নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন সাধারণ মুসলমান।

তট রেখা

তট রেখা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় - ২য় পর্ব ( রাজনৈতিক কর্তৃত্ব অর্জন )

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:১৪



বিশ্ব কিভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় - ১ম পর্ব ( ছায়ার ভেতরে বসে)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

قُلِ اللَّهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَن تَشَاء وَتَنزِعُ الْمُلْكَ مِمَّن تَشَاء وَتُعِزُّ مَن تَشَاء وَتُذِلُّ مَن تَشَاء بِيَدِكَ الْخَيْرُ إِنَّكَ عَلَىَ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

অর্থঃ বলুন ইয়া আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান কর এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর আর যাকে ইচ্ছা অপমানে পতিত কর। তোমারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল।
( সুরা আলে ইমরানঃ আয়াত-২৬)

১ম পর্বের পর-------

এই নতুন পরিচয় সদস্যদের সর্বোচ্চ পরিষদের উদ্যোগে সম্মান ও মর্যাদায় ভূষিত করে। ফ্রিমেসন্সদের প্রথম বিশ্ব সদস্য হলো প্রিন্স অব ওয়েলস, ফেড্রিক। এর পর থেকে ব্রিটিশ রাজ পরিবার নানা ভাবে ফ্রী মেসন্সদের সাথে জড়িত। বন্ধ দরজার ভেতরে ফ্রিমেসন্সরা পুর্ব পুরুষদের মাধ্যমে প্রাপ্ত গোপনীয় আচার পালন করতে স্বাধীন আর এর উপর ভিত্তি করেই এর সদস্যদের মর্যাদার স্তর নির্ধারিত হয় যাকে ডিগ্রী বলে। ফ্রিমেসন্সরা ব্রিটেনের ক্ষমতা নিয়েই শুধুমাত্র সন্তুষ্ট ছিলোনা তাদের লক্ষ্যমাত্রা আরও অনেক বৃহৎ ছিলো । পরবর্তি সময় গুলোতে আমেরিকা এবং বিশ্ব নানা বিপ্লব ও যুদ্ধে ব্যাতিব্যস্ত ছিলো, এই সব যুদ্ধ একটি অপরটির তুলনায় ধ্বংসাত্মক ছিলো। এই সব যুদ্ধ বা বিপ্লব অধীনস্থ জনসাধারণের স্বতঃফুর্ত প্রতিক্রিয়া দ্বারা সংগঠিত হয়নি, বরং সামান্য কিছু ব্যাক্তির চুড়ান্ত ক্ষমতার তীব্র মোহ এর প্রেক্ষাপট তৈরী করেছিলো। আর এসব মহাপরিকল্পণা সেই দেশ থেকে শুরু হয়েছিলো যেখান থেকে শত শত বছর আগে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিল এবং পরবর্তিতে বিশ্ব ক্ষমতার ভিত্তিমূলে আশ্রয় নিয়ে সেখানে বিস্তার ঘটিয়েছিলো।
অষ্টাদশ শতাব্দীর ফ্রান্সে জনসাধারণের অধিকাংশই দরিদ্র ছিলো, কিন্তু অভিজাত ও রাজপরিবারের সদস্যরা বিলাস বহুল জীবন যাপন করত। সেখানে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে এক সাগর পরিমাণ পার্থক্য বিদ্যমান ছিলো। ফ্রী মেসন্সরা এই সুযোগটিই গ্রহণ করল এবং ক্ষমতার মঞ্চের পরিবর্তন চাইল, যা ফ্রান্সের ইতিহাসে বৃহত্তম আন্দোলনের জন্ম দিল। মেসন্সরা জনসাধারণের মাঝে পুঞ্জিভূত ক্ষোভ কে কাজে লাগিয়ে তাদের লক্ষ্য পূরণে তৎপর হলো, তারা যুদ্ধের পক্ষে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে প্রচারণা চালালো। তারা পূর্ণ রূপে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করে জনমত একদিকে প্রবাহিত করল। পত্র-পত্রিকা রাজতন্ত্র অবসান করে এমন এক সমাজ ব্যাবস্থা প্রতিষ্ঠার আহবান করল যা হবে যা চুড়ান্ত ভাবে স্বাধীনতা ও আইনের শাসন নিশ্চিত করবে। মেসন্স দের অগাধ সম্পদ সুবিধাজনক রাজনৈতিক চিত্র বিনির্মাণে ব্যায়িত হলো। মেসন্সদের অর্থে রাজনীতিবিদরা মেসন্সদের আদর্শ প্রচার করল, তাদের গোপন উপাসনালয় সামরিক বাহিণীর সদস্যদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হলো। উচ্চপদস্থ সামরিক, বেসামরিক কর্মকর্তাদের ফ্রী-মেসন্স দের মন্ত্রে দীক্ষিত করা হলো। রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে জনগণ এবং ফরাসী সেনাবাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মেসন্সরা চুড়ান্ত লক্ষ্য বাস্তবায়নের শক্তি অর্জন করল। ১৭৮৯ সালের ১৪ জুলাই প্যারিসের বাস্তিল দূর্গে বিদ্রোহের সূচনা হয়। ফরাসী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এ প্রতিরোধের আগুন সারা ফ্রান্সে ছড়িয়ে পরে। শহরে ও গ্রামে ফরাসী রাজতন্ত্রের প্রতি বিক্ষুব্ধ মানুষের ঘৃণা প্রকাশিত হয়, এবং ১৭৯৩ সালের আগ পর্যন্ত এই ক্ষোভ প্রশমিত হয়না। একই বছর একুশে জানুয়ারী প্রকাশ্যে রাজা ষোড়শ লুই এর শিরচ্ছেদ করে রাজতন্ত্রের পরিসমাপ্তি টানা হয় যা ইউরোপে মেসন্সদের জন্য আর একটি রাস্ট্র ব্যাবস্থার পথ প্রশস্ত করে। রাজতন্ত্রের পতনের সাথে সাথে মনে হয় ফ্রী মেসন্সদের হাতে ফ্রান্সের নিয়ন্ত্রণে আর কোনো বাধা নেই। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে যা ঘটে তা ফ্রীমেসন্সদের সম্পূর্ণ এক ধাঁধায় ফেলে দেয় এবং পরবর্তিতে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয় তা মেসন্সদের পরিকল্পণার সাথে কোনো মতেই সংগতিপূর্ণ ছিলোনা।


