নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবনের স্থায়িত্বকাল কত অল্প। কিন্তু কত কিছু যে ইচ্ছে করে করতে। তাই পারি আর না-ই পারি, ইচ্ছেগুলোর ডানা মেলে দিয়ে যাই - এই আমার আকাশের জানালায়।
আমার বন্ধু সাধু খাঁ'র কথা আগে বলিয়াছি। যেই ঘটনা আজ বয়ান করিব, তাহা সাধু খাঁ'র তরুন বয়েসের কাহিনী। গল্পটা তাহার জবানীতেই বলিব।
দল বাঁধিয়া একদা স্থির হইলো, আমরা শিক্ষাসফরে যাইবো। আয়োজনে স্কুল কর্তৃপক্ষ হইলেও ভেন্যু নির্বাচনের দ্বায়িত্ব ছেলেপেলের দলের উপরই ছিল। আজরাইরূপী শিক্ষকগণ আগেই জানাইয়া দিয়াছেন - অর্থব্যয় করিতে হইবে সর্বনিম্ন। নইলে পশ্চাদ্বেশ চর্ম হারাইতে হইতে পারে।
সুতরাং....এই বিবেচনায় আমরা, ছাত্রগণ ব্যাকুল হইয়া উঠিলাম।
পাছার চামড়া বাঁচানো গৌন। মুখ্য হইলো পুরা শিক্ষাজীবনে এই প্রথমবারের মত আমরা 'কল্পনার বান্ধবী'রূপী ছাত্রীগণের সান্নিধ্য পাইবো। মানে হইলো গিয়া, ভেন্যু একই - দুই পক্ষের শিক্ষা একই সফরে সারিতে হইবে। সুতরাং ভেন্যু খোঁজার চাড় বাড়িয়া আকাশ স্পর্শ করিল।
কিন্তু বিধিবাম।
ভেন্যু হইলে মেন্যু হয়না।
মানে লোকেশন পছন্দ হইলে ভাড়া শুনিয়া পিত্ত কাঁপিয়া উঠে। এবং খাবারে টান পড়ে। এইভাবে সকলেই যখন হতোদ্যম হইয়া যাইবো যাইবো করিতেছি, সেইক্ষণে দেবদুতের ন্যায় এক বন্ধুবর আবির্ভুত হইল। ভেন্যু সেই-ই দিবে। তাহার পিতা কোন এক সার কারখানার উর্ধতন কর্মকর্তা ছিলেন। তিনিই ব্যবস্থা করিলেন। কারখানাও দেখা হইবে। আবার বেড়ানোও হইবে। খর্চা শূন্য।
আমরা উদ্বাহু হইয়া জয়ধনি করিয়া উঠিলাম। চল...চল...চল...সার কারখানায় সার দেখিতে চল।
এক্ষনে মধ্যবর্তী কাহিনী একটু টানিয়া দেই। যাত্রার দিন আমরা স্ব-স্ব বাসে চড়িয়া, যথাসম্ভব মাঞ্জা মারিয়া উপস্থিত হইলাম সার কারখানায়। অন্য দশটি কারখানার মতই ইহাতেও কোয়ার্টার আছে, যার একটি রুম বরাদ্দ হইয়াছে ছেলেদের জন্য। আর অন্য দুইটি রুম মেয়েদের জন্য। এবং সর্বাপেক্ষা আশ্চর্যের ব্যাপার হইল - এইখানে একটা সুইমিংপুলও আছে।
আমাদিগের মধ্যে কিছু কাবেল ছোকরা 'হাপ পেন্ট' লইয়া গিয়াছিল। কেন, জিজ্ঞাসা করিবেন না। তাহারা হয়ত আন্দাজ করিয়া থাকিবে ইহা লাগিতেও পারে। যাহা হউক, ওই কাবেলদের দলে আমিও ছিলাম। আরো ছিল বন্ধুবর মাসুদ এবং 'পাংকু-কূল শিরোমনি' জসিম।
ঘটনা ঘটিল এই সুইমিংপুলেই।
পানি দেখিয়া হাপ-পেন্ট ওয়ালারা দ্রুতই ঝাঁপাইয়া পড়িল। শিক্ষকদিগের "হায় হায়! কি করিলি?" মাতম তাহাদের দমাইতে পারে নাই। যাহা হউক, একবার তো নামিয়া গিয়াছি, আর ডাকিয়া কি হইবে? ইত্যবসরে আমাদিগের সকলকে তাজ্জব করিয়া জসিম পকেট হইতে সাবান বাহির করিল।
কিমাশ্চর্যম!!!
