নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

৩২ পৃষ্ঠায় খড়, ৩৩ পৃষ্ঠায় অাগুন

টোকন ঠাকুর

কবিতা গল্প লিখি, ছবি আঁকি-বানাই, একাএকা গান গাই...

টোকন ঠাকুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

যেমন করে সঞ্জীব দা গাইতেন

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৬

যেমন করে সঞ্জীব দা গাইতেন



সঞ্জীব চৌধুরী কয়েকভাবে বেঁচে অাছেন। বাংলা গানের দল 'দলছুট' এর প্রধান গায়ক সঞ্জীব চৌধুরীর গান রেডিওতে বাজে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের রাত জাগা তরুণেরা তার গান গেয়ে হলে ফেরে, ঘরে ফেরে কিম্বা তারা অার ঘরেই ফেরেই না। না ফিরে তারা কোথায় যায়? নৈশ হাওয়ায় ভেসে অাসে, কতজন যে গায়, 'অামি তোমাকেই বলে দেব, কী দীর্ঘ রাত একাকি হেঁটেছি বিরান পথে বা কড়া নেড়েছি ভুল দরজায়...'

সঞ্জীব চৌধুরী সংবাদপত্রে তার জীবনের উজ্জ্বলতশ সময়টা ব্যয় করেছেন পেশার তাগিদে। অাজকের বাংলাদেশের প্রধান প্রধান সংবাদপত্র বা টেলিভিশনের বড় বড় সাংবাদিকই সঞ্জীব চৌধুরীর হয় বন্ধু, নয় বড় ভাই নয় অনুজ সহকর্মী। সবাই সঞ্জীব চৌধুরীকে মানে সেই দিল খোলা কিন্তু প্রতিবাদী শিল্পী মানুষটার কাছের মানুষ। অামাদের কাছে সঞ্জীব চৌধুরী হচ্ছেন সঞ্জীব দা। একটু অনুজ অামরা। সঞ্জীব দা অগ্রজ হলেও বন্ধুত্বের কাচের গ্লাসে অবারিত ছিলেন সবসময়। কারণ, সঞ্জীব দা শিল্পী। কবি। গল্পও লিখেছিলেন কিছু। তার বোহেমিয়ান জীবন বড্ড অাকর্ষণীয়।

জগতে যে শ্রেণির মানুষ সিরিয়াসলি পানশালাকে ভালোবেসে বুঁদ-বুঁদ হয়ে ভেসেছেন, বাংলাদেশের সঞ্জীব চৌধুরী সেই শ্রেণীর প্রথম বেঞ্চের ছাত্র। সেখানকার ভালো ছাত্র। বলতেন, ' ধুর, সন্ধের পর পুরুষ মানুষ চা পান করে নাকি?' অাবার দিনেরবেলায় দেখা হলেও অাড্ডা, অাড্ডার শুরুতেই মহামতির অাবাহন, 'কথা যাই হোক, গলাটা ভিজিয়ে বসাই ভালো না? 'শ্যালে' তো কাছেই, কী বলেন?'

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি বিল্ডিংয়ের সামনের দেয়ালে বর্তমানে কিছু ম্যুরাল দেখতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসের অালোকে সেই ম্যুরালে ভাষা অান্দোলনের সৈনিক সালাম-বরকত-রফিক-জব্বারের প্রতিকৃতি অাছে। মুক্তিযুদ্ধের ছবি অাছে। বঙ্গবন্ধু-অরোরা-নিয়াজির প্রতিকৃতি অাছে। অার দুজন গায়কের প্রতিকৃতি অাঁকানো অাছে দেয়ালে। একজন জন লেনন। অন্যজন, কে? বলুন তো? বলার চেয়ে অাজকালের মধ্যেই টিএসসিতে গিয়ে একবার নিজের নয়নে দেখে অাসুন, কার মুখ তাকিয়ে অাছে অামাদের দিকে?

