নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আদ্যন্ত গৃহী। বইপোকা। লেখালিখিটা প্যাশন; তেমন বাছবিচার না থাকলেও থ্রিলার আর হরর জনরাতে স্বাচ্ছন্দ্য বেশি। অল্প বিস্তর ছবিয়ালও। ইন্সটাতে shajus shot হিসেবে পাবেন। মুভি দেখতে ভালো লাগে, ভালো লাগে খোলা আকাশ, সাগরের পাড়ে চুপ করে বসে থাকা আর নিস্তব্ধতা। প্রিয়

মন থেকে বলি

জীবনের স্থায়িত্বকাল কত অল্প। কিন্তু কত কিছু যে ইচ্ছে করে করতে। তাই পারি আর না-ই পারি, ইচ্ছেগুলোর ডানা মেলে দিয়ে যাই - এই আমার আকাশের জানালায়।

মন থেকে বলি › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাধু খাঁ\'র ওজন কন্ট্রল

০৫ ই মে, ২০১৭ সকাল ৮:৪২

সাধু খাঁ প্রতি শুক্রবার সকালে ওয়েট মেশিনের ওপর দাঁড়ায়। চোখ থাকে বন্ধ। তারপর ভয়ে ভয়ে মেশিনের ডায়ালের দিকে তাকায়।

এবং হতাশ হয়। রিডিং হয় গত সপ্তাহের মত, না হয় তারচেয়ে বেশি। হতাশার রিডিংটাও বাড়তে থাকে।

কি এক জিনিস এই 'ওজন'!! শুধু বেড়েই যায়, কমে না।

সাধু খাঁ মনে করার চেষ্টা করে গত এক সপ্তাহ কি কি খেয়েছে। কাচ্চি, গ্রীল চিকেন, রসমালাই - একেরপর এক নাম আসতেই থাকে। সবশেষে আসে চকলেট কেক উইথ আইস্ক্রিম। আহা...!! এইসব মাল পেটে ঢুকলে রিডিং তো এরকমই হবে। ভাগ্য যে মেশিন বলে ওঠে নাঃ

"নেমে দাঁড়া বজ্জাত। প্রতি শুক্রবারে তোর গোদা পায়ের পাড়া আর দিস না। "

কি করা যায়? কি করলে ওজন কমবে?

সাধু খাঁ আকাশ পাতাল ভাবে। তারপর স্বপ্নে গিয়ে ওট বিস্কুট কেনে। লাঞ্চ বাদ। দুপুরে শুধু তিনিটা ওট বিস্কুট খেয়ে পেট ভরায়। এবং অবধারিত ভাবে বিকেলে ক্ষুধার চাপে চোখে অন্ধকার দেখে। তখন মাথা খারাপ অবস্থা। মবিলে ভাজা পিয়াজু, বেগুনি, আর আলুর চপ গোগ্রাসে গিলতে থাকে। ওট বিস্কুট তলপেটে শুয়ে হাহাকার করে। রাতে ভাত খায়। ঘুমানোর আগে চককেট - বেশি না, গোটা দুই।

প্যান্ট টাইট হয়ে গেছে থোড়ের কাছে। ব্লেজারের বোতাম তো লাগেই না। কত শখ করে কেনা। আর শার্টের বোতাম লাগালে হাইপারবোলিক শেপ নেয়। মানে বোতামের কাছে শুধু শার্টের দু'প্রান্ত আটকানো। আর দুই বোতামের মধ্যিখানের কাপড় গোল হয়ে থাকে। ভেতর থেকে কাশফুলের মত থোকা থোকা পশম উঁকি দেয়। এই হলো অবস্থা।

সাধু খাঁ এখন শুয়ে শুয়ে গল্পের প্লট ভাঁজছে। কিন্তু মাথায় আসছে শুধু নাস্তার প্লট। পরটা, নাকি রুটি? সাথে কি থাকবে - এই দুশ্চিন্তায় সে উৎকন্ঠিত। মনে একঝলক উঁকি দিয়ে যায় - ফ্রিজে রসমালাই আছে। অন্যকেউ খাওয়ার আগেই মেরে দেবে কি না। সাথে একটা ডাবল ওমলেট চলতে পারে।

অবশেষে.....ইউরেকা...ইউরেকা বলে লাফিয়ে ওঠে সাধু খাঁ। উপায় আবিষ্কার করে ফেলেছে সে।

এবস্যলুট ওজন যেহেতু কমবেই না পণ করেছে, তাইলে কম্পারেটিভলি কমানো যাক। ওজন কমানো নিয়ে কথা।

সাধু খাঁ বউকে টেনে তোলে এবং ঠেলে ঠুলে ওজন মেশিনের ওপর তুলে দেয়। একটা যেন মৃদু ক্যাঁৎ আওয়াজ ওঠে মেশিন থেকে। আহা....! রিডিং দেখে সাধু খাঁ'র নিজেকে স্লিম মনে হতে শুরু করে। গম্ভীরমুখে বউকে উপদেশ দেয়ঃ দেখ, এত ওজন কিন্তু ঠিক না। কমাও...কমাও। এই যে আমি তোমার জন্য ওটমিল কিনে এনেছি। এইটা খাও। সাথে ইংরেজিও জুড়ে দেয়ঃ ইউ আর ভেরি মাচ ওভার ওয়েট। বউয়ের মুখ দুশ্চিন্তায় কালো করে দিয়ে সে বেরিয়ে আসে।

বউ আজ থেকে রুটি খাবে। ফ্যাট ফ্রি বিদেশি দুধ খাবে। ৭০০ টাকা দামের ছোট্ট এক প্যাকেট ওটমিল খাবে। আর এগুলো কিনবে আমাদের সাধু খাঁ।

তা হোক গে খরচ।

এক ঢিলে তো দুই পাখি মারা হলো। নিজের এবং বউয়ের - দুজনেরই ওজন কমানোর ব্যবস্থা তো হলো। আহা...! বউ স্লিম হবে, সে স্লিম হবে, দু'জনে নায়ক নায়িকা হয়ে ঘুরে বেড়াবে এক মাসের মধ্যে।

গল্পটা এখানেই শেষ হলে দারুন হত। আপনারা দারুন ফিট মিস্টার এন্ড মিসেস সাধু খাঁ'কে পেয়ে যেতেন। কিন্তু গল্পটা এখানে শেষ হয়নি।

বউ এখন ওই খাবারগুলো খায়। সাথে আরও কিছু খায়। যেমন ব্রাউনি উইথ আইস্ক্রিম, আইস্ক্রিম চকলেট সানডি, কোকোনাট উইথ স্টিকি রাইস। আর ঘরভর্তি চকলেট তো আছেই। সঙ্গ দেওয়ার জন্য সাধু খাঁ-ও খায়। আরাম করে খায় না বললে মিথ্যা বলা হবে।

আজও রোজ শুক্রবার দুজনে একে একে ওজন মেশিনে দাঁড়ায় এবং মেশিনের 'ক্যাঁৎ' করে কেতরে ওঠার শব্দ শোনে। অভ্যাস হয়ে গেছে।

শুধু ডায়ালের দিকে আর তাকায় না।

(সমাপ্ত)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৫

আমি চির-দুরন্ত বলেছেন: ইস! মেশিনের আর্তনাত টা যদি শুনতে পারতাম? =p~

০৬ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:১৫

মন থেকে বলি বলেছেন: B-) B-) B-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.