নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

আমি এম টি উল্যাহ। আইনি উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah , Email- [email protected]

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঋণের জিম্মাদার হওয়ার আগে ১০০ বার ভাববেন যেসব কারণে

২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:২৪


অনেকে আমাদের কাছে এসে বলেন; আমি তো ঋণ গ্রহণ করি নাই, আমি ঋণ সম্পর্কে কিছুই জানিনা, ওমুকের কথায় শুধু স্বাক্ষর দিয়েছিলাম! কিংবা হঠাৎ গ্রেফতার হয়ে যাওয়ার পর জানতে পারেন মামলা সম্পর্কে। এমনকি অনেকে বলেন, আমার স্বামীর সাথে ডিভোর্স হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও স্বামীর ঋণের মামলায় আমাকে জড়ালো কেন?

তখন আসলে আইনী রুটিন কার্য সম্পদান ব্যাতিত আইনজীবীর কিছুই করার থাকে না। জিম্মাদার হয়েও এমন সব বিপদ কেন, দায় কী জিম্মাদার/গ্যারান্টরের?
এই বিষয়টি ঋণ গ্রহণের সময় যেমন গ্রাহকের খেয়াল থাকে না তেমনি ব্যাংক/নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গ্রাহক বা গ্যারান্টরকে বুঝিয়ে বলা হয় না। যার জন্য যত বিপদ, বিপত্তি। সহজ কথায় বললে, আপনি কোন ঋণের গ্যারান্টার হলে ঋণ গ্রহিতার সময় দায় আপনার উপরও বর্তাবে। ঋণ গ্রহিতা কোন কারণে ডিফল্ডার/খেলাপি হয়ে গেলে শুধু ঋণ গ্রহিতার নামে না আপনার নামেও মামলা হবে। ঋণ গ্রহিতারে সাথে সাথে আপনার নামেও ওয়ারেন্ট হবে। ঋণ গ্রহিতাকে ধরতে না পারলে আপনাকে ধরে টাকা উদ্ধার করার কিংবা আপনার জামানতকৃত সম্পত্তি নিলামে তুলে ব্যাংক বিক্রি করে দিতে পারবে। গ্রেফতার না হয় মামলা হওয়ার পর হলেন কিন্তু নিলাম করতে ব্যাংকে মামলা করতেই তো হবে না বরং আইনে বলছে আগে নিলামের চেষ্টা করো তারপর মামলা। আর রায় হলৈ গ্যারান্টর গ্রেফতার হলে আপীল করতে হলে রায়ের টাকার উপর ২৫% জমা দিয়ে জামিন নিতে হবে এবং ৫০% দিয়ে আপীল করতে হবে। আপীল করতে না চাইলে অবশিষ্ট টাকা ৯০ দিনের মধ্যে জমা প্রদানের বন্ড দাখিল করলে তবেই কোর্ট জামিন দিবে। তাহলে ভাবুন, ঋণের জিম্মাদার বা গ্যারান্টার হবেন কিনা? হলে বুঝে শুনে হবেন কিনা? মামলা হওয়ার পর যতোই বলেন আমি না বুঝে স্বাক্ষর করেছি বা এই স্বাক্ষর আমি ইচ্ছেকৃত দেই নি এসব বলে কাজ হবে না। এমনকি বিবাহ বলবৎ থাকাকালীন স্বামী/স্ত্রী একে অপরের ঋণের জিম্মাদার হলে ডিভোর্স হয়ে গেলেও সে দায় থেকে মুক্তি পাওয়ার সুযোগ আইনের নেই। এসব কথা আবেগী কথা নয়, গত দশ বছরে আদালত পাড়ায় ঘুরে ঘুরে অর্জিত অভিজ্ঞতা এবং আইনের আলোকে বলা।

তাহলে আসুন আইনের আলোকে একটু জেনে নি;

ঋণখেলাপি হলে ঋণ আদায়ের জন্য কেবলমাত্র ঋণগ্রহীতা নয় গ্যারান্টরের বিরুদ্ধে মামলা করার বিধান রয়েছে বিদ্যমান অর্থঋণ আদালত আইনে।
অর্থঋণ আদালত আইনের ৬(৫) ধারার বিধানে এ সংক্রান্তে আলোচনা করা হলো। তা হলো-"আর্থিক প্রতিষ্ঠান মূল ঋণ গ্রহীতার (Principal debtor) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার সময়, তৃতীয়পক্ষ বন্ধকদাতা (Third party mortgagor) বা তৃতীয়পক্ষ গ্যারান্টর (Third party guarantor) ঋণের সহিত সংশ্লিষ্ট থাকিলে, উহাদিগকে পক্ষ করিবে; এবং আদালত কর্তৃক প্রদত্ত রায়, আদেশ বা ডিক্রি সকল বিবাদীর বিরুদ্ধে  যৌথভাবে ও পৃথক পৃথক ভাবে (jointly and severally) কার্যকর হইবে এবং ডিক্রি জারির মামলা সকল বিবাদী-দায়ীকের  বিরুদ্ধে একই সাথে পরিচালিত হইবেঃ তবে শর্ত থাকে যে, ডিক্রী জারীর মাধ্যমে দাবী আদায় হওয়ার ক্ষেত্রে আদালত প্রথমে মূল ঋন গ্রহীতা-বিবাদীর এবং অতঃপর যথাক্রমে তৃতীয় পক্ষ বন্ধক দাতা (Third party mortgagor) ও তৃতীয় পক্ষ গ্যারান্টর (Third party guarantor) এর সম্পত্তি যতদূর সম্ভব আকৃষ্ট করিবে। " তার মানে ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান প্রথমে ধরবে মূল ঋন গ্রহীতাকে। তার নিকট হইতে যদি টাকা আদায় করা সম্ভব না হয় কিংবা তার বন্ধকী সম্পত্তি নিলামে নিয়েও ঋণ সমন্বয় না হয় সেক্ষেত্রে ধরা হবে বন্ধক দাতা (Third party mortgagor) ও তৃতীয় পক্ষ গ্যারান্টর (Third party guarantor) কে।  যেক্ষেত্রে জিম্মাদার হিসাবে আপনার সম্পত্তি বন্ধক রেখেছেন সেক্ষেত্রে জিম্মাদার হওয়া সত্ত্বেও আপনার সম্পত্তিটি মামলার আগে নিলামে উঠে যেতে পারে।


- মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
অ্যাডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
০১৭৩৩৫৯৪২৭০ ( কল করার পূর্বে হোয়াটস্অ্যাপে ম্যাসেজ দিন)

লেখক- আইন বিষয়ক উপন্যাস 'নিরু" এবং 'অসমাপ্ত জবানবন্দী', মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস 'মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ' এবং 'একাত্তরের অবুঝ বালক' ।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ২:৪৮

আলামিন১০৪ বলেছেন: ব্যক্তিগত ঋণের ক্ষেত্রেও কি এই আইন প্রযোজ্য?

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০১

এম টি উল্লাহ বলেছেন: অবশ্যই

২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে কোনো ক্ষমা নাই। সময় মত টাকা পরিশোধ না করলে নিম্মে ছয় মাসের জেল।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০২

এম টি উল্লাহ বলেছেন: ঠিক বলেছেন। ক্ষেত্রেভেদে ১ (এক) বছরও জেল হতে পারে ।

৩| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

বিজন রয় বলেছেন: আপনার এই লেখা পড়লে তো আর কেহ জেম্মাদার হতে চাইবে না।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৪

এম টি উল্লাহ বলেছেন: তা ঠিক। হলেও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.