শিল্পী সঞ্জীব চৌধুরী তাকিয়ে অাছেন, মানুষের দিকে। এই কারণেই, মাতাল রাস্তার মতো টলোমলো মানুষটাকে সাধারণ মানুষ এত ভালোবেসেছে। অার সঞ্জীব দা'র গানের গলায় যে কী দরদ! প্রাণে ভরপুর ব্যথা তার কণ্ঠে। হবিগঞ্জ-সিলেটের হাওড়ের হাওয়া লেগে থাকা তার সুর, সে তো অামরা বাকিটা জীবনই মনে রাখব গানগুলো শুনতে শুনতে। সঞ্জীব দা'র প্রথম একক অ্যালবাম 'স্বপ্নবাজি'তে অামাদের অনেকের লেখাকেই গান করেছিলেন। সাজ্জাদ শরিফ, অানিসুল হক, কামরুজ্জামান কামু, জাফর অাহমদ রাশেদ, মারজুক রাসেল, সঞ্জীব দা'র সেনাপতি রাসেল ও নীল এবং অার কার কার লেখা যেন ছিল। অামার লেখাও ছিল। তবে সঞ্জীব দা'র গলায় ভালো ফুটেছে তার নিজের লেখা লিরিক এবং কামুর লিরিক। গানগুলো ব্যাপক শ্রোতার কাছেও পৌঁছেছে।

গায়ক বা সাংবাদিক চরিত্রের বাইরে সঞ্জীব দা'কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অামরা দেখেছি অারো এক চরিত্র। তিনি ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। কিন্তু সঞ্জীব দা'র এক বড় গুণ ছিল_দিনে দিনে তখন কত পরিচিতি তার, কিন্তু সামাজিক ন্যায়-অন্যায় প্রশ্নে এক কঠোর সোচ্চার কণ্ঠ তিনি। যেটা সাধারণত পরিচিতি পেয়ে যাওয়া শিল্পীরা এড়িয়েই চলেন, সঞ্জীব চৌধুরী অারো যুক্ত হতেন প্রতিবাদে, তারুণ্যের পাশে। সঞ্জীব চৌধুরী তাই মানুষের কাছে বা অামাদের কাছে অ্যাক্টিভিস্ট শিল্পীও। সঞ্জীব চৌধুরী সবসময় তরুণ।

অধিকার বঞ্চিত গণমানুষকে ভালোবেসে মিটিং-মিছিল করেছেন। অাশির দশকের সামরিক শাসক এরশাদ বিরোধী অান্দোলনে যে জেনারেশন জীবন-যৌবন বিসর্জন দিয়েছে রাস্তায়, সঞ্জীব দা'ও তাদের মধ্যে পড়েন। এই জন্যে দেখেছিলাম, যেদিন সঞ্জীব দা'র লাশ অানা হয় টিএসসিতে, শোকার্ত গণমানুষের ঢল নেমেছিল। এলিট সংষ্কৃতির লোকেরা যেমন এসেছিল, নামগোত্রহীন রিকশাওয়ালা গোছের নিন্মবর্গের মানুষেও ভরে গিয়েছিল টিএসসির পরিপার্শ্ব। যারা তার গান 'তোমার বাড়ির রঙের মেলায় দেখেছিলাম বায়োস্কোপ/ বায়োস্কোপের নেশা অামার কাটে না...'/ কিম্বা 'গাড়ি চলে না চলে না, চলে না রে...' ভালোবেসে শিল্পীর শেষযাত্রার শোকে সামিল। অামরা অামাদের এক টেবিলের, হৃদয়ের, মননের শিল্পীকে হারিয়েছিলাম।

একবার কথা হলো, অামি অার শহীদুল ইসলাম রিপন মুক্তকণ্ঠ দৈনিকের চাকরি ছেড়ে বাংলা মোটরের ভোরের কাগজ জয়েন করা নিয়ে। মুক্তকণ্ঠে তখন বেতন অাটকে ছিল মাসের পর মাস। তাছাড়া তখনকার ভোরের কাগজ অফিসের পঁচিশ গজের মধ্যেই 'শ্যালে'। বারে হেঁটে যেতেও লাগবে দেড় মিনিট। অাবার বাদল-ইলোরা বিয়েতে অামার যাওয়া হলো না। মনে হয়, ওইদিন অামি নেশা করেছিলাম। বাদল হচ্ছে এখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বখতিয়ার অাহমদ। অামি, বাদল, মামুন, রিপন, বিপু_অামরা নেশা করতাম হয়তো তখন।

অামাদের মারজুক শাহ'র লেখা পুরো অ্যালবামের লিরিক দিয়ে একবার সঞ্জীব দা সুরকার হিসেবে অাত্মপ্রকাশ করলেন। সেখানে গায়ক হচ্ছেন পুরান ঢাকার নবকুমার ইনস্টিটিউটে সঞ্জীব দা'র নবম শ্রেণীতে পড়বার সময়ের স্কুল বন্ধু হাসান মাসুদ, মিউজিক করলেন তার 'দলছুট' এর পার্টনার শিল্পী বাপ্পা মজুমদার। অ্যালবামটির নাম এ মুহূর্তে মনে পড়ছে না্। লিরিক সাঁইযের। মারজুক শাহের।

