নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রবাস/বিদেশ থেকে আমমোক্তারনামা/পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করার নিযম

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:১২


বিদেশ থেকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করার বিধান
বিদেশে বসবাস বা অবস্থানরত কোনো ব্যক্তি দেশে বসবাসরত কাউকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বা আমমোক্তারনামা দিতে চাইলে তাকে বিদেশি নোটারী পাবলিক, আদালতের বিচারক, ম্যাজিস্ট্রেট বা বাংলাদেশ দূতাবাসের বাণিজ্যদূত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির সম্মুখে মোক্তারনামা সম্পাদন করতে হবে এবং তার দ্বারা মোক্তারনামাটি প্রত্যয়ন করে পাঠাতে হবে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তা সত্যায়িত করাতে হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে স্ট্যাম্পযুক্ত হতে হবে

রহিম মিয়ার দুই ছেলে দেশের বাইরে থাকে। বছরখানেক আগে তাকে অস্ট্রেলিয়া নিয়ে গেছে ছেলেরা। কিন্তু দেশে রয়েছে বেশকিছু সহায়-সম্পত্তি। সেগুলো দেখাশোনার তেমন কেউ নেই। তাই ঠিক করলেন দূরসম্পর্কের এক আত্মীয়কে জায়গা-জমি দেখাশোনার দায়িত্ব দেবেন। কিন্তু রহিম মিয়া বিদেশ থেকে কীভাবে এসব সহায়-সম্পত্তি দেখাশোনার দায়িত্ব দেবেন? রহিম মিয়ার এখন যা করতে হবে তা হচ্ছে তার আত্মীয় বরাবর পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বা আমমোক্তারনামা সম্পাদন করতে হবে।

আমমোক্তারনামা একটি আইনগত দলিল। স্ট্যাম্প অ্যাক্ট ১৮৯৯-এর ২(২১) উপ-ধারা অনুসারে যে দলিল দিয়ে কোনো ব্যক্তিকে অন্য কোনো ব্যক্তির পক্ষে হাজির হয়ে যেসব কার্যাবলি সম্পাদন করার ক্ষমতা দেয়া হয় তাকে আমমোক্তারনামা দলিল বলে। যাকে আমমোক্তার নিয়োগ করা হলো তিনি মূল মালিকের পক্ষে সম্পত্তির দান, বিক্রি, হস্তান্তর, রক্ষণাবেক্ষণ, বন্ধক রাখা, খাজনা প্রদান ইত্যাদি করে থাকেন। তবে আমমোক্তারনামা দলিলে স্পষ্ট করে লেখা থাকতে হবে যাকে পাওয়ার বা ক্ষমতা দেয়া হলো তিনি কী কী করতে পারবেন, কিংবা কি কি করতে পারবেন না।

সাধারণত আমমোক্তারনামা দুই প্রকার।

ক) জেনারেল পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বা সাধারণ আমমোক্তারনামা

খ) স্পেশাল পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বা খাস আমমোক্তারনামা

যে মোক্তারনামা মোক্তার দাতার পক্ষে জমি-জমা ক্রয়, বিক্রয় রক্ষণা-বেক্ষণ, চুক্তিপত্র করা, মামলা-মোকদ্দমা পরিচালনা করাসহ যাবতীয় কাজের ক্ষমতা মোক্তারকে দেয়া হয় তাকে জেনারেল পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বলে।

অন্যদিকে একটি নির্দিষ্ট বা কোনো বিশেষ কাজের ক্ষমতা মোক্তারকে দিয়ে তৈরি মোক্তার নামাকে স্পেশাল পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বলে। কিন্তু জমি-জমা বিক্রিসংক্রান্ত মোক্তারনামা অবশ্যই রেজিস্ট্রি করাতে হবে, নইলে এর আইনগত ভিত্তি থাকে না। তবে মোক্তারনামা দাতার সম্পত্তি যেখানে থাকুক দাতা যেখানে বসবাস করেন সে জেলার রেজিস্ট্রি বা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সম্মুখে মোক্তারনামা সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করতে হবে।