সে সাবান আনিয়াছে কেন?
যতক্ষনে আমরা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজিতেছি ততক্ষনে জসিম সারা দেহে ফেনা তুলিয়া ফেলিয়াছে। এবং তাহার পরে আবারও পুলে নাবিয়াও গিয়াছে। এবং তাহার পরে মাসুদ ও তাহাকে ফলো করিয়া আমিও একই কর্ম সমাধা করিয়াছি।
পুলের পানি আমাদিদের দেহের জমাকৃত ময়লা চাঁছা সাবানের ফেনায় ভরিয়া উঠিল। বুনকা বুনকা ফেনা ভাসিয়া যাইতেছে। তাহাতে কালচে ছোপ। অহোঃ! কি মনোরম দৃশ্য!!
সার কারখানার এক কর্মকর্তা পুলের পাশেই দাঁড়াইয়া ছিলেন। আবারও "হায় হায়" রব উঠিল। গেল পুলের পানি। কয়েকজনকে দেখা গেল দূরের প্রান্তে পানি লইয়া কুলকুচা করিতাছে। এবং পুলেই ফেলিতেছে। একজন একাকী দাঁড়াইয়া ছিল। হঠাৎ তাহার পিছনে কোমর আন্দাজ পানির নিচ হইতে বুদ্বুদ ভুড়ভুড়াইয়া উঠিল। বুঝা গেল, বন্ধুবর বায়ুর চাপ সামলাইতে পারে নাই। এবং বায়ু পানি অপেক্ষা হালকা।
ওহো..! আসল কথাই তো বলা হয় নাই।
সর্বাপেক্ষা রূপসী সহপাঠিনী উহার সখী পরিবৃষ্ট হইয়া পুলের অনতিদূরেই অবস্থান করিতেছিল এবং মাসুদ ও জসিমের পানে কটাক্ষ ছুঁড়িতেছিল। বলাইবাহুল্য, উহারাই সর্বাপেক্ষা হ্যান্ডসাম। তাহা খিয়াল করিয়া কি হইল, মাসুদের মনে আরেকটু 'হিরোগিরি' দেখাইবার ইচ্ছা হঠাৎই চাড়া দিয়া উঠিল। সে ভাবিল, পুল হইতে সিঁড়ি না বাহিয়া হাতের জোরে সরাসরি উপরে উঠিয়া দূরবর্তিনীদের দেখাইয়া দিবে তাহার পেশীর জোর।
.....এবং মাসুদ তাহা করিল।
এত্তগুলান হায় হায় বিলাপ তো আর বৃথা যাইতে পারেনা। স্রষ্টা অনেকক্ষন ছ্যাবলামি সহ্য করিয়া এক্ষনে মাসুদের উপর বজ্রপাত ঘটাইলেন।
মাসুদ উঠিল ঠিকই। কিন্তু ভুলিয়া গিয়াছিল যে তাহার হাপ পেন্টের ফ্রন্ট এবং হিপ-পকেট চতুষ্টয় পানি দ্বারা ভর্তি। তাহাতে পেন্টের ওজন গিয়াছে বাড়িয়া। ফলে নিউটনের মাধ্যাকর্ষণ সূত্রানুযায়ী উহা (মানে পেন্ট) নিচেই, অর্থাৎ পানিতেই রহিয়া গেল। মাসুদ সটান উপরে উঠিয়া গেল তাহার লোমশ পশ্চাদ্বেশ উন্মুক্ত করিয়া।
দূর্ভাগ্যক্রমে সুন্দরীশ্রেষ্ঠা অপরপ্রান্তে ছিলেন। পুরা ঘটনা মায় মাসুদের উন্মুক্ত পিছন - কিছুই তাহাদের দৃষ্টি এড়ায় নাই। খিলখিল হাসিতে পুলের চারিপাশ যেন ভরিয়া উঠিল।
পরক্ষনেই 'ঝুপ'। মাসুদ আবার জলে লাফাইয়া পড়িয়াছে। স্বচ্ছ জল তাহার আব্রু আংশিক রক্ষা করিল বটে। কিন্তু পেন্ট তো ভাসিয়া গিয়াছে ঢেউ এর ধাক্কায়।
এরপর কাহিনী অতি সংক্ষিপ্ত। মাসুদ পেন্ট উদ্ধার করিল। এবং আমরা, যাহারা এতক্ষন জলে ছিলাম, সবলে নিজ নিজ পেন্ট আঁকড়াইয়া ধীরে ধীরে সিঁড়ি বাহিয়া উঠিয়া আসিলাম।
জীবনের প্রথম শিক্ষা সফরে বিরাট শিক্ষা অর্জন করিলামঃ নারী নিকটে থাকিলে হিরোগিরি ফলাইয়ো না। না হইলে পেন্ট খুলিয়া যাইবে। ইহাকেই বলে - হিটিং বিলো দ্য বেল্ট।
(সমাপ্ত)
১০ ই জুন, ২০১৭ রাত ৩:৫৭
মন থেকে বলি বলেছেন: এ কিন্তু সত্য ঘটনা।
২| ১০ ই জুন, ২০১৭ রাত ৩:৪৯
মনিরা সুলতানা বলেছেন: হাহাহাহা
কি লেখা রে হাসতে হাসতে জীবন খারাপ
১০ ই জুন, ২০১৭ রাত ৩:৫৭