নেপোলিয়ান বোনাপার্ট নামে একজন তরুন সৈনিক মেসন্সদের সুরে তাল মিলিয়ে নৃত্য না করে নিজেকে ফ্রান্সের সম্রাট ঘোষণা করেন এবং ইংল্যান্ডের সাথে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের দ্বার প্রান্তে উপনীত হন। নেপোলিয়ান কে ১৮১৪ সালে সিংহাসন পরিত্যাগ করে করসিকা দ্বীপে নির্বাসনে যেতে বাধ্য করা হয়। কিন্তু পরের বছরই ১৮১৫ সালে নতুন সৈন্য সংগ্রহ করে আবার তিনি প্যারিসে আগমণ করেন এবং ইউরোপে নতুন যুদ্ধ শুরু করেন। মেসন্সরা সেই সময় অনেক বড় সমস্যায় পতিত হন। ব্রিটেন এবং তাদের মেসনিক মিত্রদের পক্ষে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণার ঝুঁকি না নিয়ে একটা দীর্ঘ মেয়াদী যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিলনা। কিন্তু এ সময় অকস্মাৎ এক সাহায্য চলে আসে। নাথান রথশিল্ড একটি ব্যাংকিং পরিবারের প্রধান ছিলেন, কিন্তু ইহুদী হওয়ার কারণে তারা অন্যের ছায়ার অন্তরালে থেকে কাজ করতে বাধ্য ছিল। রথশিল্ড নিজেদের মুক্ত করার এই সুযোগটিই গ্রহণ করল। ইহুদীদের অন্যান্য ইউরোপীয়দের মত প্রকাশ্যে ব্যাবসা করার অধিকার প্রাপ্তি সাপেক্ষে আর্থিক সহযোগীতা করতে রাজী হলো। মেসন্সরা এই অর্থ গ্রহণ না করলে তা নেপোলিয়ানের কাছে চলে যাওয়ার সকল সুযোগ বিদ্যমান ছিল। মেসন্সদের এই ঋন গ্রহণ না করে কোনো উপায় ছিলনা এবং ফলস্রুতিতে লেন দেন সম্পন্ন হয়। ১৮১৫ সালে ব্রিটিশ, ওলন্দাজ এবং রাশিয়ানদের সম্মিলিত বাহিনী বেলজিয়ামের ওয়াটার লুতে অবতরণ করে, যেখানে তারা নেপোলিয়ানের বাহিনীকে পরাজিত করে। নেপোলিয়ান এ সময় ধৃত হয় এবং সে আর কখনো ফ্রান্সে প্রত্যাবর্তন করতে পারেনি। অবশেষে ফ্রান্স মেসন্সদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধীনে আসে। যদিও ইতিহাসবেত্তা গণ ফরাসী বিপ্লবে মেসন্স দের ভূমিকার কথা খুব কমই উল্লেখ করেছেন, ইতিহাসের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাদের ছায়া ভূমিকার কথা উল্লেখ করতে মেসন্সদের নিজেদেরই উদ্যোগ নিতে হয়েছে। ১৯০৪ সালে মার্ক ভাডোরাসাম্বো নামে একজন ফ্রী মেসন্স জনাকির্ণ সমাবেশে শ্রোতাদের সামনে ফরাসি বিপ্লবে ফ্রী মেসন্সদের গোপণীয় ভূমিকার কথা ঘোষণা করেন, শুধু তাই নয় ফ্রী মেসন্সরাই এই বিপ্লব সংঘটিত করেছে তাও বলেন।

মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের ভিত্তি স্থাপনকারী তথাকথিত জনকরা যখন প্লিমাউথে অবতরণ করেন, তখন তারা তদের সাথে ভোটাধিকার বঞ্চিত জনগোষ্ঠিকেই শুধু সাথে নিয়ে যাননি, বরং ফ্রী মেসন্স এর উপাদানও সঙ্গে নিয়ে ছিলেন। মার্কিনীদের জনকরা যে অবিচার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ইউরোপ ছেড়ে আমেরিকায় পাড়ি দিয়ে ছিলেন সেই অবিচার ব্রিটিশ স্বৈরশাসকের রূপে তাদের নতুন দেশেও বিদ্যমান ছিল। ফ্রান্সে যে পদ্ধতির প্রয়োগে সফলতা পেয়েছিলেন, সেই একই পদ্ধতির প্রয়োগের মাধ্যমে নতুন দেশের পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে তারা ব্রতি হন। যদিও ব্রিটিশ রাজতন্ত্র মেসন্সদের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হত, তথাপি আমেরিকাতে স্বাধীনতার যুদ্ধ প্রয়োজনীয় হয়ে দেখা দেয়। এ যুদ্ধে জনগণের স্বতঃফুর্ত অংশ গ্রহণ মেসন্সদের স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করে। ফ্রান্সের মতোই চাতুর্যের সাথে মানুষের আবেগকে ক্ষোভে পরিণত করা হয়, যা যুদ্ধের রূপ নেয়। কিন্তু তারা ফ্রান্সের ভুল এখানে করেনি। তারা নিশ্চিত করে ছিল, ভবিষ্যতের সকল নেতৃত্ব মেসন্সদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে। আর এটা করার উত্তম উপায় হলো যুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী নেতাকে একজন ফ্রীমেসন্স হতে হবে, আর সে নেতা অন্য কেউ ছিলেননা, তিনি হলেন জর্জ ওয়াশিংটন।
৪ঠা জুলাই, ১৭৭৬ সালে স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়া হয় এবং ১৭৮১ সালের ১৭ই অক্টোবর ব্রিটিশ বাহিনী পূর্ণ রুপে পরাজিত হয়। উপনিবেশ আমেরিকানদের হাতে হস্তান্তরের মাধ্যমে পৃথিবীর প্রথম মেসোনিক রাস্ট্রের উদ্ভব হয়, একটি জাতি যা সর্বক্ষেত্রেই মেসন্সদের প্রতিনিধিত্ব করে। আমেরিকাতে মেসন্সদের উপস্থিতির একটি পরিস্কার চিত্র হচ্ছে ১ ডলারের নোট, যেখানে ফ্রীমেসন্সদের প্রতীকের চিত্র আছে আর তা হলো “ সর্বদর্শী এক নয়ন” ( The All seeing one eye)



সূত্রঃ RESEARCH BY SIRAJ WAHAJ AND HIS TEAM

(চলবে ইন শা আল্লাহ)

RELATED READINGS:

কামাল আতাতুর্ক কে ছিলেন ইহুদী? ফ্রী-মেসন ?-শেকড়ের সন্ধানে ( পর্ব-৩)

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:২৬

কল্লোল আবেদীন বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।

সোজা প্রিয়তে।

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৪২

তট রেখা বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:০৩

মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: তো মূল কথাটা কী?

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৫

তট রেখা বলেছেন: সাথেই থাকুন, জানতে পারবেন। ধন্যবাদ।

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৯

তট রেখা বলেছেন: দয়া করে ১ম পর্ব পড়ুন।

৩| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:৫২

ছায়া মনুষ বলেছেন: ভালো পোষ্ট

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৩

তট রেখা বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:০৪

প্রামানিক বলেছেন: ভালো পোষ্ট। ধন্যবাদ

২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৫:৪১

তট রেখা বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:২৮

আরব বেদুঈন বলেছেন: এতো দেখছি শর্ষের মধ্যে ভূত!!!

২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৫

তট রেখা বলেছেন: এরা সর্ষে রূপী ভুত । জাজাকাল্লাহ খায়রান। সাথেই থাকুন।

৬| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৩

আরব বেদুঈন বলেছেন: ভাই তৃতীয় পর্বের জন্য অর্ধ বছর পর্যন্ত আপেক্ষা করে যাচ্ছি।আর আপনার লেখা গুলো একটু কপি করতে চাই যাতে সাধারন মানুষ এ ব্যপারে কিছু জানতে পারে।

৭| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৪৯

নাঈমুর রহমান আকাশ বলেছেন:

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.