নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আদ্যন্ত গৃহী। বইপোকা। লেখালিখিটা প্যাশন; তেমন বাছবিচার না থাকলেও থ্রিলার আর হরর জনরাতে স্বাচ্ছন্দ্য বেশি। অল্প বিস্তর ছবিয়ালও। ইন্সটাতে shajus shot হিসেবে পাবেন। মুভি দেখতে ভালো লাগে, ভালো লাগে খোলা আকাশ, সাগরের পাড়ে চুপ করে বসে থাকা আর নিস্তব্ধতা। প্রিয়

মন থেকে বলি

জীবনের স্থায়িত্বকাল কত অল্প। কিন্তু কত কিছু যে ইচ্ছে করে করতে। তাই পারি আর না-ই পারি, ইচ্ছেগুলোর ডানা মেলে দিয়ে যাই - এই আমার আকাশের জানালায়।

মন থেকে বলি › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবিতাঃ সেই জমিটা

০৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:২২



পরিত্যাক্ত জমিটা পড়ে আছে বাড়ির পেছনটায় -
আজ অনেকদিন হলো। একই রকম।
এক টুকরো মাটি ছাড়া কিইবা আর।
তাও দখলদার নিজের অধিকার ফলিয়েছে,
বাঁশের বেড়া দিয়ে, সাইনবোর্ড দিয়ে।

জমিটা কিন্তু কিছুই বলে না। করেও না।
যতজনকে পেরেছে, আশ্রয় দিয়েছে তার বুকে।
ঝোপঝাড় গজিয়ে একাকার।
যেন শহুরে জঙ্গল এক। রাত হলেই শিয়াল ডাকবে।
শিয়াল ডাকে না, তবে ঝিঁঝিঁর ডাক শুনি।
সাঁঝ ঘনালেই একঘেয়ে শব্দটা উঠে আসে
আমার তেতলার বারান্দায়।

জমিটা চুপ করে থাকে।
সদম্ভে তার চারদিক চেপে ঠেলে উঠেছে আকাশচুম্বী বাড়িগুলো।
কত মনোহর তাদের রঙ।
রাত হলেই জানালারূপী চোখগুলো জ্বলে ওঠে এক এক করে।
তাদের তেরছা দৃষ্টি পড়ে শূন্য এ জমিটায়।
তাতে আরও আঁধার ঘনায়।
ঝিঁঝিঁর ডাক একটু বিশ্রাম নেয়।
তারপর আবার...

কে যেন একটা ব্যাডমিন্টন কোর্ট বানিয়েছে।
তাদের ঝোলানো বাতিতে সন্ধ্যায় জমি ঝলসে ওঠে।
নানান মানুষের পদভারে প্রাণ ফিরে পায় ক্ষনিকের তরে।
জমি হেসে ওঠে। সে-ও তো সঙ্গ চায়।
আবার ক্রিকেটও খেলে শিশুরা - বিকেল বেলায়।
এটাই ওর জন্য শ্রেষ্ঠ সময়।
শিশুরা ওর ঝোপঝাড় ওপড়ায়, বেড়া ভাঙ্গে।
জমি যেন আরও খুশি হয় তাতে।
আহা..! করুক না একটু।
তবুও তো ওর মাটি মাখা বাচ্চা বাচ্চা হাতগুলো।

কারা যেন একগাদা আবর্জনা ফেলেছে।
জমিটা কুঁকড়ে যায়।
নোংরা ও সহ্যই করতে পারে না।
তা-ও আশপাশের বাড়িগুলো
ওর ওপর যা ইচ্ছা ছুড়ে ফেলে।
ও যে পরিত্যাক্ত, আর বাকিরা আলিশান।
কিন্তু অসহায়ের মত জমিটা নোংরা মেখে শুয়ে থাকে।
সবুজ ঝোপগুলো আবর্জানায় কালচে হয়।
জমিটার বুক দুরুদুরু করে-
শিশুর দল কি আসবে? এই ময়লামাখা মাটিতে?
ওর জীবনের এই একটাই সুখ।
তাও কেড়ে নেবে ওই আলিশান দালানগুলো?

তারপর...
রাত পোহায়। সকাল দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামে।
হই হই করে বাচ্চাদের দলটা এসে থমকে দাঁড়ায়।
একি...! এত্ত আবর্জনা...!!
খেলবে কোথায় ওরা।
উৎকন্ঠায় জমিটা কাঁপতে থাকে।
সেই কম্পন যেন ছড়িয়ে পড়ে শিশুমনে।
ওরা হাত ধরাধরি করে বেড়ার ফটক পার হয়।
তারপর এক এক করে ময়লাগুলো সরিয়ে রাখে।
ঝুঁড়ি খুঁজে আনে একটা বাচ্চা।
সব আবর্জনা পরিষ্কার হয়ে যায় আস্তে আস্তে।
বাচ্চারা খেলার হুল্লোড়ে আবার মেতে ওঠে।

আমি ওপর থেকে স্পষ্ট দেখতে পাই,
পরিত্যাক্ত জমিটার ধুলোমাখা মেটে শরীরে
বয়ে যাচ্ছে প্রশান্তির হাসি।


#কাব্যতাড়না

৮ জুন, ২০১৭/ রাত ১:১৫ মিনিট

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ২:০৮

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: নচিকেতার ভাষায় আমরাই চুরি করছি আগত শিশুদের শৈশব!!
এমন লেখা কি পারবে আমাাদের ফিরাতে??!!
ভাল থাকুন, এই কামনায়।।

০৮ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১০:১১

মন থেকে বলি বলেছেন: একদম যথার্থ বলেছেন।
আমারাই আসলে চুরি করছি আমাদের শিশুদের শৈশব।
প্রতিদিন আমার ছেলেরা চায় বাইরে খেলতে যেতে। নিতে পারিনা।
জায়গার অভাব। তারচে বড় অভাব সময় আর ইচ্ছার।
অলসতার ফাঁদে বন্দী হয়ে তাই ট্যাব তুলে দিয়েছি হাতে।

২| ০৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ২:১৯

শূন্যনীড় বলেছেন: অনেক সুন্দর কবিতা +++++

০৮ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১০:১২

মন থেকে বলি বলেছেন: অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য। এরকম দারুন মন্তব্য লেখার উৎসাহ বাড়িয়ে দেয় অনেকখানি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.