যে কোনো দলিল হস্তান্তর, ক্রয়, বিক্রয়, উন্নয়ন এবং ঋণগ্রহণের ক্ষেত্রে দাতা ও গ্রহীতা উভয়ের ছবি দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু যেগুলো জমি-জমা হস্তান্তরের সঙ্গে জড়িত নয়, শুধু দেখাশোনা, খাজনা প্রদান করা কিংবা মামলা-মোকদ্দমা পরিচালনা করা সেগুলো নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে নোটারি করে নিলেই হয়।

তবে ২০১২ সালের পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আইন অনুসারে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দুই প্রকার। (১) প্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি এবং (২) অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি। স্থাবর সম্পত্তি বিক্রির উদ্দেশ্যে, বিক্রয়চুক্তি সম্পাদনের বা ঋণ নেয়ার বিপরীতে স্থাবর সম্পত্তি বন্ধক প্রদানের জন্য প্রদত্ত পাওয়ার অব অ্যাটর্নিকে অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বলে। এই পাওয়ার অব অ্যাটর্নিতে মোক্তারের ক্ষমতা মূল মালিকের মতোই থাকে। অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

বিদেশে বসবাস বা অবস্থানরত কোনো ব্যক্তি দেশে বসবাসরত কাউকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বা আমমোক্তারনামা দিতে চাইলে তাকে বিদেশি নোটারী পাবলিক, আদালতের বিচারক, ম্যাজিস্ট্রেট বা বাংলাদেশ দূতাবাসের বাণিজ্যদূত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির সম্মুখে মোক্তারনামা সম্পাদন করতে হবে এবং তার দ্বারা মোক্তারনামাটি প্রত্যয়ন করে পাঠাতে হবে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তা সত্যায়িত করাতে হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে স্ট্যাম্পযুক্ত হতে হবে।

সহজ করে বলতে গেলে মোক্তারনামা বিদেশ থেকে মুসাবিদা করে দেশে পাঠানো যায় আবার দেশে কোনো আইনজীবী দিয়েও ইংরেজিতে মুসাবিদা করিয়ে বিদেশে আমমোক্তারদাতার কাছে পাঠানো যায়। সংশ্লিষ্ট দলিলপত্র দেশে থাকে বলে দেশ থেকে ড্রাফটিং করে বিদেশে পাঠানো ভালো। দ্বিতীয়ত, যে দেশে ফরেন পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সম্পাদিত হবে সে দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের কনসু্যলারের সামনে দাতা স্বাক্ষর করবেন এবং কনসু্যলার কর্তৃক তা সত্যায়িত হওয়ার পর আমমোক্তারদাতা তার ক্ষমতা আমমোক্তার গ্রহীতা বা অ্যাটর্নির বরাবরে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেবেন। তৃতীয়ত, আমমোক্তার সাহেব ওই পাওয়ার অব অ্যাটর্নি পাওয়ার পর তা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সহকারী সচিব বা কনসু্যলার থেকে সত্যায়িত করে নেবেন। চতুর্থত, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমমোক্তারনামাটি সত্যায়িত হওয়ার পর তা জেলা প্রশাসকের রাজস্ব কার্যালয়ে জমা দিয়ে ২০০ টাকার স্ট্যাম্প লাগাতে হবে এবং সেখানে আমমোক্তারনামা দলিলের ওপর একটি নাম্বার ও তারিখ পড়বে। এরকম বিদেশি আমমোক্তারনামার সঠিকতা যাচাই করতে হলে জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কার্যালয়ে গিয়ে ওই নাম্বার দিয়ে যাচাই করে নেয়া যায়।

-মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
আইনজীবী
০১৭৩৩৫৯৪২৭০



মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:২৯

প্রতিদিন বাংলা বলেছেন: ভালো পোস্ট

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৫৯

এম টি উল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৫৪

রংবাজপোলা বলেছেন: ভালোতথ্য দিলেন ভাই।কদমবুসি লইবেন।।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৫৯

এম টি উল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.