'সুপার হিউম্যানের' শক্তির প্রদর্শনী হিসেবে। জাদুঘর কর্তৃপক্ষ ২৫ জন লোক লাগিয়েও সেই পাথর সরাতে পারেননি। লেগেছিল হাইড্রোলিক লিফট। আর প্রমান দিয়ে চলেছে কি অবিশ্বাস্য শক্তি ছিল সেইই ব্যক্তির দেহে। সেই পাথরটির ওপর লেখা আছে সেই তরুনটির নাম।

সেই তরুনটির নাম 'গুলাম মুহাম্মাদ বাট'। কিন্তু পৃথিবী তাঁকে চেনে অন্য একটা নামে। সেই নাম হলো 'গামা পেহেলওয়ান'।

প্রিয় পাঠক, আসুন পরিচিত হই 'দ্য গ্রেট গামা'র সাথে।

১৮৭৮ সালের ১লা মে অমৃতসরে কুস্তিগীর পরিবারে জন্ম নেয়া গামা প্রথম বাজিমাত করেন যোধপুরের স্ট্রং ম্যান কম্পিটিশনে এসে। প্রায় ৪০০ পেশাদার মল্লবীরের অংশগ্রহনের সেই প্রতিযোগিতায় গামা প্রথম ১৫ জনের মধ্যে নিজের জায়গা করে নেন। আর তখন তাঁর বয়স কত ছিল জানেন? মাত্র ১০ বছর। অকল্পনীয় শক্তি আর স্ট্যামিনার এক প্রদর্শনী ছিল সেটা।

এভাবেই গামার প্রবেশ প্রফেশনাল রেসলিং এ। সময় গড়ায় আর গামা হয়ে উঠতে থাকেন আরও অপ্রতিরোধ্য।

কিন্তু গামা তাঁর আসল চ্যালেঞ্জটা পান রহিম বক্স সুলতানিওয়ালার কাছ থেকে। রহিম ছিলেন সেই সময় 'রুস্তম-ই-হিন্দ' টাইটেলের মালিক। মানে তৎকালীন ভারতীয় চ্যাম্পিয়ন কুস্তিগীর। সেই চ্যাম্পিয়নকে গামা চ্যালেঞ্জ জানালেন - এসো, দেখি কে জেতে?

৭ ফিটেরও বেশি হাইটের 'দানব' রহিমের সামনে মাত্র ৫ ফিট ৭ ইঞ্চির ১৭ বছর বয়সী গামার কোন চান্সই থাকার কথা ছিল না। রহিমের একটাই দূর্বলতা ছিল - বয়সে গামার থেকে বেশি।

কিন্তু কি হলো?

পুরো স্টেডিয়াম নিঃশব্দ হয়ে গেল যখন এই 'আপাত অসম' লড়াইতে গামা রুখে দিলেন রহিম বক্সকে। লড়াইটি ড্র হয়ে রহিমের মান সন্মান তখনকার মত বাঁচিয়ে দিলেও রহিমের নিয়তি তখন নিশ্চয়ই মুচকি হেসেছিল।

ইতিমধ্যেই মোটামুটি সব ইন্ডিয়ান রেসলারই গামার কাছে পরাজয় মেনে নিয়েছে। কাজেই নিজের 'ওজনটা' যাচাই করার জন্য গামা দৃষ্টি ফেরালেন পশ্চিমের দিকে। ছোট ভাই ইমাম বক্সকে নিয়ে পাড়ি দিলেন লন্ডনে। ইচ্ছে, পশ্চিমা রেসলারদের বাজিয়ে দেখবেন।

কিন্তু ওয়েস্টার্ন রেসলিংএ গামার এন্ট্রি মোটেই সহজ হলো না। প্রথমেই তাঁকে বাতিল করা হলো। কি জন্যে? না...এই 'বাঁটকু' আবার কি কুস্তি করবে? স্ট্যান্ডার্ড হাইট-ই তো নেই।

গামা প্রত্যাখ্যাত হলেন কম উচ্চতার কারনে।

কিন্তু এত সহজে হার মানলে কি আর 'গ্রেট গামা' হতে পারতেন?

তাই তিনি ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেনঃ ৩ মিনিটের মধ্যে যেকোন ওয়েট ক্যাটাগরির ৩ জন মল্লবীরকে কুপোকাত করে দেব। সাহস থাকে তো এগিয়ে এসো।

কিন্তু এবারও তাঁর এই চ্যালেঞ্জ ভুয়া বলে উড়িয়ে দিল সেসময়কার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন টাইটেলধারীরা আর তাদের প্রোমোটর আর.বি.বেঞ্জামিন। আরে ধুর....! শালা কালা আদমী। ভুজুং দিচ্ছে।

অতঃপর....কি আর করা।

গামা চ্যালেঞ্জ জানালেন দু'বারের বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন স্টেইন্সলাস জিবাউস্কো এবং বিশ্ব হেভিওয়েট ফ্রিস্টাইল চ্যাম্পিয়ন ফ্র‍্যাংক গচ কে। বক্তব্য পরিষ্কারঃ যদি হারাতে না পারি তাহলে প্রাইজমানির সমপরিমান টাকা তোমাদের পকেটে গুঁজে সুবোধ বালকের মত বাড়ি ফিরে যাব।

এবার টনক নড়ল। বলে কি ছোকরা...!!!! আর তো চুপ করে বসে থাকা যায় না। এর থোতা মুখ ভোঁতা করা অতীব জরুরী।

(আগামী পর্বে সমাপ্য)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.