মন থেকে বলি বলেছেন: মজা পেয়েছেন? অনেক ভাল লাগল।
৩| ১০ ই জুন, ২০১৭ ভোর ৪:০২
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: অবিশ্বাস তো করছি না।। কারন এমনও সময় থাকে যখন অকল্পনীয় সব ঘটনা ঘটে।।
১০ ই জুন, ২০১৭ ভোর ৪:০৬
মন থেকে বলি বলেছেন: ঘটনাটা এতই মজার ছিল যে আজ ২৫ বছর পরও ভাবলে হাসি আটকাতে পারি না।
৪| ১০ ই জুন, ২০১৭ ভোর ৪:০৮
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমার অর্ধেক শুন্য পাওয়ার মত!!
১০ ই জুন, ২০১৭ ভোর ৪:১৫
মন থেকে বলি বলেছেন: অর্ধেক শূন্য মানে?
গল্পটা বলে ফেলেন না। ইন্টারেস্ট হচ্ছে খুব।
৫| ১০ ই জুন, ২০১৭ ভোর ৪:২৫
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: তখন এইটে পড়ি।। কলকাতার নামকরা টিম এসেছে ঢাকার নামরা টিমের সাথে খেলবে বলে।। আমারও সেদিন পরীক্ষা।। বন্ধুরা স্কুলের দেয়ালে বসে।। অর্ধেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েই আর মন টিকলো না।। মুত্রের নামে পালিয়ে গেলাম।। আর পরিশেষে রসিস স্যারও আমাকে পুরো নাম্বার না দিয়ে, অর্ধেক নাম্বার দিয়েই কৃতাত্ত করেছিলেন।।
১০ ই জুন, ২০১৭ ভোর ৪:৩৭
মন থেকে বলি বলেছেন:
৬| ১০ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১:২৮
মনিরা সুলতানা বলেছেন: সত্যি অনেক মজার ছিল !
১০ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:১৫
মন থেকে বলি বলেছেন: আপনাদের আনন্দ দিতে পারাই আমার লেখার সার্থকতা।
৭| ১০ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১:৪২
বিষাদ সময় বলেছেন: হাসতে হাসতে চোখে পানি চলে এসেছে। ঘটনা এবং বর্ণনা শৈলী দুটোই চমৎকার।
১০ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:১৯
মন থেকে বলি বলেছেন: চোখে পানি এলে পড়বেন কিভাবে?
অনেক অনেক ধন্যবাদ চমৎকারভাবে উৎসাহ দেবার জন্য।
৮| ১০ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:২৮
ধ্রুবক আলো বলেছেন: নারী নিকটে থাকিলে হিরোগিরি ফলাইয়ো না। না হইলে পেন্ট খুলিয়া যাইবে। ইহাকেই বলে - হিটিং বিলো দ্য বেল্ট।
ইহা চরম সত্য কথা, ইহা না মানিলে বিপদ। আর জেমস বন্ডের মত ইস্মাট হতে হবে।
১০ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৫
মন থেকে বলি বলেছেন: ইহাই আসল শিক্ষা - যাহা সফরে অর্জিত হইয়াছিল।
১০ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৭
মন থেকে বলি বলেছেন: ধ্রুবক আলো ভাই, এইবার প্রোপিকটা বদলে ফেলেন।
প্রত্যেকবার মনে হয়, মাশরাফি মহা বিরক্ত হচ্ছে আমার লেখা পড়ে।
৯| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ২:৪৮
জাহিদ অনিক বলেছেন: হা হা হা
আপনার লেখার হাত দারুণ।
লেখার কৌশলেই আমি হেসেছি
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই জুন, ২০১৭ রাত ৩:২৬
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: হাসতে হাসতে মানতে হলো, পোষ্টের কথাই ঠিক।। এটা আমারও বাস্তব শিক্ষা।। ধন্যবাদ।।