মাঝরাতে মাঝেমধ্যে সঞ্জীব দা'র ফোন পেতাম। একরাতে ফোন ধরেই শুনি, ফোনের ওপারে অনেক কুকুর ডাকছে। অামি 'হ্যালো' বলতেই সঞ্জীব দা বললেন, 'শুনতে পাচ্ছেন?'
বললাম, হ্যা, কুকুরের ডাক। কী ব্যাপার?
'বাসায় ফিরছি। ওরা অামাকে চিনে ফেলেছে, তাই ডেকে ডেকে অভিবাদন জানাচ্ছে।'

অার একদিনের ছোট্ট মেমোরি নোটসেই এ লেখা শেষ করব। লেখার সময় পাচ্ছি কম। ছবি বানাচ্ছি। ছবি বানালে অার কিছু করা যায় না। যাই হোক, সঞ্জীব দা'র তরল সেবার কথা না লিখে লুকিয়ে যাওটাই অাসলে অপরাধ, অামি মনে করি। কারণ, তিনি ভালেই বাসতেন মদিরা, তো তা লেখা উচিৎ না? মিথ্যে করে কিছু লিখব? যারা ঘুঁষ খায়, অন্যের সম্পদ জবরদখল করে খায়, উকিলের চরিত্রে দাঁড়িয়ে মানুষের ফ্যাঁসাদকেই পেশা করে বাঁচে, ডাক্তার হয়ে দরিদ্র রোগির শেষ সম্বল বিক্রি করিয়ে খায়, শিল্পী সঞ্জীব চৌধুরী তো সেসব খেতেন না। তবে অধিক তরলে মাঝেমধ্যেই তার শরীর একটু একড়ে-বেকড়ে যেত। অগত্যা ডাক্তারের শরণাপন্ন। এরকমই এক সময়, ২০০২ এর দিকে, অামাদের প্রজন্মের দেখা উজ্জ্বল মনীষী-লেখক-চিন্তক-কবি ও অবৈবাহিক জীবনের অধিকারী হজরত অাহমদ ছফা হুট করেই মারা গেলেন, মাত্র ৫৭ বছর বয়সে। খুব শোকাহত হয়েছি অামিও। ছফা ভাইকে পেয়েছিলাম বারো-তেরো বছর, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে। তো অামি অার সরয়ার পার্কে ছিলাম। খুব ছোটছোট একজাতীয় গাছের পাতা পুড়িয়ে সিগারেট খালি করে তামাক ভরে খেতাম অামরা। লোকে সেই পাতাকে গালিও দেয়, সিদ্ধিও বলে। সরকারিভাবে এটা খাওয়া-উৎপাদন-পরিবহন নিষিদ্ধ। অামরা তো কিছু নিষেধাজ্ঞা মানব না, ভাঙব বলেই কথা দিয়ে এসেছি। কথা কার কাছে দিছি? অামাদের যার যার অদেখা কোনো প্রেমিকার কাছে! তো সরয়ার অার অামি তামাক ভালোবাসতাম। সঞ্জীব দা'কে একদিন খাওয়াতে গেলাম ঐতিহাসিক অাজিজের ব্যাবিলন-উড্ডীন সিঁড়িতে বসে, সঞ্জীব দা বললেন, 'গাঁজার টানে অামার কনফিডেন্সের টাওয়ার ভেঙে পড়ে। চলেন, পিককে যাই।'

সেদিন সরয়ার অার অামি পার্ক থেকে বেরিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের কাছে যেতেই দেখা হয়ে গেল সঞ্জীব দা অার অঞ্জু দার সঙ্গে। কারণ, ছফার লাশ তখনই অানা হচ্ছিল মসজিদ প্রাঙ্গণে। অঞ্জু দা হচ্ছেন জাহিদুর রহিম অঞ্জন। সরয়ার বলতে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। অার সঞ্জীব দা সামনেই। বললেন, 'ডাক্তারি নিষেধাঞ্জা চলছে। ১৫ দিন জল ষ্পর্শ করা যাবে না।'

বললাম, 'কইরেন না।'
'অাপনারা তো ঠিকই চালাচ্ছেন। অামাকে বা সরয়ারকে খোঁচা দিলেন সঞ্জীব দা। বললেন, 'ছফা ভাই তো ছফা ভাই। অার কেউ না। ছফা ভাই চলে গেলেন। ছফা ভাই কি দুইবার মরবেন? তাই, যতই ডাক্তারি নিষেধাজ্ঞা থাকুক, ছফা ভাইকে চিয়ার্স করে হলেও, চলেন এক্ষুণি সাকুরায় যাই।'

