নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুদকের মামলায় আসামীর করণীয়

০২ রা ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১:৪৭


কারো বিরুদ্ধে দুদকের মামলা হলে মামলার খবর শুনে যতটা হতবাক হোন না, তার চেয়েও দুশ্চিন্তায় পড়লেন, কীভাবে মামলার অভিযোগ থেকে আপনার যুক্তি তুলে ধরে রেহাই পাবেন। কারণ, অভিযুক্ত হলেই নিশ্চিত করে বলা যাবে না যে কেউ অপরাধী। আইনের চোখে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত নিরপরাধ বলে গণ্য। অভিযুক্ত দোষী বা নির্দোষ, সেটি পরে প্রমাণিত হবে। কিন্তু প্রাথমিকভাবে যেন এ মামলা সুষ্ঠুভাবে মোকাবিলা করে ন্যায় বিচার নিশ্চিত হয় সে চেষ্টা করতে হবে।

যেকোনো দুর্নীতির বিষয়ে মামলা বা এফআইআর করার ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নিজ কার্যালয়ে এজাহার দাখিল ও ওই এজাহারের ভিত্তিতে তদন্ত করার ক্ষমতা রয়েছে । দুদকের ওই বিধিমালা অনুযায়ী দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে থানা সরাসরি মামলা রেকর্ড করতে পারে না। কেবলমাত্র জিডি হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। থানা অভিযোগ (জিডি) পাঠিয়ে দেয় দুদকে। এরপর তার ভিত্তিতে অনুসন্ধানের পর দুদক মামলা করে।

দুদক এজহার দায়েরের পর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে উপস্থাপন পূর্বক আমলে গ্রহণের জন্য আবেদন করে, ক্ষেত্র বিশেষ আসামিকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন জানায়।

এক্ষেত্রে অভিযুক্ত আত্মসমর্পণ করে কিংবা গ্রেফতার হলে জামিন চাইতে পারেন। অনেক সময় হাইকোর্ট বিভাগে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে আগাম জামিন চাইতে দেখা যায়। হাইকোর্ট বিভাগ আগাম জামিন সাধারণত নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত দিয়ে থাকেন। এ মেয়াদের মধ্যেই নিম্ন আদালতে গিয়ে জামিননামা সম্পাদনের জন্য আবেদন করতে হবে।

জামিন নেওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি অভিযোগপত্র দাখিল করার আগে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ দিয়ে আপনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছে, তা যথাযথ নয় প্রমাণের চেষ্টা করুন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগটির সত্যতা না পেলে আপনাকে নির্দোষ দেখিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবেন। চার্জশিট বা অভিযোগপত্র হয়ে গেলে আপনার মামলাটি বিচারিক আদালতে বদলি হবে। অভিযোগ গঠনের দিন আপনাকে হাজির হয়ে নতুন করে পূর্বশর্তে জামিন চাইতে হবে এবং জামিননামা সম্পাদন করতে হবে। তখন আপনি মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন করতে পারেন। অব্যাহতির আবেদন নাকচ হলে উচ্চ আদালতে প্রতিকার চাইতে পারেন।

যদি এমন হয় যে আপনি জানতে পারলেন না, আপনার বিরুদ্ধে এজাহার হয়েছে। পুলিশ এসে আপনাকে গ্রেপ্তার করল। আপনাকে থানায় নিয়ে গেল। গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আপনাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে। তখন আপনার আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করতে হবে। যদি রিমান্ড চায় পুলিশ, তাহলে আপনার আইনজীবীর উচিত হবে রিমান্ড বাতিলের জন্য আবেদন করা। যদি জামিন দেন আদালত, তাহলে একজন পরিচিত জামিনদারের জিম্মায় আপনার জামিননামা সম্পাদন করতে হবে। যদি জামিন না হয়, তাহলে পর্যায়ক্রমে উচ্চ আদালতে আবেদন করতে হবে।

আর আপনি কোনো কারণে আদালতে হাজির না হলে আপনার নামে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি হতে পারে। এতে হাজির না হলে আপনার মালামাল ক্রোকের আদেশ হতে পারে এবং আপনার অনুপস্থিতিতেই বিচার হতে পারে। তাই মামলা হলেই আপনি অপরাধী নয়, আইনের সহায়তা নিন।

মনে রাখবেন, মামলা হলে তার পরের দিনই আদালতের জি.আর.ও অফিসে সকল মামলার নথি পাঠানো হয় এবং আসামীর আইনজীবী চাইলে সে নথির নকল সংগ্রহ করতে পারেন। সুতরাং আপনার আইনজীবী সহকারীর মাধ্যমে সে মামলার নকল এজাহার সংগ্রহ করতে হবে এবং পর্যালোচনা করে দেখতে হবে যে, আপনার নামে ঠিক কি কি অভিযোগ আনা হয়েছে।

এজাহারে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া থাকে আপনাকে কি কি অপরাধে এবং তা কোন আইনের কোন ধারায় আর কে আপনার নামে অভিযোগ করেছে। সুতরাং এসব বিষয় আপনার বিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে পর্যালোচনার পর পরামর্শ নিন।

যে মামলায় হোক না কেন অভিযুক্তরা সচরাচর জামিনে মুক্তি পেলে মামলার আর কোন খোঁজ-খবর রাখেন না যা মারাত্মক একটি ভূল। মনে রাখবেন মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আপনার বিপদ রয়েছে। জামিনে মুক্তি লাভের পর বিজ্ঞ আইনজীবী দ্বারা সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে মামলার চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত সঠিকভাবে মামলা পরিচালনা করতে না পারলে স্থায়ী বিপদ হতে পারে। মামলায় অবেহেলার কারণে অনেক সময় অভিযুক্ত ব্যক্তির সাজাসহ জরিমানা হয়ে যেতে পারে যা ঝামেলার বিষয়।

যদিও নিম্ন আদালত থেকে মামলার সাজা হলে উচ্চ আদালতে আপিল, রিভিশন, রিভিউ করা যায় তা খুবই অনিশ্চিত এবং ঝামেলার ব্যাপার। সুতরাং মিথ্যা মামলায় ফেসে গেলে অবশ্যই জামিন নিয়ে বিজ্ঞ কৌশুলীর মাধ্যমে নিয়মিত মামলা পরিচালনা করুন।

নিজে নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে কিংবা কোন দালাল না ধরে সরাসরি আপনার পরিচিত কোন আইনজীবীর পরামর্শ নিন তাতেই আপনার মঙ্গল।



- মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ (এম টি উল্যাহ)
আইনজীবী
01733 594 270


মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.