কিন্তু শেষপর্যন্ত অামরা গেছি পিকক গার্ডেনে। সেদিন অামরা পিককে বসে সারা বিকাল কাটিয়ে, অামাদের চারজনের কাছের টাকা শেষ করে অারো দুহাজার টাকার মতো বেশি জল যখন ঢেলে ফেলেছি পাকস্থলিতে, অতিরিক্ত সেই জলের দাম পরিশোধের দায় নিয়ে ভোরের কাগজ অফিস থেকে এসে নিজেও সন্ধ্যাটা গ্লাসে ঢেলে গিলে ফেললেন সাংবাদিক পুলক গুপ্ত। সাংবাদিকতা পেশা হলেও পুলক দা মিউজিক করেন। মোরশেদুল ইসলামের 'চাকা' ছবির মিউজিক করেছেন। এখন পুলক দা ফিরিঙ্গিদের দেশে, বিবিসিতে কাজ করেন।

সঞ্জীব দা'র অ্যালকোহল পার্টনার সাংবাদিক গোলাম ফারুক, ফারুক ভাইয়ের সঙ্গে অামিও অনেকদিন কাজ করেছি কাগজে; সঞ্জীব দা'র উপরে অামাকে দিয়ে বেশ কিছু লেখা লিখিয়েছিলেন ফারুক ভাই, ২০০৭-এ, সঞ্জীব দা মারা যাওয়ার পরপরই।

সিডরের সময়, যখন সঞ্জীব দা হাসপাতালে, জীবনের সঙ্গে লড়াই চলল কদিন। তিনি হারলেন, শারীরিকভাবে, মাত্র ৪৫ বছর বয়সেই। একটা কথা বলতেই হবে, পৃথিবীর সকল টেবিল খালি হয়ে গেলেও সঞ্জীব দা', ফারুক ভাই অার জুয়েল ভাইয়ের (অার্টিস্ট জাফর ইকবাল জুয়েল) টেবিল প্রায় খালি হতে দেখা যেত না। তিন পাগলের হয়েছিল মেলা, বোতল নিয়ে। এরই মধ্যে ফারুক ভাই চলে গেছেন। জুয়েল ভাইয়ের সঙ্গে অনেকদিন পর গত সপ্তাহে দেখা হলো চারুকলার সামনে। মনে হলো, পৃথিবীর একটুখানি বয়স বেড়েছে।

'কিংবদন্তী' সঞ্জীব চৌধুরীর মেয়ের নাম। যদিও, সঞ্জীব দা'ই কিংবদন্তী। টিএসসি থেকে একটু দূরেই ঢাকা মেডিকেল, ওই মেডিকেলের ছাত্রছাত্রীদের জন্যে সঞ্জীব দা'র শরীরটা দান করেছে তার পরিবার। সঞ্জীব দা'র স্ত্রী শিল্পী বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে অামাদের বন্ধু। প্রায়ই ভাবি, যাই, একবার মেডিকেলের ভেতরে যাই। গিয়ে, সঞ্জীব দা'র কঙ্কালটা দেখে অাসি।

সঞ্জীব দা অামাদের সঙ্গেই অাছেন, টের পাই। অাজও সন্ধ্যায় ঢাকার কোনো বারে গেলেই সঞ্জীব দা'কে খুঁজি। বলা তো যায় না, অাছেনই হয়তো।

যেমন থাকে_ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে 'নজরুল চেয়ার' বা সম্মানজনক কোনো স্মারক-স্মৃতি রক্ষার অংশ, সেভাবেই, একটা প্রস্তাব রাখতে ইচ্ছে করে, ঢাকার বারগুলোতে 'সঞ্জীব চৌধুরী চেয়ার' রাখা যায় না?

অামি যদি কোনোদিন মদিরার বার খুলি, নাম দেব, 'বুঁদবুঁদ।' সেই 'বুঁদবুঁদ'এর মধ্যে নিশ্চয়ই 'সঞ্জীব চৌধুরী চেয়ার-টেবিল' থাকবে। সেখানে বসে কোনো তরুণ শিল্পী গিটার বাজিয়ে হয়তো টান দেবে তার তার গনগনে গলায়, 'কথা বলব না, কথা বলার কিছু নেই/ বাড়ি ফিরব না, বাড়ির ফেরার কিছু নেই...'

যে ব্যথা লুকিয়ে সঞ্জীব দা গাইতেন।

১৭ নভেম্বর ২০১৬


মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.